Ajker Patrika

‘তোমরা এই হলের মেয়েদের প্রস্টিটিউশনে বাধ্য করেছ’

রাবি প্রতিনিধি
আপডেট : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০: ১৪
‘তোমরা এই হলের মেয়েদের প্রস্টিটিউশনে বাধ্য করেছ’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের একাংশ ওই হলের মেয়েদের পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জামিরুল ইসলাম। ওই শিক্ষার্থীদের পুলিশ ও সেনাবাহিনীর মাধ্যমে থানায় দিয়ে চালান দেওয়ারও হুমকি দেন তিনি। এ-সংক্রান্ত একটি অডিও রেকর্ড এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। 

ওই অডিওতে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রাধ্যক্ষকে বলতে শোনা যায়, ‘তোমাদের বিরুদ্ধে সিরিয়াস অভিযোগ আছে। তোমরা এই হলের মেয়েদের প্রস্টিটিউশনে (পতিতাবৃত্তি) বাধ্য করেছ। কে করেছ, কারা করেছ এসব পরের কথা। তোমরাই করেছ। ছাত্রলীগ করেছে।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা হলে ছাত্রী নিপীড়ক ও ছাত্রলীগের পদধারী নেত্রীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেন হল প্রাধ্যক্ষ। তবে যাঁদের আবাসিকতা আছে এবং যাঁদের বিরুদ্ধে কোনো লিখিত অভিযোগ নেই কিন্তু ছাত্রলীগের পদে আছেন, তাঁরা নির্দেশ অমান্য করে হলেই অবস্থান করেন। ফলে হলে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি শান্ত করতে কয়েকজন হল প্রাধ্যক্ষসহ শিক্ষার্থীদের নিয়ে আলোচনায় বসেন বঙ্গমাতা হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক লাভলী নাহার।

আলোচনার একপর্যায়ে অধ্যাপক জামিরুল ইসলামকে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়। তখন তিনি ওই ছাত্রীদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ তুলে হুমকি দেন। তাঁর এ ধরনের মন্তব্যকে দায়িত্বজ্ঞানহীন ও অভিভাবকসুলভ নয় বলে উল্লেখ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক ও হল প্রাধ্যক্ষরা।

কথার শুরুতে অধ্যাপক জামিরুল ইসলাম ছাত্রীদের উদ্ভূত পরিস্থিতি বোঝানোর চেষ্টা করেন। তিনি তাঁদের এক মাসের জন্য হলের বাইরে থাকার অনুরোধও করেন। তবে একপর্যায়ে তিনি উপস্থিত ছাত্রীদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তোলেন। তিনি শিক্ষার্থীদের ধর্ষণের সহযোগী বলে দাবি করেন।

অধ্যাপক জামিরুল ইসলাম ছাত্রীদের হলছাড়া করার হুমকি দিয়ে আরও বলেন, ‘পুলিশ ফোর্স, সেনাবাহিনী সবকিছু রেডি আছে। তোমরা যদি উল্টাপাল্টা কিছু করো, তাহলে প্রত্যেক মেয়েকে এখান থেকে অ্যারেস্ট করে থানায় নিয়ে গিয়ে চালান দেওয়া হবে। সবকিছু আমাদের কাছে আছে।’

যারা ছাত্রলীগের পদধারী, তাদের প্রত্যেককেই চলে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘তুমি পোস্টেড ছিলা কিনা, তুমি দরিদ্র, তোমাকে জোর করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, আজ তোমাদের মুখ থেকে এসব গান বের হচ্ছে। এসব কোনো গান চলবে না। যারা পোস্টেড ছিলা, তাদের চলে যেতে হবে।’

ওই ছাত্রীদের ধর্ষণের সহযোগী আখ্যা দিয়ে প্রাধ্যক্ষ আরও বলেন, ‘তোমরা জানো, এই আন্দোলন করতে গিয়ে কতগুলো মেয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছে তোমাদের কারণে? শুধু ৫ তারিখের (৫ আগস্ট) আন্দোলনেই কতগুলো মেয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছে তোমরা জানো? এই ধর্ষণের সহযোগী কারা? তোমরা।’

ওই রেকর্ডে এই শিক্ষককে আরও বলতে শোনা যায়, ‘আমি তোমাদের দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, তোমরা যারা এই পোস্টে আছ, পোস্টে ছিলা, নিপীড়নকারী, মাদক কারবারি, মেয়েদের উত্ত্যক্তকারী, তোমরা দয়া করে এক মাসের জন্য হল থেকে চলে যাও। তোমাদের সব ডকুমেন্ট আমাদের কাছে আছে।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, ‘এ তো মারাত্মক কথা। একজন শিক্ষক কখনোই এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন কথা বলতে পারেন না। কেউ যদি অভিযুক্ত হয়ে থাকে, তাহলে তদন্ত করে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। তবে রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে কারও বিরুদ্ধে ঢালাওভাবে এমন অভিযোগ করা সমীচীন নয়।’

একজন হল প্রাধ্যক্ষের এ ধরনের মন্তব্যকে শিক্ষকসুলভ নয় উল্লেখ করে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘এটি কোনো শিক্ষকসুলভ বা অভিভাবকসুলভ আচরণ নয়। এ ধরনের শব্দ প্রয়োগ সঠিক নয়। যদি কোনো প্রমাণ না থাকে, তাহলে আমরা কাউকে এভাবে দোষারোপ করতে পারি না বা অপবাদ দিতে পারি না।’

এক হলের প্রাধ্যক্ষ আরেক হলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের শাসন করা ঠিক নয় উল্লেখ করে অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আরও বলেন, ‘এক হল থেকে গিয়ে আরেক হলের শিক্ষার্থীদের শাসন করা ঠিক নয়। তবে কোনো হল প্রাধ্যক্ষ যদি কখনো সংকটে পড়েন, তাহলে আমরা তাঁর পাশে দাঁড়াতে পারি। তার মানে এই না যে আমরা এ ধরনের বাক্য প্রয়োগ করে তাকে আরও বড় ধরনের বিপদের দিকে ঠেলে দেব।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক জামিরুল ইসলাম বলেন, ‘এটা আমার কথা নয়, শিক্ষার্থীদের কথা। শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে আমি এটা বলেছিলাম। ওই কথাটা আমি ইনফরম্যালি বলেছি। তবে এটা মোটেও ঠিক হয়নি। আমার রিকোয়েস্ট থাকবে, তোমরা এগুলো নিয়ে লিখো না।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, ‘যিনি এ ধরনের মন্তব্য করেছেন, তাঁর কাছে কোনো তথ্যপ্রমাণ আছে কি না, সেটা একটা বিষয়। যদি থাকে তাহলে এক বিষয় আর না থাকলে অন্য বিষয়। তবে বিষয়টি আমি অবগত নই। আমি বিষয়টি দেখব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

বুমরা-সূর্যকুমারকে শাস্তি দিল আইসিসি, নিষিদ্ধ পাকিস্তানি ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চালবোঝাই ট্রলিচাপায় স্বামী-স্ত্রী নিহত

মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি
রণজিৎ দাস ও তাঁর স্ত্রী পাপিয়া দাস। ছবি: সংগৃহীত
রণজিৎ দাস ও তাঁর স্ত্রী পাপিয়া দাস। ছবি: সংগৃহীত

যশোরের মনিরামপুরে চালবোঝাই ট্রলির নিচে চাপা পড়ে মোটরসাইকেল আরোহী এক দম্পতি নিহত হয়েছেন। আজ বুধবার দুপুরে মনিরামপুর-ঝিকরগাছা সড়কের বাকোশপোল মোড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত দম্পতি হলেন উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের মৃত অনন্ত দাসের ছেলে রণজিৎ দাস (৫০) ও তাঁর স্ত্রী পাপিয়া দাস (৪০)। রণজিতের স্থানীয় চাঁদপুর নতুন বাজারে ধান-পাটের আড়ত রয়েছে। পাপিয়া মনিরামপুর উপজেলা জনস্বাস্থ্য দপ্তরের মেকানিক ছিলেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাকোশপোল মোড় ঘুরতে গিয়ে মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে স্বামী-স্ত্রী রাস্তায় পড়ে যান। এ সময় চালবোঝাই ট্রলি তাঁদের চাপা দেয়। পরে তাঁদের উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিলে বেলা ২টার দিকে চিকিৎসক ওই দম্পতিকে মৃত ঘোষণা করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী বাকোশপোল মোড়ের চা-দোকানি ইকবাল হোসেন জানান, ঘটনার সময় চালবোঝাই একটি ট্রলি ঝিকরগাছার দিক থেকে মনিরামপুরের দিকে আসছিল। আর স্ত্রীকে পেছনে বসিয়ে মোটরসাইকেলটি স্বামী চালাচ্ছিলেন। মোটরসাইকেলটি বাকোশপোল মোড় ঘুরতে গিয়ে সামনে আচমকা ট্রলি দেখে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন তিনি। এতে স্বামী-স্ত্রী দুজন পাকা রাস্তার ওপর পড়ে যান। এ সময় চালক ট্রলি নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে স্বামী-স্ত্রী দুজনকে চাপা দেন।

ইকবাল হোসেন বলেন, ‘আমি দ্রুত পুলিশের জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল করেছি। অ্যাম্বুলেন্স আসতে দেরি হওয়ায় আহত স্বামী-স্ত্রীকে ইঞ্জিন ভ্যানে করে হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়েছি। পরে পুলিশ এসে ট্রলিসহ চালককে ধরে থানায় নিয়ে গেছে।’

মনিরামপুর উপজেলা জনস্বাস্থ্য দপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী জয়দেব দত্ত বলেন, ‘পাপিয়া আমার দপ্তরে মেকানিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে গভীর নলকূপ স্থাপনের কাজ তিনি তদারকি করতেন। আজ স্বামীর মোটরসাইকেলে চড়ে তিনি কাশিমনগর ইউনিয়নে নলকূপ স্থাপনের কাজ তদারকি করতে যাচ্ছিলেন। বাকোশপোল মোড় পার হওয়ার সময় ট্রলির নিচে চাপা পড়ে স্বামী-স্ত্রী দুজনে নিহত হয়েছেন। পাপিয়ার মৃত্যুতে আমাদের দপ্তরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।’

মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবলুর রহমান খান বলেন, ‘ট্রলির নিচে চাপা পড়ে আহত মোটরসাইকেল আরোহী দম্পতিকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় আমরা চালকসহ ট্রলি আটক করেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

বুমরা-সূর্যকুমারকে শাস্তি দিল আইসিসি, নিষিদ্ধ পাকিস্তানি ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শিক্ষার্থীদের ধাওয়ার মুখে স্কুলে ঢুকতে পারলেন না সাবেক প্রধান শিক্ষক

বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি 
উত্তেজিত শিক্ষার্থীদের তাড়া খেয়ে স্থান ত্যাগ করতে বাধ্য হন সাবেক প্রধান শিক্ষক। ছবি: আজকের পত্রিকা
উত্তেজিত শিক্ষার্থীদের তাড়া খেয়ে স্থান ত্যাগ করতে বাধ্য হন সাবেক প্রধান শিক্ষক। ছবি: আজকের পত্রিকা

নওগাঁর বদলগাছীতে এক সাবেক প্রধান শিক্ষককে বিদ্যালয়ে ঢুকতে বাধা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। উত্তেজিত শিক্ষার্থীদের তাড়া খেয়ে স্থান ত্যাগ করতে বাধ্য হন তিনি। আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার বেগুনজোয়ার উচ্চবিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ৫ জুলাই ওই বিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রধান শিক্ষক শাদাত হোসেন শামীম ও সহকারী শিক্ষক রিফাত আরার ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে এলাকাজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয়দের দাবিতে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড শিক্ষক শামীমকে বরখাস্ত করে। পরবর্তী সময়ে রেজাউল করিম নামের এক শিক্ষককে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। আজ হঠাৎ করে শাদাত হোসেন শামীম তাঁর গ্রামের কিছু লোকজন নিয়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশের চেষ্টা করেন। খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। তারা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে স্লোগান দেয় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে। একপর্যায়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে শামীম দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাদাত হোসেন বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। অন্যায়ভাবে আমাকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। আমি হাইকোর্টে মামলা করলে আদালত আমার পক্ষে রায় দেন এবং বকেয়া বেতনসহ পদে যোগদানের নির্দেশ দেন। সেই রায়ের কাগজ উপজেলা নির্বাহী অফিস ও থানায় জমা দিয়েছি। বিদ্যালয়ে গেলে কিছু শিক্ষকের ইন্ধনে শিক্ষার্থীরা আমার ওপর হামলা চালায়। আমি আত্মরক্ষার জন্য স্থান ত্যাগ করি।’

অন্যদিকে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম বলেন, ‘হাইকোর্টের যে রায় দেখানো হয়েছে, সেটি ভুয়া বলে আমরা সন্দেহ করছি। আজ সে গ্রামের কিছু লোক নিয়ে জোর করে প্রতিষ্ঠানে ঢোকার চেষ্টা করে এবং শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। সাতজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। তার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা তাকে বিদ্যালয়ে ফিরতে দেব না।’

একজন অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘শিক্ষক সমাজের আদর্শ মানুষ। তাদের কাছ থেকে এমন আচরণ মানা যায় না। আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। এত বড় ঘটনার পর সে কীভাবে আবার বিদ্যালয়ে আসতে পারে?’

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শফিউল আলম বলেন, ‘আমি বর্তমানে ছুটিতে ঢাকায় আছি। কোনো চিঠি এসেছে কি না, সে বিষয়ে অবগত নই।’

বদলগাছী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিছুর রহমান বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। হাইকোর্টের রায়সংক্রান্ত কাগজপত্র প্রধান শিক্ষক আমাকে দেখিয়েছেন। বিষয়টি তদন্তাধীন আছে। সবাইকে শান্ত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইসরাত জাহান ছনি বলেন, ‘ঘটনার বিস্তারিত এখনো পাইনি। তবে হাইকোর্টের রায়ের কথা শুনেছি। ট্রেনিং শেষে এসে দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

বুমরা-সূর্যকুমারকে শাস্তি দিল আইসিসি, নিষিদ্ধ পাকিস্তানি ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

টিকটকে প্রেম, তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
গ্রেপ্তার জিল্লুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
গ্রেপ্তার জিল্লুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

বিয়ের প্রলোভনে তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলা থেকে জিল্লুর রহমান (৩৬) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার কাঁঠালবাড়িয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার জিল্লুর রহমানের বাড়ি বগুড়ার কাহালু উপজেলার বামুজা গ্রামে। র‍্যাব-৫-এর একটি দল তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে।

বুধবার সকালে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র‍্যাব জানায়, প্রায় তিন মাস আগে টিকটকের মাধ্যমে ওই তরুণীর সঙ্গে জিল্লুরের পরিচয় হয়। ধীরে ধীরে তাঁদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। মোবাইল ফোনে কথা হয়। পরে জিল্লুর বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তরুণীকে পাবনার ঈশ্বরদীতে ডাকেন। গত ৯ অক্টোবর রাতে ওই তরুণী ট্রেনে ঈশ্বরদী পৌঁছালে জিল্লুর তাঁকে মোটরসাইকেলে চাপিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘোরান। পরদিন (১০ অক্টোবর) দুপুরে ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া বাজার এলাকায় একটি কক্ষ ভাড়া নেন এবং ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত সেখানে বিয়ের প্রলোভনে তরুণীকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন।

র‍্যাব জানায়, পরে বিয়ের কথা বললে জিল্লুর কালক্ষেপণ করতে থাকেন। একপর্যায়ে কাজি অফিসে নেওয়ার কথা বলে ওই তরুণীর মোবাইল ফোন ও ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যান। ঘটনার পর ভুক্তভোগী নিজেই ঈশ্বরদী থানায় ধর্ষণ মামলা করেন। মামলার পর র‍্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে। এরপর মঙ্গলবার গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‍্যাব-৫-এর রাজশাহী সিপিএসসি ক্যাম্পের একটি দল তাঁকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার আসামিকে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

বুমরা-সূর্যকুমারকে শাস্তি দিল আইসিসি, নিষিদ্ধ পাকিস্তানি ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চকরিয়ায় দুর্ঘটনা: নিহতরা একই পরিবারের, দুজন বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষার্থী

চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি   
দুর্ঘটনায় দুমড়েমুচড়ে যাওয়া মাইক্রোবাস। ছবি: আজকের পত্রিকা
দুর্ঘটনায় দুমড়েমুচড়ে যাওয়া মাইক্রোবাস। ছবি: আজকের পত্রিকা

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় বাস ও মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে নিহত পাঁচজনের পরিচয় মিলেছে। এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও তিনজন। আজ বুধবার সকাল ৯টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের হাঁসের দিঘি আর্মি ক্যাম্পের অদূরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার পাঁচরা এলাকার এনামুল হকের স্ত্রী রুমানা আক্তার রুমি (৬০) ও তাঁর মেয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএ শিক্ষার্থী সাদিয়া হক (২২); একই এলাকার আব্দুল মান্নান মজুমদারের স্ত্রী রাশেদা শিল্পী (৫১) ও তাঁর মেয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্রী ফারহানা মজুমদার টিজা (২৩) এবং আমিনুল হকের স্ত্রী ফারজানা আক্তার লিজা (২৮)। তাঁরা পরস্পরের নিকটাত্মীয়।

আহত ব্যক্তিরা হলেন এনামুল হক, আমিনুল হক ও তাঁর মেয়ে। গুরুতর আহত দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার বাস টার্মিনাল থেকে ছেড়ে আসা মারছা পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস চট্টগ্রাম যাচ্ছিল। বাসটি চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের হাঁসের দিঘি এলাকায় পৌঁছালে কক্সবাজারগামী একটি পর্যটকবাহী মাইক্রোবাসের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এ সময় ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হন। দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করেন। পরে তাঁদের চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও মালুমঘাট মেমোরিয়াল খ্রিষ্টান হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুজন ও মালুমঘাট মেমোরিয়াল খ্রিষ্টান হাসপাতালে তিনজনকে মৃত ঘোষণা করা হয়। গুরুতর আহত তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেকে পাঠানো হয়। তাঁদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

রুমানা আক্তার রুমির ছেলে মোহাম্মদ মনীরুল ইসলাম বলেন, ‘দুর্ঘটনায় আমার মা, ছোট বোন, ভাবি, ভাইয়ের শাশুড়ি ও শ্যালিকা মারা গেছেন। বড় ভাই ও ভাতিজির অবস্থা আশঙ্কাজনক। আমাদের ও ভাইয়ের শ্বশুরবাড়ির পরিবার কক্সবাজারে বেড়াতে যাচ্ছিল। ফেরার পথে চকরিয়ায় বেড়াতে যাওয়ার কথা ছিল। এখন সবাই লাশ হয়ে ফিরেছে। আমাদের পুরো পরিবারের আশা, স্বপ্ন ও ভবিষ্যৎ তছনছ হয়েছে। এই শোক কীভাবে কাটাব বুঝতে পারছি না।’

মালুমঘাট হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান জানান, চট্টগ্রামগামী মারছা পরিবহনের একটি বাস ও পর্যটকবাহী কক্সবাজারগামী মাইক্রোবাসের সংঘর্ষ হয়। এতে মাইক্রোবাসের যাত্রীরা গুরুতর আহত হন। তাঁদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও মেমোরিয়াল খ্রিষ্টান হাসপাতালে নিলে সেখানে এখন পর্যন্ত পাঁচজন মারা গেছেন। আহত ব্যক্তিদের চমেকে পাঠানো হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে থেকে গাড়ি দুটি জব্দ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

বুমরা-সূর্যকুমারকে শাস্তি দিল আইসিসি, নিষিদ্ধ পাকিস্তানি ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত