Ajker Patrika

ঋত্বিকের বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়ায় হোমিওপ্যাথিক কলেজের অবহেলার প্রমাণ: তদন্ত প্রতিবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
ঋত্বিকের বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়ায় হোমিওপ্যাথিক কলেজের অবহেলার প্রমাণ: তদন্ত প্রতিবেদন

কালজয়ী চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক কুমার ঘটকের পৈতৃক বাড়ি সংরক্ষণে রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের অবহেলা প্রমাণিত হয়েছে। বাড়িটি পুরোপুরি গুঁড়িয়ে দেওয়ার পর ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসনের তদন্ত কর্মকর্তা তাঁর প্রতিবেদনে এ কথা উল্লেখ করেছেন। 

রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মহিনুল হাসান আজ বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদের কাছে তাঁর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। 

এই প্রতিবেদনে তিনি তিনটি সুপারিশও করেছেন। এর মধ্যে জমির যে অংশে ঋত্বিকের পৈতৃক বাড়িটি ছিল সে স্থানটির মালিকানা ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটিকে দেওয়ার সুপারিশ করেছেন। 

রাজশাহী নগরের মিয়াপাড়া এলাকার এই পৈতৃক বাড়িতে ঋত্বিক ঘটকের শৈশব, কৈশোর ও তারুণ্যের সময় কেটেছে। বাড়ির ৩৪ শতাংশ জমি ১৯৮৯ সালে তৎকালীন এরশাদ সরকার রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজকে ইজারা দেয়। এরপর জায়গাটির উত্তরে গড়ে তোলা হয়েছে হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজের ভবন। 

এ ভবনের দক্ষিণ অংশে ঋত্বিক ঘটকের স্মৃতিবিজড়িত পুরোনো বাড়ির ঘরগুলো দাঁড়িয়ে ছিল। বাড়িটি অপসারণ করে সেখানে অন্য স্থাপনা করার চেষ্টা অনেক আগে থেকেই করছিল কলেজ কর্তৃপক্ষ। 

সারা দেশে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের ডামাডোলের মধ্যে গত ৬ ও ৭ আগস্ট ঋত্বিকের শেষ স্মৃতিচিহ্নটুকু গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। ১৪ আগস্ট বিষয়টি জানতে পেরে ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটির সদস্যরা কলেজে ছুটে যান এবং বাড়ি ভাঙার পেছনে কর্তৃপক্ষের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেন। তাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক বিষয়টি তদন্তের উদ্যোগ নেন। 

তদন্ত কর্মকর্তা তাঁর প্রতিবেদনে লিখেছেন, ‘ঋত্বিক ঘটকের পৈতৃক ভিটা হিসেবে দাবি করা ভবনটি ভাঙার জন্য গত ৬ আগস্ট সন্ধ্যার পর একদল লোক হাতুড়ি, শাবল নিয়ে রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক কলেজের ভেতরে আক্রমণ করে এবং তারা ভবনটির উত্তর পাশের পুরো ওয়াল, দক্ষিণ-পশ্চিম কর্নারের আংশিক ওয়াল ভেঙে ফেলে। সে সময় কলেজের নৈশপ্রহরী মাহফুজ উর রহমান ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন, কিন্তু তিনি কাউকে চেনেন না বলে দাবি করেছেন।’ 

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘কলেজের অধ্যক্ষ ডা. আনিসুর রহমান ফোনে বিষয়টি অবগত হওয়ার পর ঘটনাস্থলে যান এবং যারা ভবন ভাঙছিলেন তারা তখন চলে যান। অধ্যক্ষও কাউকে চিহ্নিত করতে পারেননি বলে দাবি করেছেন। কলেজের সিসিটিভি ক্যামেরা গত ৬ আগস্ট দুপুর ১২টা ৪৭ মিনিটের পর থেকে বন্ধ থাকায় ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে চিহ্নিত করা যায়নি।’ 

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘কলেজের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম স্বাভাবিক করার জন্য ৭ আগস্ট দুপুরে অধ্যক্ষ মিস্ত্রি শামীম মিয়াকে রাস্তায় পড়ে থাকা ভবনের ভাঙা আবর্জনা পরিষ্কার করার নির্দেশ দেন। নির্দেশ অনুযায়ী মিস্ত্রি ছয়জন শ্রমিক নিয়ে ভবনের ভাঙা ইট ও আবর্জনা একটি জায়গায় স্তূপ করেন। ঝুলে পড়া টিন ধরে টান দিলে ভবনের বাকি তিন পাশের ওয়াল ভেঙে পড়তে শুরু করে। পরবর্তীতে মিস্ত্রিরা একপাশের তিন ফুট ওয়াল রেখে অবশিষ্ট ওয়াল ভেঙে এক জায়গায় স্তূপাকারে রাখেন। ঘটনার এই অংশে বাঙালি চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটকের পৈতৃক বসতভিটার অবশিষ্ট অংশ সংরক্ষণের কোনো উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি। বরং ঝুঁকি বিবেচনায় ভবনটির অবশিষ্টাংশ ভেঙে স্তূপ করে রাখা হয়। এতে ঋত্বিক ঘটকের স্মৃতি সংরক্ষণের বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের অবহেলা প্রমাণিত হয়।’ 

৬ আগস্ট দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত সিসি ক্যামেরা চালু ছিল। এ সময় ঋত্বিক ঘটকের বাড়িটি অক্ষত দেখা যায়। ছবি: সংগৃহীত প্রতিবেদনে জায়গাকে কেন্দ্র করে কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটির টানাপোড়েনের বিষয়টিও উঠে আসে। বলা হয়, ‘আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন বাঙালি চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটকের স্মৃতি বিজড়িত পৈতৃক বসতভিটা সংরক্ষণ এবং প্রতিবছর ৪ নভেম্বর এখানে জন্ম দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা, চলচ্চিত্র প্রদর্শন ও ঋত্বিক সম্মাননা পদক প্রদান অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটি ও হোমিওপ্যাথিক কলেজ কর্তৃপক্ষের মধ্যে টানাপোড়েন চলছিল। একদিকে ঋত্বিক ঘটকের স্মৃতি বিজড়িত বসতভিটা, অন্যদিকে জায়গাটি হোমিওপ্যাথিক কলেজের রেকর্ডিংয়ে মালিকানাধীন। পরস্পর বিরোধী এই অবস্থানের কারণে ঋত্বিক ঘটকের স্মৃতি সংরক্ষণের বিষয়টি অবহেলিত রয়েছে।’ 

তদন্ত কর্মকর্তা তাঁর সুপারিশে বলেছেন, ঋত্বিক ঘটক রাজশাহী; তথা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গর্বের ব্যক্তিত্ব। এ ধরনের ব্যক্তিত্বকে তরুণ প্রজন্মের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া এবং তাঁর স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণ করা সবার দায়িত্ব। তাই রাজশাহী হোমিওপ্যাথি কলেজের অভ্যন্তরে অবস্থিত ঋত্বিক ঘটকের স্মৃতি বিজড়িত স্থানটি স্থায়ীভাবে ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটির নামে মালিকানা দেওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সুপারিশ করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা। 

তিনি আরও বলেছেন, স্থায়ী মালিকানা না পাওয়া পর্যন্ত কলেজ কর্তৃপক্ষ জায়গাটি সংরক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। ফিল্ম সোসাইটি নির্বিঘ্নে জায়গাটি ব্যবহার করবে। আগামী ৪ নভেম্বর ঋত্বিক ঘটকের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বরাবরের মতো অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ জায়গাটি প্রস্তুত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তদন্ত কর্মকর্তা সেখানে একটি ‘ঋত্বিক মঞ্চ ও ঋত্বিক সংরক্ষণাগার’ দ্রুত নির্মাণের ব্যবস্থা গ্রহণ করার সুপারিশ করেছেন। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহীর জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ জানিয়েছেন, তিনি তদন্ত প্রতিবেদন পেয়েছেন। প্রতিবেদনের সুপারিশের আলোকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

টেকনাফে আরাফাত রহমান কোকো ক্রীড়া সংসদের আহ্বায়কের মরদেহ উদ্ধার

 টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
নিহত মো. ইউনুস। ছবি: সংগৃহীত
নিহত মো. ইউনুস। ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজারের টেকনাফে আরাফাত রহমান কোকো ক্রীড়া সংসদের আহ্বায়ক ও সাবেক ইউপি সদস্য মো. ইউনুসের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (৫ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের রঙিখালি সড়কের মাথার ব্রিজের নিচ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। নিহত মো. ইউনুস (৫৫) টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের চান্দলীপাড়া এলাকার হাছন আলীর ছেলে। তিনি সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য ছিলেন।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. ইসমাইল বলেন, ‘সকালে লেদা বাজার যাওয়ার পথে রঙিখালি ব্রিজের নিচে একটি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে জানা যায়, মরদেহটি সাবেক ইউপি সদস্য ইউনুস মেম্বারের।’

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জায়েদ মো. নাজমুন নুর বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহটি উদ্ধার করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে পুড়ল ২০ দোকান

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি
খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে আগুনে পুড়েছে অন্তত ২০টি দোকান। ছবি: আজকের পত্রিকা
খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে আগুনে পুড়েছে অন্তত ২০টি দোকান। ছবি: আজকের পত্রিকা

খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ২০টি দোকান পুড়ে গেছে। গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে এই ঘটনা ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দাদের ধারণা, বজ্রপাত থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়।

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মহালছড়িতে ফায়ার সার্ভিস না থাকায় সেনাবাহিনী ও স্থানীয় বাসিন্দারা আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। পরে খাগড়াছড়ি থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পাঁচ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। এ সময় আগুনে রফিক স্টোর, ফরিদ স্টোর, প্রতিভা লাইব্রেরিসহ ২০টি দোকান পুড়ে যায়। দোকানগুলোর মধ্যে বেশির ভাগ মুদি ও কাপড়ের দোকান। এর মধ্যে দুটি চায়ের দোকান ও একটি স্বর্ণালংকারের দোকানও রয়েছে। অগ্নিকাণ্ডে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা।

খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে আগুনে পুড়েছে অন্তত ২০টি দোকান। ছবি: আজকের পত্রিকা
খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে আগুনে পুড়েছে অন্তত ২০টি দোকান। ছবি: আজকের পত্রিকা

অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে আজ বুধবার সকালে মহালছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু রায়হান ক্ষতিগ্রস্ত স্থান পরিদর্শন করেন এবং ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন।

খাগড়াছড়ি ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক জাকের হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মুষলধারে বৃষ্টি ও বজ্রপাতের কারণে বাজারে বিদ্যুৎ-সরবরাহ বন্ধ ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, বজ্রপাত থেকে আগুন লাগতে পারে। তিনি জানান, আশপাশে পানির উৎস না থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় লাগে। সব কটি দোকান আগুনে পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা তদন্ত করে জানা যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাদারীপুর-১ আসন: মনোনয়ন পুনর্বহালের দাবিতে জামান মোল্লার সমর্থকদের সড়ক অবরোধ

শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
শিবচর পৌর এলাকার ৭১ সড়কে কামাল জামান মোল্লার সমর্থক নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিবচর পৌর এলাকার ৭১ সড়কে কামাল জামান মোল্লার সমর্থক নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা

মাদারীপুর-১ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী কামাল জামান মোল্লার মনোনয়ন স্থগিত রাখার ঘটনায় তাঁর কর্মী-সমর্থকেরা বিক্ষোভ করছেন। মনোনয়ন পুনর্বহালের দাবিতে আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) সকাল থেকে শিবচর পৌর এলাকার ৭১ সড়কে অবস্থান নেন কামাল জামান মোল্লার সমর্থকেরা।

জানা গেছে, গত সোমবার বিকেলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সারা দেশের ২৩৭টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে। এর মধ্যে মাদারীপুর-১ আসনে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয় কামাল জামান মোল্লার নাম। এর প্রতিবাদ জানিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকা-ভাঙ্গা মহাসড়ক অবরোধ করেন মনোনয়ন না পাওয়া সাজ্জাদ হোসেন সিদ্দিকী লাভলুর সমর্থকেরা। পরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দলীয় দপ্তর থেকে জানানো হয়, অনিবার্য কারণে মাদারীপুর-১ (শিবচর উপজেলা) আসনের মনোনয়ন স্থগিত রাখা হয়েছে। বিএনপির দপ্তর সম্পাদক রুহুল কবির রিজভী এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

শিবচর পৌর এলাকার ৭১ সড়কে কামাল জামান মোল্লার সমর্থক নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিবচর পৌর এলাকার ৭১ সড়কে কামাল জামান মোল্লার সমর্থক নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা

এদিকে মনোনয়ন স্থগিত করার প্রতিবাদ জানিয়ে বুধবার সকাল থেকে শিবচর সদরের ৭১ সড়কে বিক্ষোভ করছেন কামাল জামান মোল্লার সমর্থকেরা। তাঁরা মনোনয়ন পুনর্বহালের দাবি জানিয়ে সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন। এ সময় বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে মনোনয়ন স্থগিতের প্রতিবাদ জানান তাঁরা। প্রতিবাদে নারী-পুরুষসহ অসংখ্য সমর্থক অংশ নিয়েছে।

জামান মোল্লার সমর্থিত একাধিক নেতা-কর্মী বলেন, ‘জামান মোল্লা একজন জননন্দিত নেতা। শিবচরে তাঁর প্রচুর সমর্থক রয়েছে। তিনি বিএনপিকে টিকিয়ে রেখেছেন। তাঁর মনোনয়ন স্থগিত মেনে নেওয়া হবে না। মনোনয়ন পুনর্বহাল করতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিয়ে নির্বাচনে নামতে চায়: আলতাফ হোসেন চৌধুরী

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
জনসভায় বক্তব্য দেন এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী। ছবি: আজকের পত্রিকা
জনসভায় বক্তব্য দেন এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র ও বাণিজ্যমন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেছেন, জাতীয় পার্টি এখন চার ভাগে বিভক্ত। এর মধ্যে জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন একটি অংশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে চায়। এমনকি তাদের মধ্যে টাকাপয়সার লেনদেনও হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে পটুয়াখালী সদর উপজেলার কমলাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ধরান্দী আবাসন মাঠে এক নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিয়ে এবারের নির্বাচনে অংশ নিতে চায়। শুনেছি, ইতিমধ্যে টাকাপয়সার লেনদেনও হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারছে না। তার ওপর পার্শ্ববর্তী দেশগুলো আওয়ামী লীগকে নিয়ে নির্বাচন করার জন্য চাপ দিচ্ছে।’

বিএনপি নেতা আরও বলেন, ‘এই নির্বাচন যতটা সহজ মনে হচ্ছে, বাস্তবে ততটা সহজ নয়। জনাব তারেক রহমানও একাধিকবার বলেছেন—এই নির্বাচনের পেছনে রয়েছে বিভিন্ন চাপ, পার্শ্ববর্তী দেশের, আওয়ামী লীগের, জাতীয় পার্টির এমনকি গোপনে গোয়েন্দা সংস্থারও।’

দলীয় কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, এখন শুধু মঞ্চে বক্তৃতা দিয়ে হবে না, ঘরে ঘরে যেতে হবে। মানুষের সঙ্গে কথা বলতে হবে—কেন ভোট হবে, কাকে ভোট দেবে, কেন দেবে, তা জনগণকে বোঝাতে হবে।

ভোটের পরিবেশ নিয়ে আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘আমরা এমন এক অবস্থায় পৌঁছেছি, যেখানে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট প্রায় ইতিহাস হয়ে গেছে। গত ১৫ বছরে মানুষ ভোট দিতে পারেনি। রাতে ভোট হয়েছে, দিনের ভোট কেড়ে নেওয়া হয়েছে। প্রকৃত নির্বাচন না হয়ে ‘সিলেকশন’ হয়েছে। এতে অযোগ্য ও অদক্ষ লোক সংসদে গেছে, পবিত্র সংসদকে অপবিত্র করা হয়েছে।

সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আহমেদ বায়জিদ পান্না। সভাপতিত্ব করেন কমলাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম মৃধা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত