Ajker Patrika

বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে ৩০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ শিক্ষিকার বিরুদ্ধে

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ এপ্রিল ২০২৪, ১৮: ৪২
বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে ৩০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ শিক্ষিকার বিরুদ্ধে

সুনামগঞ্জে মোবাইল ফোনে সম্পর্কের জেরে বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে ৩০ লাখ টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে আজ মঙ্গলবার দুপুরে সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যালয়ে ভার্চুয়াল যুক্ত থেকে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নজরুল ইসলাম নামের যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এক ব্যক্তি।

সংবাদ সম্মেলনে প্রবাসী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘২০ বছর ধরে আমি আমেরিকার একটি শহরে বসবাস করি। সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বালিজুরী ইউনিয়নের পুরোনো বারুংকা গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা তাহেরা আক্তারের (৩০) সঙ্গে আমার সম্পর্ক তৈরি হয়। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিভিন্ন অজুহাতে প্রায় ৩০ লাখ টাকা, আইফোন, ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র হাতিয়ে নেয়। তার দ্বারা আমি মারাত্মকভাবে প্রতারিত হয়েছি। তার বিচার ও শাস্তির দাবি জানাই।’

নজরুল ইসলাম বলেন, ‘২০১৮ সালে এক বন্ধুর মাধ্যমে মোবাইল ফোনে পরিচয় হয় তাহেরার সঙ্গে। মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর একপর্যায় তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও আন্তরিকতা তৈরি হয়। এরই মধ্যে তাহেরা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করতে থাকে আমার সঙ্গে। এর কয়েক দিনের মধ্যেই বিয়ের প্রস্তাব দেয় সে। আমি সরল মনে রাজি হই।’

তাহেরা বিভিন্ন সময় প্রয়োজনে টাকা নিয়েছে বলে দাবি করেন নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ইনকাম থেকে কষ্ট করে তার জন্য টাকা পাঠাই। সে আমার পাঠানো ১৫-২০ লাখ টাকা ব্যয়ে বাড়ি নির্মাণ করেছে। তার দুই বোনের সরকারি চাকরি ও বিয়ের জন্য আমার কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েছে। আমি সরল চিন্তা থেকে ব্যাংক মারফত এবং বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে দফায় দফায় প্রায় ৩০ লাখ টাকা পাঠিয়েছি। এর বাইরেও তাহেরা আমাকে বিয়ের প্রলোভনে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে মাসে মাসে হাতখরচের টাকাসহ আইফোন, ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার ও মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়েছে আমার কাছ থেকে।’

নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি দেশে আসতে চাইলে তাহেরা বাধা দিত। সে চাকরি ছেড়ে উন্নত জীবনের জন্য আমেরিকায় আমার কাছে আসার ইচ্ছা জানায়। আমেরিকায় আসার জন্য সরকারি ছুটিতে আমার টাকায় ব্রিটিশ কাউন্সিল থেকে আইইএলটিএস করে। সে নিজের পেশাগত পরিচয় আড়াল করে সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে একটি ও সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে আরেকটি পাসপোর্ট বানায়।’

নজরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘একটা সময় পর্যন্ত সবই ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু সে আমার সঙ্গে সম্পর্ক চলাকালে একাধিক ছেলের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক তৈরি করে, যা প্রথমে আমি জানতাম না। পরে বিভিন্ন মারফতে ও তাঁর আচরণে বিষয়টি বুঝতে পারি। আইইএলটিএস করার সময় তাহেরা একটি ছেলের সঙ্গে সম্পর্কে লিপ্ত হয়। দু-এক মাস আগে তাহেরা গোপনে সেই ছেলেকে বিয়ে করে।’

স্কুলশিক্ষিকা তাহেরার আচরণে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী নজরুল ইসলাম মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান। তিনি বলেন, ‘তাহেরা আমাকে এই বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে নারী নির্যাতনের মামলা দেবে বলে হুমকি দিচ্ছে।’

এ বিষয়ে জানতে স্কুলশিক্ষিকা তাহেরা আক্তারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাকসু ভোটের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ, প্রয়োজনে আসবে সেনাবাহিনী: পুলিশ কমিশনার

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সাংবাদিকদের সামনে কথা বলেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সাংবাদিকদের সামনে কথা বলেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাকসু নির্বাচন পরিদর্শনের পর রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান বলেছেন, নির্বাচনের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রয়েছে। প্রায় আড়াই হাজার পুলিশ সদস্য, র‍্যাব ও বিজিবি সদস্য মোতায়েন রয়েছেন। তারপরও যদি প্রয়োজন হয়, আহ্বান করলে সেনাবাহিনীও আসবে। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র ভবনের ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘আমাদের নিরাপত্তার কোনো শঙ্কা নেই, কোনো সমস্যাও নেই। আমি নিজেও ভোটকেন্দ্রগুলো পরিদর্শন করলাম। কোথাও কোনো সমস্যা নেই।’ তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনী সরাসরি এই নির্বাচনে থাকবে না। যদি প্রয়োজন হয়, আমরা যদি আহ্বান করি, তাহলে তারা আসবে।’

পুলিশ কমিশনার আরও বলেন, ‘সবার সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ আছে। প্রার্থীরা যদি আচরণবিধি মেনে চলেন, তাহলে কোনো সমস্যা হবে না।’

পুলিশ কমিশনার জানান, ভোটের আগের দিন বুধবার থেকেই ক্যাম্পাসে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এটি বলবৎ থাকবে শুক্রবার পর্যন্ত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বহুতল ভবনের ফ্ল্যাটে রহস্যজনক আগুন: একজন নিহত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
আজ ভোরে আগুনে দগ্ধ হয়ে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ ভোরে আগুনে দগ্ধ হয়ে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মৌলভী পাড়ায় একটি ছয়তলা ভবনের ফ্ল্যাটে রহস্যজনক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার ভোরে ‘দেওয়ান প্লাজা’ নামের ওই ভবনের পঞ্চম তলার একটি কক্ষে এই অগ্নিকাণ্ডে শাহ ফরহাদ উদ্দিন আহমদ (৬৫) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। নিহত ফরহাদ উদ্দিনের গ্রামের বাড়ি আখাউড়া উপজেলার আজমপুর হলেও তিনি পরিবার নিয়ে শহরের ওই ফ্ল্যাটে বসবাস করতেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক নিউটন দাস বলেন, ভোর ৪টা ১২ মিনিটে খবর পেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও আশুগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের মোট তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে তারা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ফ্ল্যাটের ক্ষতিগ্রস্ত কক্ষটি থেকে শাহ ফরহাদ উদ্দিন আহমদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নিউটন দাস জানান, শারীরিকভাবে অসুস্থ ফরহাদ উদ্দিন আহমদ অগ্নিকাণ্ডের সময় কক্ষের ভেতরে ছিলেন। তবে পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা নিরাপদে বের হতে পেরেছিলেন।

ফায়ার সার্ভিসের ধারণা, আগুন লাগার খবর বিলম্বে দেওয়া হয়েছে। তবে নিহত ব্যক্তির স্বজনদের বরাত দিয়ে উপসহকারী পরিচালক বলেন, ফরহাদ উদ্দিনের পারিবারিক বিরোধ ছিল। এ কারণে অগ্নিকাণ্ডের মূল কারণ উদ্‌ঘাটনে তদন্ত চলছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজহারুল ইসলাম জানান, মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে এবং পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মগড়া নদীতে গোসল করতে নেমে কৃষক নিখোঁজ, ডুবুরি দলের তল্লাশি চলছে

আটপাড়া (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি 
নিখোঁজ জেলেকে উদ্ধারে তল্লাশি চলছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
নিখোঁজ জেলেকে উদ্ধারে তল্লাশি চলছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার সোনাজুর গ্রামে মগড়া নদীতে গোসল করতে নেমে আব্দুল হক (৫৫) নামের এক কৃষক নিখোঁজ হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ৮টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। নিখোঁজ আব্দুল হক ওই গ্রামের মৃত আমির উদ্দিনের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আব্দুল হক প্রতিদিনের মতো সকালে নদীতে গোসল করতে নামেন। দীর্ঘ সময় পরও তিনি ফিরে না আসায় স্থানীয় বাসিন্দারা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। খবর পেয়ে নেত্রকোনা থেকে ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে।

আটপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এইচএসসিতে যশোর বোর্ডে কমেছে পাসের হার ও জিপিএ-৫

­যশোর প্রতিনিধি
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে যশোর বোর্ডে এ বছর গড় পাসের হার ৫০ দশমিক ২০ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫ হাজার ৯৯৫ জন। গত বছরের তুলনায় এ বছর পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যা কমেছে। এ ছাড়া শূন্য পাসের কলেজের সংখ্যা বেড়েছে। আজ সকালে বোর্ডের সভাকক্ষে ফলাফল ঘোষণা করেন বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আসমা বেগম।

বোর্ড কর্তৃপক্ষের দাবি, ‘জুলাই আন্দোলনের কারণে শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতিতে কিছু ঘাটতি ছিল। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের খাতার যথার্থ মূল্যায়ন হয়েছে। অসুস্থ প্রতিযোগিতা থেকে আমরা বেরিয়ে এসেছি। যে কারণে পাসের হার কমেছে।’

যশোর শিক্ষা বোর্ডের তথ্যমতে, এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় ১ লাখ ১২ হাজার ৫৭৪ পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। যার মধ্যে পাস করেছেন ৫৬ হাজার ৫০৯ জন। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাস করেছেন ১৫ হাজার ৯৩১ পরীক্ষার্থী।

মানবিক বিভাগ থেকে ৩৪ হাজার ৩ জন ও বাণিজ্য বিভাগ থেকে ৬ হাজার ৬৭৫ জন পরীক্ষার্থী পাস করেছেন। জিপিএ-৫ পাওয়াদের মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে ছেলে ১ হাজার ৭৭২ ও মেয়ে ১ হাজার ৬০৯, মানবিক বিভাগে ছেলে ৫৪৪ জন ও মেয়ে ১ হাজার ৬৩৫ এবং বাণিজ্য বিভাগে ছেলে ১৬৪ ও মেয়ে ২৭১ জন পাস করেন।

গত বছরের তুলনায় এ বছর পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যা কমেছে। গত বছর গড় পাসের হার ছিল ৬৪ দশমিক ২৮ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৯ হাজার ৭৪৯ জন। এ ছাড়া শূন্য পাসের কলেজের সংখ্যা বেড়েছে। এ বছর শূন্য পাসের কলেজের সংখ্যা ২০টি।

যশোর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক আব্দুল মতিন বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনের কারণে শিক্ষার্থীদের কিছু ঘাটতি ছিল। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের খাতার যথার্থ মূল্যায়ন হয়েছে। অসুস্থ প্রতিযোগিতা থেকে আমরা বেড়িয়ে এসেছি। যে কারণে পাসের হার কমেছে।’ তিনি আরও বলেন, শূন্য পাসের কলেজের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি করে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আসমা বেগম বলেন, ‘এ বছরের ফলাফলে আমরা সন্তুষ্ট নই। তবে শিক্ষার মানোন্নয়নে চেষ্টা করেছি। মেধাবীদের বের করে আনতে এই প্রচেষ্টা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত