রেজাউর রহিম, ঢাকা

পোশাক পণ্যের বৈশ্বিক বাজারের আকার ৭০০ বিলিয়ন (৭০ হাজার কোটি) ডলারের। এর মধ্যে বাংলাদেশের দখলে আছে ৩ হাজার কোটি ডলারের কম। করোনা পরিস্থিতিতে এই রপ্তানি বাণিজ্য বড় ধাক্কা খেয়েছে। আগে চীনের পরই একক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান থাকলেও এখন সে অবস্থান ভিয়েতনামের দখলে। এ অবস্থায় পোশাক রপ্তানিতে নিজের অবস্থান ধরে রাখতে হলে বিকল্প আমদানি উৎস ও রপ্তানি গন্তব্য খোঁজার কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
করোনা পরিস্থিতির কারণে সব দেশেরই অর্থনীতি বড় ধাক্কা খেয়েছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। পরিস্থিতি সামলাতে দেশের প্রধান রপ্তানি খাত হিসেবে তৈরি পোশাক শিল্পে প্রণোদনাও দেওয়া হয়েছিল। তারপরও গত বছর নিজের অবস্থান হারায় বাংলাদেশ। করোনায় সবাই যখন পোশাক রপ্তানি নিয়ে ধুঁকেছে, তখন ভিয়েতনাম পোশাক পণ্যের বাজারে নিজেদের হিস্যা বাড়িয়েছে। পণ্য, আমদানি উৎস ও রপ্তানি গন্তব্যে বৈচিত্র্য থাকার কারণেই দেশটি এই খাতে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। এর ঠিক বিপরীত অবস্থা বাংলাদেশের।
বাংলাদেশের পণ্য ও সেবা রপ্তানি থেকে আয় এখনো কিছু দেশ ও অঞ্চলে বিশেষ বাণিজ্যিক সুবিধা প্রাপ্তির ওপর নির্ভরশীল। প্রতি বছর দেশের পণ্য ও সেবা রপ্তানির ৬০ শতাংশই হয় ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোতে, যেখানে বাংলাদেশ জিএসপি সুবিধা পায়। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র ২০০৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানিতে কোটা সুবিধা দিত। পরে তা বাতিল হলে অগ্রাধিকার বাণিজ্য সুবিধা (জিএসপি) দিত। কিন্তু বর্তমানে তাও বন্ধ। এ নিয়ে নানা পর্যায়ে আলোচনা হলেও এখনো কোনো ফল আসেনি।
দেশের মোট রপ্তানির বড় অংশই তৈরি পোশাক পণ্য। দীর্ঘদিন এ ক্ষেত্রে দ্বিতীয় অবস্থান ধরে রাখলেও গত বছর এক ধাপ নেমে যায়। দ্বিতীয় অবস্থানে চলে আসে ভিয়েতনাম। এই অবনমনের কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একই বাজারের ওপর অতিনির্ভরশীলতার কথা। একই সঙ্গে একক দেশ হিসেবে মোট পোশাক রপ্তানির বাজারে বাংলাদেশের হিস্যা কম থাকাকেও কারণ হিসেবে দেখছেন তাঁরা।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০ সালে চীন সর্বোচ্চ ১৪ হাজার ২০০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করে প্রথম অবস্থানে রয়েছে। মোট বৈশ্বিক পোশাক রপ্তানির প্রায় ৩১ দশমিক ৬ শতাংশ ছিল চীনের। ৩ হাজার ৮০০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করে ভিয়েতনামের অবস্থান দ্বিতীয়। আর বাংলাদেশ রপ্তানি করেছে ২ হাজার ৮০০ কোটি ডলারের পণ্য। ফলে শীর্ষ অবস্থানের সঙ্গে তফাৎটি বেশ স্পষ্ট। এ অবস্থায় নিজেদের অবস্থান ফিরে পেতে বাংলাদেশকে ইউরোপের বাজারের দিকেই তাকাতে হচ্ছে। এ লক্ষ্যে পোশাক শিল্প মালিকদের পক্ষে এই কয়েক দিন আগেই ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যকে জিএসপি প্লাস সুবিধা দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়। ইউরোপীয় কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ইইউয়ের পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তাবিষয়ক হাই রিপ্রেজেনটেটিভ জোসেপ বররেল আশ্বস্তও করেন। কিন্তু সংশয় কাটেনি।
বাংলাদেশ ইইউভুক্ত দেশগুলোতে এভরিথিং বাট নট আর্মস (ইবিএ) স্কিমের আওতায় ২০২৯ সাল পর্যন্ত শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা পাওয়ার কথা। তবে ইইউ ২০২৩ সালের মধ্যে নতুন জিএসপি প্লাস নীতি প্রণয়ন করছে। এটি কার্যকর হলে বাংলাদেশের জন্য ইবিএ সুবিধা অব্যাহত না থাকারও শঙ্কা রয়েছে। এখনো এ নিয়ে সুস্পষ্ট কোনো আশ্বাস পাওয়া যায়নি। যদিও বিশ্বের আটটি দেশ এরই মধ্যে এই সুবিধা পাচ্ছে, যার মধ্যে প্রতিবেশী পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কাও রয়েছে।
জিএসপি প্লাস পেতে কী চাই
জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে বাংলাদেশকে বেশ কয়েকটি শর্ত পরিপালন করতে হবে। শর্তের শুরুতেই রয়েছে অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচক পূরণের বিষয়টি। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় যে বিষয়টি বাংলাদেশকে ভাবাচ্ছে, তা হলো ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ। উদাহরণ হিসেবে সুতার কথা বলা যায়। শর্ত অনুযায়ী, মোট পোশাক রপ্তানির ৮০ শতাংশ স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সুতা দ্বারা তৈরি হতে হবে। নিট পোশাকের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এই শর্ত পূরণ করলেও ওভেন পোশাকের ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে। এ ক্ষেত্রে এ হার মাত্র ৫০ শতাংশ। বাকি ৫০ শতাংশ আসছে আমদানি উৎস থেকে।
জিএসপি প্লাসের শর্ত অনুযায়ী, একটি দেশের শীর্ষ সাতটি পণ্যের মোট রপ্তানিমূল্য জিএসপির আওতায় রপ্তানি করা পণ্যের মোট মূল্যের ৭৫ শতাংশ হতে হবে। বর্তমানে বাংলাদেশের মোট রপ্তানি আয়ের ৯৫ শতাংশই আসছে জিএসপির আওতায় পণ্য রপ্তানি থেকে। জিএসপি প্লাস পাওয়ার ক্ষেত্রে এ সূচকে ইতিবাচক অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।
জিএসপি প্লাসের জন্য আরেকটি শর্তে বলা হচ্ছে, ইইউ থেকে এলডিসির যেসব দেশ জিএসপি সুবিধা পায়, তার ৭ দশমিক ৪ শতাংশের বেশি হিস্যা হলে ওই দেশ জিএসপি প্লাসের জন্য যোগ্য হবে না। ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশের হিস্যা বর্তমানে প্রায় ২৬ শতাংশ। ফলে এ ক্ষেত্রে নেতিবাচক অবস্থানে আছে বাংলাদেশ।
রয়েছে আরও সংকট
এ তো গেল জিএসপি প্লাসের শর্ত ও এর বিপরীতে বাংলাদেশের অবস্থানের বিষয়টি। সঙ্গে রয়েছে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশের বেরিয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গটি। স্বল্পোন্নত বা এলডিসি দেশের তালিকা থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ বেরিয়ে নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশের তালিকায় প্রবেশ করেছে। যদিও এই তালিকা থেকে পুরোপুরি বের হতে বাংলাদেশের ২০২৬ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এই উত্তরণ বেশ কিছু সুবিধাও হারানোর শঙ্কা তৈরি করেছে। বিশেষত এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর জন্য যে শুল্ক ও কোটামুক্ত বাজার সুবিধা, তা আর পাওয়া যাবে না। যদিও ইইউ ২০২৯ সাল পর্যন্ত এই সুবিধা দেওয়ার কথা বলছে। তবে তা তারা দেবে বিদ্যমান জিএসপি সুবিধার আওতায়। ২০২৩ সাল থেকে শুরু হতে যাওয়া জিএসপি প্লাস সুবিধার আওতায় ঢুকতে না পারলে আর মাত্র ৭ বছর এই সুবিধা পাবে বাংলাদেশ।
কথা হলো ইউরোপের বাজারের দিকে দেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি খাতটি কেন এভাবে তাকিয়ে আছে? কারণ, এটিই একমাত্র না হলেও বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প রপ্তানির সবচেয়ে বড় গন্তব্য। তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ এবং এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইএবি) সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের মোট রপ্তানি করা পোশাকের ৬২ শতাংশ ও মোট রপ্তানির ৫৬ শতাংশের গন্তব্য ইইউ ও যুক্তরাজ্য। ফলে অঞ্চলটিতে চলমান শুল্ক ও কোটামুক্ত বাণিজ্যিক সুবিধা না থাকলে তা রপ্তানি বাণিজ্য এবং প্রতিযোগী সক্ষমতার ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে।
বিকল্প প্রয়োজন
এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে শীর্ষস্থানীয় পোশাক রপ্তানিকারক দেশগুলোর তালিকায় থাকতে হলে বাংলাদেশকে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। আর এ ক্ষেত্রে কোনো একটি নির্দিষ্ট বাজারের ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর ওপর গুরুত্বারোপ করছেন তাঁরা। একই সঙ্গে আমদানি উৎসের ক্ষেত্রেও বৈচিত্র্য আনার পরামর্শ দিচ্ছেন খাতটির নেতারা।
এ বিষয়ে ইএবি সভাপতি ও সংসদ সদস্য সালাম মুর্শেদী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘করোনা মহামারির কারণে আমরা অনেক পিছিয়ে গেছি। সামনের দিনগুলোতে আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানি প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে এবং বাজার সম্প্রসারণে আমাদের এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। পাশাপাশি বাড়াতে হবে সক্ষমতা। এ ক্ষেত্রে বিকল্প আমদানি উৎস ও রপ্তানি গন্তব্য খোঁজার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘কাঁচামাল আমদানির জন্য আমাদের চীন, ভিয়েতনামের বিকল্প উৎস খুঁজতে হবে। এ ছাড়া রপ্তানি বৃদ্ধিতে বিভিন্ন দেশে থাকা দূতাবাসগুলোকে নতুন বাজার সৃষ্টির কাজে লাগাতে হবে।’
তবে আমদানি উৎসের বিকল্প খোঁজার পাশাপাশি দেশেই তৈরি পোশাক উৎপাদনের জন্য দরকারি কাঁচামাল উৎপাদনের ওপর জোর দিলেন বিজিএমইএর এ সাবেক সভাপতি। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের বেশির ভাগ রপ্তানি পণ্য, বিশেষ করে তৈরি পোশাক উৎপাদনে ব্যবহৃত কাঁচামালের অধিকাংশই আমদানিনির্ভর। রপ্তানি পণ্য উৎপাদনে স্থানীয় কাঁচামাল ব্যবহারের বিষয়টির ওপর আমাদের জোর দিতে হবে। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি আয়ের প্রায় ৪০ শতাংশই কাঁচামাল আমদানির ব্যয় মেটাতে চলে যায়। এতে অর্থনীতিতে এই খাতের মূল্য সংযোজনের হার তুলনামূলকভাবে কম হচ্ছে।’
দেশেই কাঁচামাল তৈরির বিষয়টি আবার জিএসপি প্লাস সুবিধা পাওয়ার শর্তের মধ্যে রয়েছে। যে অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচকের কথা এতে রয়েছে, সেখানে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত কাঁচামালের বিষয়টি বেশ গুরুত্বের সঙ্গে আছে। ফলে এ ক্ষেত্রে মনোযোগ দিলে সাত বছর পর জিএসপি প্লাস সুবিধা পাওয়া-না পাওয়া নিয়ে যে অনিশ্চয়তা রয়েছে, তাও অনেকটা কেটে যাবে।
একই সঙ্গে ইউরোপের বাজারের পাশাপাশি নতুন বাজার খোঁজার ওপরও গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলছেন ব্যবসায়ী নতারা। পোশাক শিল্প উদ্যোক্তারা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্য ও লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর বাজারের দিকে মনোযোগ দেওয়ার কথা বলছেন। এ ক্ষেত্রে নীতি সহায়তার পাশাপাশি জোরালো কূটনৈতিক তৎপরতার কোনো বিকল্প নেই বলেও মত তাঁদের।
এ বিষয়ে বিজিএমইএর সহসভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম বলেন, ইইউভুক্ত দেশগুলোতে জিএসপি প্লাস সুবিধা প্রাপ্তির প্রচেষ্টার পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্য ও লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির ওপর জোর দিতে হবে। তিনি বলেন, বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে অবশ্যই আমাদের প্রযুক্তিগত উন্নয়ন করতে হবে। কাঁচামাল ও যন্ত্রাংশের জন্য চীনসহ প্রতিযোগী দেশগুলোর ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাতে হবে।
এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে তবে কোন দেশগুলোর দিকে নজর দিতে হবে? শহীদুল্লাহ আজিম বলেন, বাজার সম্প্রসারণ ও নতুন বাজার সৃষ্টির জন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো এবং ব্রাজিল, মেক্সিকো, আর্জেন্টিনা, চিলির মতো লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক পর্যায়ে তৎপরতা জোরদার করতে হবে। এসব দেশে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এসব দেশের সঙ্গে ‘অ্যাপারেল ডিপ্লোমেসি’ চালাতে হবে। এ জন্য বিভিন্ন দেশের দূতাবাসে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, সাবেক রাষ্ট্রদূত, যারা বাংলাদেশে ছিলেন, তাঁদের মাধ্যমে দেশের পোশাক খাতের অবস্থান তুলে ধরাও জরুরি। পাশাপাশি জিএসপি প্লাসের নতুন নীতিমালায় যাতে রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে জন্য বাংলাদেশকে এখন থেকেই কূটনৈতিকভাবে ইইউর সঙ্গে দেন-দরবার জোরালো করতে হবে। একই সঙ্গে ইউরোপের বাজারে স্থায়ীভাবে শুল্কমুক্ত সুবিধা পেতে ইইউভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির দিকে যেতে হবে।

পোশাক পণ্যের বৈশ্বিক বাজারের আকার ৭০০ বিলিয়ন (৭০ হাজার কোটি) ডলারের। এর মধ্যে বাংলাদেশের দখলে আছে ৩ হাজার কোটি ডলারের কম। করোনা পরিস্থিতিতে এই রপ্তানি বাণিজ্য বড় ধাক্কা খেয়েছে। আগে চীনের পরই একক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান থাকলেও এখন সে অবস্থান ভিয়েতনামের দখলে। এ অবস্থায় পোশাক রপ্তানিতে নিজের অবস্থান ধরে রাখতে হলে বিকল্প আমদানি উৎস ও রপ্তানি গন্তব্য খোঁজার কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
করোনা পরিস্থিতির কারণে সব দেশেরই অর্থনীতি বড় ধাক্কা খেয়েছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। পরিস্থিতি সামলাতে দেশের প্রধান রপ্তানি খাত হিসেবে তৈরি পোশাক শিল্পে প্রণোদনাও দেওয়া হয়েছিল। তারপরও গত বছর নিজের অবস্থান হারায় বাংলাদেশ। করোনায় সবাই যখন পোশাক রপ্তানি নিয়ে ধুঁকেছে, তখন ভিয়েতনাম পোশাক পণ্যের বাজারে নিজেদের হিস্যা বাড়িয়েছে। পণ্য, আমদানি উৎস ও রপ্তানি গন্তব্যে বৈচিত্র্য থাকার কারণেই দেশটি এই খাতে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। এর ঠিক বিপরীত অবস্থা বাংলাদেশের।
বাংলাদেশের পণ্য ও সেবা রপ্তানি থেকে আয় এখনো কিছু দেশ ও অঞ্চলে বিশেষ বাণিজ্যিক সুবিধা প্রাপ্তির ওপর নির্ভরশীল। প্রতি বছর দেশের পণ্য ও সেবা রপ্তানির ৬০ শতাংশই হয় ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোতে, যেখানে বাংলাদেশ জিএসপি সুবিধা পায়। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র ২০০৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানিতে কোটা সুবিধা দিত। পরে তা বাতিল হলে অগ্রাধিকার বাণিজ্য সুবিধা (জিএসপি) দিত। কিন্তু বর্তমানে তাও বন্ধ। এ নিয়ে নানা পর্যায়ে আলোচনা হলেও এখনো কোনো ফল আসেনি।
দেশের মোট রপ্তানির বড় অংশই তৈরি পোশাক পণ্য। দীর্ঘদিন এ ক্ষেত্রে দ্বিতীয় অবস্থান ধরে রাখলেও গত বছর এক ধাপ নেমে যায়। দ্বিতীয় অবস্থানে চলে আসে ভিয়েতনাম। এই অবনমনের কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একই বাজারের ওপর অতিনির্ভরশীলতার কথা। একই সঙ্গে একক দেশ হিসেবে মোট পোশাক রপ্তানির বাজারে বাংলাদেশের হিস্যা কম থাকাকেও কারণ হিসেবে দেখছেন তাঁরা।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০ সালে চীন সর্বোচ্চ ১৪ হাজার ২০০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করে প্রথম অবস্থানে রয়েছে। মোট বৈশ্বিক পোশাক রপ্তানির প্রায় ৩১ দশমিক ৬ শতাংশ ছিল চীনের। ৩ হাজার ৮০০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করে ভিয়েতনামের অবস্থান দ্বিতীয়। আর বাংলাদেশ রপ্তানি করেছে ২ হাজার ৮০০ কোটি ডলারের পণ্য। ফলে শীর্ষ অবস্থানের সঙ্গে তফাৎটি বেশ স্পষ্ট। এ অবস্থায় নিজেদের অবস্থান ফিরে পেতে বাংলাদেশকে ইউরোপের বাজারের দিকেই তাকাতে হচ্ছে। এ লক্ষ্যে পোশাক শিল্প মালিকদের পক্ষে এই কয়েক দিন আগেই ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যকে জিএসপি প্লাস সুবিধা দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়। ইউরোপীয় কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ইইউয়ের পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তাবিষয়ক হাই রিপ্রেজেনটেটিভ জোসেপ বররেল আশ্বস্তও করেন। কিন্তু সংশয় কাটেনি।
বাংলাদেশ ইইউভুক্ত দেশগুলোতে এভরিথিং বাট নট আর্মস (ইবিএ) স্কিমের আওতায় ২০২৯ সাল পর্যন্ত শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা পাওয়ার কথা। তবে ইইউ ২০২৩ সালের মধ্যে নতুন জিএসপি প্লাস নীতি প্রণয়ন করছে। এটি কার্যকর হলে বাংলাদেশের জন্য ইবিএ সুবিধা অব্যাহত না থাকারও শঙ্কা রয়েছে। এখনো এ নিয়ে সুস্পষ্ট কোনো আশ্বাস পাওয়া যায়নি। যদিও বিশ্বের আটটি দেশ এরই মধ্যে এই সুবিধা পাচ্ছে, যার মধ্যে প্রতিবেশী পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কাও রয়েছে।
জিএসপি প্লাস পেতে কী চাই
জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে বাংলাদেশকে বেশ কয়েকটি শর্ত পরিপালন করতে হবে। শর্তের শুরুতেই রয়েছে অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচক পূরণের বিষয়টি। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় যে বিষয়টি বাংলাদেশকে ভাবাচ্ছে, তা হলো ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ। উদাহরণ হিসেবে সুতার কথা বলা যায়। শর্ত অনুযায়ী, মোট পোশাক রপ্তানির ৮০ শতাংশ স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সুতা দ্বারা তৈরি হতে হবে। নিট পোশাকের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এই শর্ত পূরণ করলেও ওভেন পোশাকের ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে। এ ক্ষেত্রে এ হার মাত্র ৫০ শতাংশ। বাকি ৫০ শতাংশ আসছে আমদানি উৎস থেকে।
জিএসপি প্লাসের শর্ত অনুযায়ী, একটি দেশের শীর্ষ সাতটি পণ্যের মোট রপ্তানিমূল্য জিএসপির আওতায় রপ্তানি করা পণ্যের মোট মূল্যের ৭৫ শতাংশ হতে হবে। বর্তমানে বাংলাদেশের মোট রপ্তানি আয়ের ৯৫ শতাংশই আসছে জিএসপির আওতায় পণ্য রপ্তানি থেকে। জিএসপি প্লাস পাওয়ার ক্ষেত্রে এ সূচকে ইতিবাচক অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।
জিএসপি প্লাসের জন্য আরেকটি শর্তে বলা হচ্ছে, ইইউ থেকে এলডিসির যেসব দেশ জিএসপি সুবিধা পায়, তার ৭ দশমিক ৪ শতাংশের বেশি হিস্যা হলে ওই দেশ জিএসপি প্লাসের জন্য যোগ্য হবে না। ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশের হিস্যা বর্তমানে প্রায় ২৬ শতাংশ। ফলে এ ক্ষেত্রে নেতিবাচক অবস্থানে আছে বাংলাদেশ।
রয়েছে আরও সংকট
এ তো গেল জিএসপি প্লাসের শর্ত ও এর বিপরীতে বাংলাদেশের অবস্থানের বিষয়টি। সঙ্গে রয়েছে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশের বেরিয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গটি। স্বল্পোন্নত বা এলডিসি দেশের তালিকা থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ বেরিয়ে নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশের তালিকায় প্রবেশ করেছে। যদিও এই তালিকা থেকে পুরোপুরি বের হতে বাংলাদেশের ২০২৬ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এই উত্তরণ বেশ কিছু সুবিধাও হারানোর শঙ্কা তৈরি করেছে। বিশেষত এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর জন্য যে শুল্ক ও কোটামুক্ত বাজার সুবিধা, তা আর পাওয়া যাবে না। যদিও ইইউ ২০২৯ সাল পর্যন্ত এই সুবিধা দেওয়ার কথা বলছে। তবে তা তারা দেবে বিদ্যমান জিএসপি সুবিধার আওতায়। ২০২৩ সাল থেকে শুরু হতে যাওয়া জিএসপি প্লাস সুবিধার আওতায় ঢুকতে না পারলে আর মাত্র ৭ বছর এই সুবিধা পাবে বাংলাদেশ।
কথা হলো ইউরোপের বাজারের দিকে দেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি খাতটি কেন এভাবে তাকিয়ে আছে? কারণ, এটিই একমাত্র না হলেও বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প রপ্তানির সবচেয়ে বড় গন্তব্য। তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ এবং এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইএবি) সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের মোট রপ্তানি করা পোশাকের ৬২ শতাংশ ও মোট রপ্তানির ৫৬ শতাংশের গন্তব্য ইইউ ও যুক্তরাজ্য। ফলে অঞ্চলটিতে চলমান শুল্ক ও কোটামুক্ত বাণিজ্যিক সুবিধা না থাকলে তা রপ্তানি বাণিজ্য এবং প্রতিযোগী সক্ষমতার ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে।
বিকল্প প্রয়োজন
এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে শীর্ষস্থানীয় পোশাক রপ্তানিকারক দেশগুলোর তালিকায় থাকতে হলে বাংলাদেশকে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। আর এ ক্ষেত্রে কোনো একটি নির্দিষ্ট বাজারের ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর ওপর গুরুত্বারোপ করছেন তাঁরা। একই সঙ্গে আমদানি উৎসের ক্ষেত্রেও বৈচিত্র্য আনার পরামর্শ দিচ্ছেন খাতটির নেতারা।
এ বিষয়ে ইএবি সভাপতি ও সংসদ সদস্য সালাম মুর্শেদী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘করোনা মহামারির কারণে আমরা অনেক পিছিয়ে গেছি। সামনের দিনগুলোতে আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানি প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে এবং বাজার সম্প্রসারণে আমাদের এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। পাশাপাশি বাড়াতে হবে সক্ষমতা। এ ক্ষেত্রে বিকল্প আমদানি উৎস ও রপ্তানি গন্তব্য খোঁজার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘কাঁচামাল আমদানির জন্য আমাদের চীন, ভিয়েতনামের বিকল্প উৎস খুঁজতে হবে। এ ছাড়া রপ্তানি বৃদ্ধিতে বিভিন্ন দেশে থাকা দূতাবাসগুলোকে নতুন বাজার সৃষ্টির কাজে লাগাতে হবে।’
তবে আমদানি উৎসের বিকল্প খোঁজার পাশাপাশি দেশেই তৈরি পোশাক উৎপাদনের জন্য দরকারি কাঁচামাল উৎপাদনের ওপর জোর দিলেন বিজিএমইএর এ সাবেক সভাপতি। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের বেশির ভাগ রপ্তানি পণ্য, বিশেষ করে তৈরি পোশাক উৎপাদনে ব্যবহৃত কাঁচামালের অধিকাংশই আমদানিনির্ভর। রপ্তানি পণ্য উৎপাদনে স্থানীয় কাঁচামাল ব্যবহারের বিষয়টির ওপর আমাদের জোর দিতে হবে। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি আয়ের প্রায় ৪০ শতাংশই কাঁচামাল আমদানির ব্যয় মেটাতে চলে যায়। এতে অর্থনীতিতে এই খাতের মূল্য সংযোজনের হার তুলনামূলকভাবে কম হচ্ছে।’
দেশেই কাঁচামাল তৈরির বিষয়টি আবার জিএসপি প্লাস সুবিধা পাওয়ার শর্তের মধ্যে রয়েছে। যে অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচকের কথা এতে রয়েছে, সেখানে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত কাঁচামালের বিষয়টি বেশ গুরুত্বের সঙ্গে আছে। ফলে এ ক্ষেত্রে মনোযোগ দিলে সাত বছর পর জিএসপি প্লাস সুবিধা পাওয়া-না পাওয়া নিয়ে যে অনিশ্চয়তা রয়েছে, তাও অনেকটা কেটে যাবে।
একই সঙ্গে ইউরোপের বাজারের পাশাপাশি নতুন বাজার খোঁজার ওপরও গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলছেন ব্যবসায়ী নতারা। পোশাক শিল্প উদ্যোক্তারা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্য ও লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর বাজারের দিকে মনোযোগ দেওয়ার কথা বলছেন। এ ক্ষেত্রে নীতি সহায়তার পাশাপাশি জোরালো কূটনৈতিক তৎপরতার কোনো বিকল্প নেই বলেও মত তাঁদের।
এ বিষয়ে বিজিএমইএর সহসভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম বলেন, ইইউভুক্ত দেশগুলোতে জিএসপি প্লাস সুবিধা প্রাপ্তির প্রচেষ্টার পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্য ও লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির ওপর জোর দিতে হবে। তিনি বলেন, বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে অবশ্যই আমাদের প্রযুক্তিগত উন্নয়ন করতে হবে। কাঁচামাল ও যন্ত্রাংশের জন্য চীনসহ প্রতিযোগী দেশগুলোর ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাতে হবে।
এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে তবে কোন দেশগুলোর দিকে নজর দিতে হবে? শহীদুল্লাহ আজিম বলেন, বাজার সম্প্রসারণ ও নতুন বাজার সৃষ্টির জন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো এবং ব্রাজিল, মেক্সিকো, আর্জেন্টিনা, চিলির মতো লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক পর্যায়ে তৎপরতা জোরদার করতে হবে। এসব দেশে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এসব দেশের সঙ্গে ‘অ্যাপারেল ডিপ্লোমেসি’ চালাতে হবে। এ জন্য বিভিন্ন দেশের দূতাবাসে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, সাবেক রাষ্ট্রদূত, যারা বাংলাদেশে ছিলেন, তাঁদের মাধ্যমে দেশের পোশাক খাতের অবস্থান তুলে ধরাও জরুরি। পাশাপাশি জিএসপি প্লাসের নতুন নীতিমালায় যাতে রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে জন্য বাংলাদেশকে এখন থেকেই কূটনৈতিকভাবে ইইউর সঙ্গে দেন-দরবার জোরালো করতে হবে। একই সঙ্গে ইউরোপের বাজারে স্থায়ীভাবে শুল্কমুক্ত সুবিধা পেতে ইইউভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির দিকে যেতে হবে।

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদ এবং তাঁর আইটি প্রতিষ্ঠান অ্যাপল সফট আইটি লিমিটেডের সব ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি)।
৯ মিনিট আগে
স্বাস্থ্য খাতের ব্যয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ। স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ জিডিপির মাত্র ১ শতাংশ এবং মাথাপিছু সরকারি ব্যয় মাত্র ১,০৭০ টাকা। দেশের প্রায় ৪৯ শতাংশ মানুষ এখনো মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত।
৮ ঘণ্টা আগে
অগ্রহায়ণের শীতের সকাল। সাইকেল ও ভ্যানের ওপরে থরে থরে সাজানো রঙিন ফুলে ভরে উঠেছে যশোরের গদখালীর বাজার। গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধা, জারবেরা, গ্লাডিওলাস, চন্দ্রমল্লিকা—ফুলের ঘ্রাণ আর দরদামের হাঁকডাকে মুখর পুরো এলাকা।
৮ ঘণ্টা আগে
দেশের ভেতরে ও বাইরে উভয় ক্ষেত্রেই আর্থিক খাতে নগদ লেনদেন ক্রমেই কমে আসছে; তার জায়গা দখল করছে প্লাস্টিক মানি। অভ্যন্তরীণ পেমেন্ট থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক সফর, অনলাইন কেনাকাটা, ব্যবসায়িক খরচ কিংবা জীবনযাত্রার প্রয়োজন—সব ক্ষেত্রেই এখন ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে লেনদেন বাড়ছে।
৯ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদ এবং তাঁর আইটি প্রতিষ্ঠান অ্যাপল সফট আইটি লিমিটেডের সব ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি)।
আজ রোববার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এনবিআরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওসমান হাদির ওপর হামলার পর যেহেতু ফয়সাল করিম মাসুদ প্রাথমিকভাবে অভিযুক্ত, সেহেতু গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তাঁর বিভিন্ন বিষয় অনুসন্ধান করবে। আমরাও তাঁর আর্থিক কোনো অপরাধ আছে কি না, সেগুলোর অনুসন্ধান করব।’
এনবিআরের ওই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘শোনা যাচ্ছে এবং অনেক আলোচনা রয়েছে যে, এই ধরনের অপরাধ সংঘটিত করার জন্য এবং দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির জন্য ভারত থেকে অনেক ফান্ডিং হচ্ছে, ফলে সে বিষয়গুলো খতিয়ে দেখার জন্য মূলত হিসাবগুলো ফ্রিজ করা হয়েছে।’
জানা গেছে, ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সদস্য।

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদ এবং তাঁর আইটি প্রতিষ্ঠান অ্যাপল সফট আইটি লিমিটেডের সব ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি)।
আজ রোববার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এনবিআরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওসমান হাদির ওপর হামলার পর যেহেতু ফয়সাল করিম মাসুদ প্রাথমিকভাবে অভিযুক্ত, সেহেতু গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তাঁর বিভিন্ন বিষয় অনুসন্ধান করবে। আমরাও তাঁর আর্থিক কোনো অপরাধ আছে কি না, সেগুলোর অনুসন্ধান করব।’
এনবিআরের ওই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘শোনা যাচ্ছে এবং অনেক আলোচনা রয়েছে যে, এই ধরনের অপরাধ সংঘটিত করার জন্য এবং দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির জন্য ভারত থেকে অনেক ফান্ডিং হচ্ছে, ফলে সে বিষয়গুলো খতিয়ে দেখার জন্য মূলত হিসাবগুলো ফ্রিজ করা হয়েছে।’
জানা গেছে, ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সদস্য।

কথা হলো ইউরোপের বাজারের দিকে দেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি খাতটি কেন এভাবে তাকিয়ে আছে? কারণ, এটিই একমাত্র না হলেও বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প রপ্তানির সবচেয়ে বড় গন্তব্য। একইভাবে রপ্তানি ক্ষেত্রে প্রতিযোগী দুই দেশ চীন ও ভিয়েতনামই রয়েছে প্রধান আমদানি উৎস হিসেবে। দুই ক্ষেত্রেই এই নির্ভরতাকে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ
২৪ অক্টোবর ২০২১
স্বাস্থ্য খাতের ব্যয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ। স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ জিডিপির মাত্র ১ শতাংশ এবং মাথাপিছু সরকারি ব্যয় মাত্র ১,০৭০ টাকা। দেশের প্রায় ৪৯ শতাংশ মানুষ এখনো মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত।
৮ ঘণ্টা আগে
অগ্রহায়ণের শীতের সকাল। সাইকেল ও ভ্যানের ওপরে থরে থরে সাজানো রঙিন ফুলে ভরে উঠেছে যশোরের গদখালীর বাজার। গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধা, জারবেরা, গ্লাডিওলাস, চন্দ্রমল্লিকা—ফুলের ঘ্রাণ আর দরদামের হাঁকডাকে মুখর পুরো এলাকা।
৮ ঘণ্টা আগে
দেশের ভেতরে ও বাইরে উভয় ক্ষেত্রেই আর্থিক খাতে নগদ লেনদেন ক্রমেই কমে আসছে; তার জায়গা দখল করছে প্লাস্টিক মানি। অভ্যন্তরীণ পেমেন্ট থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক সফর, অনলাইন কেনাকাটা, ব্যবসায়িক খরচ কিংবা জীবনযাত্রার প্রয়োজন—সব ক্ষেত্রেই এখন ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে লেনদেন বাড়ছে।
৯ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

স্বাস্থ্য খাতের ব্যয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ। স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ জিডিপির মাত্র ১ শতাংশ এবং মাথাপিছু সরকারি ব্যয় মাত্র ১,০৭০ টাকা। দেশের প্রায় ৪৯ শতাংশ মানুষ এখনো মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত। এ কারণে প্রতিবছর প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার চিকিৎসার জন্য বিদেশে গিয়ে ব্যয় করছে বাংলাদেশি রোগীরা। অথচ দেশের স্বাস্থ্যসেবার বাজার বর্তমানে প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলার এবং আগামী আট বছরে আরও ৯ বিলিয়ন ডলার বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা ২০৩৩ সালে ২৩ বিলিয়নে উন্নীত হতে পারে।
গতকাল শনিবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতে আস্থা বৃদ্ধি; মান নিয়ন্ত্রণে কৌশলগত কাঠামো নিশ্চিতকরণ’ শীর্ষক সেমিনারে উপস্থাপিত মূল প্রবন্ধে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। রাজধানীর মতিঝিলে ডিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত সভায় জাতীয় অধ্যাপক ও বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি এ কে আজাদ খান প্রধান অতিথি ছিলেন।
আলোচকেরা বলেন, অবকাঠামোর ঘাটতি, নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারে পশ্চাৎপদতা, দক্ষ মানবসম্পদের সংকট, সেবার উচ্চ ব্যয়, কার্যকর তদারকির অভাব—এসব মিলিয়েই কাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্য উন্নয়ন অর্জিত হয়নি। অধ্যাপক এ কে আজাদ খান বলেন, কিছু ক্ষেত্রে অর্জন থাকলেও সামগ্রিকভাবে দেশের স্বাস্থ্যসেবা কাঙ্ক্ষিত মানে পৌঁছায়নি। উন্নত দেশ তো দূরের কথা, পার্শ্ববর্তী দেশের তুলনায়ও বাংলাদেশ পিছিয়ে রয়েছে। তাঁর মতে, ইউনিভার্সেল হেলথকেয়ার বাস্তবায়ন বাংলাদেশের পক্ষে সম্ভব নয়, তবে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় জোর দেওয়া ছাড়া বিকল্প নেই। তিনি ব্যবস্থাপনায় উন্নয়ন ও বিকেন্দ্রীকরণের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউনাইটেড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ডিসিসিআইয়ের সাবেক সহসভাপতি মালিক তালহা ইসমাইল বারী। তিনি জানান, সীমিত বাজেট, অদক্ষ ব্যবস্থাপনা, মানের ঘাটতি, শহর-গ্রামের বৈষম্য, বাড়তি ব্যয়, দুর্বল নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা—এসব কারণেই স্বাস্থ্য খাতের চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে। যার ফলে তুলনামূলক উন্নত চিকিৎসার জন্য বিপুলসংখ্যক রোগী বিদেশমুখী হওয়ায় বছরে ৫ বিলিয়ন ডলার বাইরে চলে যাচ্ছে।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, মানসম্মত ও রোগীবান্ধব সেবা নিশ্চিতে কাঠামোগত ঘাটতি, দক্ষ জনবলস্বল্পতা, অনুমোদনহীন ক্লিনিক-ফার্মেসির বিস্তার, ভুল রোগনির্ণয়, ভুয়া ওষুধ এবং আইন প্রয়োগের দুর্বলতা জনস্বাস্থ্য আস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। স্বাস্থ্যবিমা কার্যকর না হওয়ায় ৭৪ শতাংশ ব্যয় রোগীকেই বহন করতে হয়, যা নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের জন্য বড় ঝুঁকি।
নির্ধারিত আলোচনায় অধ্যাপক সৈয়দ আতিকুল হক সরকারি হাসপাতালের মানোন্নয়নকে সর্বোচ্চ জরুরি বলে মনে করেন। ইউনিভার্সেল মেডিকেলের চেয়ারম্যান প্রীতি চক্রবর্তী স্বাস্থ্য খাতে আস্থা পুনরুদ্ধারে সরকারি-বেসরকারি সমন্বয় ও পিপিপি ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।

স্বাস্থ্য খাতের ব্যয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ। স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ জিডিপির মাত্র ১ শতাংশ এবং মাথাপিছু সরকারি ব্যয় মাত্র ১,০৭০ টাকা। দেশের প্রায় ৪৯ শতাংশ মানুষ এখনো মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত। এ কারণে প্রতিবছর প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার চিকিৎসার জন্য বিদেশে গিয়ে ব্যয় করছে বাংলাদেশি রোগীরা। অথচ দেশের স্বাস্থ্যসেবার বাজার বর্তমানে প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলার এবং আগামী আট বছরে আরও ৯ বিলিয়ন ডলার বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা ২০৩৩ সালে ২৩ বিলিয়নে উন্নীত হতে পারে।
গতকাল শনিবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতে আস্থা বৃদ্ধি; মান নিয়ন্ত্রণে কৌশলগত কাঠামো নিশ্চিতকরণ’ শীর্ষক সেমিনারে উপস্থাপিত মূল প্রবন্ধে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। রাজধানীর মতিঝিলে ডিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত সভায় জাতীয় অধ্যাপক ও বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি এ কে আজাদ খান প্রধান অতিথি ছিলেন।
আলোচকেরা বলেন, অবকাঠামোর ঘাটতি, নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারে পশ্চাৎপদতা, দক্ষ মানবসম্পদের সংকট, সেবার উচ্চ ব্যয়, কার্যকর তদারকির অভাব—এসব মিলিয়েই কাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্য উন্নয়ন অর্জিত হয়নি। অধ্যাপক এ কে আজাদ খান বলেন, কিছু ক্ষেত্রে অর্জন থাকলেও সামগ্রিকভাবে দেশের স্বাস্থ্যসেবা কাঙ্ক্ষিত মানে পৌঁছায়নি। উন্নত দেশ তো দূরের কথা, পার্শ্ববর্তী দেশের তুলনায়ও বাংলাদেশ পিছিয়ে রয়েছে। তাঁর মতে, ইউনিভার্সেল হেলথকেয়ার বাস্তবায়ন বাংলাদেশের পক্ষে সম্ভব নয়, তবে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় জোর দেওয়া ছাড়া বিকল্প নেই। তিনি ব্যবস্থাপনায় উন্নয়ন ও বিকেন্দ্রীকরণের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউনাইটেড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ডিসিসিআইয়ের সাবেক সহসভাপতি মালিক তালহা ইসমাইল বারী। তিনি জানান, সীমিত বাজেট, অদক্ষ ব্যবস্থাপনা, মানের ঘাটতি, শহর-গ্রামের বৈষম্য, বাড়তি ব্যয়, দুর্বল নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা—এসব কারণেই স্বাস্থ্য খাতের চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে। যার ফলে তুলনামূলক উন্নত চিকিৎসার জন্য বিপুলসংখ্যক রোগী বিদেশমুখী হওয়ায় বছরে ৫ বিলিয়ন ডলার বাইরে চলে যাচ্ছে।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, মানসম্মত ও রোগীবান্ধব সেবা নিশ্চিতে কাঠামোগত ঘাটতি, দক্ষ জনবলস্বল্পতা, অনুমোদনহীন ক্লিনিক-ফার্মেসির বিস্তার, ভুল রোগনির্ণয়, ভুয়া ওষুধ এবং আইন প্রয়োগের দুর্বলতা জনস্বাস্থ্য আস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। স্বাস্থ্যবিমা কার্যকর না হওয়ায় ৭৪ শতাংশ ব্যয় রোগীকেই বহন করতে হয়, যা নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের জন্য বড় ঝুঁকি।
নির্ধারিত আলোচনায় অধ্যাপক সৈয়দ আতিকুল হক সরকারি হাসপাতালের মানোন্নয়নকে সর্বোচ্চ জরুরি বলে মনে করেন। ইউনিভার্সেল মেডিকেলের চেয়ারম্যান প্রীতি চক্রবর্তী স্বাস্থ্য খাতে আস্থা পুনরুদ্ধারে সরকারি-বেসরকারি সমন্বয় ও পিপিপি ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।

কথা হলো ইউরোপের বাজারের দিকে দেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি খাতটি কেন এভাবে তাকিয়ে আছে? কারণ, এটিই একমাত্র না হলেও বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প রপ্তানির সবচেয়ে বড় গন্তব্য। একইভাবে রপ্তানি ক্ষেত্রে প্রতিযোগী দুই দেশ চীন ও ভিয়েতনামই রয়েছে প্রধান আমদানি উৎস হিসেবে। দুই ক্ষেত্রেই এই নির্ভরতাকে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ
২৪ অক্টোবর ২০২১
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদ এবং তাঁর আইটি প্রতিষ্ঠান অ্যাপল সফট আইটি লিমিটেডের সব ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি)।
৯ মিনিট আগে
অগ্রহায়ণের শীতের সকাল। সাইকেল ও ভ্যানের ওপরে থরে থরে সাজানো রঙিন ফুলে ভরে উঠেছে যশোরের গদখালীর বাজার। গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধা, জারবেরা, গ্লাডিওলাস, চন্দ্রমল্লিকা—ফুলের ঘ্রাণ আর দরদামের হাঁকডাকে মুখর পুরো এলাকা।
৮ ঘণ্টা আগে
দেশের ভেতরে ও বাইরে উভয় ক্ষেত্রেই আর্থিক খাতে নগদ লেনদেন ক্রমেই কমে আসছে; তার জায়গা দখল করছে প্লাস্টিক মানি। অভ্যন্তরীণ পেমেন্ট থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক সফর, অনলাইন কেনাকাটা, ব্যবসায়িক খরচ কিংবা জীবনযাত্রার প্রয়োজন—সব ক্ষেত্রেই এখন ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে লেনদেন বাড়ছে।
৯ ঘণ্টা আগেযশোর প্রতিনিধি

অগ্রহায়ণের শীতের সকাল। সাইকেল ও ভ্যানের ওপরে থরে থরে সাজানো রঙিন ফুলে ভরে উঠেছে যশোরের গদখালীর বাজার। গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধা, জারবেরা, গ্লাডিওলাস, চন্দ্রমল্লিকা—ফুলের ঘ্রাণ আর দরদামের হাঁকডাকে মুখর পুরো এলাকা। বুদ্ধিজীবী দিবস ও বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে ফুলের রাজধানী খ্যাত গদখালীতে গতকাল শনিবার জমে ওঠে বছরের বড় হাট।
যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের পাশে বসা এই বাজারে এদিন প্রায় ২ কোটি টাকার ফুল বেচাকেনা হয়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। চাহিদা বাড়ায় অন্যান্য দিনের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি ফুলের সরবরাহ ও কেনাবেচা হয়েছে। অতিবৃষ্টিতে চলতি মৌসুমে যে ক্ষতি হয়েছিল, তা কিছুটা হলেও পুষিয়ে নেওয়ার আশা করছেন ফুলচাষিরা।
গতকাল বাজারে সবচেয়ে বেশি এসেছে গাঁদা ফুল। মানভেদে প্রতি হাজার গাঁদা ফুল বিক্রি হয়েছে ২০০-৪০০ টাকায়। তবে সরবরাহ বেশি থাকায় দাম তুলনামূলক কম। বিপরীতে চড়া দামে বিক্রি হয়েছে অন্যান্য ফুল।
চন্দ্রমল্লিকা বিক্রি হয় ২, জারবেরা ১৬-১৮, গ্লাডিওলাস ১৬-২০, রজনীগন্ধা ১০-১৪, গোলাপ ৮-১০ এবং ভুট্টা ফুল প্রতিটি সর্বোচ্চ ১৫ টাকা দরে।
ফুলচাষি খালেদুর রহমান টিটু বলেন, ‘বিজয় দিবস ও বুদ্ধিজীবী দিবসের বাজার ধরার জন্য কয়েক মাস ধরে গাঁদা ফুলের পরিচর্যা করেছি। গাঁদার কাঙ্ক্ষিত দাম পাইনি, তবে অন্য ফুলের দাম ভালো থাকায় ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নেওয়া যাবে।’
রজনীগন্ধার চাষি রফিকুল ইসলাম জানান, দুই বিঘা জমিতে চাষ করা ফুল এবার ভালো দামে বিক্রি হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আজ ৯০০টি রজনীগন্ধা ১৪ টাকা পিস দরে বিক্রি করেছি। গতকাল ছিল ৯ টাকা। সামনে দাম আরও বাড়ার সম্ভাবনা আছে।’
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, যশোর জেলায় প্রায় দেড় হাজার হেক্টর জমিতে ১১ ধরনের ফুলের বাণিজ্যিক চাষ হয়। ডিসেম্বর থেকে মার্চ—এই চার মাসই ফুলের প্রধান মৌসুম। এ সময় অন্তত ৭-৮টি গুরুত্বপূর্ণ দিবসকে ঘিরে ১৫০-২০০ কোটি টাকার ফুল বেচাকেনার লক্ষ্য থাকে স্থানীয় চাষি ও ব্যবসায়ীদের।
গদখালী ফুলচাষি ও ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি মঞ্জুর আলম বলেন, বিভিন্ন জাতীয় দিবসকে সামনে রেখে চাষিরা ফুল উৎপাদন করেন। এবার গাঁদা ফুলের উৎপাদন চাহিদার চেয়ে বেশি হওয়ায় এর দাম কম। তবে গাঁদা ছাড়া প্রায় সব ফুলের দাম ঊর্ধ্বমুখী। গতকালের হাটে প্রায় ২ কোটি টাকার ফুল বেচাকেনা হয়েছে।

অগ্রহায়ণের শীতের সকাল। সাইকেল ও ভ্যানের ওপরে থরে থরে সাজানো রঙিন ফুলে ভরে উঠেছে যশোরের গদখালীর বাজার। গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধা, জারবেরা, গ্লাডিওলাস, চন্দ্রমল্লিকা—ফুলের ঘ্রাণ আর দরদামের হাঁকডাকে মুখর পুরো এলাকা। বুদ্ধিজীবী দিবস ও বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে ফুলের রাজধানী খ্যাত গদখালীতে গতকাল শনিবার জমে ওঠে বছরের বড় হাট।
যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের পাশে বসা এই বাজারে এদিন প্রায় ২ কোটি টাকার ফুল বেচাকেনা হয়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। চাহিদা বাড়ায় অন্যান্য দিনের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি ফুলের সরবরাহ ও কেনাবেচা হয়েছে। অতিবৃষ্টিতে চলতি মৌসুমে যে ক্ষতি হয়েছিল, তা কিছুটা হলেও পুষিয়ে নেওয়ার আশা করছেন ফুলচাষিরা।
গতকাল বাজারে সবচেয়ে বেশি এসেছে গাঁদা ফুল। মানভেদে প্রতি হাজার গাঁদা ফুল বিক্রি হয়েছে ২০০-৪০০ টাকায়। তবে সরবরাহ বেশি থাকায় দাম তুলনামূলক কম। বিপরীতে চড়া দামে বিক্রি হয়েছে অন্যান্য ফুল।
চন্দ্রমল্লিকা বিক্রি হয় ২, জারবেরা ১৬-১৮, গ্লাডিওলাস ১৬-২০, রজনীগন্ধা ১০-১৪, গোলাপ ৮-১০ এবং ভুট্টা ফুল প্রতিটি সর্বোচ্চ ১৫ টাকা দরে।
ফুলচাষি খালেদুর রহমান টিটু বলেন, ‘বিজয় দিবস ও বুদ্ধিজীবী দিবসের বাজার ধরার জন্য কয়েক মাস ধরে গাঁদা ফুলের পরিচর্যা করেছি। গাঁদার কাঙ্ক্ষিত দাম পাইনি, তবে অন্য ফুলের দাম ভালো থাকায় ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নেওয়া যাবে।’
রজনীগন্ধার চাষি রফিকুল ইসলাম জানান, দুই বিঘা জমিতে চাষ করা ফুল এবার ভালো দামে বিক্রি হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আজ ৯০০টি রজনীগন্ধা ১৪ টাকা পিস দরে বিক্রি করেছি। গতকাল ছিল ৯ টাকা। সামনে দাম আরও বাড়ার সম্ভাবনা আছে।’
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, যশোর জেলায় প্রায় দেড় হাজার হেক্টর জমিতে ১১ ধরনের ফুলের বাণিজ্যিক চাষ হয়। ডিসেম্বর থেকে মার্চ—এই চার মাসই ফুলের প্রধান মৌসুম। এ সময় অন্তত ৭-৮টি গুরুত্বপূর্ণ দিবসকে ঘিরে ১৫০-২০০ কোটি টাকার ফুল বেচাকেনার লক্ষ্য থাকে স্থানীয় চাষি ও ব্যবসায়ীদের।
গদখালী ফুলচাষি ও ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি মঞ্জুর আলম বলেন, বিভিন্ন জাতীয় দিবসকে সামনে রেখে চাষিরা ফুল উৎপাদন করেন। এবার গাঁদা ফুলের উৎপাদন চাহিদার চেয়ে বেশি হওয়ায় এর দাম কম। তবে গাঁদা ছাড়া প্রায় সব ফুলের দাম ঊর্ধ্বমুখী। গতকালের হাটে প্রায় ২ কোটি টাকার ফুল বেচাকেনা হয়েছে।

কথা হলো ইউরোপের বাজারের দিকে দেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি খাতটি কেন এভাবে তাকিয়ে আছে? কারণ, এটিই একমাত্র না হলেও বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প রপ্তানির সবচেয়ে বড় গন্তব্য। একইভাবে রপ্তানি ক্ষেত্রে প্রতিযোগী দুই দেশ চীন ও ভিয়েতনামই রয়েছে প্রধান আমদানি উৎস হিসেবে। দুই ক্ষেত্রেই এই নির্ভরতাকে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ
২৪ অক্টোবর ২০২১
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদ এবং তাঁর আইটি প্রতিষ্ঠান অ্যাপল সফট আইটি লিমিটেডের সব ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি)।
৯ মিনিট আগে
স্বাস্থ্য খাতের ব্যয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ। স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ জিডিপির মাত্র ১ শতাংশ এবং মাথাপিছু সরকারি ব্যয় মাত্র ১,০৭০ টাকা। দেশের প্রায় ৪৯ শতাংশ মানুষ এখনো মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত।
৮ ঘণ্টা আগে
দেশের ভেতরে ও বাইরে উভয় ক্ষেত্রেই আর্থিক খাতে নগদ লেনদেন ক্রমেই কমে আসছে; তার জায়গা দখল করছে প্লাস্টিক মানি। অভ্যন্তরীণ পেমেন্ট থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক সফর, অনলাইন কেনাকাটা, ব্যবসায়িক খরচ কিংবা জীবনযাত্রার প্রয়োজন—সব ক্ষেত্রেই এখন ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে লেনদেন বাড়ছে।
৯ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশের ভেতরে ও বাইরে উভয় ক্ষেত্রেই আর্থিক খাতে নগদ লেনদেন ক্রমেই কমে আসছে; তার জায়গা দখল করছে প্লাস্টিক মানি। অভ্যন্তরীণ পেমেন্ট থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক সফর, অনলাইন কেনাকাটা, ব্যবসায়িক খরচ কিংবা জীবনযাত্রার প্রয়োজন—সব ক্ষেত্রেই এখন ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে লেনদেন বাড়ছে। তবে বিদেশে বাংলাদেশিদের ক্রেডিট কার্ডে এই লেনদেনের প্রবণতা আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। মূলত নগদ বহনের ঝুঁকি, বিদেশি মুদ্রা ব্যবস্থাপনা এবং আন্তর্জাতিক পেমেন্টের সুবিধা—এ সব মিলিয়েই সাম্প্রতিক সময়ে নিত্যনতুন রেকর্ড হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত সর্বশেষ পরিসংখ্যান বলছে, আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বরে মাত্র এক মাসের ব্যবধানে বিদেশে ক্রেডিট কার্ড ব্যয়ের পরিমাণ বেড়েছে ৫১ কোটি টাকা।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৫ সালের আগস্টে বাংলাদেশিরা বিদেশে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে খরচ করেছিলেন ৪৪৩ কোটি ৩ লাখ টাকা। মাত্র এক মাস পর সেপ্টেম্বরে সেই ব্যয় দাঁড়ায় ৪৯৪ কোটি ২ লাখ টাকায়। অর্থাৎ বিদেশে কার্ড খরচ এক মাসে বেড়েছে ৫১ কোটি ১ লাখ টাকা।
তথ্য বলছে, বিদেশে বাংলাদেশিদের সর্বোচ্চ ক্রেডিট কার্ডে খরচ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে—৭০ কোটি ৯ লাখ টাকা। থাইল্যান্ডে খরচ হয়েছে ৫৯ কোটি ৯ লাখ এবং যুক্তরাজ্যে ৫৪ কোটি ১ লাখ টাকা। সিঙ্গাপুরে ব্যয় ৪০ কোটি ৪ লাখ, মালয়েশিয়ায় ৩৪ কোটি, ভারতে ৩২ কোটি ৩ লাখ, নেদারল্যান্ডসে ২৫ কোটি, সৌদি আরবে ২৪ কোটি, কানাডায় ২১ কোটি, অস্ট্রেলিয়ায় ১৭ কোটি এবং আয়ারল্যান্ডে ১৬ কোটি টাকা। চীনে ব্যয় হয়েছে ১৫ কোটি টাকা। অন্যান্য দেশে মোট খরচ ৯২ কোটি টাকার বেশি।
অন্যদিকে, বিদেশিরাও বাংলাদেশে এসে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে কত খরচ করে থাকেন। আগস্টে বিদেশিদের ব্যয় ছিল ১৮৩ কোটি ৫ লাখ টাকা, যা সেপ্টেম্বরে সামান্য কমে দাঁড়ায় ১৭৫ কোটি ৯ লাখ টাকায়। অর্থাৎ এক মাসে তাঁদের কার্ডব্যয় কমেছে প্রায় ৮ কোটি টাকা। বিদেশিদের মধ্যেও বাংলাদেশে এসে সর্বোচ্চ খরচ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকেরা—৩৮ কোটি ৬ লাখ টাকা। যুক্তরাজ্য ও ভারতের নাগরিকদের ব্যয় ছিল ১৭ কোটি টাকা করে।
এ নিয়ে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, নগদ বহনের চেয়ে মানুষ কার্ডে লেনদেনে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। বিদেশ ভ্রমণে এটি সবচেয়ে সহজ, নিরাপদ ও ঝুঁকিহীন পদ্ধতি। সাম্প্রতিক সময়ে চীনে যাত্রীপ্রবাহ রেকর্ড পরিমাণে বেড়েছে—তাই সে দেশে কার্ড ব্যয়েও রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
ব্যাংক খাতসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, দৈনন্দিন খরচ, বেতন-ভাতা গ্রহণ এবং নগদ উত্তোলনের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের কাছে এখনো সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম ডেবিট কার্ড। তুলনামূলকভাবে ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা কম হলেও এর ব্যবহার দ্রুত বাড়ছে এবং তা মূলত শহরকেন্দ্রিক। শহুরে মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত শ্রেণির মধ্যে ক্রেডিট কার্ড এখন একটি স্বাভাবিক ব্যয়ের মাধ্যম হয়ে উঠছে। একইভাবে প্রি-পেইড কার্ডের ব্যবহারও উল্লেখযোগ্য গতিতে বৃদ্ধি পেয়েছে—গত পাঁচ বছরে যার প্রবৃদ্ধি প্রায় ১৬ গুণ।
বর্তমানে দেশের ৫৬টি ব্যাংক ও ১টি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফসি) কার্ড সেবা দিচ্ছে। এর মধ্যে ৪৮টি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড, দ্বৈত মুদ্রার ডেবিট কার্ড এবং প্রি-পেইড কার্ড—এই তিন ধরনের সেবা পরিচালনা করে।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, সামগ্রিকভাবে মানুষ নগদের চেয়ে কার্ডে লেনদেনকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। তাঁর ভাষায়, আঞ্চলিক কূটনীতি ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের উন্নতিও ক্রস-বর্ডার কার্ড ব্যবহারে প্রভাব ফেলছে।
দেশের ভেতরে ও বাইরে উভয় ক্ষেত্রেই আর্থিক খাতে নগদ লেনদেন ক্রমেই কমে আসছে; তার জায়গা দখল করছে প্লাস্টিক মানি। অভ্যন্তরীণ পেমেন্ট থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক সফর, অনলাইন কেনাকাটা, ব্যবসায়িক খরচ কিংবা জীবনযাত্রার প্রয়োজন—সব ক্ষেত্রেই এখন ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে লেনদেন বাড়ছে। তবে বিদেশে বাংলাদেশিদের ক্রেডিট কার্ডে এই লেনদেনের প্রবণতা আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। মূলত নগদ বহনের ঝুঁকি, বিদেশি মুদ্রা ব্যবস্থাপনা এবং আন্তর্জাতিক পেমেন্টের সুবিধা—এ সব মিলিয়েই সাম্প্রতিক সময়ে নিত্যনতুন রেকর্ড হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত সর্বশেষ পরিসংখ্যান বলছে, আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বরে মাত্র এক মাসের ব্যবধানে বিদেশে ক্রেডিট কার্ড ব্যয়ের পরিমাণ বেড়েছে ৫১ কোটি টাকা।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৫ সালের আগস্টে বাংলাদেশিরা বিদেশে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে খরচ করেছিলেন ৪৪৩ কোটি ৩ লাখ টাকা। মাত্র এক মাস পর সেপ্টেম্বরে সেই ব্যয় দাঁড়ায় ৪৯৪ কোটি ২ লাখ টাকায়। অর্থাৎ বিদেশে কার্ড খরচ এক মাসে বেড়েছে ৫১ কোটি ১ লাখ টাকা।
তথ্য বলছে, বিদেশে বাংলাদেশিদের সর্বোচ্চ ক্রেডিট কার্ডে খরচ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে—৭০ কোটি ৯ লাখ টাকা। থাইল্যান্ডে খরচ হয়েছে ৫৯ কোটি ৯ লাখ এবং যুক্তরাজ্যে ৫৪ কোটি ১ লাখ টাকা। সিঙ্গাপুরে ব্যয় ৪০ কোটি ৪ লাখ, মালয়েশিয়ায় ৩৪ কোটি, ভারতে ৩২ কোটি ৩ লাখ, নেদারল্যান্ডসে ২৫ কোটি, সৌদি আরবে ২৪ কোটি, কানাডায় ২১ কোটি, অস্ট্রেলিয়ায় ১৭ কোটি এবং আয়ারল্যান্ডে ১৬ কোটি টাকা। চীনে ব্যয় হয়েছে ১৫ কোটি টাকা। অন্যান্য দেশে মোট খরচ ৯২ কোটি টাকার বেশি।
অন্যদিকে, বিদেশিরাও বাংলাদেশে এসে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে কত খরচ করে থাকেন। আগস্টে বিদেশিদের ব্যয় ছিল ১৮৩ কোটি ৫ লাখ টাকা, যা সেপ্টেম্বরে সামান্য কমে দাঁড়ায় ১৭৫ কোটি ৯ লাখ টাকায়। অর্থাৎ এক মাসে তাঁদের কার্ডব্যয় কমেছে প্রায় ৮ কোটি টাকা। বিদেশিদের মধ্যেও বাংলাদেশে এসে সর্বোচ্চ খরচ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকেরা—৩৮ কোটি ৬ লাখ টাকা। যুক্তরাজ্য ও ভারতের নাগরিকদের ব্যয় ছিল ১৭ কোটি টাকা করে।
এ নিয়ে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, নগদ বহনের চেয়ে মানুষ কার্ডে লেনদেনে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। বিদেশ ভ্রমণে এটি সবচেয়ে সহজ, নিরাপদ ও ঝুঁকিহীন পদ্ধতি। সাম্প্রতিক সময়ে চীনে যাত্রীপ্রবাহ রেকর্ড পরিমাণে বেড়েছে—তাই সে দেশে কার্ড ব্যয়েও রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
ব্যাংক খাতসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, দৈনন্দিন খরচ, বেতন-ভাতা গ্রহণ এবং নগদ উত্তোলনের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের কাছে এখনো সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম ডেবিট কার্ড। তুলনামূলকভাবে ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা কম হলেও এর ব্যবহার দ্রুত বাড়ছে এবং তা মূলত শহরকেন্দ্রিক। শহুরে মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত শ্রেণির মধ্যে ক্রেডিট কার্ড এখন একটি স্বাভাবিক ব্যয়ের মাধ্যম হয়ে উঠছে। একইভাবে প্রি-পেইড কার্ডের ব্যবহারও উল্লেখযোগ্য গতিতে বৃদ্ধি পেয়েছে—গত পাঁচ বছরে যার প্রবৃদ্ধি প্রায় ১৬ গুণ।
বর্তমানে দেশের ৫৬টি ব্যাংক ও ১টি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফসি) কার্ড সেবা দিচ্ছে। এর মধ্যে ৪৮টি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড, দ্বৈত মুদ্রার ডেবিট কার্ড এবং প্রি-পেইড কার্ড—এই তিন ধরনের সেবা পরিচালনা করে।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, সামগ্রিকভাবে মানুষ নগদের চেয়ে কার্ডে লেনদেনকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। তাঁর ভাষায়, আঞ্চলিক কূটনীতি ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের উন্নতিও ক্রস-বর্ডার কার্ড ব্যবহারে প্রভাব ফেলছে।

কথা হলো ইউরোপের বাজারের দিকে দেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি খাতটি কেন এভাবে তাকিয়ে আছে? কারণ, এটিই একমাত্র না হলেও বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প রপ্তানির সবচেয়ে বড় গন্তব্য। একইভাবে রপ্তানি ক্ষেত্রে প্রতিযোগী দুই দেশ চীন ও ভিয়েতনামই রয়েছে প্রধান আমদানি উৎস হিসেবে। দুই ক্ষেত্রেই এই নির্ভরতাকে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ
২৪ অক্টোবর ২০২১
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদ এবং তাঁর আইটি প্রতিষ্ঠান অ্যাপল সফট আইটি লিমিটেডের সব ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি)।
৯ মিনিট আগে
স্বাস্থ্য খাতের ব্যয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ। স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ জিডিপির মাত্র ১ শতাংশ এবং মাথাপিছু সরকারি ব্যয় মাত্র ১,০৭০ টাকা। দেশের প্রায় ৪৯ শতাংশ মানুষ এখনো মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত।
৮ ঘণ্টা আগে
অগ্রহায়ণের শীতের সকাল। সাইকেল ও ভ্যানের ওপরে থরে থরে সাজানো রঙিন ফুলে ভরে উঠেছে যশোরের গদখালীর বাজার। গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধা, জারবেরা, গ্লাডিওলাস, চন্দ্রমল্লিকা—ফুলের ঘ্রাণ আর দরদামের হাঁকডাকে মুখর পুরো এলাকা।
৮ ঘণ্টা আগে