Ajker Patrika

৫৮ বছরেও শ্রমকল্যাণ কেন্দ্রের কথা জানেন না গাইবান্ধার শ্রমিকেরা, সেবাবঞ্চিত

আনোয়ার হোসেন শামীম, গাইবান্ধা 
আপডেট : ০১ মে ২০২৪, ১৪: ১৪
৫৮ বছরেও শ্রমকল্যাণ কেন্দ্রের কথা জানেন না গাইবান্ধার শ্রমিকেরা, সেবাবঞ্চিত

শ্রমিকদের চিকিৎসাসেবা, প্রশিক্ষণ ও বিনোদনের জন্য প্রায় ৫৮ বছর আগে প্রতিষ্ঠা করা হয় গাইবান্ধা শ্রমকল্যাণ কেন্দ্র। সেখানে তিন বছর আগে নির্মাণ করা হয় আধুনিক সুবিধাসংবলিত তিনতলা ভবন। এসব পরিচালনার খরচ এবং বিভিন্ন সেবা ব্যয়ে দেওয়া হয় সরকারি বরাদ্দ। প্রতিষ্ঠার এত বছরেও অধিকাংশ শ্রমিক জানেন না শ্রমকল্যাণ কেন্দ্র সম্পর্কে। তাঁরা পান না সেবা। 

শ্রমিক নেতারা জানান, গাইবান্ধায় নিবন্ধিত শ্রমিক ইউনিয়নের সংখ্যা প্রায় ১২৯টি। এ ছাড়া প্রায় সব রাজনৈতিক দলেরই রয়েছে একটি করে শ্রমিক সংগঠন। জেলায় শ্রমিক ইউনিয়ন আর শ্রমিক সংগঠনের সংখ্যা দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। তবে এগুলোর বেশির ভাগই শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় কোনো প্রত্যাশা পূরণ হয় না। 

গাইবান্ধা শ্রমকল্যাণ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬৬ সালে এই কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০২১ সালে জেলা শহরের গোডাউন রোড এলাকায় দুই একর জমির ওপর নতুন করে নির্মাণ করা হয় আধুনিক সুবিধা সংবলিত তিনতলা ভবন। এই কেন্দ্রে মেডিকেল অফিসার, জনসংখ্যা ও পরিবারকল্যাণ কর্মকর্তা, শ্রমকল্যাণ সংগঠক, পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক, ফার্মাসিস্ট, ডিসপেনসারি অ্যাটেনডেন্ট, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক, অফিস সহায়ক, আয়া, নিরাপত্তা প্রহরী ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ ১২টি পদে জনবল রয়েছে। 

শ্রমকল্যাণ কেন্দ্রে প্রধান দুটি পদ মেডিকেল অফিসার এবং জনসংখ্যা ও পরিবারকল্যাণ কর্মকর্তার দুটি পদ ২০২২ সাল থেকে শূন্য রয়েছে। এ ছাড়া শ্রমকল্যাণ সংগঠক, পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক, ডিসপেনসারি অ্যাটেনডেন্টসহ আরও তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পদ শূন্য রয়েছে। এই অবস্থায় বন্ধ রয়েছে কল্যাণ কেন্দ্রটির চিকিৎসাসেবা ও ওষুধ বিতরণ কার্যক্রম। ১২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদ থাকলেও এখানে কর্মরত আছেন মাত্র সাতজন। 

সরেজমিনে গাইবান্ধা শ্রমকল্যাণ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, তিনতলা ভবনটির নিচতলার একপাশে অব্যবহৃত পড়ে আছে চিকিৎসাসেবা কেন্দ্র। অন্য পাশে পরিবার-পরিকল্পনার সেবাকেন্দ্র। ভবনটির দ্বিতীয় তলায় রয়েছে প্রশিক্ষণকক্ষ, বিনোদনকক্ষ, লাইব্রেরি, দর্শনার্থীকক্ষ, বিশ্রামাগার এবং তৃতীয় তলায় কনফারেন্স রুম আর অফিস রুম। ভবনজুড়ে সুনসান নীরবতা। নেই শ্রমিক অথবা শ্রমিক পরিবারের আনাগোনা। কেন্দ্রে সেবা কার্যক্রমগুলো চালু না থাকায় এখানে শ্রমিক আসছেস না। ফলে কর্মকর্তারা অলস সময় কাটাচ্ছেন। 

স্থানীয়রা জানান, বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাসংবলিত জেলার শ্রমকল্যাণ কেন্দ্র সম্পর্কে শ্রমিকদের জানানোর জন্য প্রচার-প্রচারণার দরকার। কেন্দ্রটি সক্রিয় করার কোনো উদ্যোগ নেই সংশ্লিষ্টদের। শ্রম অধিকার সুরক্ষায় শ্রমিক ইউনিয়নগুলো শ্রমিকদের সঙ্গে বসে শ্রমের মূল্য নির্ধারণ ও কার্যকরেরও কোনো ভূমিকা রাখে না। বছরজুড়ে নিশ্চুপ থাকলেও শুধু মে দিবসেই রেওয়াজ মেনে শোভাযাত্রা আর সভা-সমাবেশ করায় সরব হয়ে ওঠে বেশির ভাগ শ্রমিক সংগঠন। 

শহরের রিকশাচালক মইন মিয়া বলেন, ‘আমি অনেক আগে থেকে শহরেরই রিকশা চালাই। স্টেশনের পাশেই গোডাউন রোডে লেবারদের একটা অফিস আছে সেটা জানি। কিন্তু সেখানে কী হয় তা বলতে পারব না।’ 

গাইবান্ধা জেলা পরিবহন সুপারভাইজার সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাশেদুজ্জামান বাবু বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে শ্রমকল্যাণ কেন্দ্রটির কোনো যোগসূত্রই তৈরি হয়নি। তবে প্রতিষ্ঠানটির নাম শুনেছি। আমাদের কোনো খোঁজখবর নেন না তাঁরা, আমরাও নেইনি তাঁদের খোঁজ। বেশির ভাগ শ্রমিকই জানেন না শ্রমকল্যাণ কেন্দ্রটি কোথায়।’ 

পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় সরকারি এই শ্রমকল্যাণ কেন্দ্র অকার্যকর হয়ে পড়ে আছে বলে জানান গাইবান্ধা কুলি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ও জাতীয় শ্রমিক পার্টির জেলা সভাপতি রেজাউন্নবী রাজু। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের শ্রম অধিদপ্তরের অধীনে পরিচালিত গাইবান্ধা শ্রমকল্যাণ কেন্দ্রটি চালু রাখার একাধিক প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবায়ন হচ্ছে না। আর শ্রমিকেরাও বঞ্চিত হচ্ছেন তাঁদের অধিকার থেকে।’ 

রেজাউন্নবী রাজু আরও বলেন, ‘সরকারকে প্রতিবছর এই কেন্দ্রে কর্মচারীদের বেতন ও বিভিন্ন খরচ মেটাতে গিয়ে ব্যয় করতে হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। গাইবান্ধা শ্রমকল্যাণ কেন্দ্রটি মাঝেমধ্যে কয়েকজন শ্রমিককে নিয়ে সেমিনার করে, যা লোক দেখানো। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজর দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করি।’ 

গাইবান্ধা শ্রমকল্যাণ কেন্দ্রের তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা ও শ্রমকল্যাণ সংগঠক মো. নাছির উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চিকিৎসা কর্মকর্তাসহ পাঁচটি পদে জনবল না থাকার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, এসব সমস্যার সমাধান শিগগিরই হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চট্টগ্রামে ছুরিকাঘাতে আহত যুবকের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁওয়ে বাসার কাছে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে আহত ইমন দাশ (২৪) নামের এক যুবক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। ১৪ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে তিনি মারা যান।

ইমন দাশ চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের ধলঘাট ইউনিয়নের দাশপাড়া এলাকার সাগর দাশের ছেলে। তিনি পরিবারের সঙ্গে নগরীর চান্দগাঁও থানার মৌলভীবাজার এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।

সাগর দাশের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে প্রবীর নামের একজন নিজেকে ইমনের আত্মীয় পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইমন মারা যান। তাঁর বাবা সাগর দাশ এখন কথা বলার মতো অবস্থায় নেই।’

এর আগে গত ৩০ নভেম্বর নগরের চান্দগাঁওয়ের মৌলভীবাজার এলাকায় নিজ বাসার কাছে ইমনকে এলোপাতাড়ি মারধর ও ছুরিকাঘাত করে একদল যুবক। পরে খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন তাঁকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করেন।

এ ঘটনায় ৩ ডিসেম্বর পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে এবং ২-৩ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে চান্দগাঁও থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা করেন ইমনের বাবা সাগর দাশ। মামলায় এজাহারনামীয় আসামিরা হলেন নগরের একই থানা এলাকার বাসিন্দা ও ইমনের পরিচিত নয়ন মহাজন (২৯), কিরণ (৩০), আবু হানিফ (২৮), মহিউদ্দিন শরীফ (২৩) ও মো. নেজামকে (৩৫)।

নগরের কালুরঘাট শিল্প এলাকায় একটি পোশাক কারখানায় কর্মরত সাগর দাশ ওই মামলার অভিযোগে বলেছেন, তাঁর বড় ছেলে ইমনের পূর্বপরিচিত আসামি নয়ন মহাজন। তাঁদের দুজনের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ ছিল। ৩০ নভেম্বর ভোরে পূজার ফুল নেওয়ার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন ইমন। এ সময় মৌলভীবাজারের ওয়াসা রোডে মরিয়ম ক্লাবের পাশে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তাঁর ওপর হামলা করে।

মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়, আসামিরা হত্যার উদ্দেশ্যে কিরিচ, চাপাতি দিয়ে ইমনকে কুপিয়ে জখম করে। পরে খবর পেয়ে সাগর দাশসহ তাঁর পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে গেলে তাঁদেরও মারধর করা হয়। একপর্যায়ে হুমকি দিয়ে আসামিরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় ইমনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে জানতে চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল কবিরকে একাধিকবার ফোন করা হয়। তবে তিনি কোনো সাড়া দেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জামায়াত প্রার্থীর সভায় গান গাওয়া সেই পুলিশ কর্মকর্তা বরখাস্ত

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
সাতক্ষীরায় জামায়াত প্রার্থীর সভায় পুলিশ কর্মকর্তা। ছবি: সংগৃহীত
সাতক্ষীরায় জামায়াত প্রার্থীর সভায় পুলিশ কর্মকর্তা। ছবি: সংগৃহীত

সাতক্ষীরায় দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের প্রার্থীর সভায় গান (জামায়াতের গুণগান-সংবলিত) পরিবেশনের অভিযোগে পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক মো. মহিবুল্লাহকে বরখাস্ত করা হয়েছে। আজ রোববার সন্ধ্যায় যশোরের পুলিশ সুপার সৈয়দ রফিকুল ইসলাম বরখাস্তের এই আদেশ দেন বলে জানা গেছে।

বরখাস্ত হওয়া মো. মহিবুল্লাহ নড়াইল জেলার বাসিন্দা। বর্তমানে তিনি যশোর পুলিশ লাইনসে কর্মরত। এর আগে তিনি সাতক্ষীরা পুলিশ লাইনসে ছিলেন।

যশোর পুলিশের বরাতে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মুকিত হাসান খাঁন আজকের পত্রিকাকে বলেন, তিনি (মহিবুল্লাহ) গত ২৬ নভেম্বর ১৫ দিনের ছুটি নিয়ে নিজ জেলা নড়াইলে রওনা হন এবং ছুটি শেষে ১২ ডিসেম্বর কর্মস্থলে হাজির হন।

ছুটিকালীন তিনি নড়াইল থেকে সাতক্ষীরায় এসে জামায়াতের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে সংগীত পরিবেশন ও বক্তব্য দেন; যা পুলিশের পেশাদারত্ব ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে। বিষয়টি রেঞ্জ ডিআইজিকে অবহিত করে তাঁকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

এর আগে আজ রোববার দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের প্রার্থীর সভায় গান পরিবেশনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

তিন মিনিট ১১ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, সাতক্ষীরা–২ (সদর-দেবহাটা) আসনে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের প্রার্থী মুহাদ্দিস আব্দুল খালেকের একটি নির্বাচনী পথসভায় পুলিশের পোশাক পরিহিত মো. মহিবুল্লাহ গান পরিবেশন করেন। মাঝে মাঝে নারায়ে তাকবির স্লোগান দিয়ে দর্শকদের উজ্জীবিত করেন।

সূত্রে জানা গেছে, পথসভাটি ৭ ডিসেম্বরের। সাতক্ষীরা শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাটিয়া আমতলা মোড়ে ওই পথসভা হয়। সভায় ১ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতের আমির মো. জিয়াউর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন দলের মনোনীত প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক। সভার মাঝপথে মো. মহিবুল্লাহ এই গান পরিবেশন করেন।

আরও জানা গেছে, পুলিশের ওই এএসআই সাতক্ষীরা পুলিশ লাইনসে কর্মরত থাকাকালে আগরদাড়ির একটি মাহফিলে ইসলামি গান পরিবেশন করেছিলেন। তাঁর সংগীতে মুগ্ধ হয়ে মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক তাঁকে পুরস্কৃত করেন। বাগেরহাটে বদলি হয়ে গেলেও তিনি খোঁজ নিয়ে ওই পথসভায় আসেন।

জানতে চাইলে এএসআই মো. মহিবুল্লাহ বলেন, ‘আমি কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য দিইনি। মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক আমাকে পুরস্কৃত করেছিলেন, সে কারণে আমি ইসলামি একটি সংগীত পরিবেশন করেছি’ বলেই লাইনটি কেটে দেন। পরে তাঁর নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে সাতক্ষীরা শহর জামায়াতের সেক্রেটারি খোরশেদ আলম বলেন, ‘পুলিশের পোশাক পরা ওই ব্যক্তি স্টেজে উঠে সংগীত পরিবেশন করতে চান। আমরা নিষেধ করা সত্ত্বেও তিনি সংগীত পরিবেশন করেছেন।’

সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মুকিত হাসান খাঁন জানান, অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য বর্তমানে সাতক্ষীরায় কর্মরত নন। অপর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পুলিশের পোশাক পরে কোনো রাজনৈতিক দলের প্রচারণায় অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেলেন সৈয়দপুরের এক কলেজের ৪৫ শিক্ষার্থী

নীলফামারী প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ১০
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

নীলফামারীর সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে এ বছর ৪৫ জন শিক্ষার্থী সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর (রাত সাড়ে ৯টা) এ তথ্য জানিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।

সব শিক্ষার্থীর তথ্য পেলে সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশা কর্তৃপক্ষের। সৈয়দপুর বিজ্ঞান কলেজ থেকে সুযোগ পাওয়া ৪৫ শিক্ষার্থীর মধ্যে ছেলে ১৩ জন ও মেয়ে ৩২ জন।

১২ ডিসেম্বর ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। রোববার পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ আজাদ আবুল কালাম জানান, মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পাওয়া শিক্ষার্থীদের তালিকা সংগ্রহ করে এ পর্যন্ত ৪৫ জনের নাম পেয়েছেন। এই নামের তালিকা আরও বাড়বে বলে মনে করছেন।

তিনি বলেন, গত বছরও ৫৩ জন বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছিলেন। এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সুশৃঙ্খল পরিবেশ, পাঠদানে শিক্ষকদের আন্তরিকতা এবং কঠোর তদারকির ফলে প্রতিবছর আশানুরূপ ফল করছেন শিক্ষার্থীরা। মূলত শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রতিবছর মেডিকেল ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ধারাবাহিক সফলতা ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছে।

উল্লেখ, নীলফামারীর সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজের আগের নাম ছিল সরকারি কারিগরি মহাবিদ্যালয় (টেকনিক্যাল কলেজ)। ২০২০ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় নাম পরিবর্তন করে সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ নাম রাখে। কলেজটিতে শুধু বিজ্ঞান বিষয়ে পড়ার সুযোগ রয়েছে। ১৯৬৪ সালে দেশের চারটি শিল্পাঞ্চলে টেকনিক্যাল স্কুল গড়ে ওঠে। দেশের সর্ববৃহৎ সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার সুবাদে এখানেও গড়ে ওঠে টেকনিক্যাল স্কুল। উদ্দেশ্য ছিল এখান থেকে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার জন্য দক্ষ, কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন শিক্ষার্থী গড়ে তোলা। পরে ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠানটি কলেজে উন্নীত হয়। দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে শীর্ষ প্রতিষ্ঠান হিসেবে সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজের নাম রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সুদান হামলা: মিশন যাত্রার ১ মাস ৮ দিনের মাথায় প্রাণ গেল শান্তিরক্ষী মাসুদের, পরিবারে মাতম

নাটোর ও লালপুর প্রতিনিধি 
মাসুদ রানার মৃত্যুর খবরে পরিবারে কান্নার রোল উঠেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
মাসুদ রানার মৃত্যুর খবরে পরিবারে কান্নার রোল উঠেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশন যাত্রার মাত্র এক মাস আট দিনের মাথায় সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন করপোরাল মাসুদ রানা। তাঁর মৃত্যুর খবরে নাটোরের লালপুরের বাড়িতে এখন কান্নার রোল উঠেছে।

গতকাল শনিবার সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের আওতাধীন কাদুগলি লজিস্টিক বেসে সন্ত্রাসী ড্রোন হামলায় ছয় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত হন। নিহত শান্তিরক্ষীদের মধ্যে মাসুদ রানাও রয়েছেন।

মাসুদ রানা নাটোরের লালপুর উপজেলার আড়বাব ইউনিয়নের বোয়ালিয়াপাড়া গ্রামের মৃত সাহার উদ্দিনের ছেলে। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। তাঁর ছোট দুই ভাই মনিরুল ইসলাম জনি ও রনি আহমেদও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কর্মরত।

মাসুদের শোকে তাঁর স্ত্রী আসমাউল হুসনা আঁখি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এই দম্পতির আট বছরের মেয়ে আছে। আঁখি বলেন, ‘আমার মেয়েকে এতিম করে সে চলে গেল। বাকি জীবন আমরা কীভাবে কাটাব? গতকালও (শনিবার) আমাদের সঙ্গে সে কথা বলেছিল। আজ সে নেই, ভাবতে পারছি না।’

ছেলের মৃত্যুর খবরে মা মর্জিনা খাতুন (৫৫) বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমার তিন সন্তান সেনাবাহিনীতে। এক সন্তান দেশের জন্য প্রাণ দিল। আমার পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো না। সরকার যেন আমার সন্তানের বিধবা স্ত্রী ও এতিম মেয়ের কথা ভাবে। আমাদের আর কেউ নাই।’

প্রতিবেশীরা জানান, মাসুদ রানা ছিলেন শান্ত ও মিশুক স্বভাবের মানুষ। পরিবারের সুখের স্বপ্ন নিয়ে তিনি শান্তিরক্ষা মিশনে গিয়েছিলেন।

লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জুলহাস হোসেন সৌরভ বলেন, নিহত মাসুদের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে। দ্রুত এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।

এদিকে আজ রোববার বিকেলে নাটোর আর্মি স্টেডিয়ামের সেনাক্যাম্পের কমান্ডার মেজর মো. নাজমুল আলম আবীর নিহত শান্তিরক্ষী মাসুদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি বলেন, শহীদের মরদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রয়োজনীয় সব কার্যক্রম চলমান রয়েছে। একই সঙ্গে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে শহীদ পরিবারকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত