আসাদুজ্জামান নূর, ঢাকা
অন্তর্বর্তী সরকার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের যে বাজেট আজ ঘোষণা করতে যাচ্ছে, তাতে জনজীবন সহজ করতে কিংবা অর্থনীতিতে নতুন গতি আনার মতো উদ্ভাবনী কোনো উদ্যোগ নেই। রাজস্ব খাত সংস্কারে বড় উদ্যোগও নেই। বরং রাজস্ব বাড়াতে গতানুগতিক প্রক্রিয়ায় কাটাছেঁড়া করা হয়েছে করহারে। এতে ৯০টির বেশি পণ্যে ভ্যাট-শুল্ক বাড়বে। থাকছে কালোটাকা সাদা করার সুযোগের মতো সমালোচিত নীতিও।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, এলডিসি উত্তরণ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ৩১টির মতো শিল্প খাতে কর-অবকাশ সুবিধা বাতিল করা হতে পারে। সরকার ৯০টির বেশি পণ্য ও সেবায় ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক (এসডি) বৃদ্ধি করতে যাচ্ছে। এসব তালিকায় রয়েছে প্যাকেটজাত মসলাজাতীয় পণ্য, জনহিতকর সংস্থা, অনলাইন পণ্য বিক্রি, সাবান, ডিটারজেন্ট, কুকার, ইলেকট্রনিক হোম অ্যাপ্লায়েন্স, কেন সুতা, ম্যান-মেড ফাইবার ইয়ার্ন, ইলেকট্রিক ফিটিংস, নাট-বল্টু, কনডাক্টর, ওয়্যার ইত্যাদি, আইসক্রিম, সিগারেট আমদানি, ওটিটি (ওভার-দ্য-টপ সার্ভিস) ইত্যাদি। এ ছাড়াও সম্পূরক শুল্ক (এসডি) ও কাস্টমস শুল্ক (সিডি) দুটি স্তর বাড়ানো হয়েছে। করহারে এমন কাটাছেঁড়া প্রতিবছরই হয়ে থাকে। এর বাইরে যেতে পারেনি অন্তর্বর্তী সরকারও।
এ বিষয়ে ভোক্তা-অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বৈষম্য দূর করার কথা বলেই অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েছে। কালোটাকা সাদা করার মানেই হলো দুর্নীতিকে উৎসাহিত করা। তাহলে বৈষম্য কমানো হলো কীভাবে?
নাজের হোসাইন বলেন, ‘আমরা চাই, বাজেটে কিছু ইনোভেশন থাকুক, মানুষকে স্বস্তি দেওয়া হোক। অতীতে দেখা গেছে, বাজেটের পরিমাণ, করের পরিমাণ প্রতিবছর বেড়েছে; কিন্তু জীবনমান বাড়েনি। এখন আমরা সেই ধারার পরিবর্তন চাই।
এ বিষয়ে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এই সরকারের বড় সুযোগ ছিল স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সামাজিক সুরক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে, সংস্কারের উদ্যোগ নিয়ে একটা ভিন্ন কাঠামোয় বাজেট প্রণয়ন করার। এতে নির্বাচনের পর যে সরকার আসবে, তার ওপর একটা চাপ সৃষ্টি করা যেত। এ সরকারও যদি আগের মতো একই পথে হাঁটে, তাহলে নতুন কিছু তো হচ্ছে না। যেটা অনেক প্রত্যাশা ছিল।
ব্যতিক্রমী উদ্যোগ
জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ তহবিল করা হচ্ছে। এর জন্য দেড় হাজার কোটি টাকার বরাদ্দ থাকছে বাজেটে। এই টাকায় মাসিক ভাতা, দেশে-বিদেশে চিকিৎসা খরচ, ফ্ল্যাট ও কর্মসংস্থানের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
বর্তমানে স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতার ক্ষেত্রে করমুক্ত আয়ের সীমা সাড়ে ৩ লাখ টাকা। ২০২৬-২৭ ও ২০২৭-২৮ করবর্ষের জন্য স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতার ক্ষেত্রে করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়িয়ে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা করার প্রস্তাব থাকছে। গেজেটভুক্ত জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪-এ আহত ‘জুলাই যোদ্ধা’ করদাতাদের ক্ষেত্রে করমুক্ত আয়ের সীমা ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
জন্মসূত্রে বাংলাদেশি ছিলেন অথচ পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশি নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছেন, এমন ব্যক্তির বাংলাদেশে অর্জিত আয়ের ওপর যথাযথভাবে কর পরিশোধ না করে নানা উপায়ে বিদেশে পাচার করা অর্থ-সম্পদের ওপর কর ও জরিমানা আরোপের বিধান রাখা হচ্ছে বাজেটে।
সমালোচিত উদ্যোগ
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত ছিল ভবিষ্যতের বাজেটে অপ্রদর্শিত অর্থ বা কালোটাকা প্রদর্শিত (সাদা) করার আর কোনো সুযোগ থাকবে না। তবে শেষ পর্যন্ত কালোটাকা সাদা করার বিধান রাখা হচ্ছে। তবে আগের মতো ঢালাওভাবে নয়; কেবল স্থাপনা, বাড়ি, ফ্ল্যাট, অ্যাপার্টমেন্ট, ফ্লোরস্পেস ও জমি কেনার ক্ষেত্রে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ থাকবে। এ ক্ষেত্রে বিদ্যমান করহার সর্বোচ্চ সাত গুণ পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে। একই সঙ্গে জমি ও ফ্ল্যাট নিবন্ধনের কর কমানোর সুপারিশ করা হয়েছে। বাজারমূল্যে দলিল নিবন্ধন উৎসাহিত করতে এ সুপারিশ করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
অবৈধ অর্থ বৈধ করার সুযোগের সমালোচনা করে অর্থনীতিবিদ ড. সেলিম রায়হান বলেন, ‘কালোটাকা সাদা করা নিয়ে বছরের পর বছর আমরা প্রতিবাদ করেছি। উপদেষ্টা পরিষদের বেশির ভাগ সদস্যই প্রতিবাদ করেছেন। এটা যদি এভাবেই রাখা হয়, সেটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক হবে। যখন আমরা বৈষম্যবিরোধী কথা বলছি, অনৈতিকতার বিরুদ্ধে কথা বলছি, সেখানে এটি একেবারে কাম্য নয়, সমর্থনযোগ্য নয়।
অন্তর্বর্তী সরকার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের যে বাজেট আজ ঘোষণা করতে যাচ্ছে, তাতে জনজীবন সহজ করতে কিংবা অর্থনীতিতে নতুন গতি আনার মতো উদ্ভাবনী কোনো উদ্যোগ নেই। রাজস্ব খাত সংস্কারে বড় উদ্যোগও নেই। বরং রাজস্ব বাড়াতে গতানুগতিক প্রক্রিয়ায় কাটাছেঁড়া করা হয়েছে করহারে। এতে ৯০টির বেশি পণ্যে ভ্যাট-শুল্ক বাড়বে। থাকছে কালোটাকা সাদা করার সুযোগের মতো সমালোচিত নীতিও।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, এলডিসি উত্তরণ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ৩১টির মতো শিল্প খাতে কর-অবকাশ সুবিধা বাতিল করা হতে পারে। সরকার ৯০টির বেশি পণ্য ও সেবায় ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক (এসডি) বৃদ্ধি করতে যাচ্ছে। এসব তালিকায় রয়েছে প্যাকেটজাত মসলাজাতীয় পণ্য, জনহিতকর সংস্থা, অনলাইন পণ্য বিক্রি, সাবান, ডিটারজেন্ট, কুকার, ইলেকট্রনিক হোম অ্যাপ্লায়েন্স, কেন সুতা, ম্যান-মেড ফাইবার ইয়ার্ন, ইলেকট্রিক ফিটিংস, নাট-বল্টু, কনডাক্টর, ওয়্যার ইত্যাদি, আইসক্রিম, সিগারেট আমদানি, ওটিটি (ওভার-দ্য-টপ সার্ভিস) ইত্যাদি। এ ছাড়াও সম্পূরক শুল্ক (এসডি) ও কাস্টমস শুল্ক (সিডি) দুটি স্তর বাড়ানো হয়েছে। করহারে এমন কাটাছেঁড়া প্রতিবছরই হয়ে থাকে। এর বাইরে যেতে পারেনি অন্তর্বর্তী সরকারও।
এ বিষয়ে ভোক্তা-অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বৈষম্য দূর করার কথা বলেই অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েছে। কালোটাকা সাদা করার মানেই হলো দুর্নীতিকে উৎসাহিত করা। তাহলে বৈষম্য কমানো হলো কীভাবে?
নাজের হোসাইন বলেন, ‘আমরা চাই, বাজেটে কিছু ইনোভেশন থাকুক, মানুষকে স্বস্তি দেওয়া হোক। অতীতে দেখা গেছে, বাজেটের পরিমাণ, করের পরিমাণ প্রতিবছর বেড়েছে; কিন্তু জীবনমান বাড়েনি। এখন আমরা সেই ধারার পরিবর্তন চাই।
এ বিষয়ে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এই সরকারের বড় সুযোগ ছিল স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সামাজিক সুরক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে, সংস্কারের উদ্যোগ নিয়ে একটা ভিন্ন কাঠামোয় বাজেট প্রণয়ন করার। এতে নির্বাচনের পর যে সরকার আসবে, তার ওপর একটা চাপ সৃষ্টি করা যেত। এ সরকারও যদি আগের মতো একই পথে হাঁটে, তাহলে নতুন কিছু তো হচ্ছে না। যেটা অনেক প্রত্যাশা ছিল।
ব্যতিক্রমী উদ্যোগ
জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ তহবিল করা হচ্ছে। এর জন্য দেড় হাজার কোটি টাকার বরাদ্দ থাকছে বাজেটে। এই টাকায় মাসিক ভাতা, দেশে-বিদেশে চিকিৎসা খরচ, ফ্ল্যাট ও কর্মসংস্থানের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
বর্তমানে স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতার ক্ষেত্রে করমুক্ত আয়ের সীমা সাড়ে ৩ লাখ টাকা। ২০২৬-২৭ ও ২০২৭-২৮ করবর্ষের জন্য স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতার ক্ষেত্রে করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়িয়ে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা করার প্রস্তাব থাকছে। গেজেটভুক্ত জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪-এ আহত ‘জুলাই যোদ্ধা’ করদাতাদের ক্ষেত্রে করমুক্ত আয়ের সীমা ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
জন্মসূত্রে বাংলাদেশি ছিলেন অথচ পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশি নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছেন, এমন ব্যক্তির বাংলাদেশে অর্জিত আয়ের ওপর যথাযথভাবে কর পরিশোধ না করে নানা উপায়ে বিদেশে পাচার করা অর্থ-সম্পদের ওপর কর ও জরিমানা আরোপের বিধান রাখা হচ্ছে বাজেটে।
সমালোচিত উদ্যোগ
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত ছিল ভবিষ্যতের বাজেটে অপ্রদর্শিত অর্থ বা কালোটাকা প্রদর্শিত (সাদা) করার আর কোনো সুযোগ থাকবে না। তবে শেষ পর্যন্ত কালোটাকা সাদা করার বিধান রাখা হচ্ছে। তবে আগের মতো ঢালাওভাবে নয়; কেবল স্থাপনা, বাড়ি, ফ্ল্যাট, অ্যাপার্টমেন্ট, ফ্লোরস্পেস ও জমি কেনার ক্ষেত্রে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ থাকবে। এ ক্ষেত্রে বিদ্যমান করহার সর্বোচ্চ সাত গুণ পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে। একই সঙ্গে জমি ও ফ্ল্যাট নিবন্ধনের কর কমানোর সুপারিশ করা হয়েছে। বাজারমূল্যে দলিল নিবন্ধন উৎসাহিত করতে এ সুপারিশ করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
অবৈধ অর্থ বৈধ করার সুযোগের সমালোচনা করে অর্থনীতিবিদ ড. সেলিম রায়হান বলেন, ‘কালোটাকা সাদা করা নিয়ে বছরের পর বছর আমরা প্রতিবাদ করেছি। উপদেষ্টা পরিষদের বেশির ভাগ সদস্যই প্রতিবাদ করেছেন। এটা যদি এভাবেই রাখা হয়, সেটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক হবে। যখন আমরা বৈষম্যবিরোধী কথা বলছি, অনৈতিকতার বিরুদ্ধে কথা বলছি, সেখানে এটি একেবারে কাম্য নয়, সমর্থনযোগ্য নয়।
বেনাপোল স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে ব্যবসায়ীদের খরচ বাড়ছে। হ্যান্ডলিংয়ের আগে পণ্য চালান পরীক্ষার নামে এই অতিরিক্ত খরচ চাপ দিচ্ছে। প্রতিটি চালানে ১৫-২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত ব্যয় হচ্ছে। কখনো কখনো রিপোর্ট পেতে সময় লাগছে এক মাসেরও বেশি, আর ওই সময় পণ্য বন্দরে আটকা পড়ে।
২ ঘণ্টা আগে২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট ঘিরে নানা প্রশ্ন আর আলোচনা চলছে। কালোটাকা সাদা করার সুযোগ থাকবে কি না, এলডিসি থেকে উত্তরণের জন্য দেশ কতটা প্রস্তুত, বিদেশি বাজার ধরে রাখতে কী উদ্যোগ দরকার—এসব নিয়েই মুখোমুখি হলেন অর্থনীতিবিদ, নীতিনির্ধারক ও ব্যবসায়ী নেতারা।
২ ঘণ্টা আগেএ পরিস্থিতিতে আমাদের দাবি, অবিলম্বে এনবিআর চেয়ারম্যানকে অপসারণ করতে হবে। তার মাধ্যমে রাজস্ব সংস্কার বিষয়ক কার্যক্রম সময়ক্ষেপণ বই কিছু নয় বলে মনে করে ঐক্য পরিষদ।
৬ ঘণ্টা আগেচতুর্থ প্রজন্মের বেসরকারি ব্যাংক ‘ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি’। ২০১৩ সালে লাইসেন্স পাওয়া এই ব্যাংকের বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ২৭ হাজার ৭৬৭ কোটি টাকা। এই ঋণের প্রায় ৬২ শতাংশ অর্থাৎ ১৭ হাজার ২২৯ কোটি টাকাই নামে-বেনামে হাতিয়ে নিয়েছে বিতর্কিত শিল্পগ্রুপ এস আলম। ঋণের নামে লুট করা এই টাকা সবচেয়ে বেশি নেওয়া হয়েছে
১ দিন আগে