Ajker Patrika

ট্রাকে পাথরচাপা দিয়ে আসছে চোরাই পণ্য

পাটগ্রাম (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ জুন ২০২৪, ১১: ০৪
ট্রাকে পাথরচাপা দিয়ে  আসছে চোরাই পণ্য

লালমনিরহাটের পাটগ্রামের বুড়িমারী স্থলবন্দর ও শুল্ক স্টেশন দিয়ে ভারত ও ভুটান থেকে পাথর আমদানির আড়ালে আনা হচ্ছে অবৈধ বিভিন্ন পণ্য। শুল্ক স্টেশনে স্ক্যানার না থাকার সুযোগে নিরাপত্তা সংস্থার চোখ ফাঁকি দিয়ে এসব পণ্য আনা হচ্ছে। এতে উভয় দেশের (ভারত-বাংলাদেশ) অসাধু কয়েকজন সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ও রপ্তানিকারকের যোগসূত্র রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

বন্দরসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে ভারত ও ভুটান থেকে সর্বাধিক পরিমাণ পাথর আমদানি করা হয়। পাশাপাশি খাদ্যশস্য ও বিভিন্ন প্রকার বীজও আমদানি করা হয়ে থাকে। প্রতিদিন প্রায় ৪০০-৫০০ গাড়িতে চলে আমদানি-রপ্তানির কাজ। ঋণপত্র (এলসি) অনুযায়ী এসব গাড়িতে আনা পণ্যের সঠিকতা যাচাই করা হয় অনুমানের ওপর ভিত্তি করে। গুরুত্বপূর্ণ এই শুল্ক স্টেশনে ‘পণ্য স্ক্যানার’ না থাকার সুযোগ নিয়ে পাথর ও অন্যান্য পণ্যের ভেতরে ভারতীয় শাড়ি, থ্রিপিস, কসমেটিকস, গয়না ও চিকিৎসার সামগ্রী চোরাচালান করছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা।

বন্দর সূত্র জানায়, গত ৬ মে ভারতের কলকাতার রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান অভিক অ্যান্ড সন্সের কাছে ১৮ টন চায়না ক্লে পাউডার আনতে এলসি করে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ঢাকার মেসার্স নূর এন্টারপ্রাইজ। ভারতের চ্যাংড়াবান্দা স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট প্রতিষ্ঠান মেসার্স উত্তম অ্যান্ড ব্রাদার্সের মাধ্যমে ওই দিনই ট্রাকে করে সেই ক্লে পাউডার বুড়িমারীতে আনে এই স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট প্রতিষ্ঠান মেসার্স আলিফ ইন্টারন্যাশনাল।

এদিকে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান অর্ডার অনুযায়ী পণ্য না পেয়ে পাটগ্রাম থানা ও গাজীপুরের টঙ্গী থানায় মামলা করে। মামলার সূত্র ধরে গাজীপুর ডিবি পুলিশের একটি দল বুড়িমারী ইউনিয়নের তুহিনুজ্জামান বাবু ও মনোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। তাঁদের দেওয়া তথ্যে হাতীবান্ধা উপজেলা থেকে ক্লে পাউডার উদ্ধার করা হয়। এ সময় পাউডারের ভেতর থেকে জব্দ করা হয় সিটি গোল্ডের তৈরি ১০ কার্টন বিভিন্ন গয়না, ইনজেকশন সিরিঞ্জ ও ক্যানুলার ৩০টি কার্টন। এসব পণ্যের মূল্য প্রায় কোটি টাকা। 
অভিযোগ উঠেছে, চ্যাংড়াবান্দা ও বুড়িমারী স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের সহায়তায় ক্লে পাউডারের ভেতর ভারতীয় গয়না ও চিকিৎসাসামগ্রী পাচার করা হয়। 
এর আগে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি এবং আগের বছর ২৭ মার্চ পাথরবোঝাই ট্রাকে অবৈধভাবে আনা হয় কয়েক কোটি টাকার ভারতীয় শাড়ি, থ্রিপিস ও কসমেটিকস সামগ্রী। পণ্য পাচারে শুল্ক স্টেশনের কতিপয় অসাধু কাস্টমস কর্মকর্তার যোগসাজশ রয়েছে বলেও অভিযোগ বন্দর ব্যবহারকারী একটি সূত্রের।

নাম না প্রকাশের শর্তে একাধিক কাস্টমস কর্মকর্তা জানান, একটি গাড়িতে ২০ থেকে ৬০ টন পর্যন্ত পাথর আমদানি করা হয়। পাথরবোঝাই সব গাড়ি সম্পূর্ণ খালি করে নিরীক্ষা করা কোনোভাবেই সম্ভব হয় না।

বুড়িমারী স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছায়েদুজ্জামান সায়েদ বলেন, ‘একটি চক্র পাথর আমদানির নামে ভারত থেকে কাপড়, সুগন্ধি কেমিক্যাল, কসমেটিকসসহ বিভিন্ন ধরনের অবৈধ পণ্য নিয়ে আসছে।’

বুড়িমারী স্থল শুল্ক স্টেশনের (কাস্টমস) সহকারী কমিশনার (এসি) নাজমুল হাসান দাবি করেন, ‘কোনো গাড়ি সন্দেহ হলে খালি করে চেক করা হয়। এভাবে প্রতিদিন বেশ কিছু গাড়ি পুরো খালি করে যাচাই করি। কোনো আমদানিকারক বা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অবৈধভাবে কোনো পণ্য আনলে ও ধরা পড়লে কাস্টমস আইনে তাঁদের লাইসেন্স বাতিল করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’

স্ক্যানার না থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, গাড়িসহ পণ্য স্ক্যান করতে স্ক্যানার বসাতে রংপুর কমিশনারের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। স্ক্যানার বসলে অবৈধভাবে পণ্য আনার সাহস পাবেন না অসাধু ব্যবসায়ীরা। এতে স্থলবন্দরের কাজে স্বচ্ছতাও বাড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত