Ajker Patrika

চমকে দিয়ে বিসিবির সহসভাপতি হওয়া কে এই শাখাওয়াত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ১৪: ৩৩
বিসিবির সহসভাপতি মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
বিসিবির সহসভাপতি মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

আমিনুল ইসলাম বুলবুলের পাশে যখন তিনি দাঁড়ালেন, সেটাই অনেকের কাছে বিস্ময়। জেলা ক্রীড়া সংস্থা থেকে উঠে আসা ঢাকার বড় হোটেলের চেনা মুখ মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন এখন বিসিবির সহসভাপতি। পরিচয়টা যত ঝকঝকে, পথটা ততই চ্যালেঞ্জিং। ঘণ্টাপ্রতি ২০ টাকা ধরে শুরুর ওই দিনগুলো আজও মুঠোয় ধরা রয়েছে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার ফাঁকে সোনারগাঁও বা ব্যাংকুয়েট হলে কাজ করেছিলেন শাখাওয়াত। কদিন আগে একটি জাতীয় দৈনিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন, ঘণ্টাপ্রতি ২০ টাকায় কাঁচা হাতে প্লেট ধুয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। পরে বিসিএসের চেষ্টা, ভাইভায় ছিটকে যাওয়ার আঘাত, আবার ফিরেই হোটেল জগতের এক যুদ্ধে ডিপ্লোমা করে নিজেকে পাকা করে তোলেন। ২০০৭ সালে ওয়েস্টিন ঢাকা উদ্বোধন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাউসকিপিং থেকে শুরু করে ফ্রন্ট ডেস্ক, অপারেশন—প্রায় সব বিভাগে কাজ করে একে একে সেকশনের দায়িত্ব নিয়েছেন। বিভাগীয় প্রধান হওয়ার পরে জেনারেল ম্যানেজার হয়েছেন। এরপর এমবিএ (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), এমফিল করার পর এখন পিএইচডি করছেন। এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় গিয়ে ‘প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট’ হয়ে উঠে কর্মীদের সংগঠিত করা, অপারেশন ঠেকানো, অতিথির অভিজ্ঞতা নেওয়া সবই অনুশীলন করেছেন। এখন তিনি সেটা ক্রিকেটের মাঠে প্রয়োগ করতে চান।

বিসিবির সঙ্গে যুক্ত হওয়াও একদম হঠাৎ নয়। মে মাসে বুলবুল যখন স্বল্পমেয়াদি সভাপতির দায়িত্ব নিয়েছিলেন, তখন তিন উপদেষ্টা নিয়েছিলেন। শাখাওয়াত ছিলেন তাঁদের একজন। দায়িত্ব পেয়েছিলেন ক্রিকেট পর্যটন বিভাগে। এরপর বরিশাল বিভাগের কাউন্সিলর হিসেবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে সবচেয়ে দ্রুতই উঠে এলেন কেন্দ্রীয় মঞ্চে।

ক্রিকেট প্রশাসনে একদম নতুন হলেও খেলার মাঠ শাখাওয়াতের কাছে অপরিচিত নয়। জেলা ভোলা হলেও বরিশাল, পটুয়াখালী, পিরোজপুরের মাঠগুলো তাঁর ভালো চেনা। মাঠ নেই, সময় নেই, স্থানীয় ব্যবস্থাপনাও মজবুত নয়। সমাধান কেমন হতে পারে, তা তিনি জানেন। পরিকল্পনা, পরিচালনার দক্ষতা,স্থানীয় পর্যায়ে নিয়মিত ম্যাচ আয়োজন ও বিনিয়োগ তাঁর এক একটা ধারাবাহিক কর্মপরিকল্পনা। হোটেল ম্যানেজমেন্টে তাঁর অর্জিত দক্ষতা (লজিস্টিক ম্যানেজমেন্ট, ইভেন্ট কোঅর্ডিনেশন, স্পন্সরশিপের সঙ্গে কাজ) এগুলো ক্রিকেট প্রশাসনে কাজে লাগতে পারে। বিশেষ করে টুর্নামেন্ট ট্যালি করার ও পর্যটন-ক্রিকেট যুক্ত করে কার্যক্রম বাড়ানোর ক্ষেত্রে তাঁর জ্ঞান কাজে লাগতে পারে।

সভাপতি বুলবুলের পাশে বসে কাল যখন সংবাদ সম্মেলনে শাখাওয়াত কথা বললেন, তখন মাঠ নিয়ে তাঁর (শাখাওয়াত) কর্মপরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেছেন। কণ্ঠে সেই মাঠের গন্ধই ছিল। তিনি বললেন, ‘বরিশালে গত ১৫ বছরে তেমন খেলা হয়নি। আমাদের স্টেডিয়ামের কাজ এখনো শেষ হয়নি, কোনো অবকাঠামো তৈরি হয়নি। আমরা একটা কর্মপরিকল্পনা করেছি—বরিশাল অঞ্চলের খেলা নিয়মিত করব। মাঠের সুবিধা বাড়াব। পাইপলাইন শক্ত করব। বাংলাদেশ ক্রিকেটকে এগিয়ে নিতে আপনাদের সহযোগিতা চাই।’

শুধু চেয়ারে বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া নয়। মাঠ পর্যায়ে কাজ দেখাতে হবে। এখানে তিনি বারবার ‘পাইপলাইন’ শব্দটি ব্যবহার করেন। নতুন খেলোয়াড় জোগাড়, নিয়মিত ম্যাচ, স্থায়ী অবকাঠামো—এগুলোই আরকি। একজন হসপিটালিটি এক্সিকিউটিভ কি গ্রামের মাঠে মাঠের খাল খুঁড়ে, গ্রাউন্ড নির্মাণের কাজ হাতে নেবে? জবাবটা পদ্ধতিগত না। কিন্তু তিনি ‘কীভাবে’ করবেন সেটা জানেন। অপারেশন পরিকল্পনা, বাজেট সাজানো, স্থানীয় অংশীদারত্বকে টানানো এসব বস্তুত হোটেল অপারেশনের মতোই। শুধু কনটেক্সট বদলানো। এবং সেই বদলটাই এখন অপেক্ষায় আছে কীভাবে সেই দক্ষতা মাঠে নামবে, সেটাই দেখার বিষয়।

রাজনৈতিক তকমা ও নির্বাচনী বিতর্ক থাকতেই পারে। কিন্তু মানুষের নজর এখন কার্যকারিতার দিকে। একটি ক্রমবিকাশমান, কাঠামোগত পরিকল্পনা ও তৎপরতার মাঝে একজন শাখাওয়াত তাঁর পরীক্ষায় নামবেন। ঘণ্টাপ্রতি ২০ টাকার দিনগুলো তাঁকে কেবল সেই দিনগুলোর কথা মনে করিয়ে দেয় না। সেই দিনগুলো তাঁর ধৈর্য, কাজের নীতি আর কাজ করার পদ্ধতি শিখিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দক্ষিণ আফ্রিকাকে উড়িয়ে এগিয়ে গেল ভারত

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ৩৭
অভিষেক শর্মা ও শুবমান গিলের উদ্বোধনী জুটিতেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয়ের পথে অনেকটা এগিয়ে যায় ভারত। ছবি: ক্রিকইনফো
অভিষেক শর্মা ও শুবমান গিলের উদ্বোধনী জুটিতেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয়ের পথে অনেকটা এগিয়ে যায় ভারত। ছবি: ক্রিকইনফো

যেখানে শুরুর কথা বলার আগেই শেষ—ধর্মশালায় আজ ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা তৃতীয় টি-টোয়েন্টি দেখে অনেকের এই গান মনে আসতেই পারে। দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং লাইনআপ তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ায় সেখানেই ম্যাচের ফল সম্পর্কে অনেকটা ধারণা পাওয়া যায়। ভারত ম্যাচটা এরপর জিতে গেল হেসেখেলেই।

ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারত—টি-টোয়েন্টি সিরিজে ম্যাচগুলোতে এভাবেই পর্যায়ক্রমে আসছে ফল। সমানে সমানে লড়াই হলেও ম্যাচগুলো হচ্ছে একপেশে। ৯ ডিসেম্বর সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১০১ রানে হারিয়েছে ভারত। প্রোটিয়াদের ঘুরে দাঁড়াতেও বেশি সময় লাগেনি। ১১ ডিসেম্বর নিউ চন্ডীগড়ে ভারতকে ৫১ রানে হারিয়ে সমতায় ফেরেন প্রোটিয়ারা। আজ ধর্মশালার হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ২৫ বল হাতে রেখে ৭ উইকেটের সহজ জয় পেয়েছে ভারত।

১১৮ রানের লক্ষ্যে নেমে শুরু থেকেই মারমুখী ব্যাটিং করতে থাকে ভারত। ৩২ বলে ৬০ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়তে অবদান রাখেন শুবমান গিল ও অভিষেক শর্মা। ষষ্ঠ ওভারের দ্বিতীয় বলে অভিষেককে ফিরিয়ে বিস্ফোরক এই জুটি ভাঙেন করবিন বশ। ১৮ বলে তিনটি করে চার ও ছক্কায় ৩৫ রান করেন অভিষেক। বিস্ফোরক এই ওপেনার ফেরার পরও ভারতের জয় নিয়ে কোনো সংশয় তৈরি হয়নি। দ্বিতীয় উইকেটে ৩৮ বলে ৩২ রানের জুটি গড়েন গিল ও তিলক ভার্মা। ১২তম ওভারের চতুর্থ বলে গিলকে (২৮) বোল্ড করে জুটি ভাঙেন মার্কো ইয়ানসেন।

গিলের বিদায়ের পর অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব ম্যাচটা প্রায় শেষ করেই এসেছিলেন। তবে ভারতের জয়ের জন্য যখন ৯ রান প্রয়োজন, তখন লুঙ্গি এনগিদির বলে ফেরেন সূর্যকুমার (১২)। তাতে ভারতের স্কোর হয়ে যায় ১৪.৪ ওভারে ৩ উইকেটে ১০৯ রান। তুলির শেষ আঁচড় এরপর দিয়েছেন শিবম দুবে। ১৬তম ওভারের চতুর্থ ও পঞ্চম বলে ওটনিল বার্টম্যানকে ছক্কা ও চার মেরে ভারতকে ৭ উইকেটের জয় এনে দেন দুবে।

টস হেরে আগে ব্যাটিং পাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকা পুরো ২০ ওভার খেলে ১১৭ রানে গুটিয়ে গেছে। অধিনায়ক এইডেন মার্করামের ৪৬ বলে ৬১ রানের ইনিংস ছাড়া বলার মতো কিছু নেই প্রোটিয়াদের ইনিংসে। ভারতের আর্শদীপ সিং, হারশিত রানা, বরুণ চক্রবর্তী ও কুলদীপ যাদব নিয়েছেন দুটি করে উইকেট। একটি করে উইকেট পেয়েছেন শিবম দুবে ও হার্দিক পান্ডিয়া।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

স্ত্রী, পড়াশোনা, বেতনসহ গুগলে শান্তকে নিয়ে মানুষ যা জানতে চান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৪৩
নাজমুল হোসেন শান্ত ও তাঁর স্ত্রী সাবরিনা রত্না। ছবি: ফেসবুক
নাজমুল হোসেন শান্ত ও তাঁর স্ত্রী সাবরিনা রত্না। ছবি: ফেসবুক

গুগল যেন আলাদিনের চেরাগ! যেখানে মুহূর্তে মেলে সব কিছুর উত্তর। গুগল সার্চ ইঞ্জিনে নিয়মিত তারকাদের কত কিছুই জানতে চান ব্যবহারকারীরা। ২০২৫ সালে গুগলে ভারতীয়দের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সার্চ করা হয়েছে কাকে, জানেন? ১৪ বছর বয়সী বৈভব সূর্যবংশী। তিনি পেছনে ফেলেছেন বিরাট কোহলির মতো বড় তারকাকে। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের তারকাদের নিয়েও গুগলে কত কিছু ‘সার্চ’ করা হয়।

‘নাজমুল হোসেন শান্ত’ লিখে ‘সার্চ’ করলে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনে (এসইও) কী কী সাজেস্ট করেন, এরকম কিছু বিষয়ে আজকের পত্রিকাকে মজার উত্তর দিলেন বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়ক। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) আগে আর কোনো ম্যাচ না থাকায় শান্ত সপরিবারে ঘুরে এসেছেন মালয়েশিয়ায়। ঘোরাঘুরি করতে শান্তর কাছে সবচেয়ে পছন্দের মালদ্বীপ। ঘুরতে পছন্দ করেন নিজের শহর রাজশাহীতেও। খেতে পছন্দ করেন রাজশাহীর যেকোনো স্ট্রিট ফুড।

গুগল সার্চে তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে মানুষের আগ্রহের প্রসঙ্গ আসতেই একটু যেন লাজুক হয়ে গেলেন। বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়ক বলেন, ‘আমার স্ত্রী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। পরিসংখ্যান বিভাগে পড়াশোনা করেন। আমরা প্রেম করে বিয়ে করেছি। আমাদের প্রায় সাড়ে চার-পাঁচ বছরের সম্পর্ক ছিল। এখন প্রায় চার-পাঁচ বছর সংসার করছি।’

শান্তর শিক্ষাগত যোগ্যতা লিখেও সার্চ করা হয়। এটির উত্তরে বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়ক বললেন, ‘রাজশাহী আদর্শ ডিগ্রি কলেজ থেকে আমি পড়াশোনা করছি। এখন আমি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির একজন স্টুডেন্ট। এখনো গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট হয়নি। পড়ছি মার্কেটিং নিয়ে।’

শান্তর বেতন নিয়েও গুগলে সার্চ করা হয় নিয়মিত। এ বিষয়ে তাঁর উত্তর, ‘বিসিবি যখন প্রতিবছর সেন্ট্রাল কন্ট্র্যাক্টের তালিকা প্রকাশ করে, তখন তো এটা উন্মুক্ত হয়ে যায়। এটা তো সবার জানার কথা।’ একবার সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছিল শান্তর বেতন ১০ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। সেটি নিয়ে শান্তর রসাত্মক জবাব, ‘না, একরকম চলে যাচ্ছে। সংসার আলহামদুলিল্লাহ ভালোমতোই চলে যাচ্ছে।’

সেঞ্চুরির পর হেলমেটটা খুলে শূন্যে একটা লাফ দেন শান্ত। লাফ দেওয়ার পর ডাগআউটের উদ্দেশে চুমু ছুড়ে মারেন তিনি। কার উদ্দেশে তাঁর এই চুমু, সে উত্তরে বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়ক বলেন, ‘কাউকে উৎসর্গ করা না। এটা শুধু সে সময় চলে এসেছিল। প্রথম আমার মনে হয় যখন ওয়ানডে সেঞ্চুরি করেছিলাম, তখন এটা আপনাআপনি হয়ে গিয়েছিল। ড্রেসিংরুমে যাঁরা ছিলেন, প্রত্যেক ক্রিকেটার, সাপোর্টিং স্টাফ সবাই যেভাবে সহায়তা করেছিলেন, এটা ড্রেসিংরুমের উদ্দেশেই আসলে করা। আলাদা কোনো পরিকল্পনা করে করা ছিল না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মেসিকে পাওয়া পুরো ভারতের জন্য স্মরণীয় এক মুহূর্ত: শচীন

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ২৯
মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে অনুষ্ঠানে লিওনেল মেসির বরণ অনুষ্ঠানে ছিলেন শচীন টেন্ডুলকার। ছবি: সংগৃহীত
মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে অনুষ্ঠানে লিওনেল মেসির বরণ অনুষ্ঠানে ছিলেন শচীন টেন্ডুলকার। ছবি: সংগৃহীত

মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামের আজকের সন্ধ্যাটা ক্রীড়াপ্রেমীদের জন্য মনে রাখার মতোই। সুনীল ছেত্রী, শচীন টেন্ডুলকার, লিওনেল মেসি—এই তিন কিংবদন্তিকে একসঙ্গে দেখতে পেরেছেন ক্রীড়াপ্রেমীরা। আর্জেন্টাইন তারকা ফুটবলার মাঠে ঢুকতেই ‘মেসি, মেসি’ শ্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো ওয়াংখেড়ে।

মেসিকে আজ উৎসবমুখর পরিবেশে শচীন তাঁর ১০ নম্বর জার্সি উপহার দিয়েছেন। খেলোয়াড়ি জীবনে শচীন এই ১০ নম্বর জার্সি পড়ে খেলেছেন। মেসিও তাঁর ক্যারিয়ারে বার্সেলোনা, আর্জেন্টিনা, ইন্টার মায়ামির হয়ে ১০ নম্বর জার্সি পড়ে খেলেছেন। দুই ‘নাম্বার টেনে’র এই জার্সি বিনিময়ের ছবি সামাজিকমাধ্যমে এরই মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। আর্জেন্টাইন বিশ্বজয়ী ফরোয়ার্ডকে নিয়ে শচীন বলেন, ‘আজ তিন জনকে এক সঙ্গে পাওয়া মুম্বাইবাসী ও পুরো ভারতবাসীর জন্য সত্যিকার অর্থেই এক স্বর্ণালী মুহূর্ত। আপনারা সবাই যেভাবে তিন গ্রেটকে বরণ করলেন, সত্যিই অসাধারণ।’

ক্যারিয়ারে কত যে পুরস্কার জিতেছেন, সেটা মেসি গুনে হয়তো শেষ করতে পারবেন না। এমএলএস কাপ জিতে ক্যারিয়ারে ৪৭তম শিরোপা জিতেছেন তিনি। ব্যালন ডি’অর জিতেছেন আটবার। ২০২২ সালে কাতার বিশ্বকাপ জিতে আজন্মলালিত স্বপ্ন পূরণ হয়েছে তাঁর। মেসির সম্পর্কে বলতে গিয়ে শচীন যেন ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন। ভারতীয় ব্যাটিং কিংবদন্তি বলেন, ‘লিওর প্রসঙ্গ এলে যদি তার খেলা সম্পর্কে বলি, এটা সঠিক প্ল্যাটফর্ম নয়। তার সম্পর্কে কী বলার আছে? সে সবকিছু অর্জন করেছে। তার আত্মনিবেদন ও খেলার প্রতি দৃঢ় মানসিকতার ব্যাপারটাকে সত্যি আমরা অনেক প্রশংসা করি।’

২০১১ সালে এই ওয়াংখেড়েতেই শচীন জিতেছিলেন পরম আরাধ্য বিশ্বকাপ। শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দ শুধু মুম্বাইয়েই নয়, ছড়িয়ে পড়েছিল পুরো ভারতজুড়েই। শচীনকে কাঁধে তুলে ওয়াংখেড়ে ঘুরেছিলেন বিরাট কোহলি-মহেন্দ্র সিং ধোনিরা। আজ মেসিবরণ অনুষ্ঠানে শচীন স্মরণ করেছেন ১৪ বছর আগের সেই পুরোনো স্মৃতি। ভারতীয় ব্যাটিং কিংবদন্তি বলেন, ‘আমার এখানে মনে রাখার মতো অনেক মুহূর্ত রয়েছে। মুম্বাইকে আমরা স্বপ্নের শহর বলি। এই ভেন্যুতে অনেকের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আপনাদের সমর্থন ছাড়া ২০১১ সালে এমন স্বর্ণালী মুহূর্ত আমরা পেতাম না।’

কলকাতায় গতকাল নিজের ৭০ ফুট উচ্চতার ভাস্কর্য উন্মোচন করেছেন তিনি। তবে সল্টলেকের যুবভারতী স্টেডিয়ামে আয়োজন করতে গিয়ে হ-য-ব-র-ল অবস্থা হয়ে গেছে। রাগে-ক্ষোভে চেয়ার ছুড়ে মেরেছেন ভক্ত-সমর্থকেরা। কলকাতার বাজে অভিজ্ঞতা সঙ্গে করে গতকাল দুপুরে হায়দরাবাদের বিমানে চড়েন মেসি। একটি প্রদর্শনী ম্যাচ শেষে মাঠে নামেন মেসি এবং তাঁর দুই সতীর্থ রদ্রিগো দি পল ও লুইস সুয়ারেজ। সঙ্গে ছিলেন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি। মেসিকে পেয়ে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে গোটা গ্যালারি। হাত নেড়ে ভক্তদের অভিবাদনের জবাব দেন এই ফরোয়ার্ড। মাঠে রেবন্ত এবং শিশুদের সঙ্গে পাসিং খেলার সময় মেসি কয়েকবার বল গ্যালারিতে পাঠান। দর্শকদের আনন্দ সেটা অনেকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। আজ তাঁকে রাজকীয়ভাবে বরণ করা হয়েছে ওয়াংখেড়েতে। মেসির সঙ্গে ছিলেন রদ্রিগো দি পল ও লুইস সুয়ারেজ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পাকিস্তানকে উড়িয়ে সবার আগে সেমিফাইনালে ভারত

ক্রীড়া ডেস্ক    
পাকিস্তানকে ৯০ রানে হারিয়ে সেমিফাইনালে ভারত। ছবি: ক্রিকইনফো
পাকিস্তানকে ৯০ রানে হারিয়ে সেমিফাইনালে ভারত। ছবি: ক্রিকইনফো

এশিয়া কাপ, নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ, রাইজিং স্টার্স এশিয়া কাপ, অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ—এ বছর মেজর টুর্নামেন্টগুলোতে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচগুলোতে একটা দৃশ্য খুবই পরিচিত। টসের সময় কোনো অধিনায়কই অপরজনের সঙ্গে করমর্দন করবেন না। এমনকি ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে যে ‘হাইপ’ থাকে, মাঠে ছিটেফোঁটাও দেখা যায় না।

বাংলাদেশ সময় আজ নির্ধারিত সকাল ১১টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বৃষ্টির বাগড়ায় ভারত-পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ম্যাচ এক ঘণ্টা দেরিতে শুরু হয়েছে। ম্যাচের দৈর্ঘ্য ১ ওভার কমানো হয়েছে। দুবাইয়ে আইসিসি ক্রিকেট একাডেমি মাঠে ৪৯ ওভারের ম্যাচে ভারত ৯০ রানের উড়ন্ত জয় পেয়েছে। টানা দুই জয়ে যুব এশিয়া কাপের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে দলটি।

৪৯ ওভারে ২৪১ রানের লক্ষ্যে নেমে ১৩.১ ওভারে ৪ উইকেটে ৩০ রানে পরিণত হয় পাকিস্তান। পঞ্চম উইকেটে ৬৫ বলে ৪৭ রানের জুটি গড়তে অবদান রাখেন ফারহান ইউসাফ ও হুজাইফা হাসান। পাকিস্তানের ইনিংসে এটাই সর্বোচ্চ রানের জুটি। ২৪তম ওভারের শেষ বলে অধিনায়ক ফারহানকে (২৩) ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন বৈভব সূর্যবংশী।

একপ্রান্ত আগলে রাখা হুজাইফা সতীর্থদের কাছ থেকে কোনো সমর্থন পাননি। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকা পাকিস্তান ৪১.২ ওভারে ১৫০ রানে গুটিয়ে গেছে। ইনিংস সর্বোচ্চ ৭০ রান করেছেন হুজাইফা। ৮৩ বলের ইনিংসে ৯ চার ও ২ ছক্কা মেরেছেন। ১২ রানে পাকিস্তান হারিয়েছে শেষ ৩ উইকেট। ৪২তম ওভারের দ্বিতীয় বলে আলী রাজাকে (৬) ফিরিয়ে পাকিস্তানের ইনিংসের ইতি টানেন কিশান সিং। কিশান পেয়েছেন ২ উইকেট। তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন দীপেশ দেবেন্দ্রন ও কনিষ্ক চৌহান।

টস হেরে আগে ব্যাটিং পেলেও ভারত ৪৯ ওভার খেলতে পারেনি। ৪৬.১ ওভারে ২৪০ রানে গুটিয়ে গেছে। ইনিংস সর্বোচ্চ ৮৫ রান করেন অ্যারন জর্জ। ৮৮ বলের ইনিংসে মেরেছেন ১২ চার ও ১ ছক্কা। অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে ম্যাচসেরা হয়েছেন চৌহান। ৪৬ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় করেছেন ৪৬ রান। বোলিংয়ে ১০ ওভারে ৩৩ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত