Ajker Patrika

সোনালি আঁশে দ্বিগুণ লাভে উচ্ছ্বাস

মেহেদী হাসান, (দিনাজপুর) ফুলবাড়ী
পাটের আঁশ ছাড়াচ্ছেন চাষি। দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার খয়েরবাড়ী ইউনিয়নের মোক্তারপুর গ্রামে। 	ছবি: আজকের পত্রিকা
পাটের আঁশ ছাড়াচ্ছেন চাষি। দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার খয়েরবাড়ী ইউনিয়নের মোক্তারপুর গ্রামে। ছবি: আজকের পত্রিকা

একসময় গ্রামীণ অর্থনীতির প্রাণ ছিল সোনালি আঁশ পাট। কিন্তু সিনথেটিক ফাইবারের আগ্রাসন, নিম্ন দাম ও বাজার সংকটের কারণে হারিয়ে যেতে বসেছিল এ ঐতিহ্যবাহী ফসল। দীর্ঘ হতাশার পর অবশেষে সেই সোনালি আঁশে আবারও ফিরছে সুদিন। দিনাজপুরের ফুলবাড়ীসহ আশপাশের এলাকায় এ বছর পাটের ভালো ফলন ও ন্যায্য দাম পেয়ে খুশি চাষিরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কয়েক বছর ধরে পাটের দাম প্রতি মণ ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করছিল। এতে চাষিরা লোকসান গুনতে বাধ্য হতেন। ফলে অনেকেই ধান বা ভুট্টা চাষে ঝুঁকে পড়েন। তবে চলতি মৌসুমে চিত্রটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। এবার বাজারে প্রতি মণ পাট বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার টাকায়। একই সঙ্গে পাটকাঠির দামও বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রতি মণ ৪৫০-৫৫০ টাকায়। ফলে চাষিরা দ্বিগুণ লাভে উচ্ছ্বসিত।

খয়েরবাড়ী ইউনিয়নের মোক্তারপুর গ্রামের চাষি মাহাবুর রহমান বলেন, আগে পাট চাষ করে লোকসান গুনতে হতো। কিন্তু এবার দাম ভালো, পাটকাঠিও বিক্রি হচ্ছে ভালো দামে। তাই পরের বছর আরও বেশি জমিতে পাট চাষ করব।

চাষি আজিজুল হক বলেন, বিরামপুরে পাট বিক্রি করতে যেতে সময় লাগে, পরিবহন খরচও বাড়ে। যদি ফুলবাড়ীতেই আড়ত বা পাটবাজার হতো, তাহলে কৃষকের অনেক সুবিধা হতো।

ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৬০ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। প্রতি হেক্টরে গড়ে ১১ দশমিক ৮৩ বেল হিসেবে মোট ৭১০ বেল পাট উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে। সরকারিভাবে প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ২০ জন কৃষককে ২০ বিঘা জমির জন্য পাটবীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণ করা হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) শাহানুর রহমান বলেন, পাট অত্যন্ত সম্ভাবনাময় ফসল। এর চাহিদা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়ছে। সরকারি সহায়তা অব্যাহত থাকলে আগামী বছর পাটের আবাদ আরও বাড়বে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিবেশবান্ধব উপকরণ ব্যবহারে বিশ্বজুড়ে সচেতনতা বাড়ায় পাটজাত পণ্যের চাহিদা ক্রমবর্ধমান। বাংলাদেশ থেকে রপ্তানিকৃত পাট ও পাটপণ্যের বাজারে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীন ও তুরস্ক অন্যতম ক্রেতা। গত কয়েক বছরে পাটপণ্যের রপ্তানি আয় প্রায় ৮০০ মিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। এ প্রবণতা টিকে থাকলে আগামী পাঁচ বছরে এই খাত পুনরায় বড় রপ্তানি আয়ের উৎস হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই সনদে রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষে স্বাক্ষর করবেন যাঁরা

বাটা শুর ৬৩ বছরের ইতিহাসে প্রথম নারী এমডি হলেন ফারিয়া ইয়াসমিন

ময়মনসিংহে ১১ দৈনিক পত্রিকায় ‘হুবহু একই সংবাদ’, সবগুলোর ডিক্লারেশন বাতিল

চীনের পর ব্রহ্মপুত্রে বাঁধ নির্মাণের মহাপরিকল্পনা ভারতের, বাংলাদেশের বিপদ

সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৬ টাকা পর্যন্ত বাড়ালেন ব্যবসায়ীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত