Ajker Patrika

রাজশাহীর ৩ জেলা

আবার দূরপাল্লার বাস বন্ধ, উত্তরের যাত্রীদের ভোগান্তি

  • তিন দফা বৈঠকে বসলেও সমস্যার সমাধান হয়নি।
  • রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নাটোরের যাত্রীরা চরম ভোগান্তির শিকার।
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

মালিক-শ্রমিকদের দ্বন্দ্বে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নাটোর থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচল আবার বন্ধ রয়েছে। উভয় পক্ষ তিন দফা বৈঠকে বসলেও সমস্যার সমাধান হয়নি। ফলে উত্তরের এই তিন জেলার যাত্রীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সুলেখা খাতুন নামের এক যাত্রী নগরীর শিরোইল বাস টার্মিনাল এলাকায় এসে জানতে পারেন, আগের দিন টিকিট বিক্রি করা হলেও বাস চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। তিনি বলেন, ‘আমি গতকাল টিকিট কাটলাম। এখন কাউন্টারে এসে দেখি বাস বন্ধ। এরা টাকাও ফেরত দিচ্ছে না। বলছে যেখানে টিকিট কেটেছি, সেখানে গিয়ে টাকা ফেরত নিতে হবে। এটা তো খুব বিড়ম্বনা। বাস যে বন্ধ হয়ে গেছে, সেটাও আমাদের জানায়নি। তাহলে আমরা বিকল্প উপায় খুঁজতাম।’

তথ্যমতে, বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে একতা ট্রান্সপোর্ট ছাড়া অন্য সব দূরপাল্লার বাসের চালক, সুপারভাইজার ও হেলপাররা গত ৮ ও ৯ সেপ্টেম্বর কর্মবিরতি পালন করেন। তখন মালিকপক্ষের আশ্বাসে কাজে ফেরেন তাঁরা। কিন্তু দাবি পূরণ না হওয়ায় ২২ সেপ্টেম্বর আবারও কর্মবিরতির ডাক দেন শ্রমিকেরা।

পরদিন ২৩ সেপ্টেম্বর বিকেল পর্যন্ত বাস বন্ধ ছিল। পরে মালিকপক্ষ দাবি মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে তাঁদের বর্ধিত হারে বেতন দেওয়ার কথা ছিল।

এর আগের দিন (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতে বাস বন্ধ করে দেয় মালিকপক্ষই। তাদের অভিযোগ, দাবি মেনে নেওয়া হলেও শ্রমিকেরা বাসে বিনা টিকিটের যাত্রী তুলছে। তারা এভাবে গাড়ি চালাবে না।

এরপর ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাস বন্ধ ছিল। ওই দিন বিকেলে বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ শ্রমিক পরিবহন ফেডারেশন ও রাজশাহী মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের বৈঠক হয়। বৈঠকে শ্রমিকদের বেতন বাড়ানো হয়।

সিদ্ধান্ত হয়—ঢাকা থেকে রাজশাহী কিংবা চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটে এখন থেকে চালক ১ হাজার ৭৫০ টাকা, সুপারভাইজার ৭৫০ ও হেলপার ৬৫০ টাকা করে পাবেন। ঢাকা-কানসাট কিংবা ঢাকা-রহনপুর রুটে চালক পাবেন ১ হাজার ৯৫০ টাকা, সুপারভাইজার ৮০০ ও হেলপার ৭০০ টাকা। আগে খোরাকি ভাতা ছিল ২১০ টাকা। সেটি বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করা হয়। তবে যাত্রাপথে শ্রমিকেরা বাসে বিনা টিকিটের যাত্রী তুলতে পারবেন না।

এই বৈঠকের পর ঢাকা থেকে বাস চলাচল শুরুর ঘোষণা দেওয়া হয়। রাজশাহী থেকেও দু-একটি বাস ছেড়ে যায়। কিন্তু কিছুক্ষণ পরই কিছু শ্রমিক এসে বাস বন্ধ করে দেন। মাথায় কাফনের কাপড় পরে এসে তাঁরা ঘোষণা দেন—তাঁদের দাবি এখনো পূরণ হয়নি। তাঁরা গাড়ি চলতে দেবেন না। ফলে গতকাল পর্যন্ত বাস বন্ধ ছিল।

আন্দোলনরত শ্রমিকেরা জানান, গাড়িতে যাত্রী পরিপূর্ণ হলে তাঁরা আগে দুটি আসনের ভাড়ার টাকা ‘বোনাস’ পেতেন। এ ছাড়া হেলপারের আসনে যাত্রী বসালে সেই আসনের ভাড়াও তাঁদের দেওয়া হতো। নতুন নোটিশে তাঁদের বেতন বাড়ানোর কথা বলা হলেও আসনের ‘বোনাসের’ ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছু বলা নেই। তাই কাউন্টার ব্যবস্থাপকেরা তাঁদের এই বোনাস দিতে রাজি হননি। এ কারণে তাঁরা আবার বাস বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি বজলুর রহমান রতন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শ্রমিকেরা বিভক্ত। এক গ্রুপ বাস চালাতে চাইলেও অন্য গ্রুপ বিশৃঙ্খলা পাকাচ্ছে। তারা আমাদের জিম্মি করে ফেলেছে। তাদের আসল দাবি হলো, যাত্রাপথে বিনা টিকিটের যাত্রী তুলবে। ভিআইপি গাড়িতে তো আমরা এই সুবিধা দিতে পারি না। আমাদের কথা, বেতন যত বেশিই হোক দেব। কিন্তু বিনা টিকিটের যাত্রী তুলতে দেব না। একটা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে কে দায় নেবে?’

রাজশাহী মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পাখি বলেন, ‘সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে। বাস চালু হয়ে যাবে বলে আশা করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সাবেক শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদের জানাজায় মানুষের ঢল

খুব কষ্ট পেলাম! লাশের হাতে হ্যান্ডকাফ— সাবেক শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদের মৃত্যু প্রসঙ্গে মান্না

ময়মনসিংহে পূজা দেখতে বেরিয়ে ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রী

বিএনপি নেতার কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি যুবদল নেতার, থানায় অভিযোগ

আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ফেরা নিয়ে যা বললেন প্রধান উপদেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত