Ajker Patrika

উদ্বোধনের আগেই সেতুর সংযোগ সড়কে ধস

প্রতিনিধি, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা)
উদ্বোধনের আগেই সেতুর সংযোগ সড়কে ধস

সুন্দরগঞ্জ পৌর সভার রামডাকুয়ায় তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত সেতুর সংযোগ সড়কে উদ্বোধনের আগেই ধস। প্রায় দুই ঘণ্টার মুষলধারে বৃষ্টির পানিতে সেতুর পূর্বপাশে এ ধস দেখা দেয়। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে খরচ হয়েছে ৫ কোটি ৫৭ লাখ ৯৮ হাজার ৪৪৪ টাকা। 

উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালে রামডাকুয়া সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু করেন এলজিইডি। এ কাজের দায়িত্ব পায় ঢাকাস্থ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পুরকৌশল প্রযুক্তি লিমিটেড। পিসি গার্ডার সেতুটির দুই পাশের সংযোগ সড়কসহ ৯৬ মিটার লম্বা। সেতুর মূল অংশ ছাড়া পূর্বপাশে ৫০ মিটার ও পশ্চিমাংশে ৫০ মিটার সংযোগ সড়ক রয়েছে। নির্মাণকাজে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ কোটি ৫৭ লাখ ৯৮ হাজার ৪৪৪ টাকা। গত মার্চ-এপ্রিলের দিকে এ সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হয়। 

স্থানীয়রা বলেন, উপজেলার বেলকা, হরিপুর, তারাপুর ইউনিয়নসহ পার্শ্ববর্তী কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর ও চিলমারি উপজেলার প্রায় ২০ গ্রামের লোকজন প্রতিদিন যাতায়াত করে তিস্তার এই শাখা নদী দিয়ে। সেতু না থাকায় কখনো নৌকা, কখনো বাঁশের সাঁকো আবার কখনো কাঠের সাঁকো দিয়ে চলাচল করতেন তাঁরা। কিন্তু তাঁদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল এখানে একটি সেতু নির্মাণ করা। অবশেষ ২০১৯ সালে শুরু হয় সেতুর নির্মাণকাজ। শেষ হয় চলতি বছরের মার্চ-এপ্রিল মাসের দিকে। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন না হতেই সেতুর পূর্বপাশের ৫০ মিটার অংশের সংযোগ সড়কে ধস দেখা দিয়েছে। এতে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করছেন স্থানীয়রা। 

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, সেতু নির্মাণের শুরু থেকেই নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও কাজে ব্যাপক অনিয়ম ছিল। আমরা অভিযোগও করেছিলাম। কিন্তু ঠিকার বা এলজিইডি অফিসের লোকজন আমাদের কথায় গুরুত্ব দেননি। দ্রুত মেরামত করার দাবি জানাচ্ছি। 

রামডাকুয়ায় তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত সেতুর সংযোগ সড়কে উদ্বোধনের আগেই ধসে গেছেরামডাকুয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. আ. সামাদ মিয়া বলেন, গত রোববার বিকেলে ঘণ্টা দু-এক মুষলধারে বৃষ্টি হয়। এতে ব্রিজের সংযোগ সড়কটিতে ধস দেখা দেয়। বর্ষা এখনো শুরু হয়নি। তাতেই ব্রিজের যে অবস্থা। মনে হচ্ছে আমাদের চরবাসীর ভোগান্তি পিছু ছাড়ছে না। এ ভোগান্তি কেবল তাঁর একার না। প্রায় ২০ গ্রামের মানুষ দুর্ভোগের স্বীকার হবেন।

বেলকা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান মজি বলেন, শুরু থেকেই তাঁরা অনিয়ম ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করেছেন সেতু নির্মাণে। আমরা এ বিষয়ে একাধিকবার অভিযোগও করেছিলাম। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। মনগড়া কাজ করেছেন ঠিকাদার ও এলজিইডি অফিসের লোকজন। সে কারণে আজ সেতুর এ অবস্থা। 

৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর লাভলু মিয়া বলেন, অনিয়মের কারণে ৩-৪ বার কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এ নিয়ে তাঁদের সঙ্গে একাধিকবার বাগ্‌বিতণ্ডাও হয়েছে আমাদের। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। 

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে প্রকল্পের ঠিকাদারের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁকে পাওয়া যায়নি। 

সেতু নির্মাণে তদারকির দায়িত্বে থাকা নকশাকার উপসহকারী প্রকৌশলী মো. মইনুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টির কারণে এটি হয়েছে। ঠিকাদারের সঙ্গে কথাও হয়েছে আমার। দু'একদিনের মধ্যে এসে মেরামত করে দেওয়া হবে। 

উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবুল মনছুর বলেন, এখানে কাজ করা অনেক জটিল ছিল। সংযোগ সড়ক থেকে স্লাপ যে পরিমাণ লম্বা থাকার কথা ছিল সেটা করতে পারিনি আমরা। জমির মালিকেরা জায়গা দেয়নি আমাদের। আর সে কারণেই এ সমস্যা দেখা দিয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারী কমিশনের রিপোর্ট বাতিল হলে অন্যগুলোও বাতিলযোগ্য: উমামা ফাতেমা

খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার ফ্লাইট থেকে সরানো হলো দুই কেবিন ক্রু

প্রাথমিকে আবার চালু হচ্ছে বৃত্তি পরীক্ষা: গণশিক্ষা উপদেষ্টা

নারী কমিশন তৈরির জন্য জুলাই বিপ্লবে কেউ জীবন দেয়নি: মাহমুদুর রহমান

১৯৪৭ থেকে ২০২৫: ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ও ফলাফল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত