Ajker Patrika

পুড়েছে ২০০ কোটি টাকার ওষুধের কাঁচামাল, ৫ হাজার কোটির উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২০ অক্টোবর ২০২৫, ১৭: ১৩
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ওষুধশিল্পের কাঁচামাল বাবদ কমপক্ষে ২০০ কোটি টাকার প্রত্যক্ষ ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ওষুধশিল্প সমিতি। এই কাঁচামাল পুড়ে যাওয়ার কারণে ভবিষ্যতে প্রায় ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার কোটি টাকার ওষুধের উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।

আজ সোমবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইএবি) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ওষুধশিল্প সমিতির পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ওষুধশিল্প সমিতির মহাসচিব মো. জাকির হোসেন জানান, বেলা ১১টা পর্যন্ত দেশের শীর্ষস্থানীয় ৩২টি কোম্পানি তাদের ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক হিসাব দিয়েছে, যেখানে ২০০ কোটি টাকার বেশি কাঁচামাল পুড়ে যাওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে মোট ৩০৭টি ওষুধ কোম্পানির মধ্যে ২৫০টি সচল রয়েছে এবং বাকি কোম্পানিগুলো হিসাব দিলে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে।

জাকির হোসেন বলেন, একটি ওষুধ উৎপাদনে ১০-১২টি থেকে শুরু করে ৫৩টি পর্যন্ত উপকরণের প্রয়োজন হয়। ২০০ কোটি টাকার কাঁচামাল পুড়ে যাওয়ার কারণে দেশের ওষুধ উৎপাদনে বড় ধরনের ধাক্কা লাগতে পারে, যার ফলে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার কোটি টাকার ওষুধের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে সরবরাহ ব্যবস্থায় সমস্যা সৃষ্টির সম্ভাবনা নেই বলেও মন্তব্য করেন।

অগ্নিকাণ্ডের সময় অনেক বিমানকে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেসব বিমানে থাকা ওষুধের কাঁচামাল শেষ পর্যন্ত ঠিকঠাক আছে কিনা, তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন জাকির হোসেন। তিনি বলেন, ওষুধের কাঁচামাল সংরক্ষণে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত জরুরি, কিন্তু চট্টগ্রামে স্থানান্তরিত কাঁচামালগুলির জন্য সেখানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নাও থাকতে পারে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইএবি সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। তিনি দাবি করেন, কার্গো ভিলেজের আগুনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সবমিলিয়ে ১২ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এই বিশাল ক্ষতির জন্য তিনি কার্গো ভিলেজের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আগুন শনাক্ত ও প্রতিরোধ নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষের ‘চরম ব্যর্থতা’কে দায়ী করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পর্নোগ্রাফিতে জড়িত সেই বাংলাদেশি যুগল গ্রেপ্তার

দেবরের ছেলের সঙ্গে প্রেমের ইতি, থানায় বসে কবজি কাটলেন দুই সন্তানের মা

ভারত বলছে, ফোনালাপ হয়নি, জবাবে ট্রাম্প বললেন—তাহলে ওরা শুল্ক দিতে থাক

দনবাস রাশিয়ার দখলে চলে গেছে, সেটা মেনেই যুদ্ধ শেষ করো—জেলেনস্কিকে ট্রাম্প

অগ্নিকাণ্ড দেখলে মুমিনের করণীয় আমল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিনিয়োগ শিক্ষায় যুক্ত হচ্ছে জেলা-উপজেলা প্রশাসন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিনিয়োগ শিক্ষায় যুক্ত হচ্ছে জেলা-উপজেলা প্রশাসন

পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগ শিক্ষায় দেশব্যাপী সচেতনতা বাড়াতে মাঠ প্রশাসনকে সম্পৃক্ত করছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বিনিয়োগ শিক্ষা ও আর্থিক সাক্ষরতা (ফাইন্যান্সিয়াল লিটারেসি) কার্যক্রম বিস্তারে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। বিএসইসির সুপারিশে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সব জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) প্রতি পাঁচটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এ উদ্যোগের লক্ষ্য হলো—পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের আগে মানুষকে শিক্ষিত করা, সঠিক তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত করা এবং ভ্রান্ত সিদ্ধান্তজনিত ঝুঁকি হ্রাস করা।

বিএসইসি মনে করে, প্রশাসনিক কাঠামোকে যুক্ত করা গেলে বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রমের প্রসার আরও গতিশীল হবে এবং দেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি পাবে।

বিএসইসির অনুরোধে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ (এফআইডি) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে একটি চিঠি পাঠায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন সংযোগ অধিশাখা ৮ অক্টোবর সব জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানায়।

চিঠির অনুলিপি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব, দেশের সব বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং জেলা তথ্য কর্মকর্তাদেরও পাঠানো হয়েছে। এর মাধ্যমে মাঠ প্রশাসনের সব পর্যায়ে বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক সংযোগ স্থাপন করা হলো।

পাঁচ নির্দেশনা

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের চিঠিতে বিনিয়োগ শিক্ষা ও পুঁজিবাজার সচেতনতা বৃদ্ধিতে মাঠ প্রশাসনের জন্য পাঁচটি নির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইটে লিঙ্ক সংযুক্তকরণ: প্রতিটি জেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইটে ‘ফাইন্যান্সিয়াল লিটারেসি ও বিনিয়োগ সচেতনতা’ শীর্ষক একটি লিঙ্ক যুক্ত করতে বলা হয়েছে। এর আওতায় বিএসইসির বিনিয়োগ শিক্ষা ওয়েবসাইট ও ইউটিউব চ্যানেলের সংযোগ থাকবে।

স্থানীয় পর্যায়ে কর্মশালা ও সেমিনারে সহায়তা: জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিএসইসি আয়োজিত ফাইন্যান্সিয়াল লিটারেসি সেমিনার, কর্মশালা বা প্রশিক্ষণ আয়োজনের ক্ষেত্রে প্রশাসনের সহযোগিতা ও সমন্বয় সাধনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মাসিক সমন্বয় সভায় আলোচ্য বিষয় হিসেবে অন্তর্ভুক্তি: প্রতিটি জেলার মাসিক সমন্বয় সভায় ‘বিনিয়োগ শিক্ষা ও নিরাপদ বিনিয়োগ’ বিষয়টি নিয়মিত আলোচনার অন্তর্ভুক্ত করতে বলা হয়েছে, যাতে বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনিক কার্যক্রমের অংশ হয়ে ওঠে।

জেলা তথ্য কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রচারণা: বিনিয়োগ শিক্ষা ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জেলা তথ্য অফিসের সহায়তায় প্রচার-প্রকাশনার উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

প্রশাসনিক শাখার দায়িত্ব নির্ধারণ: প্রতিটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সহকারী কমিশনার (ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ) বা সিনিয়র সহকারী কমিশনারকে পুঁজিবাজারসংক্রান্ত তথ্য সরবরাহ ও সহযোগিতা প্রদানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া বিনিয়োগ শিক্ষার প্রসারে স্থানীয় প্রশাসনকে সম্পৃক্ত করার পাশাপাশি সম্প্রতি জাতীয় তথ্য বাতায়নে বিএসইসির বিনিয়োগ শিক্ষাবিষয়ক ওয়েবসাইট ও ইউটিউব লিঙ্ক সংযুক্ত করা হয়েছে। ফলে সরকারি ওয়েবসাইট থেকেই নাগরিকেরা সহজে বিনিয়োগসংক্রান্ত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণে প্রবেশাধিকার পাবেন।

বিএসইসির মতে, ডিজিটাল সংযুক্তির মাধ্যমে এখন দেশের প্রত্যন্ত এলাকার মানুষও পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগ সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা নিতে পারবে, যা দীর্ঘ মেয়াদে বিনিয়োগ সংস্কৃতি গড়ে তুলতে সহায়ক হবে।

বিএসইসির মুখপাত্র ও পরিচালক মো. আবুল কালাম বলেন, জেলা-উপজেলা প্রশাসনকে সম্পৃক্ত করা হলে বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম সারা দেশে নতুন গতি পাবে। বিনিয়োগে ঝুঁকি কমাতে এবং জনসাধারণকে সচেতন করতে প্রশাসনের সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আবুল কালাম আরও বলেন, ‘বিনিয়োগ শিক্ষা শুধু বিনিয়োগকারীর সুরক্ষা নয়, বরং এটি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতার অন্যতম শর্ত। আমরা চাই, দেশের প্রতিটি মানুষ বিনিয়োগ সম্পর্কে সচেতন হোক। সেই লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ।’

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে গবেষণা প্রতিষ্ঠান চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের গবেষণা ফেলো ও অর্থনীতিবিদ হেলাল আহমেদ জনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রশাসন, বিনিয়োগকারী, গণমাধ্যম ও সাধারণ মানুষের সমন্বিত অংশগ্রহণেই গড়ে উঠতে পারে একটি সচেতন বিনিয়োগ সংস্কৃতি, যা দেশের পুঁজিবাজার ও অর্থনীতিকে আরও শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাবে।

তবে এই উদ্যোগের চ্যালেঞ্জ তুলে ধরে হেলাল আহমেদ জনি বলেন, মাঠপর্যায়ে কার্যকর করতে প্রশাসনের প্রশিক্ষণ, বাজেট ও মনিটরিং ব্যবস্থার অভাব বড় চ্যালেঞ্জ। শুধু নির্দেশনা নয়, বাস্তবায়নে ধারাবাহিক ফলোআপ ও প্রণোদনা নিশ্চিত করলেই উদ্যোগটি ফলপ্রসূ হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পর্নোগ্রাফিতে জড়িত সেই বাংলাদেশি যুগল গ্রেপ্তার

দেবরের ছেলের সঙ্গে প্রেমের ইতি, থানায় বসে কবজি কাটলেন দুই সন্তানের মা

ভারত বলছে, ফোনালাপ হয়নি, জবাবে ট্রাম্প বললেন—তাহলে ওরা শুল্ক দিতে থাক

দনবাস রাশিয়ার দখলে চলে গেছে, সেটা মেনেই যুদ্ধ শেষ করো—জেলেনস্কিকে ট্রাম্প

অগ্নিকাণ্ড দেখলে মুমিনের করণীয় আমল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিবিসির প্রতিবেদন

শাহজালাল বিমানবন্দরের অগ্নিকাণ্ডে ব্যবসায়ীদের ক্ষতি ১০০ কোটি ডলার ছাড়াতে পারে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২০ অক্টোবর ২০২৫, ১৮: ১৪
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১০০ কোটি ডলার ছাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। গত শনিবারের এই অগ্নিকাণ্ডে তৈরি পোশাক, কাপড় ও কাঁচামালসহ বিপুল পরিমাণ পণ্য পুড়ে গেছে। এতে অনেক অনেক খাতের ব্যবসায়ী ক্ষতির মুখে পড়তে পারে।

শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেটসংলগ্ন কার্গো ভিলেজ হাউসে এই অগ্নিকাণ্ড ঘটে। প্রায় ২৭ ঘণ্টা পর গতকাল রোববার বিকেল ৫টার দিকে আগুন পুরোপুরি নেভানো হয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে গিয়ে অন্তত ৩৫ জন আহত হলেও কারও অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে তথ্য পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় বিমানবন্দর ও ফ্লাইট চলাচল সাময়িক বন্ধ ছিল। আগুন লাগার কারণ এখনো অজানা।

চীনের পর তৈরি পোশাক খাতে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানিকারক বাংলাদেশ। এ খাত থেকে প্রতিবছর প্রায় ৪০ বিলিয়ন ডলার আয় হয়, যা দেশের মোট দেশজ প্রবৃদ্ধির (জিডিপি) ১০ শতাংশের বেশি।

ক্ষতিগ্রস্ত কার্গো ভিলেজটি দেশের সবচেয়ে আমদানি–রপ্তানির ক্ষেত্রে দেশের ব্যস্ত লজিস্টিক হাবগুলোর অন্যতম। বিশেষ করে ডিসেম্বরে বড়দিনকে লক্ষ্য করে পশ্চিমের বাজারে পণ্য রপ্তানির জরুরি ক্ষেত্রে এটি গুরুত্ব অনেক। এখানে কাপড়, ওষুধ, রাসায়নিক পদার্থসহ নানা পণ্যও সংরক্ষণ করা হয়।

বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ইনামুল হক খান বিবিসিকে বলেন, আগুনে পুড়ে যাওয়া পণ্যের মধ্যে নতুন ক্রেতাদের জন্য জরুরি স্যাম্পল বা নমুনা ছিল। এর ফলে অনেক রপ্তানিকারক ভবিষ্যতে ব্যবসায়িক সুযোগ হারাতে পারেন।

বিবিসিকে পাঠানো এক ইমেইলে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল এয়ার এক্সপ্রেস অ্যাসোসিয়েশনও শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের এই অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতির পরিমাণ ১০০ কোটি ডলারের বেশি হতে পারে বলে অনুমান করছে।

মোট ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে এর মধ্যে সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে ক্ষতির তালিকা জমা দিতে বলেছে বিজিএমইএ।

এটি সাত দিনের মধ্যে দেশে অগ্নিকাণ্ডের তৃতীয় বড় ঘটনা। গত মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) রাজধানীর মিরপুরের রূপনগরে রাসায়নিকের গুদাম ও পোশাক কারখানায় আগুন লাগে। ওই ঘটনায় ১৬ জন নিহত হন এবং অনেকে আহত হন। এরপর বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম ইপিজেডের বহুতল পোশাক কারখানায় অগ্নিকাণ্ড ঘটে। তবে এতে হতাহতের কোনো ঘটনা নেই।

পর পর তিনটি অগ্নিকাণ্ড ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে নানা আলোচনা চলছে। অনেকে দাবি করেছেন, এগুলো ‘পরিকল্পিত’ ঘটনা। অতীতে এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনার কারণকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক দলগুলো পরস্পরের বিরুদ্ধে দোষারোপ করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এবারও জবাবদিহি ও পূর্ববর্তী ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের অভাব এসব জল্পনা বাড়াচ্ছে।

অবশ্য অন্তর্বর্তী সরকার শনিবার এক বিবৃতিতে জানায়, ‘যদি কোনো ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ বা নাশকতার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ মেলে, তবে কঠোর ও তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ঘনবসতিপূর্ণ বাংলাদেশে বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নতুন নয়। অবকাঠামোগত দুর্বলতা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতির কারণে প্রায়ই এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এমন অগ্নিকাণ্ডে শত শত মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। সেসঙ্গে ব্যাপক অর্থনৈতিক ক্ষতিও হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পর্নোগ্রাফিতে জড়িত সেই বাংলাদেশি যুগল গ্রেপ্তার

দেবরের ছেলের সঙ্গে প্রেমের ইতি, থানায় বসে কবজি কাটলেন দুই সন্তানের মা

ভারত বলছে, ফোনালাপ হয়নি, জবাবে ট্রাম্প বললেন—তাহলে ওরা শুল্ক দিতে থাক

দনবাস রাশিয়ার দখলে চলে গেছে, সেটা মেনেই যুদ্ধ শেষ করো—জেলেনস্কিকে ট্রাম্প

অগ্নিকাণ্ড দেখলে মুমিনের করণীয় আমল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শাহজালাল বিমানবন্দরে আমদানি পণ্য খালাস শুরু

উত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি 
আপডেট : ২০ অক্টোবর ২০২৫, ১৮: ০০
বিমানবন্দরের ৯ নম্বর গেটের সামনে পণ্য নিতে অপেক্ষায় আমদানিকারক, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিমানবন্দরের ৯ নম্বর গেটের সামনে পণ্য নিতে অপেক্ষায় আমদানিকারক, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর আমদানি পণ্য খালাসপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিমানবন্দরের ৯ নম্বর গেটে আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) বেলা ২টার দিকে কর্তব্যরত অ্যাভিয়েশন সিকিউরিটি (অ্যাভসেক), আনসার সদস্য ও কাস্টমস কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বেলা ৩টা পর্যন্ত ৯ নম্বর গেট দিয়ে আমদানি পণ্যের তিনটি চালান খালাস করা হয়েছে।

চোখে-মুখে হতাশার ছাপ নিয়ে বিমানবন্দরের ৯ নম্বর গেটে খালাস করা পণ্য গ্রহণ করতে ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং (সিঅ্যান্ডএফ), আমদানিকারক, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবস্থান করতে দেখা যায়।

গেটে কর্মরত অ্যাভসেক সিকিউরিটির বিমানবাহিনীর সার্জেন্ট স্বপন আরান আজকের পত্রিকাকে বলেন, আমদানি করা মালামাল বের করা শুরু হয়েছে। ভেতরে কাস্টমসের লোকজনও তাদের কার্যক্রম শুরু করেছেন। তিনি আরও বলেন, পণ্য খালাস কার্যক্রম আগের তুলনায় অনেক কম। আস্তে আস্তে বাড়বে। দুপুর থেকে লোকজনের আসা শুরু হয়েছে।

এদিকে গেটে আনসার ও ঢাকা কাস্টমস কর্মকর্তাদেরও উপস্থিতি দেখা যায়। তাঁরা বলেন, অগ্নিকাণ্ডে আমদানি পণ্য খালাসপ্রক্রিয়া বন্ধ থাকার পর পুনরায় চালু হয়েছে। তবে গতি ফিরতে কিছুটা সময় লাগবে।

কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষ আপাতত জিএসই মেইনটেন্যান্স নামের স্থানে পণ্য রাখার জন্য স্থান নির্ধারণ করেছে। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ওই স্থানে পণ্যের কায়িক পরীক্ষা সম্পন্ন করছে। ওই গেট দিয়ে পণ্যের খালাসপ্রক্রিয়া সম্পাদন করা হচ্ছে।

বিমানবন্দরের ৯ নম্বর গেটের সামনে পণ্য নিতে অপেক্ষায় আমদানিকারক, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিমানবন্দরের ৯ নম্বর গেটের সামনে পণ্য নিতে অপেক্ষায় আমদানিকারক, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাস্টমসের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের বাণিজ্যিক ঘাটতি কমানোর লক্ষ্যে কাস্টমস কর্মকর্তারা তাঁদের কার্যক্রম সচল রাখতে সব সময় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ব্যবসায়ীদের সুবিধার জন্য বিকল্প ব্যবস্থার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরের সমন্বয়ে কার্যক্রম চলছে। এতে সংশ্লিষ্ট সবাই সহযোগিতা করছেন।

এ বিষয়ে জানতে বিমানের কার্গো পরিচালক মো. শাকিল মিরাজের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায়নি। পরে তাঁকে খুদেবার্তা পাঠানো হলেও তিনি জবাব দেননি।

উল্লেখ্য, বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেটসংলগ্ন আমদানি কার্গো ভিলেজ হাউসে গত শনিবার (১৮ অক্টোবর) বেলা আড়াইটায় এই অগ্নিকাণ্ড ঘটে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি স্টেশনের ৩৭টি ইউনিট কাজ করে। পরে প্রায় সাত ঘণ্টার চেষ্টায় রাত ৯টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু পুরোপুরি নির্বাপণ হয় গতকাল রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকেল ৫টার দিকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পর্নোগ্রাফিতে জড়িত সেই বাংলাদেশি যুগল গ্রেপ্তার

দেবরের ছেলের সঙ্গে প্রেমের ইতি, থানায় বসে কবজি কাটলেন দুই সন্তানের মা

ভারত বলছে, ফোনালাপ হয়নি, জবাবে ট্রাম্প বললেন—তাহলে ওরা শুল্ক দিতে থাক

দনবাস রাশিয়ার দখলে চলে গেছে, সেটা মেনেই যুদ্ধ শেষ করো—জেলেনস্কিকে ট্রাম্প

অগ্নিকাণ্ড দেখলে মুমিনের করণীয় আমল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শাহজালাল বিমানবন্দরে আগুনের দায় বেবিচক, কাস্টম —কেউই এড়াতে পারে না: রপ্তানিকারক সংগঠনগুলো

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২০ অক্টোবর ২০২৫, ১৭: ১৮
বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে লেগেছে আগুন। এতে বন্ধ করে দেওয়া হয় সব ধরনের উড়োজাহাজ ওঠানামা। গত শনিবার  ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে লেগেছে আগুন। এতে বন্ধ করে দেওয়া হয় সব ধরনের উড়োজাহাজ ওঠানামা। গত শনিবার ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। ছবি: আজকের পত্রিকা

হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের দায় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক), কাস্টম হাউস এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস—কেউই এড়াতে পারে না বলে দাবি করেছেন রপ্তানিকারকেরা। ১২ হাজার কোটি টাকার বেশি ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তাঁরা।

দেশের রপ্তানি বাণিজ্যে সম্পৃক্ত বিভিন্ন খাতভিত্তিক সংগঠনগুলোর শীর্ষ সংগঠন এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইএবি) আজ সোমবার রাজধানীর প্যানপেসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করে।

রপ্তানিকারকেরা বলেন, এমন একটি সংবেদনশীল স্থানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কেউই যথাযথ মনোযোগ দেয়নি। অথচ সিভিল অ্যাভিয়েশন এই কার্গো ভিলেজের মালিক, কাস্টম কর্তৃপক্ষ আমদানি করা পণ্যের তত্ত্বাবধায়ক, আর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস হলো হ্যান্ডলিং এজেন্ট।

তাঁরা বলেন, বর্তমান গুদাম ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত দুর্বল এবং এখনো ম্যানুয়ালি পরিচালিত হয়। এ ছাড়া কাস্টমসের ছাড়পত্র প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতার কারণে প্রচুর পণ্য জমে থাকে, ফলে সীমিত স্থানের সংকট আরও তীব্র আকার ধারণ করে।

সংবাদ সম্মেলনে ইএবি ছাড়াও বিকেএমইএ, বিজিএমইএ, বিটিএমএ, বিজিপিএমইএ, লেদার অ্যান্ড লেদার গুডস, ফুট অ্যান্ড ভেজিটেবলস, ওষুধ শিল্প, জুয়েলারি এক্সপোর্টার্স, সুইং থ্রেট, ফ্রোজেন ফুডস, প্লাস্টিক গুডস, সিল্ক গুডস, হস্তশিল্প, ক্র্যাফট অ্যান্ড গিফট ওয়্যার অ্যাসোসিয়েশনসহ সংশ্লিষ্ট ১৪টি সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় ইএবির সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা আমাদের ব্যবসায়ী সমাজ ও রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য এক বড় সতর্কবার্তা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা শঙ্কিত এবং আমাদের বিদেশি ক্রেতারাও উদ্বিগ্ন।

তিনি বলেন, এই ধরনের ঘটনা স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে কার্গো ভিলেজের নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথেষ্ট কার্যকর নয় এবং এটি নিরাপত্তার দিক থেকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। একইভাবে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

মোহাম্মদ হাতেম আরও বলেন, অনেক বছর ধরে আমরা রপ্তানিকারকেরা অভিযোগ করে আসছি যে, আমাদের পণ্য ও মালামাল খোলা আকাশের নিচে রাখা হয়, সেখানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই এবং প্রায়ই আমদানি করা মালামাল চুরি হয়। এটি শুধু ব্যবসায়িক ক্ষতির কারণ নয়, বরং আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে।

সংবাদ সম্মেলনে এই অগ্নিকাণ্ডের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ও ক্ষতির নিরূপণে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনসহ ৭ দফা দাবি জানানো হয়।

দাবিগুলো হলো—

১. সমন্বিত তদন্ত কমিটি গঠন,

২. অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের বিপরীতে করা বিমা দাবি দ্রুত নিষ্পত্তির প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান।

৩. যে সব পণ্যের বিমা করা ছিল না, সেগুলোর ক্ষেত্রে সরকারি বিশেষ তহবিল গঠন করে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরণ ও সহায়তা প্রদান।

৪.ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে কার্গো ভিলেজের আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণ।

৫. ওষুধ শিল্পের জন্য আধুনিক শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত আলাদা গুদামের ব্যবস্থা করা।

৬. নিরাপদ দূরত্বে রাসায়নিক গুদাম স্থাপন।

৭.কার্গো ভিলেজের গুদাম ব্যবস্থাপনাকে সম্পূর্ণ অটোমেটেড ও আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর করা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পর্নোগ্রাফিতে জড়িত সেই বাংলাদেশি যুগল গ্রেপ্তার

দেবরের ছেলের সঙ্গে প্রেমের ইতি, থানায় বসে কবজি কাটলেন দুই সন্তানের মা

ভারত বলছে, ফোনালাপ হয়নি, জবাবে ট্রাম্প বললেন—তাহলে ওরা শুল্ক দিতে থাক

দনবাস রাশিয়ার দখলে চলে গেছে, সেটা মেনেই যুদ্ধ শেষ করো—জেলেনস্কিকে ট্রাম্প

অগ্নিকাণ্ড দেখলে মুমিনের করণীয় আমল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত