Ajker Patrika

পানি নেই ঠাকুরগাঁওয়ের জলাশয়ে, পাট জাগ দেওয়া নিয়ে বিপাকে কৃষক

সাদ্দাম হোসেন, ঠাকুরগাঁও
আপডেট : ০২ আগস্ট ২০২৩, ১১: ২৫
পানি নেই ঠাকুরগাঁওয়ের জলাশয়ে, পাট জাগ দেওয়া নিয়ে বিপাকে কৃষক

ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষকেরা খেতের পাট পচানো বা জাগ দেওয়ার মতো পানি পাচ্ছেন না আশপাশে। এতে পাটের ভালো ফলন হওয়ার পরও বিপাকে পড়েছেন তাঁরা। ফলে কোনো কোনো কৃষকের পাটগাছ শুকিয়ে যাচ্ছে জমিতেই। আবার অনেকে জমি থেকে দূরে পাট জাগ দিতে নেওয়ায় বাড়ছে খরচ।

হরিপুর উপজেলার আমগাঁও গ্রামের কৃষক আবদুল জলিল ৩৩ শতক জমিতে পাটের আবাদ করে এখন লোকসানের আশঙ্কা করছেন। কারণ পাটখেতের কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে জাগ দেওয়ার পানি পাচ্ছেন না। বাধ্য হয়ে মহিষের গাড়ি ভাড়া করে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে নাগর নদীতে পাট পচানোর জন্য নিয়ে যাচ্ছেন। এতে তাঁর প্রতি বিঘায় অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা।

আবদুল জলিল বলেন, অনাবৃষ্টির কারণে এবার খালে বা বিলে পানি নেই। এদিকে পাট কাটার সময় হয়ে গেছে, কিন্তু জাগ দেওয়ার পানি না থাকায় পাট কাটতে পারছিলাম না। শেষে উপায় না পেয়ে বাধ্য হয়ে ৪ হাজার টাকা বিঘা হিসেবে মহিষের গাড়ি ভাড়া নিয়ে নদীতে পাট জাগ দিচ্ছি।

পাহাড়ভাঙ্গা এলাকায় স্তূপ করে রাখা পাট জাগ দেওয়ার জন্য গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছেআবদুল জলিলের মতো এবার পাট পচানো নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের পাঁচ উপজেলার হাজারও পাটচাষি। পানির অভাবে জমি থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে গরু বা মহিষের গাড়িতে করে পানিসমৃদ্ধ এলাকায় নিয়ে যাচ্ছেন পাট জাগ দিতে। এতে পাটের উৎপাদন খরচের সঙ্গে অতিরিক্ত যোগ হয়েছে পরিবহন খরচ, পাশাপাশি শ্রমিকের মজুরি খরচও বেড়ে যাচ্ছে।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সিংগিয়া গ্রামের কৃষক সঞ্জয় কুমার বলেন, ‘কৃষি বিভাগ থেকে কোনো ধরনের সহযোগিতা পাচ্ছি না। আমাদের মতো অনেক কৃষক বাধ্য হয়ে শ্যালো মেশিন ও মোটর দিয়ে ডোবা-নালায় পানি তুলে পাট জাগ দিচ্ছেন। এতে বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে।’

একই এলাকার কৃষক হরপা রায় জানান, পানির অভাবে পাট জাগ দিতে না পারার কারণে দুই বিঘা জমির পাট বৃষ্টির জন্য জমিতেই রেখে দিয়েছেন।

সালন্দর এলাকার কৃষক নুরুন নবী বলেন, এবার পাটের ভালো ফলনের সম্ভাবনা থাকলেও পানির অভাবে পাট জাগ দিতে পারছি না। এতে পাট নিয়ে চরম বিপদে পড়েছি।

সদর উপজেলার বুড়িবাঁধ এলাকায় ডোবায় পাট জাগ দিয়েছেন কৃষকগৌরিপুর এলাকার কৃষক আমির হোসেন বলেন, এবার ফলন ভালো হলে বিঘাপ্রতি ১০ থেকে ১২ মণ ও ফলন খারাপ হলে প্রকারভেদে ৫ থেকে ৭ মণ করে পাট উৎপাদন হবে। বর্তমান বাজারে প্রতিমণ পাট ২ হাজার ৪০০ থেকে ২ হাজার ৭০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া পাটকাঠি থেকেও বাড়তি টাকা উঠে আসবে।

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সিরাজুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, হিসাবমতে এবার প্রায় ৭ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। জেলায় এবার পাট ভালো হয়েছে। তবে সময়মতো পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় পাট জাগ দেওয়া নিয়ে কৃষক বিপাকে পড়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে’, চিরকুটে লেখা

বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত আমদানির ঘোষণা দিতেই ভারতে হু হু করে বাড়ছে চালের দাম

এপিএসের বেতন ১ বছরে বেড়েছে ১৮ বছরের সমান

ফেসবুকে ছাত্রলীগ নেতার ‘হুমকি’, রাবিতে ১৫ আগস্টের কনসার্টে যাচ্ছে না আর্টসেল

জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে উচ্চপদস্থ বোর্ড গঠন: আইএসপিআর

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত