Ajker Patrika

নারীবিষয়ক কমিশন বাতিল দাবিতে শাবিপ্রবিতে প্রতিবাদ কর্মসূচি

শাবিপ্রবি প্রতিনিধি 
আপডেট : ২২ মে ২০২৫, ২০: ২২
নারীবিষয়ক কমিশন বাতিল দাবিতে শাবিপ্রবিতে প্রতিবাদ কর্মসূচি। ছবি: আজকের পত্রিকা
নারীবিষয়ক কমিশন বাতিল দাবিতে শাবিপ্রবিতে প্রতিবাদ কর্মসূচি। ছবি: আজকের পত্রিকা

নারীবিষয়ক কমিশন বাতিল ও ‘নারীর ডাকে মৈত্রী যাত্রার’ বিরুদ্ধে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছেন একদল নারী শিক্ষার্থী। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে স্বরূপ ইসলামিক কালচারাল অর্গানাইজেশনের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।

কর্মসূচিতে ‘নারী-পুরুষ বাইনারি, এই শর্তেই দেশ গড়ি’, ‘যৌনকর্মী স্বীকৃতিদান, মায়ের জাতির অপমান’, ‘সম-অধিকার নয়, চাই ন্যায্য অধিকার’, ‘নারী-পুরুষ একে অন্যের প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, সহযোগী’, ‘পতিতাবৃত্তিকে না বলি’, ‘সমতার নামে নারীর বিকৃতি চলবে না’, ‘নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিল চাই, অপসংস্কৃতি চলবে না’, ‘সে নো টু এলজিবিটি অ্যাজেন্ডা’ ইত্যাদি স্লোগানসংবলিত প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।

এ সময় নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের নিন্দা জানিয়ে শিক্ষার্থী জান্নাতুল সুমাইয়া সাফি বলেন, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের পেশ করা প্রস্তাবনার অধিকাংশই ইসলাম ধর্ম জাতিসত্তার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এটা নারীদের মর্যাদা খর্ব করে। স্বাধীনতার নামে কমিশন যে প্রস্তাবনা দিয়েছে, তা পারিবারিক কলহ আরও বাড়িয়ে তুলবে। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্মতির অভাবকে বৈবাহিক ধর্ষণ হিসেবে চিহ্নিত করে শাস্তির বিধান দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে, যা দাম্পত্য সম্পর্ককে আরও জটিল করে তুলবে এবং পারিবারিক অস্থিরতা বাড়বে।

জান্নাতুল সুমাইয়া সাফি আরও বলেন, পতিতাবৃত্তিকে বৈধতা দিয়ে যৌনকর্মীদের শ্রমজীবী হিসেবে স্বীকৃতি ও মর্যাদা দেওয়ার সুপারিশ প্রকৃতপক্ষে সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয়ের একটি ভয়ংকর ব্যবস্থা। ইসলাম ও সুস্থ সমাজব্যবস্থা পতিতাবৃত্তিকে পেশা হিসেবে মানে না; বরং তা নির্মূল করে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নেওয়াই রাষ্ট্রের দায়িত্ব। তাই অবিলম্বে এসব প্রস্তাবনা বাতিল করতে হবে।

‘নারীর ডাকে মৈত্রী যাত্রার’ সমালোচনা করে সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী আদিবা সালেহা বলেন, ‘মৈত্রীযাত্রায় অংশগ্রহণকারী সংখ্যাগরিষ্ঠ নারীর মধ্যে বাংলাদেশি সংখ্যাগরিষ্ঠ নারীর উপস্থিতি নেই। উচ্ছৃঙ্খল আচরণ, অশালীন পোশাকে নারীর অধিকার আদায়ের নামে নারীর ভূষণকে খর্ব করা হয়েছে, ধর্মীয় শিষ্টাচারকে উগ্রবাদ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে, যা ধর্মীয় অবমাননা, ট্রান্সমুক্তিকে নারীমুক্তি হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে। যেখানে অধিকাংশ কার্যক্রম নারীর সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তারা এলজিবিটিকে প্রমোট করছে; যা আমাদের মানব সম্প্রদায়ের জন্য একটা বিধ্বংসী মতবাদ। অথচ ট্রান্সজেন্ডার ধারণা বিকৃত মস্তিষ্ক থেকেই উদ্ভূত, মানবকল্যাণে যার বৈধতা নয়, বরং চিকিৎসার প্রয়োজন।’

এ ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে চার দফা দাবিও তুলে ধরেন এই শিক্ষার্থীরা। দাবিসমূহ হলো—নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ ও প্রতিবেদন অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে, ধর্ম, সংস্কৃতি ও জনমতকে অবজ্ঞা করে গঠিত বর্তমান কমিশন বাতিল করে ধর্মীয় ও সামাজিক বাস্তবতায় বিশ্বাসী এবং দেশের অধিকাংশ জনগণের প্রতিনিধিত্ব করেন, এমন প্রতিনিধিদের নিয়ে কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে, পতিতাবৃত্তি নির্মূলের কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট নারীদের মানবিক ও হালাল উপায়ে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে ও ধর্মীয় বিধানসমূহকে সংবিধানের আলোকে রক্ষা করে নারী উন্নয়নের একটি ভারসাম্যমূলক ও সমাজবান্ধব রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত