Ajker Patrika

কাগজের টাকার ব্যবস্থাপনায় বছরে খরচ ৩ হাজার কোটি ডলার: গভর্নর

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। ছবি: ফাইল ছবি
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। ছবি: ফাইল ছবি

কাগজের টাকা ছাপানো, বণ্টন ও ব্যবস্থাপনায় বছরের বিপুল পরিমাণের অর্থ খরচ হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বলেছেন এই খরচ বছরে ৩ হাজার কোটি ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা। এই ব্যয় কমাতে ক্যাশলেস ব্যবস্থার ওপর জোর দিয়েছেন গভর্নর।

আজ রোববার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ৩৬৫ দিন’ শীর্ষক সংলাপে গভর্নর এ কথা বলেন।

সংলাপের আয়োজন করে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সিপিডির সম্মানীয় ফেলো প্রফেসর মুস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, প্রতিবছর টাকা ছাপানো, পরিবহন ও বণ্টনে বিশাল অঙ্কের অর্থ খরচ হয়। এ খরচ কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিমধ্যে কিউআর কোডভিত্তিক লেনদেন জনপ্রিয় করতে নীতিগত সহায়তা ও প্রযুক্তি অবকাঠামো তৈরির কাজ করছে।

তিনি বলেন, লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে কিউআর কোড ব্যবহার করতে হবে। এর ফলে ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে ভোক্তা—সবার জন্য লেনদেন হবে দ্রুত, নিরাপদ ও স্বচ্ছ। ক্যাশের (নগদ অর্থ) ব্যবহার কমলে রাষ্ট্রীয় খরচও উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে।

ডিজিটাল আর্থিক অন্তর্ভুক্তির জন্য স্মার্টফোনের গুরুত্ব তুলে ধরে গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, বর্তমানে আর্থিক লেনদেন, বিল পরিশোধ বা ইন্টারনেটভিত্তিক যেকোনো সেবা নিতে স্মার্টফোনের ব্যবহার অপরিহার্য। সরকার স্মার্টফোনের দাম কমাতে কাজ করছে। ৬ থেকে ৭ হাজার টাকার মধ্যে ভালো মানের স্মার্টফোন বাজারে আনতে পারলে শতভাগ মানুষকে স্মার্টফোনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।

গভর্নর আরও বলেন, এ লক্ষ্য অর্জনে ইন্টারনেটের দাম আরও কমাতে হবে এবং সেবার মান বাড়াতে হবে।

দেশের স্থিতিশীলতা আনতে হবে জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, আর্থিক খাতে কেবল স্থিতিশীলতা এসেছে। এখনো পদক্ষেপ বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ রয়েছে। কিন্তু রাজনৈতিক খাতে তো আসেনি। সিকিউরিটি সিচুয়েশন তো এখনো আনস্টেবল। সবকিছু মিলিয়ে এখনই কেউ বিনিয়োগে ঝাঁপিয়ে পড়বে এই প্রত্যাশা যদি কারও থাকে, আমি বলব সেটা কাল্পনিক। আমাকে বাস্তবসম্মত হতে হবে।

বিনিয়োগ প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, আমরা পাইপলাইনে বিনিয়োগ দেখতে পারছি। কিন্তু আরেকটু সময় লাগবে। সামনে নির্বাচন, এই মুহূর্তে হয়তো বড় কোনো বিনিয়োগকারী আসতে চাইবে না। বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও আসতে চাইবে না; পরবর্তী সরকার যদি সব চেঞ্জ করে ফেলে। লেটস টক টু দ্য নেক্সট গভর্নমেন্ট, এটা খুব স্বাভাবিক পলিটিক্যাল প্রসেস।  

তিনি বলেন, ‘৫ বিলিয়ন ডলার করে পণ্য আমদানি করছি। তাতে কী আমদানি কম হচ্ছে? বাজারে কী কোনো শর্টেজ আছে? কোনো পণ্যের অভাব আছে? হয়তো বলতে পারেন ক্যাপিটাল মেশিনারিজ ইমপোর্ট করছি না। লেজিটিমেট কোশ্চেন। দ্য আনসার ইজ, হু ইজ গোয়িং টু ইনভেস্ট ইন দিস এনভায়রনমেন্ট? আমরা খাদের কিনারায় ছিলাম, সেখান থেকে যদি দ্রুত ফেরত আসতে না পারি তাহলে খাদে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাটা অনেক বেশি।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, আমাদের দুটি চ্যালেঞ্জ ছিল। একটি হলো সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা, আর রিফর্ম এজেন্ডাকে এগিয়ে নেওয়া। যাতে ভবিষ্যতে যে সরকারই আসুক তারা যেন এটাকে সামনের দিকে নিয়ে যেতে পারে। আরও সুদৃঢ়ভাবে আর্থিক খাতকে প্রতিষ্ঠা করতে পারে। এটা চলমান প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ার শুরুটা আমরা করে দিতে পারি সেটাই প্রত্যাশা।

গভর্নর বলেন, ‘ডলার মার্কেট স্থিতিশীল করতে যুদ্ধ করেছি। পাচার অর্থ ফেরাতে বিশেষ ফোর্স কাজ করছে। আর ক্যাশলেস করতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কেননা, ক্যাশের খরচ ও ঝুঁকি দুটো বেশি। টাকা ছাপাসহ ক্যাশ ব্যবস্থাপনায় বছরে ৩০ বিলিয়ন ডলার খরচ হয়।’ এই অর্থ সাশ্রয়ের ওপর জোর দেন গভর্নর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফেল করায় বকা খেয়ে বাড়ি ছাড়ে বাংলাদেশি কিশোরী, ভারতে ৩ মাসে ২০০ লোকের ধর্ষণ

খালার সঙ্গে শত্রুতা মুহাম্মদ ইউনূসের, আমি ‘কোল্যাটারাল ড্যামেজ’: টিউলিপ সিদ্দিক

‘কাল দেখা হইবে, ভালো থাকিস’—ছেলেকে বলেছিলেন গণপিটুনিতে নিহত প্রদীপ

দেখো, ওর থেকে আরও ৫ লাখ নিতে পারো কি না—মেসেঞ্জার কলে এনসিপি নেতা নিজাম

রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী আটক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত