Ajker Patrika

অনিল আম্বানির ‘ঋণ জালিয়াতির’ বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিচ্ছে আরেক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০: ৩১
অনিল আম্বানি। ছবি: সংগৃহীত
অনিল আম্বানি। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক, ব্যাংক অব বরোদা, রিলায়েন্স কমিউনিকেশনস লিমিটেড (আরকম) এবং এর সাবেক পরিচালক অনিল আম্বানির ঋণগুলোকে ‘জালিয়াতি’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। পুঁজিবাজার কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থিত একটি নথি থেকে এ তথ্য সামনে এসেছে। এই শ্রেণীকরণ আরকমের করপোরেট ইনসলভেন্সি রেজুলেশন প্রক্রিয়ায় (সিআইআরপি) প্রবেশের আগে নেওয়া ঋণের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে জানানো হয়েছে।

একসময়ের বিখ্যাত এই টেলিকম সংস্থা এবং এর সাবেক পরিচালকের চলমান আর্থিক জটিলতায় এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বর্তমানে ইনসলভেন্সি অ্যান্ড ব্যাংক্রাপসি কোড (আইবিসি), ২০১৬-এর অধীনে সিআইআরপির মধ্য দিয়ে যাওয়া আরকম জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট ঋণগুলো তাদের দেউলিয়া প্রক্রিয়া শুরুর আগের সময়ের। কোম্পানিটির দাবি, আইবিসির অধীনে একটি সমাধান পরিকল্পনা বা অবসায়নের মাধ্যমে এই ঋণ নিষ্পত্তি করা উচিত। আরকম বর্তমানে একজন রেজুলেশন পেশাদার, আনিস নিরঞ্জন নানাবতীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। উল্লেখ্য, অনিল আম্বানি এখন আর কোম্পানির পরিচালক নন।

ব্যাংক অব বরোদার এই পদক্ষেপের বিষয়ে আরকম আইনি পরামর্শ নিচ্ছে। কোম্পানিটি আরও জানিয়েছে, সিআইআরপি চলাকালীন কোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা সালিশি প্যানেলে তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা বা কার্যক্রম শুরু বা চালিয়ে যাওয়া থেকে তারা সুরক্ষিত থাকবে। এই সুরক্ষাব্যবস্থা কোনো রায়, ডিক্রি বা আদেশ বাস্তবায়ন থেকেও কোম্পানিকে রক্ষা করবে। একটি সমাধান পরিকল্পনা ইতিমধ্যে কমিটির ঋণদাতাদের দ্বারা অনুমোদিত হয়েছে এবং বর্তমানে ন্যাশনাল কোম্পানি ল ট্রাইব্যুনালের (এনসিএলটি) অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।

এ ঘটনা অনিল আম্বানির গ্রুপ সত্তাগুলোর সঙ্গে জড়িত কথিত ঋণ জালিয়াতির বিষয়ে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) চলমান তদন্তের মধ্যেই ঘটল। জানা গেছে, ইডি প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকার কথিত জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত রিলায়েন্স হাউজিং ফাইন্যান্স, আরকম এবং রিলায়েন্স কমার্শিয়াল ফাইন্যান্সে প্রদত্ত ঋণ সম্পর্কে ১২-১৩টি ব্যাংকের কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য চেয়েছে।

ব্যাংক অব বরোদা জানিয়েছে, আইন অনুযায়ী তারা ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকসহ (আরবিআই) বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের কাছে এই জালিয়াতি শ্রেণীকরণের প্রতিবেদন জমা দেবে। এটি আরবিআইয়ের বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং সর্বভারতীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে জালিয়াতির ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার ওপর ‘মাস্টার ডিরেকশনস’ মেনে করা হবে।

এর আগে গত জুনে দেশের বৃহত্তম ঋণদাতা স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (এসবিআই) আরকমের ঋণ হিসাবগুলোকে ‘জালিয়াতি’ হিসেবে চিহ্নিত করে। এরপর গত ২৪ আগস্ট ব্যাংক অব ইন্ডিয়াও একই ধরনের পদক্ষেপ নেয়। ব্যাংক অব ইন্ডিয়াও আরকমের ঋণ হিসাবকে জালিয়াতি হিসেবে শ্রেণীকরণ করে এবং তহবিল আত্মসাৎ ও ঋণের শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে এর সাবেক পরিচালক অনিল আম্বানির নাম উল্লেখ করে।

এই পরিস্থিতি উন্মোচিত হতে থাকলে, এটি আরকমের চলমান দেউলিয়া প্রক্রিয়ার ওপর কী প্রভাব ফেলবে এবং ভারতীয় ব্যাংকিং খাতের অনাদায়ি সম্পদ (এনপিএ) মোকাবিলার প্রচেষ্টার জন্য এর ব্যাপক প্রভাব কী হবে, তা দেখার বিষয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত