আজকের পত্রিকা ডেস্ক

বিশ্বের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি মানুষের প্রধান খাদ্য তৈরি হয় চাল থেকে। কিন্তু এই মৌলিক খাদ্যশস্য এখন সংকটে। বিশ্বের ৯০ শতাংশ চাল উৎপন্ন হয় এশিয়ায়। কিন্তু অঞ্চলটি খরাপ্রবণ। এর পাশাপাশি প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ ও অনিয়মিত আবহাওয়ার কারণে দিন দিন কমছে ফলন। উৎপাদন কমে যাওয়ায় বিশ্বজুড়ে চালের দাম এখন ঊর্ধ্বমুখী। মোটকথা চাল নিয়ে তৈরি হয়েছে বৈশ্বিক সংকট।
জাপানে প্রায় প্রতি বেলার খাবারে ‘ডনবুরি’ (ভাতের বাটি) অত্যাবশ্যকীয়, সেখানে ক্রমেই মূল্যবান হয়ে উঠছে চাল। ঊর্ধ্বমুখী এই দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে দেশটির সরকার তাদের জরুরি মজুতের ১ লাখ ৬৫ হাজার টন চাল নিলামে তুলেছে।
ফিলিপাইনেও ঘোষণা করা হয়েছে জরুরি খাদ্য সংকটাবস্থা (ফুড সিকিউরিটি ইমার্জেন্সি)। সরকারের সংরক্ষিত চালও ছাড়া হয়েছে বাজারে।
বিশ্বজুড়ে চাহিদা মেটাতে ইন্দোনেশিয়ার সরকার নতুন করে আরও ১ মিলিয়ন হেক্টর জমিতে ধান চাষের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যার পরিমাণ বৃহৎ লন্ডন শহরের ছয় গুণের সমান।
বিশ্বজুড়ে ৩ দশমিক ৫ বিলিয়নের বেশি মানুষ চালের ওপর নির্ভরশীল। বিপুল এই জনগোষ্ঠীর বেশির ভাগ বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলোর বাসিন্দা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চালের এই ঘাটতি যদি চলতে থাকে, তাহলে সবচেয়ে বেশি ভুগবে দরিদ্র জনগোষ্ঠী।
এমন পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিরূপ পরিবেশে টিকে থাকতে পারে, এমন নতুন ধানের জাত উদ্ভাবনের চেষ্টা করছেন গবেষকেরা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সেই ধারায় এক ধরনের বিপ্লব শুরু হয়েছে। যেখানে নতুন প্রযুক্তি চালের উৎপাদনকে আরও টেকসই ও প্রতিকূল পরিবেশে সহনশীল করে তুলছে। ২০২১ সালে প্রথম দেশ হিসেবে ফিলিপাইন পুষ্টিবর্ধক গোল্ডেন রাইসের অনুমোদন দেয়। গোল্ডেন রাইস হলো জিনগতভাবে পরিবর্তিত এক বিশেষ ধরনের ধান, যাতে ভিটামিন ‘এ’ রয়েছে।
ধানের জিনগত পরিবর্তনের প্রযুক্তি এখন আরও অনেক দূর এগিয়েছে। ইউনিভার্সিটি অব শেফিল্ডের উদ্ভিদ কোষ সংকেত বিষয়ক গবেষক ও অধ্যাপক জুলি গ্রে বর্তমানে যুক্তরাজ্যের রাইস রিসার্চ কনসোর্টিয়ামের জন্য খরা ও তাপসহনশীল ধানের জাত উদ্ভাবনে কাজ করছেন।
অধ্যাপক জুলি গ্রে ও তাঁর সহকর্মীরা এমন ধানের গাছ তৈরি করছেন, যেগুলোর স্টোমাটা (পাতার ক্ষুদ্র রন্ধ্র, যার মাধ্যমে কার্বন ডাই-অক্সাইড প্রবেশ করে ও পানি বেরিয়ে যায়) তুলনামূলক কম। এর লক্ষ্য হলো, এগুলো যাতে শুষ্ক পরিবেশে আরও সহনশীল হয়। ধানের মতো শস্য সাধারণত পরিবেশগত পরিবর্তনের সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নিতে পারে না, কিন্তু বর্তমানে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইডের মাত্রা অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি এবং ভবিষ্যতে আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অধ্যাপক গ্রে বলেন, শুধু ধান নয়, বেশির ভাগ শস্যজাতীয় গাছের স্টোমাটা খুব বেশি। যে কারণে তাদের পানি বেশি প্রয়োজন হয়। স্টোমাটার সংখ্যা কমিয়ে দিতে পারলে গাছগুলো ভবিষ্যতের জলবায়ুর জন্য আরও উপযোগী হতে পারে।
এখনো অনেক মানুষ জিনগতভাবে পরিবর্তিত খাদ্যের প্রতি সংশয়ী। তাই সরাসরি জিনগত পরিবর্তনের পরিবর্তে সিলেক্টিভ ব্রিডিং পদ্ধতিতে নতুন জাত উদ্ভাবনের চেষ্টা করছেন গ্রে। মূলত থাইল্যান্ডের গবেষকদের সঙ্গে যৌথভাবে এ গবেষণা করছেন তিনি। তবে নতুন এই চাল এখনো তেমন সুস্বাদু নয়। এর স্বাদ প্রাকৃতিক চালের কাছাকাছি আনতে আরও গবেষণা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন তিনি।
শুধু ধানের জাত নয়, বদলে যাচ্ছে ধান চাষের পদ্ধতিও। ধান রোপণ থেকে শুরু করে সার ছিটানো, আগাছা চিহ্নিতকরণ এমনকি জমির পুষ্টিমান নির্ণয়ের কাজেও আজকাল ব্যবহার করা হচ্ছে ড্রোন। এতে চাষের পুরো প্রক্রিয়া আরও নিখুঁত ও কার্যকর হচ্ছে। কৃষিকাজে ড্রোনের ব্যবহার বাড়ার পেছনে আরেকটি বড় কারণ হলো শ্রমিকের সংকট। এখন বেশির ভাগ মানুষ শহরমুখী। তাই মানুষের কাজ এখন প্রযুক্তিকে দিয়ে করিয়ে নিতে হচ্ছে। তবে সে ক্ষেত্রে খরচ একটি বড় বাধা।
ওয়ার্ল্ড রিসোর্স ইনস্টিটিউটের ভারতীয় কো-অর্ডিনেটর জয়াহরি কে এম বলেন, ‘ভারতের প্রান্তিক মানুষেরা কৃষিকাজ করেন। তাঁদের আসলে এই খাতের জন্য প্রয়োজনীয় ও উপযুক্ত প্রযুক্তি ব্যবহারের সামর্থ্য নেই। যদিও আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা সংস্থা (ইআরআরআই) প্রান্তিক কৃষকদের জন্য ড্রোন ফর রাইস নামে একটি প্রকল্প চালু করেছে। কিন্তু বিশ্বের সব প্রান্তের সব কৃষকদের এই প্রকল্পের আওতায় আনা একটি জটিল ও সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। প্রাথমিকভাবে গত বছর থেকে ফিলিপাইনে চালু হয়েছে এ প্রকল্প এবং একে সফল বলছেন স্থানীয় কৃষকেরা।’
এ ছাড়া ধানখেত চিহ্নিতকরণ, মিথেন নির্গমন অনুমান এমনকি ফলনের পূর্বাভাস পেতে ব্যবহার করা হচ্ছে স্যাটেলাইটও। সারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পৃথিবী পর্যবেক্ষণ ও জলবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. বেলেন মার্টি-কারডোনা বলেন, ‘আমাদের অনেক ধরনের প্যারামিটার প্রয়োজন, যেমন মাটির প্রকার, আবহাওয়ার তথ্য, তাপমাত্রা ও খেতের জলাবদ্ধতার অবস্থা। এসব নিরীক্ষায় সাহায্য করে স্যাটেলাইট।’
ধানের উৎপাদন হ্রাসের পেছনে একটি বড় কারণ জলবায়ু পরিবর্তন। তবে গবেষণায় উঠে এসেছে চমকপ্রদ তথ্য। ধান চাষের চিরাচরিত/প্রাচীন প্রক্রিয়াও জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম কারণ। গবেষণায় দেখা গেছে, চিরাচরিত পদ্ধতিতে ধান চাষে ১২ শতাংশ পর্যন্ত মিথেন গ্যাসের নির্গমন হয়। এই মিথেন গ্যাস কার্বন ডাই-অক্সাইডের চেয়ে ২৫ গুণ দ্রুত পৃথিবীকে উষ্ণ করে তোলে। এর পাশাপাশি ধান চাষে প্রচুর পরিমাণে পানি ব্যবহৃত হয়, প্রতি কিলোগ্রাম ধানের পেছনে প্রায় আড়াই হাজার লিটার, যা প্রায় ১৬টি বাথটাবভর্তি পানির সমান।
টেকসই ধান চাষের জন্য হাই-টেক সমাধান অপরিহার্য নয়, শুধু চাষের পদ্ধতি পরিবর্তন করলে তা উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে—বলছেন গবেষকেরা। ধান চাষের একটি পরিবেশবান্ধব নতুন পদ্ধতি হচ্ছে, ডাইরেক্ট সিডেড রাইস। এখানে ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতির মতো জমি জলমগ্ন করে তাতে চারা রোপণ না করে সরাসরি মাঠে বীজ বপন করা হয়। এতে পানির ব্যবহার কমে, মাটির ক্ষতি হয় না এবং মিথেন গ্যাসের নির্গমন অনেক কম হয়।
রথামস্টেড রিসার্চ সেন্টারের গবেষক ড. স্মিতা কুরুপ বলেন, ‘ধান আসলে অতটা পানি চায় না, কিন্তু আমরা বছরের পর বছর এমন জাত বেছে নিয়েছি, যেগুলো পানিতে ভিজে থাকা জমিতে ভালো হয়। অথচ ধান শুষ্ক জমিতেও ভালোভাবে চাষ করা সম্ভব।’
স্মিতা কুরুপ শত শত ধানগাছ পরীক্ষা করে এ পদ্ধতির উপযোগী সেরা জাতগুলো নির্বাচন করেছেন, যাতে কৃষকেরা ফলন না কমিয়ে নতুনভাবে চাষ করতে পারেন। তবে চ্যালেঞ্জ হলো—প্রতিটি দেশের ধানের স্বাদ, গুণ ও রান্নার ধরন ভিন্ন, যেমন জেসমিন ধান, স্টিকি রাইস বা লম্বা দানার ধান। তাই প্রতিটি দেশে আলাদাভাবে উপযুক্ত জাত বাছাই করতে হচ্ছে।

বিশ্বের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি মানুষের প্রধান খাদ্য তৈরি হয় চাল থেকে। কিন্তু এই মৌলিক খাদ্যশস্য এখন সংকটে। বিশ্বের ৯০ শতাংশ চাল উৎপন্ন হয় এশিয়ায়। কিন্তু অঞ্চলটি খরাপ্রবণ। এর পাশাপাশি প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ ও অনিয়মিত আবহাওয়ার কারণে দিন দিন কমছে ফলন। উৎপাদন কমে যাওয়ায় বিশ্বজুড়ে চালের দাম এখন ঊর্ধ্বমুখী। মোটকথা চাল নিয়ে তৈরি হয়েছে বৈশ্বিক সংকট।
জাপানে প্রায় প্রতি বেলার খাবারে ‘ডনবুরি’ (ভাতের বাটি) অত্যাবশ্যকীয়, সেখানে ক্রমেই মূল্যবান হয়ে উঠছে চাল। ঊর্ধ্বমুখী এই দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে দেশটির সরকার তাদের জরুরি মজুতের ১ লাখ ৬৫ হাজার টন চাল নিলামে তুলেছে।
ফিলিপাইনেও ঘোষণা করা হয়েছে জরুরি খাদ্য সংকটাবস্থা (ফুড সিকিউরিটি ইমার্জেন্সি)। সরকারের সংরক্ষিত চালও ছাড়া হয়েছে বাজারে।
বিশ্বজুড়ে চাহিদা মেটাতে ইন্দোনেশিয়ার সরকার নতুন করে আরও ১ মিলিয়ন হেক্টর জমিতে ধান চাষের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যার পরিমাণ বৃহৎ লন্ডন শহরের ছয় গুণের সমান।
বিশ্বজুড়ে ৩ দশমিক ৫ বিলিয়নের বেশি মানুষ চালের ওপর নির্ভরশীল। বিপুল এই জনগোষ্ঠীর বেশির ভাগ বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলোর বাসিন্দা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চালের এই ঘাটতি যদি চলতে থাকে, তাহলে সবচেয়ে বেশি ভুগবে দরিদ্র জনগোষ্ঠী।
এমন পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিরূপ পরিবেশে টিকে থাকতে পারে, এমন নতুন ধানের জাত উদ্ভাবনের চেষ্টা করছেন গবেষকেরা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সেই ধারায় এক ধরনের বিপ্লব শুরু হয়েছে। যেখানে নতুন প্রযুক্তি চালের উৎপাদনকে আরও টেকসই ও প্রতিকূল পরিবেশে সহনশীল করে তুলছে। ২০২১ সালে প্রথম দেশ হিসেবে ফিলিপাইন পুষ্টিবর্ধক গোল্ডেন রাইসের অনুমোদন দেয়। গোল্ডেন রাইস হলো জিনগতভাবে পরিবর্তিত এক বিশেষ ধরনের ধান, যাতে ভিটামিন ‘এ’ রয়েছে।
ধানের জিনগত পরিবর্তনের প্রযুক্তি এখন আরও অনেক দূর এগিয়েছে। ইউনিভার্সিটি অব শেফিল্ডের উদ্ভিদ কোষ সংকেত বিষয়ক গবেষক ও অধ্যাপক জুলি গ্রে বর্তমানে যুক্তরাজ্যের রাইস রিসার্চ কনসোর্টিয়ামের জন্য খরা ও তাপসহনশীল ধানের জাত উদ্ভাবনে কাজ করছেন।
অধ্যাপক জুলি গ্রে ও তাঁর সহকর্মীরা এমন ধানের গাছ তৈরি করছেন, যেগুলোর স্টোমাটা (পাতার ক্ষুদ্র রন্ধ্র, যার মাধ্যমে কার্বন ডাই-অক্সাইড প্রবেশ করে ও পানি বেরিয়ে যায়) তুলনামূলক কম। এর লক্ষ্য হলো, এগুলো যাতে শুষ্ক পরিবেশে আরও সহনশীল হয়। ধানের মতো শস্য সাধারণত পরিবেশগত পরিবর্তনের সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নিতে পারে না, কিন্তু বর্তমানে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইডের মাত্রা অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি এবং ভবিষ্যতে আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অধ্যাপক গ্রে বলেন, শুধু ধান নয়, বেশির ভাগ শস্যজাতীয় গাছের স্টোমাটা খুব বেশি। যে কারণে তাদের পানি বেশি প্রয়োজন হয়। স্টোমাটার সংখ্যা কমিয়ে দিতে পারলে গাছগুলো ভবিষ্যতের জলবায়ুর জন্য আরও উপযোগী হতে পারে।
এখনো অনেক মানুষ জিনগতভাবে পরিবর্তিত খাদ্যের প্রতি সংশয়ী। তাই সরাসরি জিনগত পরিবর্তনের পরিবর্তে সিলেক্টিভ ব্রিডিং পদ্ধতিতে নতুন জাত উদ্ভাবনের চেষ্টা করছেন গ্রে। মূলত থাইল্যান্ডের গবেষকদের সঙ্গে যৌথভাবে এ গবেষণা করছেন তিনি। তবে নতুন এই চাল এখনো তেমন সুস্বাদু নয়। এর স্বাদ প্রাকৃতিক চালের কাছাকাছি আনতে আরও গবেষণা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন তিনি।
শুধু ধানের জাত নয়, বদলে যাচ্ছে ধান চাষের পদ্ধতিও। ধান রোপণ থেকে শুরু করে সার ছিটানো, আগাছা চিহ্নিতকরণ এমনকি জমির পুষ্টিমান নির্ণয়ের কাজেও আজকাল ব্যবহার করা হচ্ছে ড্রোন। এতে চাষের পুরো প্রক্রিয়া আরও নিখুঁত ও কার্যকর হচ্ছে। কৃষিকাজে ড্রোনের ব্যবহার বাড়ার পেছনে আরেকটি বড় কারণ হলো শ্রমিকের সংকট। এখন বেশির ভাগ মানুষ শহরমুখী। তাই মানুষের কাজ এখন প্রযুক্তিকে দিয়ে করিয়ে নিতে হচ্ছে। তবে সে ক্ষেত্রে খরচ একটি বড় বাধা।
ওয়ার্ল্ড রিসোর্স ইনস্টিটিউটের ভারতীয় কো-অর্ডিনেটর জয়াহরি কে এম বলেন, ‘ভারতের প্রান্তিক মানুষেরা কৃষিকাজ করেন। তাঁদের আসলে এই খাতের জন্য প্রয়োজনীয় ও উপযুক্ত প্রযুক্তি ব্যবহারের সামর্থ্য নেই। যদিও আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা সংস্থা (ইআরআরআই) প্রান্তিক কৃষকদের জন্য ড্রোন ফর রাইস নামে একটি প্রকল্প চালু করেছে। কিন্তু বিশ্বের সব প্রান্তের সব কৃষকদের এই প্রকল্পের আওতায় আনা একটি জটিল ও সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। প্রাথমিকভাবে গত বছর থেকে ফিলিপাইনে চালু হয়েছে এ প্রকল্প এবং একে সফল বলছেন স্থানীয় কৃষকেরা।’
এ ছাড়া ধানখেত চিহ্নিতকরণ, মিথেন নির্গমন অনুমান এমনকি ফলনের পূর্বাভাস পেতে ব্যবহার করা হচ্ছে স্যাটেলাইটও। সারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পৃথিবী পর্যবেক্ষণ ও জলবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. বেলেন মার্টি-কারডোনা বলেন, ‘আমাদের অনেক ধরনের প্যারামিটার প্রয়োজন, যেমন মাটির প্রকার, আবহাওয়ার তথ্য, তাপমাত্রা ও খেতের জলাবদ্ধতার অবস্থা। এসব নিরীক্ষায় সাহায্য করে স্যাটেলাইট।’
ধানের উৎপাদন হ্রাসের পেছনে একটি বড় কারণ জলবায়ু পরিবর্তন। তবে গবেষণায় উঠে এসেছে চমকপ্রদ তথ্য। ধান চাষের চিরাচরিত/প্রাচীন প্রক্রিয়াও জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম কারণ। গবেষণায় দেখা গেছে, চিরাচরিত পদ্ধতিতে ধান চাষে ১২ শতাংশ পর্যন্ত মিথেন গ্যাসের নির্গমন হয়। এই মিথেন গ্যাস কার্বন ডাই-অক্সাইডের চেয়ে ২৫ গুণ দ্রুত পৃথিবীকে উষ্ণ করে তোলে। এর পাশাপাশি ধান চাষে প্রচুর পরিমাণে পানি ব্যবহৃত হয়, প্রতি কিলোগ্রাম ধানের পেছনে প্রায় আড়াই হাজার লিটার, যা প্রায় ১৬টি বাথটাবভর্তি পানির সমান।
টেকসই ধান চাষের জন্য হাই-টেক সমাধান অপরিহার্য নয়, শুধু চাষের পদ্ধতি পরিবর্তন করলে তা উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে—বলছেন গবেষকেরা। ধান চাষের একটি পরিবেশবান্ধব নতুন পদ্ধতি হচ্ছে, ডাইরেক্ট সিডেড রাইস। এখানে ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতির মতো জমি জলমগ্ন করে তাতে চারা রোপণ না করে সরাসরি মাঠে বীজ বপন করা হয়। এতে পানির ব্যবহার কমে, মাটির ক্ষতি হয় না এবং মিথেন গ্যাসের নির্গমন অনেক কম হয়।
রথামস্টেড রিসার্চ সেন্টারের গবেষক ড. স্মিতা কুরুপ বলেন, ‘ধান আসলে অতটা পানি চায় না, কিন্তু আমরা বছরের পর বছর এমন জাত বেছে নিয়েছি, যেগুলো পানিতে ভিজে থাকা জমিতে ভালো হয়। অথচ ধান শুষ্ক জমিতেও ভালোভাবে চাষ করা সম্ভব।’
স্মিতা কুরুপ শত শত ধানগাছ পরীক্ষা করে এ পদ্ধতির উপযোগী সেরা জাতগুলো নির্বাচন করেছেন, যাতে কৃষকেরা ফলন না কমিয়ে নতুনভাবে চাষ করতে পারেন। তবে চ্যালেঞ্জ হলো—প্রতিটি দেশের ধানের স্বাদ, গুণ ও রান্নার ধরন ভিন্ন, যেমন জেসমিন ধান, স্টিকি রাইস বা লম্বা দানার ধান। তাই প্রতিটি দেশে আলাদাভাবে উপযুক্ত জাত বাছাই করতে হচ্ছে।
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

বিশ্বের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি মানুষের প্রধান খাদ্য তৈরি হয় চাল থেকে। কিন্তু এই মৌলিক খাদ্যশস্য এখন সংকটে। বিশ্বের ৯০ শতাংশ চাল উৎপন্ন হয় এশিয়ায়। কিন্তু অঞ্চলটি খরাপ্রবণ। এর পাশাপাশি প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ ও অনিয়মিত আবহাওয়ার কারণে দিন দিন কমছে ফলন। উৎপাদন কমে যাওয়ায় বিশ্বজুড়ে চালের দাম এখন ঊর্ধ্বমুখী। মোটকথা চাল নিয়ে তৈরি হয়েছে বৈশ্বিক সংকট।
জাপানে প্রায় প্রতি বেলার খাবারে ‘ডনবুরি’ (ভাতের বাটি) অত্যাবশ্যকীয়, সেখানে ক্রমেই মূল্যবান হয়ে উঠছে চাল। ঊর্ধ্বমুখী এই দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে দেশটির সরকার তাদের জরুরি মজুতের ১ লাখ ৬৫ হাজার টন চাল নিলামে তুলেছে।
ফিলিপাইনেও ঘোষণা করা হয়েছে জরুরি খাদ্য সংকটাবস্থা (ফুড সিকিউরিটি ইমার্জেন্সি)। সরকারের সংরক্ষিত চালও ছাড়া হয়েছে বাজারে।
বিশ্বজুড়ে চাহিদা মেটাতে ইন্দোনেশিয়ার সরকার নতুন করে আরও ১ মিলিয়ন হেক্টর জমিতে ধান চাষের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যার পরিমাণ বৃহৎ লন্ডন শহরের ছয় গুণের সমান।
বিশ্বজুড়ে ৩ দশমিক ৫ বিলিয়নের বেশি মানুষ চালের ওপর নির্ভরশীল। বিপুল এই জনগোষ্ঠীর বেশির ভাগ বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলোর বাসিন্দা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চালের এই ঘাটতি যদি চলতে থাকে, তাহলে সবচেয়ে বেশি ভুগবে দরিদ্র জনগোষ্ঠী।
এমন পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিরূপ পরিবেশে টিকে থাকতে পারে, এমন নতুন ধানের জাত উদ্ভাবনের চেষ্টা করছেন গবেষকেরা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সেই ধারায় এক ধরনের বিপ্লব শুরু হয়েছে। যেখানে নতুন প্রযুক্তি চালের উৎপাদনকে আরও টেকসই ও প্রতিকূল পরিবেশে সহনশীল করে তুলছে। ২০২১ সালে প্রথম দেশ হিসেবে ফিলিপাইন পুষ্টিবর্ধক গোল্ডেন রাইসের অনুমোদন দেয়। গোল্ডেন রাইস হলো জিনগতভাবে পরিবর্তিত এক বিশেষ ধরনের ধান, যাতে ভিটামিন ‘এ’ রয়েছে।
ধানের জিনগত পরিবর্তনের প্রযুক্তি এখন আরও অনেক দূর এগিয়েছে। ইউনিভার্সিটি অব শেফিল্ডের উদ্ভিদ কোষ সংকেত বিষয়ক গবেষক ও অধ্যাপক জুলি গ্রে বর্তমানে যুক্তরাজ্যের রাইস রিসার্চ কনসোর্টিয়ামের জন্য খরা ও তাপসহনশীল ধানের জাত উদ্ভাবনে কাজ করছেন।
অধ্যাপক জুলি গ্রে ও তাঁর সহকর্মীরা এমন ধানের গাছ তৈরি করছেন, যেগুলোর স্টোমাটা (পাতার ক্ষুদ্র রন্ধ্র, যার মাধ্যমে কার্বন ডাই-অক্সাইড প্রবেশ করে ও পানি বেরিয়ে যায়) তুলনামূলক কম। এর লক্ষ্য হলো, এগুলো যাতে শুষ্ক পরিবেশে আরও সহনশীল হয়। ধানের মতো শস্য সাধারণত পরিবেশগত পরিবর্তনের সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নিতে পারে না, কিন্তু বর্তমানে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইডের মাত্রা অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি এবং ভবিষ্যতে আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অধ্যাপক গ্রে বলেন, শুধু ধান নয়, বেশির ভাগ শস্যজাতীয় গাছের স্টোমাটা খুব বেশি। যে কারণে তাদের পানি বেশি প্রয়োজন হয়। স্টোমাটার সংখ্যা কমিয়ে দিতে পারলে গাছগুলো ভবিষ্যতের জলবায়ুর জন্য আরও উপযোগী হতে পারে।
এখনো অনেক মানুষ জিনগতভাবে পরিবর্তিত খাদ্যের প্রতি সংশয়ী। তাই সরাসরি জিনগত পরিবর্তনের পরিবর্তে সিলেক্টিভ ব্রিডিং পদ্ধতিতে নতুন জাত উদ্ভাবনের চেষ্টা করছেন গ্রে। মূলত থাইল্যান্ডের গবেষকদের সঙ্গে যৌথভাবে এ গবেষণা করছেন তিনি। তবে নতুন এই চাল এখনো তেমন সুস্বাদু নয়। এর স্বাদ প্রাকৃতিক চালের কাছাকাছি আনতে আরও গবেষণা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন তিনি।
শুধু ধানের জাত নয়, বদলে যাচ্ছে ধান চাষের পদ্ধতিও। ধান রোপণ থেকে শুরু করে সার ছিটানো, আগাছা চিহ্নিতকরণ এমনকি জমির পুষ্টিমান নির্ণয়ের কাজেও আজকাল ব্যবহার করা হচ্ছে ড্রোন। এতে চাষের পুরো প্রক্রিয়া আরও নিখুঁত ও কার্যকর হচ্ছে। কৃষিকাজে ড্রোনের ব্যবহার বাড়ার পেছনে আরেকটি বড় কারণ হলো শ্রমিকের সংকট। এখন বেশির ভাগ মানুষ শহরমুখী। তাই মানুষের কাজ এখন প্রযুক্তিকে দিয়ে করিয়ে নিতে হচ্ছে। তবে সে ক্ষেত্রে খরচ একটি বড় বাধা।
ওয়ার্ল্ড রিসোর্স ইনস্টিটিউটের ভারতীয় কো-অর্ডিনেটর জয়াহরি কে এম বলেন, ‘ভারতের প্রান্তিক মানুষেরা কৃষিকাজ করেন। তাঁদের আসলে এই খাতের জন্য প্রয়োজনীয় ও উপযুক্ত প্রযুক্তি ব্যবহারের সামর্থ্য নেই। যদিও আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা সংস্থা (ইআরআরআই) প্রান্তিক কৃষকদের জন্য ড্রোন ফর রাইস নামে একটি প্রকল্প চালু করেছে। কিন্তু বিশ্বের সব প্রান্তের সব কৃষকদের এই প্রকল্পের আওতায় আনা একটি জটিল ও সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। প্রাথমিকভাবে গত বছর থেকে ফিলিপাইনে চালু হয়েছে এ প্রকল্প এবং একে সফল বলছেন স্থানীয় কৃষকেরা।’
এ ছাড়া ধানখেত চিহ্নিতকরণ, মিথেন নির্গমন অনুমান এমনকি ফলনের পূর্বাভাস পেতে ব্যবহার করা হচ্ছে স্যাটেলাইটও। সারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পৃথিবী পর্যবেক্ষণ ও জলবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. বেলেন মার্টি-কারডোনা বলেন, ‘আমাদের অনেক ধরনের প্যারামিটার প্রয়োজন, যেমন মাটির প্রকার, আবহাওয়ার তথ্য, তাপমাত্রা ও খেতের জলাবদ্ধতার অবস্থা। এসব নিরীক্ষায় সাহায্য করে স্যাটেলাইট।’
ধানের উৎপাদন হ্রাসের পেছনে একটি বড় কারণ জলবায়ু পরিবর্তন। তবে গবেষণায় উঠে এসেছে চমকপ্রদ তথ্য। ধান চাষের চিরাচরিত/প্রাচীন প্রক্রিয়াও জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম কারণ। গবেষণায় দেখা গেছে, চিরাচরিত পদ্ধতিতে ধান চাষে ১২ শতাংশ পর্যন্ত মিথেন গ্যাসের নির্গমন হয়। এই মিথেন গ্যাস কার্বন ডাই-অক্সাইডের চেয়ে ২৫ গুণ দ্রুত পৃথিবীকে উষ্ণ করে তোলে। এর পাশাপাশি ধান চাষে প্রচুর পরিমাণে পানি ব্যবহৃত হয়, প্রতি কিলোগ্রাম ধানের পেছনে প্রায় আড়াই হাজার লিটার, যা প্রায় ১৬টি বাথটাবভর্তি পানির সমান।
টেকসই ধান চাষের জন্য হাই-টেক সমাধান অপরিহার্য নয়, শুধু চাষের পদ্ধতি পরিবর্তন করলে তা উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে—বলছেন গবেষকেরা। ধান চাষের একটি পরিবেশবান্ধব নতুন পদ্ধতি হচ্ছে, ডাইরেক্ট সিডেড রাইস। এখানে ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতির মতো জমি জলমগ্ন করে তাতে চারা রোপণ না করে সরাসরি মাঠে বীজ বপন করা হয়। এতে পানির ব্যবহার কমে, মাটির ক্ষতি হয় না এবং মিথেন গ্যাসের নির্গমন অনেক কম হয়।
রথামস্টেড রিসার্চ সেন্টারের গবেষক ড. স্মিতা কুরুপ বলেন, ‘ধান আসলে অতটা পানি চায় না, কিন্তু আমরা বছরের পর বছর এমন জাত বেছে নিয়েছি, যেগুলো পানিতে ভিজে থাকা জমিতে ভালো হয়। অথচ ধান শুষ্ক জমিতেও ভালোভাবে চাষ করা সম্ভব।’
স্মিতা কুরুপ শত শত ধানগাছ পরীক্ষা করে এ পদ্ধতির উপযোগী সেরা জাতগুলো নির্বাচন করেছেন, যাতে কৃষকেরা ফলন না কমিয়ে নতুনভাবে চাষ করতে পারেন। তবে চ্যালেঞ্জ হলো—প্রতিটি দেশের ধানের স্বাদ, গুণ ও রান্নার ধরন ভিন্ন, যেমন জেসমিন ধান, স্টিকি রাইস বা লম্বা দানার ধান। তাই প্রতিটি দেশে আলাদাভাবে উপযুক্ত জাত বাছাই করতে হচ্ছে।

বিশ্বের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি মানুষের প্রধান খাদ্য তৈরি হয় চাল থেকে। কিন্তু এই মৌলিক খাদ্যশস্য এখন সংকটে। বিশ্বের ৯০ শতাংশ চাল উৎপন্ন হয় এশিয়ায়। কিন্তু অঞ্চলটি খরাপ্রবণ। এর পাশাপাশি প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ ও অনিয়মিত আবহাওয়ার কারণে দিন দিন কমছে ফলন। উৎপাদন কমে যাওয়ায় বিশ্বজুড়ে চালের দাম এখন ঊর্ধ্বমুখী। মোটকথা চাল নিয়ে তৈরি হয়েছে বৈশ্বিক সংকট।
জাপানে প্রায় প্রতি বেলার খাবারে ‘ডনবুরি’ (ভাতের বাটি) অত্যাবশ্যকীয়, সেখানে ক্রমেই মূল্যবান হয়ে উঠছে চাল। ঊর্ধ্বমুখী এই দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে দেশটির সরকার তাদের জরুরি মজুতের ১ লাখ ৬৫ হাজার টন চাল নিলামে তুলেছে।
ফিলিপাইনেও ঘোষণা করা হয়েছে জরুরি খাদ্য সংকটাবস্থা (ফুড সিকিউরিটি ইমার্জেন্সি)। সরকারের সংরক্ষিত চালও ছাড়া হয়েছে বাজারে।
বিশ্বজুড়ে চাহিদা মেটাতে ইন্দোনেশিয়ার সরকার নতুন করে আরও ১ মিলিয়ন হেক্টর জমিতে ধান চাষের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যার পরিমাণ বৃহৎ লন্ডন শহরের ছয় গুণের সমান।
বিশ্বজুড়ে ৩ দশমিক ৫ বিলিয়নের বেশি মানুষ চালের ওপর নির্ভরশীল। বিপুল এই জনগোষ্ঠীর বেশির ভাগ বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলোর বাসিন্দা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চালের এই ঘাটতি যদি চলতে থাকে, তাহলে সবচেয়ে বেশি ভুগবে দরিদ্র জনগোষ্ঠী।
এমন পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিরূপ পরিবেশে টিকে থাকতে পারে, এমন নতুন ধানের জাত উদ্ভাবনের চেষ্টা করছেন গবেষকেরা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সেই ধারায় এক ধরনের বিপ্লব শুরু হয়েছে। যেখানে নতুন প্রযুক্তি চালের উৎপাদনকে আরও টেকসই ও প্রতিকূল পরিবেশে সহনশীল করে তুলছে। ২০২১ সালে প্রথম দেশ হিসেবে ফিলিপাইন পুষ্টিবর্ধক গোল্ডেন রাইসের অনুমোদন দেয়। গোল্ডেন রাইস হলো জিনগতভাবে পরিবর্তিত এক বিশেষ ধরনের ধান, যাতে ভিটামিন ‘এ’ রয়েছে।
ধানের জিনগত পরিবর্তনের প্রযুক্তি এখন আরও অনেক দূর এগিয়েছে। ইউনিভার্সিটি অব শেফিল্ডের উদ্ভিদ কোষ সংকেত বিষয়ক গবেষক ও অধ্যাপক জুলি গ্রে বর্তমানে যুক্তরাজ্যের রাইস রিসার্চ কনসোর্টিয়ামের জন্য খরা ও তাপসহনশীল ধানের জাত উদ্ভাবনে কাজ করছেন।
অধ্যাপক জুলি গ্রে ও তাঁর সহকর্মীরা এমন ধানের গাছ তৈরি করছেন, যেগুলোর স্টোমাটা (পাতার ক্ষুদ্র রন্ধ্র, যার মাধ্যমে কার্বন ডাই-অক্সাইড প্রবেশ করে ও পানি বেরিয়ে যায়) তুলনামূলক কম। এর লক্ষ্য হলো, এগুলো যাতে শুষ্ক পরিবেশে আরও সহনশীল হয়। ধানের মতো শস্য সাধারণত পরিবেশগত পরিবর্তনের সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নিতে পারে না, কিন্তু বর্তমানে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইডের মাত্রা অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি এবং ভবিষ্যতে আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অধ্যাপক গ্রে বলেন, শুধু ধান নয়, বেশির ভাগ শস্যজাতীয় গাছের স্টোমাটা খুব বেশি। যে কারণে তাদের পানি বেশি প্রয়োজন হয়। স্টোমাটার সংখ্যা কমিয়ে দিতে পারলে গাছগুলো ভবিষ্যতের জলবায়ুর জন্য আরও উপযোগী হতে পারে।
এখনো অনেক মানুষ জিনগতভাবে পরিবর্তিত খাদ্যের প্রতি সংশয়ী। তাই সরাসরি জিনগত পরিবর্তনের পরিবর্তে সিলেক্টিভ ব্রিডিং পদ্ধতিতে নতুন জাত উদ্ভাবনের চেষ্টা করছেন গ্রে। মূলত থাইল্যান্ডের গবেষকদের সঙ্গে যৌথভাবে এ গবেষণা করছেন তিনি। তবে নতুন এই চাল এখনো তেমন সুস্বাদু নয়। এর স্বাদ প্রাকৃতিক চালের কাছাকাছি আনতে আরও গবেষণা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন তিনি।
শুধু ধানের জাত নয়, বদলে যাচ্ছে ধান চাষের পদ্ধতিও। ধান রোপণ থেকে শুরু করে সার ছিটানো, আগাছা চিহ্নিতকরণ এমনকি জমির পুষ্টিমান নির্ণয়ের কাজেও আজকাল ব্যবহার করা হচ্ছে ড্রোন। এতে চাষের পুরো প্রক্রিয়া আরও নিখুঁত ও কার্যকর হচ্ছে। কৃষিকাজে ড্রোনের ব্যবহার বাড়ার পেছনে আরেকটি বড় কারণ হলো শ্রমিকের সংকট। এখন বেশির ভাগ মানুষ শহরমুখী। তাই মানুষের কাজ এখন প্রযুক্তিকে দিয়ে করিয়ে নিতে হচ্ছে। তবে সে ক্ষেত্রে খরচ একটি বড় বাধা।
ওয়ার্ল্ড রিসোর্স ইনস্টিটিউটের ভারতীয় কো-অর্ডিনেটর জয়াহরি কে এম বলেন, ‘ভারতের প্রান্তিক মানুষেরা কৃষিকাজ করেন। তাঁদের আসলে এই খাতের জন্য প্রয়োজনীয় ও উপযুক্ত প্রযুক্তি ব্যবহারের সামর্থ্য নেই। যদিও আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা সংস্থা (ইআরআরআই) প্রান্তিক কৃষকদের জন্য ড্রোন ফর রাইস নামে একটি প্রকল্প চালু করেছে। কিন্তু বিশ্বের সব প্রান্তের সব কৃষকদের এই প্রকল্পের আওতায় আনা একটি জটিল ও সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। প্রাথমিকভাবে গত বছর থেকে ফিলিপাইনে চালু হয়েছে এ প্রকল্প এবং একে সফল বলছেন স্থানীয় কৃষকেরা।’
এ ছাড়া ধানখেত চিহ্নিতকরণ, মিথেন নির্গমন অনুমান এমনকি ফলনের পূর্বাভাস পেতে ব্যবহার করা হচ্ছে স্যাটেলাইটও। সারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পৃথিবী পর্যবেক্ষণ ও জলবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. বেলেন মার্টি-কারডোনা বলেন, ‘আমাদের অনেক ধরনের প্যারামিটার প্রয়োজন, যেমন মাটির প্রকার, আবহাওয়ার তথ্য, তাপমাত্রা ও খেতের জলাবদ্ধতার অবস্থা। এসব নিরীক্ষায় সাহায্য করে স্যাটেলাইট।’
ধানের উৎপাদন হ্রাসের পেছনে একটি বড় কারণ জলবায়ু পরিবর্তন। তবে গবেষণায় উঠে এসেছে চমকপ্রদ তথ্য। ধান চাষের চিরাচরিত/প্রাচীন প্রক্রিয়াও জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম কারণ। গবেষণায় দেখা গেছে, চিরাচরিত পদ্ধতিতে ধান চাষে ১২ শতাংশ পর্যন্ত মিথেন গ্যাসের নির্গমন হয়। এই মিথেন গ্যাস কার্বন ডাই-অক্সাইডের চেয়ে ২৫ গুণ দ্রুত পৃথিবীকে উষ্ণ করে তোলে। এর পাশাপাশি ধান চাষে প্রচুর পরিমাণে পানি ব্যবহৃত হয়, প্রতি কিলোগ্রাম ধানের পেছনে প্রায় আড়াই হাজার লিটার, যা প্রায় ১৬টি বাথটাবভর্তি পানির সমান।
টেকসই ধান চাষের জন্য হাই-টেক সমাধান অপরিহার্য নয়, শুধু চাষের পদ্ধতি পরিবর্তন করলে তা উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে—বলছেন গবেষকেরা। ধান চাষের একটি পরিবেশবান্ধব নতুন পদ্ধতি হচ্ছে, ডাইরেক্ট সিডেড রাইস। এখানে ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতির মতো জমি জলমগ্ন করে তাতে চারা রোপণ না করে সরাসরি মাঠে বীজ বপন করা হয়। এতে পানির ব্যবহার কমে, মাটির ক্ষতি হয় না এবং মিথেন গ্যাসের নির্গমন অনেক কম হয়।
রথামস্টেড রিসার্চ সেন্টারের গবেষক ড. স্মিতা কুরুপ বলেন, ‘ধান আসলে অতটা পানি চায় না, কিন্তু আমরা বছরের পর বছর এমন জাত বেছে নিয়েছি, যেগুলো পানিতে ভিজে থাকা জমিতে ভালো হয়। অথচ ধান শুষ্ক জমিতেও ভালোভাবে চাষ করা সম্ভব।’
স্মিতা কুরুপ শত শত ধানগাছ পরীক্ষা করে এ পদ্ধতির উপযোগী সেরা জাতগুলো নির্বাচন করেছেন, যাতে কৃষকেরা ফলন না কমিয়ে নতুনভাবে চাষ করতে পারেন। তবে চ্যালেঞ্জ হলো—প্রতিটি দেশের ধানের স্বাদ, গুণ ও রান্নার ধরন ভিন্ন, যেমন জেসমিন ধান, স্টিকি রাইস বা লম্বা দানার ধান। তাই প্রতিটি দেশে আলাদাভাবে উপযুক্ত জাত বাছাই করতে হচ্ছে।

স্বাস্থ্য খাতের ব্যয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ। স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ জিডিপির মাত্র ১ শতাংশ এবং মাথাপিছু সরকারি ব্যয় মাত্র ১,০৭০ টাকা। দেশের প্রায় ৪৯ শতাংশ মানুষ এখনো মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত।
৭ ঘণ্টা আগে
অগ্রহায়ণের শীতের সকাল। সাইকেল ও ভ্যানের ওপরে থরে থরে সাজানো রঙিন ফুলে ভরে উঠেছে যশোরের গদখালীর বাজার। গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধা, জারবেরা, গ্লাডিওলাস, চন্দ্রমল্লিকা—ফুলের ঘ্রাণ আর দরদামের হাঁকডাকে মুখর পুরো এলাকা।
৭ ঘণ্টা আগে
দেশের ভেতরে ও বাইরে উভয় ক্ষেত্রেই আর্থিক খাতে নগদ লেনদেন ক্রমেই কমে আসছে; তার জায়গা দখল করছে প্লাস্টিক মানি। অভ্যন্তরীণ পেমেন্ট থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক সফর, অনলাইন কেনাকাটা, ব্যবসায়িক খরচ কিংবা জীবনযাত্রার প্রয়োজন—সব ক্ষেত্রেই এখন ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে লেনদেন বাড়ছে।
৮ ঘণ্টা আগে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত ডেটা সেন্টারগুলোর ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং বৈশ্বিক সরবরাহ সংকটের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে তামার দাম দ্রুত বেড়ে প্রতি টন প্রায় ১২ হাজার ডলারে পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে তামার ঘাটতি পরিস্থিতিকে আরও ঘনীভূত করেছে।
১৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

স্বাস্থ্য খাতের ব্যয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ। স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ জিডিপির মাত্র ১ শতাংশ এবং মাথাপিছু সরকারি ব্যয় মাত্র ১,০৭০ টাকা। দেশের প্রায় ৪৯ শতাংশ মানুষ এখনো মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত। এ কারণে প্রতিবছর প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার চিকিৎসার জন্য বিদেশে গিয়ে ব্যয় করছে বাংলাদেশি রোগীরা। অথচ দেশের স্বাস্থ্যসেবার বাজার বর্তমানে প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলার এবং আগামী আট বছরে আরও ৯ বিলিয়ন ডলার বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা ২০৩৩ সালে ২৩ বিলিয়নে উন্নীত হতে পারে।
গতকাল শনিবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতে আস্থা বৃদ্ধি; মান নিয়ন্ত্রণে কৌশলগত কাঠামো নিশ্চিতকরণ’ শীর্ষক সেমিনারে উপস্থাপিত মূল প্রবন্ধে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। রাজধানীর মতিঝিলে ডিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত সভায় জাতীয় অধ্যাপক ও বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি এ কে আজাদ খান প্রধান অতিথি ছিলেন।
আলোচকেরা বলেন, অবকাঠামোর ঘাটতি, নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারে পশ্চাৎপদতা, দক্ষ মানবসম্পদের সংকট, সেবার উচ্চ ব্যয়, কার্যকর তদারকির অভাব—এসব মিলিয়েই কাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্য উন্নয়ন অর্জিত হয়নি। অধ্যাপক এ কে আজাদ খান বলেন, কিছু ক্ষেত্রে অর্জন থাকলেও সামগ্রিকভাবে দেশের স্বাস্থ্যসেবা কাঙ্ক্ষিত মানে পৌঁছায়নি। উন্নত দেশ তো দূরের কথা, পার্শ্ববর্তী দেশের তুলনায়ও বাংলাদেশ পিছিয়ে রয়েছে। তাঁর মতে, ইউনিভার্সেল হেলথকেয়ার বাস্তবায়ন বাংলাদেশের পক্ষে সম্ভব নয়, তবে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় জোর দেওয়া ছাড়া বিকল্প নেই। তিনি ব্যবস্থাপনায় উন্নয়ন ও বিকেন্দ্রীকরণের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউনাইটেড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ডিসিসিআইয়ের সাবেক সহসভাপতি মালিক তালহা ইসমাইল বারী। তিনি জানান, সীমিত বাজেট, অদক্ষ ব্যবস্থাপনা, মানের ঘাটতি, শহর-গ্রামের বৈষম্য, বাড়তি ব্যয়, দুর্বল নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা—এসব কারণেই স্বাস্থ্য খাতের চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে। যার ফলে তুলনামূলক উন্নত চিকিৎসার জন্য বিপুলসংখ্যক রোগী বিদেশমুখী হওয়ায় বছরে ৫ বিলিয়ন ডলার বাইরে চলে যাচ্ছে।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, মানসম্মত ও রোগীবান্ধব সেবা নিশ্চিতে কাঠামোগত ঘাটতি, দক্ষ জনবলস্বল্পতা, অনুমোদনহীন ক্লিনিক-ফার্মেসির বিস্তার, ভুল রোগনির্ণয়, ভুয়া ওষুধ এবং আইন প্রয়োগের দুর্বলতা জনস্বাস্থ্য আস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। স্বাস্থ্যবিমা কার্যকর না হওয়ায় ৭৪ শতাংশ ব্যয় রোগীকেই বহন করতে হয়, যা নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের জন্য বড় ঝুঁকি।
নির্ধারিত আলোচনায় অধ্যাপক সৈয়দ আতিকুল হক সরকারি হাসপাতালের মানোন্নয়নকে সর্বোচ্চ জরুরি বলে মনে করেন। ইউনিভার্সেল মেডিকেলের চেয়ারম্যান প্রীতি চক্রবর্তী স্বাস্থ্য খাতে আস্থা পুনরুদ্ধারে সরকারি-বেসরকারি সমন্বয় ও পিপিপি ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।

স্বাস্থ্য খাতের ব্যয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ। স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ জিডিপির মাত্র ১ শতাংশ এবং মাথাপিছু সরকারি ব্যয় মাত্র ১,০৭০ টাকা। দেশের প্রায় ৪৯ শতাংশ মানুষ এখনো মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত। এ কারণে প্রতিবছর প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার চিকিৎসার জন্য বিদেশে গিয়ে ব্যয় করছে বাংলাদেশি রোগীরা। অথচ দেশের স্বাস্থ্যসেবার বাজার বর্তমানে প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলার এবং আগামী আট বছরে আরও ৯ বিলিয়ন ডলার বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা ২০৩৩ সালে ২৩ বিলিয়নে উন্নীত হতে পারে।
গতকাল শনিবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতে আস্থা বৃদ্ধি; মান নিয়ন্ত্রণে কৌশলগত কাঠামো নিশ্চিতকরণ’ শীর্ষক সেমিনারে উপস্থাপিত মূল প্রবন্ধে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। রাজধানীর মতিঝিলে ডিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত সভায় জাতীয় অধ্যাপক ও বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি এ কে আজাদ খান প্রধান অতিথি ছিলেন।
আলোচকেরা বলেন, অবকাঠামোর ঘাটতি, নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারে পশ্চাৎপদতা, দক্ষ মানবসম্পদের সংকট, সেবার উচ্চ ব্যয়, কার্যকর তদারকির অভাব—এসব মিলিয়েই কাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্য উন্নয়ন অর্জিত হয়নি। অধ্যাপক এ কে আজাদ খান বলেন, কিছু ক্ষেত্রে অর্জন থাকলেও সামগ্রিকভাবে দেশের স্বাস্থ্যসেবা কাঙ্ক্ষিত মানে পৌঁছায়নি। উন্নত দেশ তো দূরের কথা, পার্শ্ববর্তী দেশের তুলনায়ও বাংলাদেশ পিছিয়ে রয়েছে। তাঁর মতে, ইউনিভার্সেল হেলথকেয়ার বাস্তবায়ন বাংলাদেশের পক্ষে সম্ভব নয়, তবে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় জোর দেওয়া ছাড়া বিকল্প নেই। তিনি ব্যবস্থাপনায় উন্নয়ন ও বিকেন্দ্রীকরণের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউনাইটেড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ডিসিসিআইয়ের সাবেক সহসভাপতি মালিক তালহা ইসমাইল বারী। তিনি জানান, সীমিত বাজেট, অদক্ষ ব্যবস্থাপনা, মানের ঘাটতি, শহর-গ্রামের বৈষম্য, বাড়তি ব্যয়, দুর্বল নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা—এসব কারণেই স্বাস্থ্য খাতের চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে। যার ফলে তুলনামূলক উন্নত চিকিৎসার জন্য বিপুলসংখ্যক রোগী বিদেশমুখী হওয়ায় বছরে ৫ বিলিয়ন ডলার বাইরে চলে যাচ্ছে।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, মানসম্মত ও রোগীবান্ধব সেবা নিশ্চিতে কাঠামোগত ঘাটতি, দক্ষ জনবলস্বল্পতা, অনুমোদনহীন ক্লিনিক-ফার্মেসির বিস্তার, ভুল রোগনির্ণয়, ভুয়া ওষুধ এবং আইন প্রয়োগের দুর্বলতা জনস্বাস্থ্য আস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। স্বাস্থ্যবিমা কার্যকর না হওয়ায় ৭৪ শতাংশ ব্যয় রোগীকেই বহন করতে হয়, যা নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের জন্য বড় ঝুঁকি।
নির্ধারিত আলোচনায় অধ্যাপক সৈয়দ আতিকুল হক সরকারি হাসপাতালের মানোন্নয়নকে সর্বোচ্চ জরুরি বলে মনে করেন। ইউনিভার্সেল মেডিকেলের চেয়ারম্যান প্রীতি চক্রবর্তী স্বাস্থ্য খাতে আস্থা পুনরুদ্ধারে সরকারি-বেসরকারি সমন্বয় ও পিপিপি ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।

বিশ্বের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি মানুষের প্রধান খাদ্য তৈরি হয় চাল থেকে। কিন্তু এই মৌলিক খাদ্যশস্য এখন সংকটে। বিশ্বের ৯০ শতাংশ চাল উৎপন্ন হয় এশিয়ায়। কিন্তু অঞ্চলটি খরাপ্রবণ। এর পাশাপাশি প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ ও অনিয়মিত আবহাওয়ার কারণে দিন দিন কমছে ফলন। উৎপাদন কমে যাওয়ায় বিশ্বজুড়ে চালের দাম এখন
৩০ এপ্রিল ২০২৫
অগ্রহায়ণের শীতের সকাল। সাইকেল ও ভ্যানের ওপরে থরে থরে সাজানো রঙিন ফুলে ভরে উঠেছে যশোরের গদখালীর বাজার। গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধা, জারবেরা, গ্লাডিওলাস, চন্দ্রমল্লিকা—ফুলের ঘ্রাণ আর দরদামের হাঁকডাকে মুখর পুরো এলাকা।
৭ ঘণ্টা আগে
দেশের ভেতরে ও বাইরে উভয় ক্ষেত্রেই আর্থিক খাতে নগদ লেনদেন ক্রমেই কমে আসছে; তার জায়গা দখল করছে প্লাস্টিক মানি। অভ্যন্তরীণ পেমেন্ট থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক সফর, অনলাইন কেনাকাটা, ব্যবসায়িক খরচ কিংবা জীবনযাত্রার প্রয়োজন—সব ক্ষেত্রেই এখন ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে লেনদেন বাড়ছে।
৮ ঘণ্টা আগে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত ডেটা সেন্টারগুলোর ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং বৈশ্বিক সরবরাহ সংকটের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে তামার দাম দ্রুত বেড়ে প্রতি টন প্রায় ১২ হাজার ডলারে পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে তামার ঘাটতি পরিস্থিতিকে আরও ঘনীভূত করেছে।
১৩ ঘণ্টা আগেযশোর প্রতিনিধি

অগ্রহায়ণের শীতের সকাল। সাইকেল ও ভ্যানের ওপরে থরে থরে সাজানো রঙিন ফুলে ভরে উঠেছে যশোরের গদখালীর বাজার। গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধা, জারবেরা, গ্লাডিওলাস, চন্দ্রমল্লিকা—ফুলের ঘ্রাণ আর দরদামের হাঁকডাকে মুখর পুরো এলাকা। বুদ্ধিজীবী দিবস ও বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে ফুলের রাজধানী খ্যাত গদখালীতে গতকাল শনিবার জমে ওঠে বছরের বড় হাট।
যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের পাশে বসা এই বাজারে এদিন প্রায় ২ কোটি টাকার ফুল বেচাকেনা হয়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। চাহিদা বাড়ায় অন্যান্য দিনের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি ফুলের সরবরাহ ও কেনাবেচা হয়েছে। অতিবৃষ্টিতে চলতি মৌসুমে যে ক্ষতি হয়েছিল, তা কিছুটা হলেও পুষিয়ে নেওয়ার আশা করছেন ফুলচাষিরা।
গতকাল বাজারে সবচেয়ে বেশি এসেছে গাঁদা ফুল। মানভেদে প্রতি হাজার গাঁদা ফুল বিক্রি হয়েছে ২০০-৪০০ টাকায়। তবে সরবরাহ বেশি থাকায় দাম তুলনামূলক কম। বিপরীতে চড়া দামে বিক্রি হয়েছে অন্যান্য ফুল।
চন্দ্রমল্লিকা বিক্রি হয় ২, জারবেরা ১৬-১৮, গ্লাডিওলাস ১৬-২০, রজনীগন্ধা ১০-১৪, গোলাপ ৮-১০ এবং ভুট্টা ফুল প্রতিটি সর্বোচ্চ ১৫ টাকা দরে।
ফুলচাষি খালেদুর রহমান টিটু বলেন, ‘বিজয় দিবস ও বুদ্ধিজীবী দিবসের বাজার ধরার জন্য কয়েক মাস ধরে গাঁদা ফুলের পরিচর্যা করেছি। গাঁদার কাঙ্ক্ষিত দাম পাইনি, তবে অন্য ফুলের দাম ভালো থাকায় ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নেওয়া যাবে।’
রজনীগন্ধার চাষি রফিকুল ইসলাম জানান, দুই বিঘা জমিতে চাষ করা ফুল এবার ভালো দামে বিক্রি হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আজ ৯০০টি রজনীগন্ধা ১৪ টাকা পিস দরে বিক্রি করেছি। গতকাল ছিল ৯ টাকা। সামনে দাম আরও বাড়ার সম্ভাবনা আছে।’
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, যশোর জেলায় প্রায় দেড় হাজার হেক্টর জমিতে ১১ ধরনের ফুলের বাণিজ্যিক চাষ হয়। ডিসেম্বর থেকে মার্চ—এই চার মাসই ফুলের প্রধান মৌসুম। এ সময় অন্তত ৭-৮টি গুরুত্বপূর্ণ দিবসকে ঘিরে ১৫০-২০০ কোটি টাকার ফুল বেচাকেনার লক্ষ্য থাকে স্থানীয় চাষি ও ব্যবসায়ীদের।
গদখালী ফুলচাষি ও ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি মঞ্জুর আলম বলেন, বিভিন্ন জাতীয় দিবসকে সামনে রেখে চাষিরা ফুল উৎপাদন করেন। এবার গাঁদা ফুলের উৎপাদন চাহিদার চেয়ে বেশি হওয়ায় এর দাম কম। তবে গাঁদা ছাড়া প্রায় সব ফুলের দাম ঊর্ধ্বমুখী। গতকালের হাটে প্রায় ২ কোটি টাকার ফুল বেচাকেনা হয়েছে।

অগ্রহায়ণের শীতের সকাল। সাইকেল ও ভ্যানের ওপরে থরে থরে সাজানো রঙিন ফুলে ভরে উঠেছে যশোরের গদখালীর বাজার। গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধা, জারবেরা, গ্লাডিওলাস, চন্দ্রমল্লিকা—ফুলের ঘ্রাণ আর দরদামের হাঁকডাকে মুখর পুরো এলাকা। বুদ্ধিজীবী দিবস ও বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে ফুলের রাজধানী খ্যাত গদখালীতে গতকাল শনিবার জমে ওঠে বছরের বড় হাট।
যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের পাশে বসা এই বাজারে এদিন প্রায় ২ কোটি টাকার ফুল বেচাকেনা হয়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। চাহিদা বাড়ায় অন্যান্য দিনের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি ফুলের সরবরাহ ও কেনাবেচা হয়েছে। অতিবৃষ্টিতে চলতি মৌসুমে যে ক্ষতি হয়েছিল, তা কিছুটা হলেও পুষিয়ে নেওয়ার আশা করছেন ফুলচাষিরা।
গতকাল বাজারে সবচেয়ে বেশি এসেছে গাঁদা ফুল। মানভেদে প্রতি হাজার গাঁদা ফুল বিক্রি হয়েছে ২০০-৪০০ টাকায়। তবে সরবরাহ বেশি থাকায় দাম তুলনামূলক কম। বিপরীতে চড়া দামে বিক্রি হয়েছে অন্যান্য ফুল।
চন্দ্রমল্লিকা বিক্রি হয় ২, জারবেরা ১৬-১৮, গ্লাডিওলাস ১৬-২০, রজনীগন্ধা ১০-১৪, গোলাপ ৮-১০ এবং ভুট্টা ফুল প্রতিটি সর্বোচ্চ ১৫ টাকা দরে।
ফুলচাষি খালেদুর রহমান টিটু বলেন, ‘বিজয় দিবস ও বুদ্ধিজীবী দিবসের বাজার ধরার জন্য কয়েক মাস ধরে গাঁদা ফুলের পরিচর্যা করেছি। গাঁদার কাঙ্ক্ষিত দাম পাইনি, তবে অন্য ফুলের দাম ভালো থাকায় ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নেওয়া যাবে।’
রজনীগন্ধার চাষি রফিকুল ইসলাম জানান, দুই বিঘা জমিতে চাষ করা ফুল এবার ভালো দামে বিক্রি হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আজ ৯০০টি রজনীগন্ধা ১৪ টাকা পিস দরে বিক্রি করেছি। গতকাল ছিল ৯ টাকা। সামনে দাম আরও বাড়ার সম্ভাবনা আছে।’
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, যশোর জেলায় প্রায় দেড় হাজার হেক্টর জমিতে ১১ ধরনের ফুলের বাণিজ্যিক চাষ হয়। ডিসেম্বর থেকে মার্চ—এই চার মাসই ফুলের প্রধান মৌসুম। এ সময় অন্তত ৭-৮টি গুরুত্বপূর্ণ দিবসকে ঘিরে ১৫০-২০০ কোটি টাকার ফুল বেচাকেনার লক্ষ্য থাকে স্থানীয় চাষি ও ব্যবসায়ীদের।
গদখালী ফুলচাষি ও ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি মঞ্জুর আলম বলেন, বিভিন্ন জাতীয় দিবসকে সামনে রেখে চাষিরা ফুল উৎপাদন করেন। এবার গাঁদা ফুলের উৎপাদন চাহিদার চেয়ে বেশি হওয়ায় এর দাম কম। তবে গাঁদা ছাড়া প্রায় সব ফুলের দাম ঊর্ধ্বমুখী। গতকালের হাটে প্রায় ২ কোটি টাকার ফুল বেচাকেনা হয়েছে।

বিশ্বের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি মানুষের প্রধান খাদ্য তৈরি হয় চাল থেকে। কিন্তু এই মৌলিক খাদ্যশস্য এখন সংকটে। বিশ্বের ৯০ শতাংশ চাল উৎপন্ন হয় এশিয়ায়। কিন্তু অঞ্চলটি খরাপ্রবণ। এর পাশাপাশি প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ ও অনিয়মিত আবহাওয়ার কারণে দিন দিন কমছে ফলন। উৎপাদন কমে যাওয়ায় বিশ্বজুড়ে চালের দাম এখন
৩০ এপ্রিল ২০২৫
স্বাস্থ্য খাতের ব্যয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ। স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ জিডিপির মাত্র ১ শতাংশ এবং মাথাপিছু সরকারি ব্যয় মাত্র ১,০৭০ টাকা। দেশের প্রায় ৪৯ শতাংশ মানুষ এখনো মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত।
৭ ঘণ্টা আগে
দেশের ভেতরে ও বাইরে উভয় ক্ষেত্রেই আর্থিক খাতে নগদ লেনদেন ক্রমেই কমে আসছে; তার জায়গা দখল করছে প্লাস্টিক মানি। অভ্যন্তরীণ পেমেন্ট থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক সফর, অনলাইন কেনাকাটা, ব্যবসায়িক খরচ কিংবা জীবনযাত্রার প্রয়োজন—সব ক্ষেত্রেই এখন ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে লেনদেন বাড়ছে।
৮ ঘণ্টা আগে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত ডেটা সেন্টারগুলোর ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং বৈশ্বিক সরবরাহ সংকটের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে তামার দাম দ্রুত বেড়ে প্রতি টন প্রায় ১২ হাজার ডলারে পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে তামার ঘাটতি পরিস্থিতিকে আরও ঘনীভূত করেছে।
১৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশের ভেতরে ও বাইরে উভয় ক্ষেত্রেই আর্থিক খাতে নগদ লেনদেন ক্রমেই কমে আসছে; তার জায়গা দখল করছে প্লাস্টিক মানি। অভ্যন্তরীণ পেমেন্ট থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক সফর, অনলাইন কেনাকাটা, ব্যবসায়িক খরচ কিংবা জীবনযাত্রার প্রয়োজন—সব ক্ষেত্রেই এখন ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে লেনদেন বাড়ছে। তবে বিদেশে বাংলাদেশিদের ক্রেডিট কার্ডে এই লেনদেনের প্রবণতা আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। মূলত নগদ বহনের ঝুঁকি, বিদেশি মুদ্রা ব্যবস্থাপনা এবং আন্তর্জাতিক পেমেন্টের সুবিধা—এ সব মিলিয়েই সাম্প্রতিক সময়ে নিত্যনতুন রেকর্ড হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত সর্বশেষ পরিসংখ্যান বলছে, আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বরে মাত্র এক মাসের ব্যবধানে বিদেশে ক্রেডিট কার্ড ব্যয়ের পরিমাণ বেড়েছে ৫১ কোটি টাকা।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৫ সালের আগস্টে বাংলাদেশিরা বিদেশে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে খরচ করেছিলেন ৪৪৩ কোটি ৩ লাখ টাকা। মাত্র এক মাস পর সেপ্টেম্বরে সেই ব্যয় দাঁড়ায় ৪৯৪ কোটি ২ লাখ টাকায়। অর্থাৎ বিদেশে কার্ড খরচ এক মাসে বেড়েছে ৫১ কোটি ১ লাখ টাকা।
তথ্য বলছে, বিদেশে বাংলাদেশিদের সর্বোচ্চ ক্রেডিট কার্ডে খরচ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে—৭০ কোটি ৯ লাখ টাকা। থাইল্যান্ডে খরচ হয়েছে ৫৯ কোটি ৯ লাখ এবং যুক্তরাজ্যে ৫৪ কোটি ১ লাখ টাকা। সিঙ্গাপুরে ব্যয় ৪০ কোটি ৪ লাখ, মালয়েশিয়ায় ৩৪ কোটি, ভারতে ৩২ কোটি ৩ লাখ, নেদারল্যান্ডসে ২৫ কোটি, সৌদি আরবে ২৪ কোটি, কানাডায় ২১ কোটি, অস্ট্রেলিয়ায় ১৭ কোটি এবং আয়ারল্যান্ডে ১৬ কোটি টাকা। চীনে ব্যয় হয়েছে ১৫ কোটি টাকা। অন্যান্য দেশে মোট খরচ ৯২ কোটি টাকার বেশি।
অন্যদিকে, বিদেশিরাও বাংলাদেশে এসে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে কত খরচ করে থাকেন। আগস্টে বিদেশিদের ব্যয় ছিল ১৮৩ কোটি ৫ লাখ টাকা, যা সেপ্টেম্বরে সামান্য কমে দাঁড়ায় ১৭৫ কোটি ৯ লাখ টাকায়। অর্থাৎ এক মাসে তাঁদের কার্ডব্যয় কমেছে প্রায় ৮ কোটি টাকা। বিদেশিদের মধ্যেও বাংলাদেশে এসে সর্বোচ্চ খরচ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকেরা—৩৮ কোটি ৬ লাখ টাকা। যুক্তরাজ্য ও ভারতের নাগরিকদের ব্যয় ছিল ১৭ কোটি টাকা করে।
এ নিয়ে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, নগদ বহনের চেয়ে মানুষ কার্ডে লেনদেনে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। বিদেশ ভ্রমণে এটি সবচেয়ে সহজ, নিরাপদ ও ঝুঁকিহীন পদ্ধতি। সাম্প্রতিক সময়ে চীনে যাত্রীপ্রবাহ রেকর্ড পরিমাণে বেড়েছে—তাই সে দেশে কার্ড ব্যয়েও রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
ব্যাংক খাতসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, দৈনন্দিন খরচ, বেতন-ভাতা গ্রহণ এবং নগদ উত্তোলনের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের কাছে এখনো সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম ডেবিট কার্ড। তুলনামূলকভাবে ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা কম হলেও এর ব্যবহার দ্রুত বাড়ছে এবং তা মূলত শহরকেন্দ্রিক। শহুরে মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত শ্রেণির মধ্যে ক্রেডিট কার্ড এখন একটি স্বাভাবিক ব্যয়ের মাধ্যম হয়ে উঠছে। একইভাবে প্রি-পেইড কার্ডের ব্যবহারও উল্লেখযোগ্য গতিতে বৃদ্ধি পেয়েছে—গত পাঁচ বছরে যার প্রবৃদ্ধি প্রায় ১৬ গুণ।
বর্তমানে দেশের ৫৬টি ব্যাংক ও ১টি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফসি) কার্ড সেবা দিচ্ছে। এর মধ্যে ৪৮টি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড, দ্বৈত মুদ্রার ডেবিট কার্ড এবং প্রি-পেইড কার্ড—এই তিন ধরনের সেবা পরিচালনা করে।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, সামগ্রিকভাবে মানুষ নগদের চেয়ে কার্ডে লেনদেনকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। তাঁর ভাষায়, আঞ্চলিক কূটনীতি ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের উন্নতিও ক্রস-বর্ডার কার্ড ব্যবহারে প্রভাব ফেলছে।
দেশের ভেতরে ও বাইরে উভয় ক্ষেত্রেই আর্থিক খাতে নগদ লেনদেন ক্রমেই কমে আসছে; তার জায়গা দখল করছে প্লাস্টিক মানি। অভ্যন্তরীণ পেমেন্ট থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক সফর, অনলাইন কেনাকাটা, ব্যবসায়িক খরচ কিংবা জীবনযাত্রার প্রয়োজন—সব ক্ষেত্রেই এখন ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে লেনদেন বাড়ছে। তবে বিদেশে বাংলাদেশিদের ক্রেডিট কার্ডে এই লেনদেনের প্রবণতা আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। মূলত নগদ বহনের ঝুঁকি, বিদেশি মুদ্রা ব্যবস্থাপনা এবং আন্তর্জাতিক পেমেন্টের সুবিধা—এ সব মিলিয়েই সাম্প্রতিক সময়ে নিত্যনতুন রেকর্ড হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত সর্বশেষ পরিসংখ্যান বলছে, আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বরে মাত্র এক মাসের ব্যবধানে বিদেশে ক্রেডিট কার্ড ব্যয়ের পরিমাণ বেড়েছে ৫১ কোটি টাকা।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৫ সালের আগস্টে বাংলাদেশিরা বিদেশে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে খরচ করেছিলেন ৪৪৩ কোটি ৩ লাখ টাকা। মাত্র এক মাস পর সেপ্টেম্বরে সেই ব্যয় দাঁড়ায় ৪৯৪ কোটি ২ লাখ টাকায়। অর্থাৎ বিদেশে কার্ড খরচ এক মাসে বেড়েছে ৫১ কোটি ১ লাখ টাকা।
তথ্য বলছে, বিদেশে বাংলাদেশিদের সর্বোচ্চ ক্রেডিট কার্ডে খরচ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে—৭০ কোটি ৯ লাখ টাকা। থাইল্যান্ডে খরচ হয়েছে ৫৯ কোটি ৯ লাখ এবং যুক্তরাজ্যে ৫৪ কোটি ১ লাখ টাকা। সিঙ্গাপুরে ব্যয় ৪০ কোটি ৪ লাখ, মালয়েশিয়ায় ৩৪ কোটি, ভারতে ৩২ কোটি ৩ লাখ, নেদারল্যান্ডসে ২৫ কোটি, সৌদি আরবে ২৪ কোটি, কানাডায় ২১ কোটি, অস্ট্রেলিয়ায় ১৭ কোটি এবং আয়ারল্যান্ডে ১৬ কোটি টাকা। চীনে ব্যয় হয়েছে ১৫ কোটি টাকা। অন্যান্য দেশে মোট খরচ ৯২ কোটি টাকার বেশি।
অন্যদিকে, বিদেশিরাও বাংলাদেশে এসে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে কত খরচ করে থাকেন। আগস্টে বিদেশিদের ব্যয় ছিল ১৮৩ কোটি ৫ লাখ টাকা, যা সেপ্টেম্বরে সামান্য কমে দাঁড়ায় ১৭৫ কোটি ৯ লাখ টাকায়। অর্থাৎ এক মাসে তাঁদের কার্ডব্যয় কমেছে প্রায় ৮ কোটি টাকা। বিদেশিদের মধ্যেও বাংলাদেশে এসে সর্বোচ্চ খরচ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকেরা—৩৮ কোটি ৬ লাখ টাকা। যুক্তরাজ্য ও ভারতের নাগরিকদের ব্যয় ছিল ১৭ কোটি টাকা করে।
এ নিয়ে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, নগদ বহনের চেয়ে মানুষ কার্ডে লেনদেনে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। বিদেশ ভ্রমণে এটি সবচেয়ে সহজ, নিরাপদ ও ঝুঁকিহীন পদ্ধতি। সাম্প্রতিক সময়ে চীনে যাত্রীপ্রবাহ রেকর্ড পরিমাণে বেড়েছে—তাই সে দেশে কার্ড ব্যয়েও রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
ব্যাংক খাতসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, দৈনন্দিন খরচ, বেতন-ভাতা গ্রহণ এবং নগদ উত্তোলনের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের কাছে এখনো সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম ডেবিট কার্ড। তুলনামূলকভাবে ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা কম হলেও এর ব্যবহার দ্রুত বাড়ছে এবং তা মূলত শহরকেন্দ্রিক। শহুরে মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত শ্রেণির মধ্যে ক্রেডিট কার্ড এখন একটি স্বাভাবিক ব্যয়ের মাধ্যম হয়ে উঠছে। একইভাবে প্রি-পেইড কার্ডের ব্যবহারও উল্লেখযোগ্য গতিতে বৃদ্ধি পেয়েছে—গত পাঁচ বছরে যার প্রবৃদ্ধি প্রায় ১৬ গুণ।
বর্তমানে দেশের ৫৬টি ব্যাংক ও ১টি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফসি) কার্ড সেবা দিচ্ছে। এর মধ্যে ৪৮টি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড, দ্বৈত মুদ্রার ডেবিট কার্ড এবং প্রি-পেইড কার্ড—এই তিন ধরনের সেবা পরিচালনা করে।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, সামগ্রিকভাবে মানুষ নগদের চেয়ে কার্ডে লেনদেনকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। তাঁর ভাষায়, আঞ্চলিক কূটনীতি ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের উন্নতিও ক্রস-বর্ডার কার্ড ব্যবহারে প্রভাব ফেলছে।

বিশ্বের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি মানুষের প্রধান খাদ্য তৈরি হয় চাল থেকে। কিন্তু এই মৌলিক খাদ্যশস্য এখন সংকটে। বিশ্বের ৯০ শতাংশ চাল উৎপন্ন হয় এশিয়ায়। কিন্তু অঞ্চলটি খরাপ্রবণ। এর পাশাপাশি প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ ও অনিয়মিত আবহাওয়ার কারণে দিন দিন কমছে ফলন। উৎপাদন কমে যাওয়ায় বিশ্বজুড়ে চালের দাম এখন
৩০ এপ্রিল ২০২৫
স্বাস্থ্য খাতের ব্যয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ। স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ জিডিপির মাত্র ১ শতাংশ এবং মাথাপিছু সরকারি ব্যয় মাত্র ১,০৭০ টাকা। দেশের প্রায় ৪৯ শতাংশ মানুষ এখনো মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত।
৭ ঘণ্টা আগে
অগ্রহায়ণের শীতের সকাল। সাইকেল ও ভ্যানের ওপরে থরে থরে সাজানো রঙিন ফুলে ভরে উঠেছে যশোরের গদখালীর বাজার। গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধা, জারবেরা, গ্লাডিওলাস, চন্দ্রমল্লিকা—ফুলের ঘ্রাণ আর দরদামের হাঁকডাকে মুখর পুরো এলাকা।
৭ ঘণ্টা আগে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত ডেটা সেন্টারগুলোর ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং বৈশ্বিক সরবরাহ সংকটের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে তামার দাম দ্রুত বেড়ে প্রতি টন প্রায় ১২ হাজার ডলারে পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে তামার ঘাটতি পরিস্থিতিকে আরও ঘনীভূত করেছে।
১৩ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত ডেটা সেন্টারগুলোর ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং বৈশ্বিক সরবরাহ সংকটের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে তামার দাম দ্রুত বেড়ে প্রতি টন প্রায় ১২ হাজার ডলারে পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে তামার ঘাটতি পরিস্থিতিকে আরও ঘনীভূত করেছে।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরে তামার দাম ইতিমধ্যে ৩৫ শতাংশ বেড়েছে, যা ২০০৯ সালের পর সর্বোচ্চ বার্ষিক প্রবৃদ্ধির পথে। গত শুক্রবার প্রতি টন তামার দাম ১১ হাজার ৯৫২ ডলার উঠে যায়।
উচ্চ বিদ্যুৎ পরিবাহিতার কারণে তামা ডেটা সেন্টার, বৈদ্যুতিক যান, বিদ্যুৎ গ্রিড এবং জ্বালানি রূপান্তর অবকাঠামোর জন্য অপরিহার্য কাঁচামাল। বিশ্বজুড়ে ডেটা সেন্টার সম্প্রসারণ ও পরিচ্ছন্ন জ্বালানিতে বিপুল বিনিয়োগ তামার চাহিদাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছে।
বেঞ্চমার্ক মিনারেল ইনটেলিজেন্সের বিশ্লেষক দান ডে ইয়ং বলেন, এআই খাতকে কেন্দ্র করে যাঁরা বিনিয়োগ করছেন, তাঁরা এমন পণ্য বেছে নিচ্ছেন, যেখানে ডেটা সেন্টারের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল অন্তর্ভুক্ত। ফলে তামাভিত্তিক ইটিএফসহ সংশ্লিষ্ট সম্পদে বিনিয়োগ বাড়ছে।
এ প্রবণতার অংশ হিসেবে কানাডার স্প্রট অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট ২০২৪ সালের মাঝামাঝি বিশ্বের প্রথম বাস্তব তামাসমর্থিত এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড (ইটিএফ) চালু করে। প্রায় ১০ হাজার টন তামা সংরক্ষিত এই তহবিলের ইউনিট মূল্য চলতি বছরে ৪৬ শতাংশ বেড়ে প্রায় ১৪ কানাডিয়ান ডলারে পৌঁছেছে।
রয়টার্সের এক জরিপে বিশ্লেষকেরা জানিয়েছেন, চলতি বছরে বৈশ্বিক তামার বাজারে ১ লাখ ২৪ হাজার টন এবং আগামী বছরে ১ লাখ ৫০ হাজার টনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ার আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং ও আর্থিক পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা ম্যাকোয়ারির পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি বছরে বিশ্বে তামার চাহিদা দাঁড়াবে প্রায় ২ কোটি ৭০ লাখ টনে, যা আগের বছরের তুলনায় ২ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভোক্তা দেশ চীনে চাহিদা বাড়বে ৩ দশমিক ৭ শতাংশ, আর চীনের বাইরে আগামী বছর চাহিদা বাড়তে পারে ৩ শতাংশ।
ম্যাকোয়ারির বিশ্লেষক অ্যালিস ফক্স বলেন, কঠোর সরবরাহ পরিস্থিতি নিয়ে বাজারে যে আলোচনা চলছে, সেটিই তামার দামে ঊর্ধ্বমুখী চাপ সৃষ্টি করছে।
সরবরাহ সংকটের পেছনে রয়েছে ইন্দোনেশিয়ায় ফ্রিপোর্ট ম্যাকমোরানের গ্রাসবার্গ খনিতে দুর্ঘটনা, গ্লেনকোরসহ বড় খনি কোম্পানির উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা কমানোর সিদ্ধান্ত।
লন্ডন মেটাল এক্সচেঞ্জ, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কমেক্স ও সাংহাই ফিউচার্স এক্সচেঞ্জে মোট তামার মজুত চলতি বছরে ৫৪ শতাংশ বেড়ে ৬ লাখ ৬১ হাজার টনে দাঁড়িয়েছে। তবে এর বড় অংশ যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাচ্ছে।
কমেক্সে তামার মজুত রেকর্ড ৪ লাখ ৫ হাজার ৭৮২ টনে পৌঁছেছে, যা মোট বৈশ্বিক এক্সচেঞ্জ মজুতের ৬১ শতাংশ। বছরের শুরুতে যা ছিল মাত্র ২০ শতাংশ।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত ডেটা সেন্টারগুলোর ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং বৈশ্বিক সরবরাহ সংকটের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে তামার দাম দ্রুত বেড়ে প্রতি টন প্রায় ১২ হাজার ডলারে পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে তামার ঘাটতি পরিস্থিতিকে আরও ঘনীভূত করেছে।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরে তামার দাম ইতিমধ্যে ৩৫ শতাংশ বেড়েছে, যা ২০০৯ সালের পর সর্বোচ্চ বার্ষিক প্রবৃদ্ধির পথে। গত শুক্রবার প্রতি টন তামার দাম ১১ হাজার ৯৫২ ডলার উঠে যায়।
উচ্চ বিদ্যুৎ পরিবাহিতার কারণে তামা ডেটা সেন্টার, বৈদ্যুতিক যান, বিদ্যুৎ গ্রিড এবং জ্বালানি রূপান্তর অবকাঠামোর জন্য অপরিহার্য কাঁচামাল। বিশ্বজুড়ে ডেটা সেন্টার সম্প্রসারণ ও পরিচ্ছন্ন জ্বালানিতে বিপুল বিনিয়োগ তামার চাহিদাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছে।
বেঞ্চমার্ক মিনারেল ইনটেলিজেন্সের বিশ্লেষক দান ডে ইয়ং বলেন, এআই খাতকে কেন্দ্র করে যাঁরা বিনিয়োগ করছেন, তাঁরা এমন পণ্য বেছে নিচ্ছেন, যেখানে ডেটা সেন্টারের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল অন্তর্ভুক্ত। ফলে তামাভিত্তিক ইটিএফসহ সংশ্লিষ্ট সম্পদে বিনিয়োগ বাড়ছে।
এ প্রবণতার অংশ হিসেবে কানাডার স্প্রট অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট ২০২৪ সালের মাঝামাঝি বিশ্বের প্রথম বাস্তব তামাসমর্থিত এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড (ইটিএফ) চালু করে। প্রায় ১০ হাজার টন তামা সংরক্ষিত এই তহবিলের ইউনিট মূল্য চলতি বছরে ৪৬ শতাংশ বেড়ে প্রায় ১৪ কানাডিয়ান ডলারে পৌঁছেছে।
রয়টার্সের এক জরিপে বিশ্লেষকেরা জানিয়েছেন, চলতি বছরে বৈশ্বিক তামার বাজারে ১ লাখ ২৪ হাজার টন এবং আগামী বছরে ১ লাখ ৫০ হাজার টনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ার আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং ও আর্থিক পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা ম্যাকোয়ারির পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি বছরে বিশ্বে তামার চাহিদা দাঁড়াবে প্রায় ২ কোটি ৭০ লাখ টনে, যা আগের বছরের তুলনায় ২ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভোক্তা দেশ চীনে চাহিদা বাড়বে ৩ দশমিক ৭ শতাংশ, আর চীনের বাইরে আগামী বছর চাহিদা বাড়তে পারে ৩ শতাংশ।
ম্যাকোয়ারির বিশ্লেষক অ্যালিস ফক্স বলেন, কঠোর সরবরাহ পরিস্থিতি নিয়ে বাজারে যে আলোচনা চলছে, সেটিই তামার দামে ঊর্ধ্বমুখী চাপ সৃষ্টি করছে।
সরবরাহ সংকটের পেছনে রয়েছে ইন্দোনেশিয়ায় ফ্রিপোর্ট ম্যাকমোরানের গ্রাসবার্গ খনিতে দুর্ঘটনা, গ্লেনকোরসহ বড় খনি কোম্পানির উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা কমানোর সিদ্ধান্ত।
লন্ডন মেটাল এক্সচেঞ্জ, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কমেক্স ও সাংহাই ফিউচার্স এক্সচেঞ্জে মোট তামার মজুত চলতি বছরে ৫৪ শতাংশ বেড়ে ৬ লাখ ৬১ হাজার টনে দাঁড়িয়েছে। তবে এর বড় অংশ যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাচ্ছে।
কমেক্সে তামার মজুত রেকর্ড ৪ লাখ ৫ হাজার ৭৮২ টনে পৌঁছেছে, যা মোট বৈশ্বিক এক্সচেঞ্জ মজুতের ৬১ শতাংশ। বছরের শুরুতে যা ছিল মাত্র ২০ শতাংশ।

বিশ্বের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি মানুষের প্রধান খাদ্য তৈরি হয় চাল থেকে। কিন্তু এই মৌলিক খাদ্যশস্য এখন সংকটে। বিশ্বের ৯০ শতাংশ চাল উৎপন্ন হয় এশিয়ায়। কিন্তু অঞ্চলটি খরাপ্রবণ। এর পাশাপাশি প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ ও অনিয়মিত আবহাওয়ার কারণে দিন দিন কমছে ফলন। উৎপাদন কমে যাওয়ায় বিশ্বজুড়ে চালের দাম এখন
৩০ এপ্রিল ২০২৫
স্বাস্থ্য খাতের ব্যয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ। স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ জিডিপির মাত্র ১ শতাংশ এবং মাথাপিছু সরকারি ব্যয় মাত্র ১,০৭০ টাকা। দেশের প্রায় ৪৯ শতাংশ মানুষ এখনো মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত।
৭ ঘণ্টা আগে
অগ্রহায়ণের শীতের সকাল। সাইকেল ও ভ্যানের ওপরে থরে থরে সাজানো রঙিন ফুলে ভরে উঠেছে যশোরের গদখালীর বাজার। গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধা, জারবেরা, গ্লাডিওলাস, চন্দ্রমল্লিকা—ফুলের ঘ্রাণ আর দরদামের হাঁকডাকে মুখর পুরো এলাকা।
৭ ঘণ্টা আগে
দেশের ভেতরে ও বাইরে উভয় ক্ষেত্রেই আর্থিক খাতে নগদ লেনদেন ক্রমেই কমে আসছে; তার জায়গা দখল করছে প্লাস্টিক মানি। অভ্যন্তরীণ পেমেন্ট থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক সফর, অনলাইন কেনাকাটা, ব্যবসায়িক খরচ কিংবা জীবনযাত্রার প্রয়োজন—সব ক্ষেত্রেই এখন ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে লেনদেন বাড়ছে।
৮ ঘণ্টা আগে