Ajker Patrika

রাজশাহীতে কথিত বন্দুকযুদ্ধে যুবক নিহত 

প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ জুন ২০২১, ১৩: ৩৯
রাজশাহীতে কথিত বন্দুকযুদ্ধে যুবক নিহত 

রাজশাহী: রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে এক যুবক নিহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার পাকড়ি ইউনিয়নের ললিতনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ বলছে, বন্দুকযুদ্ধে নিহত ব্যক্তি শিশু সুমাইয়া খাতুনকে (১০) ধর্ষণ ও হত্যার সঙ্গে জড়িত।

নিহত ব্যক্তির নাম মো. শামীম (২১)। বাড়ি রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার বাউটিয়া গ্রামে। বাবার নাম মৃত শফিক। এলাকায় শামীম একজন চোর হিসেবে পরিচিত বলে এলাকাবাসী ও পুলিশ জানিয়েছে।

সুমাইয়া যে রাতে ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়, সেই রাতে তাদের বাড়ি থেকে একটি মোবাইল ফোন চুরি হয়েছিল। `বন্দুকযুদ্ধের' পর সেই মোবাইল ফোনটি শামীমের কাছে পাওয়া গেছে। তাই পুলিশ বলছে, সুমাইয়াকে ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এই শামীম জড়িত ছিলেন।

সুমাইয়া গোদাগাড়ীর ললিতনগর মাকরান্দা কোয়ার্টারপাড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেনের মেয়ে। ২০ জুন ভোরে চাচা রফিকুল ইসলামের বাড়ির ছাদে থাকা একটি খড়ের পালার নিচে সুমাইয়ার লাশ পাওয়া যায়। আনোয়ার হোসেনের বাড়ির ছাদ থেকে তাঁর ভাই রফিকুল ইসলামের বাড়ির ছাদে যাওয়া যায়। সুমাইয়ার লাশটি বিবস্ত্র অবস্থায় ছিল। এ নিয়ে সুমাইয়ার দাদা থানায় ধর্ষণ ও হত্যার মামলা করেন। মামলার এজাহারনামায় কোনো আসামির নাম ছিল না। অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়েছিল।

সুমাইয়া স্থানীয় একটি স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ত। সুমাইয়ার জন্মের কিছুদিন পরই মা রোখসানা খাতুনের সঙ্গে বাবা আনোয়ারের বিচ্ছেদ হয়েছে। তারপর আনোয়ার অন্য জায়গায় বিয়ে করেছেন। রাতে সুমাইয়া তার দাদা-দাদির সঙ্গেই ঘুমাত। শনিবার দিবাগত রাতে দাদা-দাদি বাড়িতে ছিলেন না। রাত ১১টা পর্যন্ত সুমাইয়া টিভি দেখেছিল। তারপর একাই ঘুমাতে যায়। সকালে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। সকালে তার লাশ পাওয়া যায়।

রাজশাহী জেলা পুলিশের মুখপাত্র ইফতেখায়ের আলম বলেন, রাতে গোদাগাড়ীর কাঁকনহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের একটি দল ললিতনগর এলাকায় টহলে যায়। তখন একদল দুষ্কৃতকারী পুলিশের ওপর হামলা চালায়। আত্মরক্ষায় পুলিশও প্রতিরোধ করে। শুরু হয় 'বন্দুকযুদ্ধ'। এ সময় অন্যরা পালিয়ে গেলেও গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকেন একজন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে ভোররাতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইফতেখায়ের আলম বলেন, বন্দুকযুদ্ধের পর ওই ব্যক্তির কাছ থেকে অস্ত্র এবং একটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। তখন তাঁর পরিচয় জানা ছিল না। পরে তাঁর পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তিনি বলেন, `বন্দুকযুদ্ধের পর শামীমের কাছে পাওয়া মোবাইল ফোনটি ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের শিকার সুমাইয়ার চাচাতো বোনের। যে রাতে সুমাইয়া ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়, সেই রাতেই ফোনটি চুরি হয়েছিল। তাই আমরা ধরেই নিচ্ছি যে চুরি করতে গিয়ে শামীম ওই শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যা করেছিল।'

পাকড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘শামীম এলাকায় চোর হিসেবে পরিচিত। এর আগেও সে অনেকবার চুরির অভিযোগে আটক হয়েছিল। সে এবার বন্দুকযুদ্ধে নিহত হলো। সে শিশু সুমাইয়াকে ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল বলে এলাকায় খবর রটেছে।’

গোদাগাড়ীর কাঁকনহাট পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘শামীম শিশু সুমাইয়াকে ধর্ষণ ও হত্যায় জড়িত ছিল। তা না হলে তাঁর কাছে ওই বাড়ির মোবাইল পাওয়া গেল কেন?’ তিনি জানান, ময়নাতদন্ত শেষে শামীমের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। আর এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

পিটুনিতে নিহত সেই শামীম মোল্লাকে বহিষ্কার করল জাবি প্রশাসন, সমালোচনার ঝড়

জনবল-সরঞ্জাম বেশি হলেও সমরশক্তিতে ভারত কি পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে

মধুপুরে বিদ্যালয়ে ঢুকে শিক্ষককে জুতাপেটা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত