Ajker Patrika

শখের কফিবাগান এখন বাণিজ্যিক সম্ভাবনা

জলঢাকা (নীলফামারী) প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ অক্টোবর ২০২১, ০৪: ২৬
শখের কফিবাগান এখন বাণিজ্যিক সম্ভাবনা

শখের বশে তিনি শুরু করেছিলেন কফিবাগান। সেই কফিবাগান ই এখন বাণিজ্যিকভাবে সম্ভাবনাময় হয়ে উঠেছে। নীলফামারী জেলার জলঢাকার নারী খাদিজা আক্তারের এখন, ৫ বিঘা জমিতে রয়েছে কফিসহ নানা জাতের ফলগাছ। ২০১৪ সালে তাঁর স্বামীর মৃত্যুর পর সন্তানদের সহযোগিতায় বের করেন ব্যস্ত থাকার এক অন্য উপায়। পরিশ্রম ও সৃষ্টিশীলতার এই ব্যস্ত জীবনে খাদিজা আক্তার (৫৫) এখন একজন সফল নারী উদ্যোক্তা। 

খাদিজা আক্তার বলেন, পতিত জমিগুলোতে শখের বশে কখনো দু-একটি লাউ-কুমড়ার চারাগাছ লাগাতেন তিনি। ২০১৮ সাল থেকে তাঁর সন্তানেরা উচ্চ শিক্ষার জন্য বাইরে চলে যায়। প্রথমে তারা দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে নানা প্রজাতির কিছু অ্যারাবিকা ও রোভাষ্ট জাতের কফি গাছের চারা এনে দেয় বাগান করার জন্য। শখের বশে করা বাগানে এখন দুই হাজার ৮০টি কফি গাছসহ ২০ প্রজাতির ফল গাছ আছে। তিনি আরও বলেন, এই বাগান এখন তাঁকে বাণিজ্যিকভাবে সফলতা এনে দিচ্ছে। আর এসব সম্ভব হয়েছে সন্তানদের উৎসাহ ও সহযোগিতায়। 

উপজেলা কৃষি অফিস থেকে জানা যায়, উপজেলাটিতে ৬২টি বিভিন্ন ফল ও মিশ্র ফলের বাগানের মধ্যে শুধু একটি কফিবাগান আছে। বাগানটির উদ্যোক্তা জলঢাকার কৈমারী সুনগর গ্রামের মৃত নজরুল ইসলামের স্ত্রী খাদিজা আক্তারের। কৃষি অফিস থেকে নিয়মিত সম্ভাবনাময় কফি বাগানটি দেখভাল ও পরিচর্যার বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। 

খাদিজা আক্তারের ছোট ছেলে শেফায়েত নাশরাত নয়ন বলেন, ’মায়ের একাতিত্বের কথা চিন্তা করে মূলত কিছু ফল গাছের চারা এনে দেই। পর্যায়ক্রমে পাঁচ বিঘা জমিতে সেসব চারা লাগানো হয়েছে। কিন্তু শখের কাজ যে আজ বাগানে রুপান্তরিত হবে ভাবতেই পারিনি। কফি বাগানের সঙ্গে ড্রাগন, শরিফা, রামভূটান, অ্যাভোগ্যাডো, আম ও কোকো গাছও আছে। কফিবাগানেও প্রচুর ফলন এসেছে। আমদানি পণ্য হওয়ায় এভাবে কফিবাগান করলে একদিকে আমাদের অর্থ সাশ্রয় হবে, অন্যদিকে মানুষও তাজা জিনিস পাবে।’

ওই এলাকার স্থানীয় ইউনুছ আলী, কেচুয়া মণ্ডল ও মিন্টু মিয়াসহ অনেকেই বলেন, আগে শুধু কফির নাম শুনেছেন তাঁরা। এখন বাস্তবে কফি ফল দেখছেন। প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকার মানুষ এই কফি বাগান দেখতে আসেন। তারাও বাগান করার পরামর্শ নেন খাদিজা আক্তারের কাছ থেকে। 

এই বাগানটির পরিচর্যায় নিয়োজিত কর্মীরা বলেন, তারা ছয়জন বাগানে নিয়মিত কাজ করেন। গাছগুলোতে যখন ফুল আসে ও ফল ধরে তখন আরও বেশি পরিচর্যা করতে হয় বলে জানান তারা। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহাদত হোসেন বলেন, 'নারী উন্নয়নে সরকার বদ্ধপরিকর। খাদিজা আক্তারের আগ্রহ দেখে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে ১ হাজার ৫ শত কফির চারা তাঁকে দেওয়া হয়েছে। ওই এলাকার মাটি পলি-দোআঁশ। এসব মাটিতে কফির ফলন ভালো হয়। পরিশ্রম ও খরচ দুটোই কম। এভাবে কফিবাগান করলে দেশেই কফির বাজার তৈরি হবে। আমাদের আর আমদানি নির্ভরতায় থাকতে হবে না। আমি মনে করি খাদিজা আক্তারকে দেখে অনেকেই কফিবাগান করতে উৎসাহী হবেন।' 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত