Ajker Patrika

‘হেল্প, হেল্প’ বলে চিৎকার—শিক্ষক এগিয়ে যেতেই গলায় ছুরি চালাল কিশোরী

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ২০ আগস্ট ২০২৫, ০০: ০৯
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহীতে মারুফ কারখী (৩৪) নামের এক শিক্ষককে ছুরিকাঘাত করেছে এক ছাত্রী। আজ মঙ্গলবার বেলা পৌনে দুইটার দিকে স্কুলের সামনের রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর উপস্থিত লোকজন ওই মেয়েকে ঘিরে রেখেছিল। সেটির একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে।

জানা গেছে, ভুক্তভোগী শিক্ষক রাজশাহী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাংলা বিষয়ের সহকারী শিক্ষক। ছুরি হামলায় তিনি ঘাড়ে ও হাতে আঘাত পেয়েছেন। যে ছাত্রী এ কাণ্ড ঘটিয়েছে, তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ‘উচ্ছৃঙ্খল আচরণের কারণে’ দুই বছর আগে তাকে ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে টিসি দেওয়া হয়েছিল। এখন সে অন্য একটি স্কুলে পড়ে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজশাহী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা জানান, টিসি দেওয়ার কারণে ওই শিক্ষার্থীর ক্ষোভ ছিল। শিক্ষক মারুফ কারখী বলে কোনো কথা নয়, এ স্কুলের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের ওপরেই তার ক্ষোভ ছিল। যে কারও ওপর হামলা করার পরিকল্পনা ছিল তার। দুর্ভাগ্যক্রমে শিক্ষক মারুফ কারখী যাওয়ার সময় হামলার শিকার হয়েছেন। তিনি জানান, দুপুরে ওই ছাত্রী স্কুলের সামনের রাস্তায় এসে অপেক্ষায় ছিল। দুপুরে স্কুল ছুটি হলে শিক্ষক মারুফ কারখী স্কুটি নিয়ে বাসায় যাচ্ছিলেন। ওই সময় ছাত্রীটি ‘হেল্প হেল্প’ বলে ডাকতে থাকে। মেয়েটির কোনো বিপদ হয়েছে ভেবে ওই শিক্ষক স্কুটি থেকে নেমে তার কাছে যান। এ সময় কিছু বুঝে ওঠার আগেই মেয়েটি তার গলা লক্ষ্য করে ছুরি চালায়। তখন ওই শিক্ষক হাত দিয়ে ছুরিটি ধরার চেষ্টা করেন। এতে তাঁর হাত ও ঘাড় কেটে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন মেয়েটিকে আটকে রেখে স্কুলে খবর দেন। এ সময় স্কুল কর্তৃপক্ষ ওই শিক্ষককে রাজশাহীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নিয়ে যায়। সেখানে ওই শিক্ষকের শরীরে তিনটি সেলাই লাগে। পরে ওই শিক্ষককে বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়।

ওই কর্মকর্তা আরও জানান, ঘটনার পর ওই ছাত্রীর অভিভাবককে ফোন করে ডাকা হয়। অভিভাবক আসার পরে মেয়ের এমন কাণ্ডের কথা জানানো হয়। পরে ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের তিনজন স্টাফ তাঁদের বাসায় পৌঁছে দিয়ে আসেন। তবে এ নিয়ে আইনি কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ঘটনার পরের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মেয়েটি অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করছে।

বিষয়টি নিয়ে রাজশাহী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাঈম আব্দুল্লাহর সঙ্গে কথা বলতে তাঁর পিএ আব্দুর রউফ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কিছু সময় পরে আব্দুর রউফ জানান, এ বিষয়ে অধ্যক্ষ গণমাধ্যমে কথা বলবেন না।

নগরের বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাক আহম্মেদ জানান, ঘটনার খবর পেয়ে তিনি পুলিশ পাঠিয়েছিলেন। তখন মেয়েটিকে স্কুলের ভেতরে রাখা হয়েছিল। স্কুল কর্তৃপক্ষ ভেতরে পুলিশ ঢোকার অনুমতি দেয়নি। তারা নিজেরাই সমাধান করে নেবে বলে পুলিশকে জানিয়েছে। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ থানায় কোনো অভিযোগও করেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত