Ajker Patrika

দুই সংসার চালাতে হিমশিম, দ্বিতীয় স্ত্রীকে বেড়াতে নিয়ে গিয়ে পুড়িয়ে হত্যা

উত্তরা (ঢাকা) প্রতিনিধি
আপডেট : ২২ মে ২০২৪, ২১: ৪৯
দুই সংসার চালাতে হিমশিম, দ্বিতীয় স্ত্রীকে বেড়াতে নিয়ে গিয়ে পুড়িয়ে হত্যা

গাজীপুরের কালীগঞ্জের পূর্বাচলে ঘুরতে নিয়ে স্ত্রী মোছা. বিলকিসের (২৬) গায়ে পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে হত্যা করেছেন মিজানুর রহমান সুমন (২৮)। তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব।

রাজধানীর র‍্যাব-১ কার্যালয়ে আজ বুধবার সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ব্যাটালিয়নটির অধিনায়ক (সিও) মুহাম্মদ মোসতাক আহমদ।

এর আগে কালীগঞ্জের পূর্বাচলের ২৪ নম্বর সেক্টরে গত রোববার (১৯ মে) বিকেল ৪টার দিকে ঘুরতে নিয়ে গিয়ে গায়ে পেট্রল ঢেলে বিলকিসকে পুড়িয়ে হত্যা করেন সুমন।

গাজীপুর-টাঙ্গাইল মহাসড়ক থেকে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব-১। সুমন কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার মফিজুল ইসলামের ছেলে। তিনি বর্তমানে রাজধানীর তুরাগের রানাভোলা এলাকায় বসবাস করেন। উবারে গাড়ি চালান তিনি।

র‍্যাব-১-এর অধিনায়ক মুহাম্মদ মোসতাক আহমদ বলেন, তুরাগের রানাভোলা এলাকায় স্ত্রী শিমু, দেড় বছরের শিশু মেয়ে ও মাকে নিয়ে বসবাস করতেন সুমন। ওই এলাকায় পোশাক কারখানায় চাকরি ও স্বামীর সঙ্গে বসবাস করতেন বিলকিস। একই এলাকার হওয়ায় সুমন ও বিলকিসের মধ্যে পরিচয় হয়। এরপর মোবাইল ফোনে সখ্য গড়ে ওঠে। দেড় বছর আগে গোপনে বিলকিসকে বিয়ে করেন সুমন। বিলকিস আগের স্বামীকে ছেড়ে সুমনের সঙ্গে সংসার শুরু করেন।

র‍্যাব কর্মকর্তা বলেন, বিয়ের কিছু পর থেকেই তাঁদের মধ্যে তুচ্ছ বিষয় নিয়েও মনোমালিন্য শুরু হয়। সুমন দ্বিতীয় স্ত্রীর কাছে সপ্তাহে মাত্র এক দিন থাকতেন। আবার মাঝেমধ্যে তাঁরা ঘুরতে যেতেন।

হত্যার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে অধিনায়ক মোসতাক আহমদ বলেন, সুমন উবারে গাড়ি চালিয়ে অর্ধেক দিতেন গাড়ির মালিককে। বাকি অর্ধেক টাকা দিয়ে দুটি সংসার চালাতে হিমশিম খেতেন। সম্প্রতি বিলকিস সুমনের কাছে আগের থেকে কিছু বেশি টাকা চেয়েছিলেন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে কলহ শুরু হয়।

মোসতাক আহমদ বলেন, এর জেরেই বিলকিসকে হত্যার পরিকল্পনা করেন সুমন। সে অনুযায়ী উবারের গাড়িতে করেই ঘুরতে পূর্বাচল এলাকায় নিয়ে যান। সেখানে চা পান করেন আর হত্যার জন্য সুবিধাজনক জায়গা খুঁজতে থাকেন। পরে একটি জঙ্গলে গাড়ি ব্রেক করে নেমে পাইপ দিয়ে ট্যাংক থেকে বোতলে পেট্রল ভরেন সুমন। ওই সময় বিলকিস গাড়িতেই বসা ছিলেন। গাড়ির ইঞ্জিন তখনো চালু ছিল।

কিছুক্ষণ পর বিলকিস গাড়ি থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বোতলের পেট্রল তাঁর গায়ে ছিটিয়ে দেন সুমন। এরপর সঙ্গে থাকা দেশলায়ের কাঠি জ্বালিয়ে বিলকিসের গায়ে ছুড়ে মারেন। দাউ দাউ করে আগুন জ্বলে উঠলে সুমন গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যান। বিলকিস বাঁচার জন্য চিৎকার করতে থাকেন। পাশের একটি ড্রেনে ঝাঁপ দেন। চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাঁকে কুর্মিটোলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত সোমবার (২০ মে) সকাল ৯টার দিকে মারা যান বিলকিস।

র‍্যাবের সিও মোসতাক আহমদ বলেন, এ ঘটনায় র‍্যাব গোয়েন্দা নজরদারি চালিয়ে গাজীপুর থেকে সুমনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার এড়াতে মোবাইল ফোনও ফেলে দিয়েছিলেন সুমন। তাঁকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কালীগঞ্জ থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিছানাভর্তি টাকা, বিলাসবহুল গাড়ি ও সোনাদানা মিলল পুলিশ কর্মকর্তার ঘরে

রাকসুর ৮ কেন্দ্রের ফল: ভিপি পদে প্রায় চার গুণ ভোটে এগিয়ে শিবিরের জাহিদ

রাকসুর ৯ কেন্দ্রের ফল: লড়াই জমাতে পারছেন না এষা

রাকসুর ১০ কেন্দ্রের ফল: ছাত্রদলের জিএস প্রার্থীর ভরাডুবি

মেয়েদের সব হলেই সর্বোচ্চ ভোট জাহিদ, আম্মার, সালমানের

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পরকীয়ার সন্দেহে স্ত্রীকে হত্যার পর লাশ ডিপ ফ্রিজে রাখেন নজরুল: পুলিশ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ২০: ২০
পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার নজরুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার নজরুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

বৈবাহিক জীবনে টানাপোড়েন, তাতে যুক্ত হয় সন্দেহ। সেই সন্দেহই কাল হয়ে দাঁড়ায় তাসলিমা আক্তারের জীবনে। রাজধানীর কলাবাগানে স্বামীর দায়ের কোপে হয়েছেন খুন। হত্যার পর স্ত্রীর লাশ ডিপ ফ্রিজে লুকিয়ে রাখেন নজরুল ইসলাম।

আজ বুধবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানান রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম। তিনি বলেন, গত মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর বংশালের নবাবপুর রোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।

ডিসি মাসুদ আলম বলেন, নজরুলের স্ত্রী তাসলিমার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে তাঁর পারিবারিক কলহ চলছিল। নজরুলের ধারণা ছিল, তাঁর স্ত্রী অন্য কারও সঙ্গে সম্পর্ক রাখছেন। পাশাপাশি সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার আশঙ্কাও করতেন তিনি। এসব সন্দেহ থেকেই তাসলিমাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করতেন নজরুল।

গত রোববার রাতে বাসায় ফিরে নজরুল দেখেন, ফ্ল্যাটের তিনটি লকের মধ্যে দুটি খোলা। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে স্ত্রী তাসলিমাকে হত্যা করেন। পরে গামছা দিয়ে লাশ বেঁধে বিছানার চাদর ও ওড়না মুড়িয়ে ডিপ ফ্রিজে লুকিয়ে রাখেন। আলামত গোপনের জন্য রক্তমাখা তোশক উল্টে দেন, মেঝে ধুয়ে ফেলেন এবং নিজের জামাকাপড় ধুয়ে ফেলেন।

পরদিন সকালে সন্তানদের জানান, তাদের মা অন্য এক ব্যক্তির সঙ্গে পালিয়ে গেছেন। বড় সন্তান দেয়ালে রক্তের দাগ দেখে সন্দেহ করে। এরপর নজরুল দুই সন্তানকে নানার বাড়ি পাঠানোর কথা বলে রাজধানীর আদাবরে ফুফুর বাসায় রেখে পালিয়ে যান।

তাসলিমার ছোট ভাই নাঈম হোসেন জানান, বোনের কোনো খোঁজ না পেয়ে তিনি সন্তানদের সঙ্গে সোমবার সন্ধ্যায় কলাবাগান থানায় অভিযোগ দেন। অভিযোগের পর পুলিশ ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে প্রবেশ করে। একপর্যায়ে ডিপ ফ্রিজ খুললে মাছ-মাংসের নিচে কাপড়ে মোড়ানো তাসলিমার লাশ উদ্ধার হয়।

এ ঘটনায় তাসলিমার ভাই নাঈম হোসেন বাদী হয়ে কলাবাগান থানায় হত্যা মামলা করেন। পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ ও প্রযুক্তির সহায়তায় নজরুলের অবস্থান শনাক্ত করে মঙ্গলবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করে। ডিসি মাসুদ আলম বলেন, নজরুলের সন্দেহই এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। মামলার তদন্ত চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিছানাভর্তি টাকা, বিলাসবহুল গাড়ি ও সোনাদানা মিলল পুলিশ কর্মকর্তার ঘরে

রাকসুর ৮ কেন্দ্রের ফল: ভিপি পদে প্রায় চার গুণ ভোটে এগিয়ে শিবিরের জাহিদ

রাকসুর ৯ কেন্দ্রের ফল: লড়াই জমাতে পারছেন না এষা

রাকসুর ১০ কেন্দ্রের ফল: ছাত্রদলের জিএস প্রার্থীর ভরাডুবি

মেয়েদের সব হলেই সর্বোচ্চ ভোট জাহিদ, আম্মার, সালমানের

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সালমান শাহ হত্যা মামলায় রিভিশনের শুনানি শেষ, রায় ২০ অক্টোবর

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৮: ৫৩
সালমান শাহ। ছবি: সংগৃহীত
সালমান শাহ। ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহ হত্যা মামলা নিষ্পত্তির আদেশের বিরুদ্ধে করা রিভিশন মামলার শুনানি শেষে ২০ অক্টোবর রায় ঘোষণার দিন ঠিক করেছেন আদালত। আজ সোমবার ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক রায়ের দিন নির্ধারণ করেন। রিভিশনকারী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. ওবায়দুল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মারা যান চিত্রনায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার (ইমন) ওরফে সালমান শাহ। এ ঘটনায় প্রথমে অপমৃত্যুর মামলা করেন তাঁর বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। পরের বছর ২৪ জুলাই ছেলেকে হত্যার অভিযোগে আবার মামলা করেন তিনি। তখন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত অপমৃত্যু ও হত্যার মামলার একসঙ্গে তদন্ত করতে সিআইডিকে নির্দেশ দেন। তদন্ত শেষে ১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর ঘটনাটিকে ‘আত্মহত্যা’ বলে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় সিআইডি।

ওই বছরের ২৫ নভেম্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন গৃহীত হয়। তবে প্রতিবেদনটি প্রত্যাখ্যান করে রিভিশন মামলা করেন কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। পরে ২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠান আদালত। দীর্ঘ ১১ বছর পর ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মহানগর হাকিম ইমদাদুল হক। ওই প্রতিবেদনেও সালমান শাহর মৃত্যুকে ‘অপমৃত্যু’ বলা হয়। কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরীর মৃত্যুর পর ছেলে হত্যা মামলার বাদী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন মা নীলা চৌধুরী। ২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি তিনি সিএমএম আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজির আবেদন করেন। সর্বশেষ মামলাটি পিবিআই তদন্ত করে। ২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন। ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর আদালত ওই প্রতিবেদন গ্রহণ করে মামলাটি নিষ্পত্তি করেন। এরপর ২০২২ সালের ১২ জুন এই আদেশের বিরুদ্ধে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে রিভিশন মামলা করে বাদীপক্ষ।

রিভিশন মামলায় বলা হয়, সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু বারবার তদন্তে তাঁর মৃত্যুকে অপমৃত্যু মামলা হিসেবে বলা হচ্ছে। কারও দ্বারা প্রভাবিত হয়ে হত্যার ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে আরও তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিছানাভর্তি টাকা, বিলাসবহুল গাড়ি ও সোনাদানা মিলল পুলিশ কর্মকর্তার ঘরে

রাকসুর ৮ কেন্দ্রের ফল: ভিপি পদে প্রায় চার গুণ ভোটে এগিয়ে শিবিরের জাহিদ

রাকসুর ৯ কেন্দ্রের ফল: লড়াই জমাতে পারছেন না এষা

রাকসুর ১০ কেন্দ্রের ফল: ছাত্রদলের জিএস প্রার্থীর ভরাডুবি

মেয়েদের সব হলেই সর্বোচ্চ ভোট জাহিদ, আম্মার, সালমানের

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মার্কিন নাগরিকের ২ কোটি ৭০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
মার্কিন নাগরিকের ২ কোটি ৭০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

যুক্তরাষ্ট্রের এক নাগরিকের সঙ্গে প্রতারণা, ভারতে সোনা চোরাচালান এবং ৬০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে সিআইডি। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় এই মামলা করে।

এতে মনীন্দ্র নাথ বিশ্বাস (৫০), ওয়াহিদুজ্জামান (৫২), মো. গোলাম সারওয়ার আজাদ (৫১), মো. তরিকুল ইসলাম ওরফে রিপন ফকির (৪৯), রাজীব সরদার (৩৭) ও উজ্জ্বল কুমার সাধু (৩৮) নামের ছয়জনকে আসামি করা হয়।

আজ বুধবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় সিআইডি।

সিআইডি বলছে, প্রতারণার ঘটনা অনুসন্ধানে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে। সিআইডির অনুসন্ধানে উঠে আসে ডেবোরাহ জন্সটন রামলো ডেবি নামের এক মার্কিন নাগরিকের সঙ্গে এই প্রতারক চক্র বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ তৈরি করে। অভিযোগকারীর ভাষ্য, এই প্রতারক চক্র ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট এজেন্সির (ডিইএ) সদস্য পরিচয় দিয়ে ২ লাখ ২২ হাজার মার্কিন ডলার যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২ কোটি ৭০ লাখ ১৬ হাজার ৩৫১ টাকা আত্মসাৎ করে। প্রতারক চক্র ছলচাতুরী ও ব্ল্যাকমেলের মাধ্যমে ওই মার্কিন নাগরিককে বাধ্য করে যেন তিনি এই বিপুল অর্থ আমেরিকায় অবস্থিত বিভিন্ন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের কাছে দেন।

সিআইডি আরও জানায়, শিক্ষার্থীদের কাছে টাকা পৌঁছে দেওয়ার পর বাংলাদেশ থেকে ওই সব শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের কাছ থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা তাঁদের নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা গ্রহণ করে। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা সংঘবদ্ধ প্রতারণা ছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে হুন্ডি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে আইনক্স ফ্যাশন, ভাই ভাই এন্টারপ্রাইজ, জামান এন্টারপ্রাইজ ও নোহা এন্টারপ্রাইজ।

মার্কিন নাগরিকের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করতে গিয়ে সিআইডি জানতে পারে চক্রটি সোনা চোরাচালানের সঙ্গেও জড়িত। তারা বিশেষ যোগাযোগের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা ব্যক্তিদের কাছ থেকে এবং ঢাকার তাঁতীবাজারসহ অন্যান্য স্থানের বিভিন্ন দোকান থেকে ভাঙারি সোনা সংগ্রহ করে তা গলিয়ে পাকা সোনার বার আকারে রূপান্তরিত করে দীর্ঘদিন ধরে পাচার করে আসছে। এসব সোনার বার মূলত সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচার করা হয় বলে সিআইডির দাবি।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা প্রায় ৬০৮ কোটি ৩৩ লাখ ৩৩ হাজার টাকা হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করে ভোগবিলাস, অর্থ পাচারসহ নামে-বেনামে সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। এসব অপরাধ মানি লন্ডারিং আইনে হওয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করেছে সিআইডি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিছানাভর্তি টাকা, বিলাসবহুল গাড়ি ও সোনাদানা মিলল পুলিশ কর্মকর্তার ঘরে

রাকসুর ৮ কেন্দ্রের ফল: ভিপি পদে প্রায় চার গুণ ভোটে এগিয়ে শিবিরের জাহিদ

রাকসুর ৯ কেন্দ্রের ফল: লড়াই জমাতে পারছেন না এষা

রাকসুর ১০ কেন্দ্রের ফল: ছাত্রদলের জিএস প্রার্থীর ভরাডুবি

মেয়েদের সব হলেই সর্বোচ্চ ভোট জাহিদ, আম্মার, সালমানের

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কোরআন ছুঁয়ে শপথ করিয়ে ২২ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় চক্র: পিবিআই

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
গ্রেপ্তার মাহবুবুর রহমান ওরফে বাবু, আল-আমিন ওরফে রফিকুল ইসলাম, রাশেদুল ইসলাম ওরফে রাকিব, মো. মাসুদ খান। ছবি: পিবিআই
গ্রেপ্তার মাহবুবুর রহমান ওরফে বাবু, আল-আমিন ওরফে রফিকুল ইসলাম, রাশেদুল ইসলাম ওরফে রাকিব, মো. মাসুদ খান। ছবি: পিবিআই

ঢাকার পল্লবীতে অভিনব কায়দায় প্রতারণার অভিযোগে একটি সংঘবদ্ধ চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। চাকরির লোভ দেখিয়ে ও ব্যবসায়িক অংশীদারির আশ্বাস দিয়ে কোরআন ছুঁয়ে শপথ করিয়ে কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নিত চক্রটি।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মাহবুবুর রহমান ওরফে বাবু, আল-আমিন ওরফে রফিকুল ইসলাম, রাশেদুল ইসলাম ওরফে রাকিব, মো. মাসুদ খান ও বিলকিস। পিবিআইয়ের অভিযানে উদ্ধার করা হয়েছে ৭০ লাখ টাকা, একটি মাইক্রোবাস, বিলাসবহুল ব্র্যান্ডের ঘড়ি, চেকবই, চুক্তিপত্র ও মোবাইল ফোন।

আজ সোমবার আগারগাঁওয়ের পিবিআই ঢাকা মেট্রোর (উত্তর) কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত ডিআইজি মো. এনায়েত হোসেন মান্নান।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে এনায়েত হোসেন মান্নান বলেন, ভুক্তভোগী অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা মিজানুর রহমান একটি চাকরির বিজ্ঞাপন দেখে প্রতারকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে তাঁকে কলাবাগানের একটি বাসায় ডেকে নিয়ে ‘ভাই ভাই’ পার্টনারশিপের নাটক সাজিয়ে কোরআন হাতে শপথ করানো হয়। এরপর ২২ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি।

চক্রটি নিজেদের বড় ব্যবসায়ী পরিচয়ে অবসরপ্রাপ্তদের টার্গেট করে ঘন ঘন ঠিকানা বদল করে নতুন নতুন অফিস ভাড়া নিত। তারা বিলাসী ঘড়ি আমদানি-রপ্তানির গল্প শোনাত এবং নাটকীয়ভাবে বিদেশি ক্রেতা সেজে ভুয়া চেক হস্তান্তর করত। বিশ্বাস অর্জনের পর মোটা অঙ্কের অর্থ নিয়ে পালিয়ে যেত। আর নারী সদস্য বিলকিস বাসা ভাড়া নেওয়া থেকে শুরু করে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে বিশ্বাস অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতেন।

পিবিআই জানিয়েছে, চক্রটির বিরুদ্ধে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় একাধিক মামলা রয়েছে এবং তারা গত তিন মাসে ৫০টিরও বেশি মোবাইল ও শতাধিক সিম ব্যবহার করেছে। সাধারণ মানুষকে এ ধরনের প্রলোভনে না পড়ার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিছানাভর্তি টাকা, বিলাসবহুল গাড়ি ও সোনাদানা মিলল পুলিশ কর্মকর্তার ঘরে

রাকসুর ৮ কেন্দ্রের ফল: ভিপি পদে প্রায় চার গুণ ভোটে এগিয়ে শিবিরের জাহিদ

রাকসুর ৯ কেন্দ্রের ফল: লড়াই জমাতে পারছেন না এষা

রাকসুর ১০ কেন্দ্রের ফল: ছাত্রদলের জিএস প্রার্থীর ভরাডুবি

মেয়েদের সব হলেই সর্বোচ্চ ভোট জাহিদ, আম্মার, সালমানের

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত