Ajker Patrika

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দোতলা থেকে রোগীকে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ

বালিয়াডাঙ্গী (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দোতলা থেকে রোগীকে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ

ঠাকুরগাঁওয়ে চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগীকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দুই তলা থেকে নিচতলায় ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক যুবকের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীর নাম মানারুল হক (৩৭) এবং অভিযুক্ত যুবকের নাম সোহেল রানা (২৫)। গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টায় বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ঘটনা ঘটে। 

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ বলছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়েছিল। পুলিশ ঘটনাস্থলে আসার আগেই অভিযুক্ত সোহেল রানা হাসপাতাল ছেড়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। অভিযুক্ত সোহেল রানা বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার আমজানখোর ইউনিয়নের রত্নাই বাগানবাড়ী গ্রামের শাহ আলমের ছেলে। 

দায়িত্বরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, নিচতলায় পড়ে রোগী মানারুল ইসলামের কোমরের হাড় ভেঙে গেছে। এ ছাড়া মাথায় ও বুকে প্রচণ্ড আঘাত পেয়েছেন মানারুল। অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে তাঁকে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো করা হয়েছে। তিনি বর্তমানে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। 

আহত মানারুল ইসলাম বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার আমজানখোর ইউনিয়নের হরিণমারী জুগিহার গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে। তিনি ঠাকুরগাঁও জেলা বিআরডিবি কার্যালয়ের পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত আছেন বলে জানা গেছে। 

মানারুল ইসলামের শ্বশুর রবিউল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সকাল সাড়ে ৬টায় আমার জামাইয়ের বাড়িতে বসতভিটার জমিজমার নিয়ে বিরোধের জেরে দুপক্ষের মধ্যে মারধরের ঘটনা ঘটে। এতে আমার জামাই মানারুল ইসলামসহ তাঁর পরিবারের ৩ জন গুরুতর আহত হলে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসে। জরুরি বিভাগ থেকে চিকিৎসা নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দ্বিতীয় তলায় পুরুষ ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়ার সময় দ্বিতীয় তলায় থাকা সোহেলসহ তাঁদের লোকজন দোতলায় পুনরায় মারধর শুরু করে। সোহেল রানা আমার জামাই মানারুলকে হত্যার উদ্দেশে ধাক্কা দিয়ে দোতলা থেকে নিচতলার সিঁড়িতে ফেলে দেয়। এতে জামাইয়ের কোমরের হাড় ভেঙে গেছে, মাথায় ও বুকে প্রচণ্ড আঘাত পেয়েছে।’ 

রবিউল আলম বলেন, ‘জামাই ও মেয়ে চিকিৎসার কাজে দিনাজপুরে থাকায় আমি বাদী হয়ে বালিয়াডাঙ্গী থানায় শুক্রবার রাতে সোহেলসহ আরও ৯ জনকে আসামি করে এজাহার জমা দিয়েছি। সরকারি হাসপাতাল একটি নিরাপদ জায়গা, সেখানেও হামলার শিকার আমার জামাই। আমি এ ঘটনায় ন্যায়বিচার চাই।’ 

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডা. মিঠুন দেবনাথ বলেন, ‘মারামারিতে আহত রোগীদের মধ্যে গোলযোগ শুরু হলে মানারুল ইসলামকে দোতলা থেকে ফেলে দেয় সোহেল ও তাঁর লোকজন। আমি থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসার আগেই সোহেল ও তাঁর লোকজন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ছেড়ে পালিয়ে যায়।’ 

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এস এম আলমাস বলেন, ‘ছুটির দিন থাকায় আমি ছিলাম না। ঘটনাটি শুনেছি। রোগীর অবস্থা বেশি ভালো না, দিনাজপুর মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। হাসপাতালে এ ধরনের ঘটনার জন্য আমরাও আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’ 

বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল আনাম বলেন, ‘সকালে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে গন্ডগোলের কথা জানালে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল ঘটনাস্থলে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছে। এখন পর্যন্ত রোগী কিংবা তাঁদের স্বজনেরা কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

অভিযুক্ত সোহেল রানার বড় ভাই জয়নাল আবেদিন বলেন, একটা ঘটনা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘটেছে। আপনি যতটা বলছেন ততটা না। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত