Ajker Patrika

রাজশাহীর অধিকাংশ তরুণই বিষণ্নতায়: গবেষণা

  • তরুণীদের বিষণ্নতার হার ৬২ শতাংশের বেশি।
  • তরুণদের ক্ষেত্রে এ হার ৫৫ দশমিক ২ শতাংশ।
  • সেলিব্রিটি ও গেমিং পেজ অনুসরণকারীদের বিষণ্নতা বেশি।
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ০৪ আগস্ট ২০২৫, ০৮: ০৭
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজশাহী শহরের অর্ধেকের বেশি তরুণ মানসিকভাবে ভালো নেই। বিষণ্নতায় ভুগছেন তাঁরা। গবেষকেরা বলছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

‘থাই জার্নাল অব পাবলিক হেলথ’-এ সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় উঠে এসেছে এমন তথ্য। গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্সেসের ছয়জন গবেষক। এতে দেখা গেছে, রাজশাহী শহরে গড়ে ৫৮ শতাংশের বেশি তরুণ-তরুণী বিষণ্নতায় ভুগছেন। তরুণীদের ক্ষেত্রে এই হার ৬২ দশমিক ১ শতাংশ। তরুণদের হার ৫৫ দশমিক ২ শতাংশ।

১৮ বছরের বেশি বয়সী ৪৫০ তরুণ-তরুণী এতে অংশ নেন। তাঁরা শহরের কাজলা, তালাইমারী, সাহেববাজার ও বিন্দুর মোড় এলাকার বাসিন্দা।

সবচেয়ে বেশি বিষণ্নতা দেখা গেছে ২১ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের মধ্যে। তাঁরা পড়াশোনা ও ক্যারিয়ার নিয়ে দুশ্চিন্তার কথা জানিয়েছেন।

বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত মানদণ্ড ‘পেশেন্ট হেলথ কোয়েশ্চেনিয়ার-৯’ স্কেলে অংশগ্রহণকারীদের মানসিক অবস্থা মূল্যায়ন করা হয়। এতে দেখা যায়, ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ গুরুতর বিষণ্নতায় ভুগছেন। মাঝারি মাত্রার উপসর্গ আছে আরও ২০ শতাংশের মধ্যে।

ফেসবুক, এক্স ও পিন্টারেস্ট ব্যবহারকারীদের মধ্যে বিষণ্নতার হার তুলনামূলক বেশি। দিনে ১০ ঘণ্টার বেশি সময় যাঁরা এসব মাধ্যমে কাটান, তাঁদের মধ্যে ঘুমে ব্যাঘাত, কাজে আগ্রহ হারানো, ক্লান্তি, ব্যর্থতার অনুভব কিংবা আত্মহত্যার চিন্তা পর্যন্ত দেখা গেছে।

অংশগ্রহণকারীদের ৮৭ শতাংশের বেশি জানিয়েছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সময় কাটানো তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর; বিশেষ করে সেলিব্রিটি, গেমিং, ফানি ভিডিও বা পোষা প্রাণীর পেজ যাঁরা অনুসরণ করেন, তাঁদের মধ্যে বিষণ্নতার হার বেশি। পরিবার ও বন্ধুদের পেজ কিংবা সংবাদভিত্তিক পেজ অনুসরণকারীদের মধ্যে তুলনামূলকভাবে মানসিক চাপ কম।

গবেষণার প্রধান গবেষক ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংখ্যাবিজ্ঞান ও মানবসম্পদ উন্নয়ন বিভাগের অধ্যাপক নজরুল ইসলাম মণ্ডল। তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম একদিকে যেমন মানুষকে সংযুক্ত করে, অন্যদিকে এটি নিঃসঙ্গতাও বাড়ায়।

তরুণেরা যেসব কনটেন্ট দেখছেন, সেগুলোর মানসিক প্রভাব সম্পর্কে তাঁরা সচেতন নন বলেও মত দেন তিনি। তাঁর ভাষায়, ‘সামাজিক মাধ্যমে সাজানো জীবনের ছবি দেখে অনেক তরুণ নিজেদের জীবন নিয়ে হতাশ হয়, আত্মবিশ্বাস হারায়।’

গবেষকেরা বলছেন, রাত জেগে ফেসবুক বা অন্যান্য মাধ্যমে সময় কাটানোর ফলে ঘুমের স্বাভাবিক ছন্দ নষ্ট হচ্ছে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে মানসিক অবস্থার ওপর। তাঁদের প্রস্তাব, স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ডিজিটাল লিটারেসি প্রোগ্রাম চালু করতে হবে। অভিভাবকদের সচেতন করে সন্তানের স্ক্রিন টাইম নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে প্রচার চালাতে হবে এবং সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে সময় ব্যবহারে সতর্কতা বজায় রাখতে হবে।

গবেষক অধ্যাপক নজরুল ইসলাম মণ্ডলের মতে, বাংলাদেশ যত বেশি ডিজিটাল হচ্ছে, তত বেশি সচেতনতা তৈরি করাও জরুরি। অন্যথায় এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে অপরাধ: ১৪ ভাগ করে মিরপুর নিয়ন্ত্রণ করছে চার শীর্ষ সন্ত্রাসী

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

উত্তরায় জুলাই রেভেলসের দুই সদস্যকে কুপিয়ে জখম

নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে: তিন দলের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...