Ajker Patrika

অবৈধ জালে বিলুপ্তির পথে দেশি মাছ

খোরশেদ আলম সাগর, লালমনিরহাট
চায়না দুয়ারী জাল বসিয়ে এক শ্রেণির অসাধু মানুষ ডিমওয়ালা ও পোনা মাছ নিধন করছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
চায়না দুয়ারী জাল বসিয়ে এক শ্রেণির অসাধু মানুষ ডিমওয়ালা ও পোনা মাছ নিধন করছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

তিস্তা, ধরলা ও সানিয়াজান নদীবেষ্টিত লালমনিরহাট জেলার উন্মুক্ত জলাশয়ে ছড়িয়ে পড়েছে চায়না দুয়ারী ও কারেন্ট জাল। এতে ডিমওয়ালা ও পোনা মাছ নিধন হওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে দেশি মাছের প্রজনন ও উৎপাদন। লিখিত অভিযোগ দিয়েও কার্যকর পদক্ষেপ না পাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন চাষিরা।

জানা গেছে, জেলার পাঁচটি উপজেলার নদী, খাল, বিল ও ডোবা–নালায় প্রাকৃতিকভাবে চাষ হয় দেশি প্রজাতির নানা মাছ। বর্ষাকালে এসব মাছ ডিম ও পোনা ছাড়ে। এসব মাছ নিম্নাঞ্চলের জলাশয়ে বিচরণ করে। সেই নিম্নাঞ্চল জলাশয় নদী ডোবা নালা খাল বিলে কারেন্ট ও চায়না দুয়ারী জাল বসিয়ে এক শ্রেণির অসাধু মানুষ ডিমওয়ালা ও পোনা মাছ নিধন করছেন। একই সঙ্গে এসব জাল বসানোর কারনে মাছের স্বাভাবিক চলাচল বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে। এমনকি পানি প্রবাহের পথেও বাঁধার সৃষ্টি করছে এসব জাল। এসব জালে সকল প্রজাতির দেশি মাছ ধরা পড়ছে।

জেলার প্রতিটি উপজেলার জলাশায়গুলোতে ছড়িয়ে পড়েছ এসব অবৈধ জাল। সব থেকে বেশি আদিতমারী উপজেলায়। মৌখিত তথ্য দিয়েও যখন ব্যবস্থা নিচ্ছে না মৎস বিভাগ তখন লিখিত অভিযোগও দিচ্ছেন চাষিরা। সেই লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার না মেলার অভিযোগ চাষিদের।

পলাশী ইউনিয়নের মৎস্যচাষি রফিকুল ইসলাম ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ছোকরাবান্দের দোলা নামের একটি জলাশয় লিজ নিয়ে দেশি মাছ চাষ শুরু করেন। তিনি অভিযোগ করেন, ‘একদল অসাধু ব্যক্তি সেখানে অবৈধ জাল বসিয়ে মাছ নিধন করছে। বাঁধা দিলে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। লিখিত অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাইনি।’

স্থানীয় জেলেদের অভিযোগ, অবৈধ জালের কারণে দেশি মাছ দ্রুত বিলুপ্ত হচ্ছে। বর্ষা শেষে আর মাছ ধরা যায় না, ফলে তারা বেকার হয়ে পড়েন। সহজলভ্য হওয়ায় অনেকে এসব জাল কিনে নির্বিচারে ব্যবহার করছেন।

এসব অবৈধ জালের আড়ৎ মহিষাশ্বহর বাজারে দীর্ঘদিন ধরে পরিচালনা করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী শামছুল হক। তিনি কোটি টাকার জাল পাইকারি বিক্রি করে আসছেন। মাছের প্রজনন মৌসুমে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে জরিমানা করলেও জাল ব্যবসা বন্ধ হয়নি।

চায়না দুয়ারী জাল বসিয়ে এক শ্রেণির অসাধু মানুষ ডিমওয়ালা ও পোনা মাছ নিধন করছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
চায়না দুয়ারী জাল বসিয়ে এক শ্রেণির অসাধু মানুষ ডিমওয়ালা ও পোনা মাছ নিধন করছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

আদিতমারী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আড়তে অভিযান চালিয়ে জরিমানা করা হয়েছে, বিক্রি না করার মুচলেকাও নেওয়া হয়েছে। তবে জলাশয়ে গিয়ে অভিযান চালানো জনবল সংকটের কারণে সম্ভব হয় না। লিখিত অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিধান কান্তি হালদার বলেন, ‘মৎস্যচাষি রফিকুল ইসলামের অভিযোগ পেয়েছি। দ্রুত তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত