Ajker Patrika

নিজের কবর পাকা করলেন বৃদ্ধ, ইচ্ছা মাজার বানানো

হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ জুন ২০২৪, ০৮: ৫৩
নিজের কবর পাকা করলেন বৃদ্ধ, ইচ্ছা মাজার বানানো

নোয়াখালীতে নিজের জন্য পাকা কবর তৈরি করে এলাকায় আলোচনার সৃষ্টি করেছেন হাতিয়া দ্বীপের হানিফ (৮০) নামের এক বৃদ্ধ। এই বৃদ্ধ বলছেন, পিরের নির্দেশে তিনি কবর তৈরি করছেন। তিনি মারা গেলেও যাতে তাঁর ভক্তরা এখানে মাজার তৈরি করে জিয়ারত করতে পারেন। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। 

নিজের জন্য পাকা কবর তৈরি করা ওই ব্যক্তি স্থানীয়ভাবে জমিদার ডাক্তার নামে পরিচিত। বুড়িরচর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের জোড়খালী গ্রামের মৃত মোজাফ্ফর আহমদের ছেলে। তাঁর ৪ ছেলে ও ৫ মেয়ে রয়েছে। 

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির মধ্যে বিশাল পাকা ঘর। ঘরের ডান পাশে খনন করে মাটির তলদেশ থেকে ইটের গাথনি দিয়ে কবরের আকৃতি করে তৈরি করা হচ্ছে বিশাল প্রাচীর। রাজমিস্ত্রিরা একনিষ্ঠ মনে কবর নির্মাণের কাজ করে যাচ্ছেন। পাশে চেয়ারে বসে নিজের কবরের কাজ দেখভাল করছেন আশি বছরের বৃদ্ধ হানিফ। এ খনন গত ১৫–২০ দিন ধরে চলছে। 

হানিফ ও তাঁর সন্তানদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মো. হানিফ চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর চরণদ্বীপ দরবার শরীফের মাওলানা খাইরুল বাশার ফারুকীর একজন খলিফা। মাইজভান্ডার দরবার শরীফে তিনি ৫৫ বছরেরও বেশি সময় এ তরিকার সঙ্গে জড়িত। পিরের নির্দেশে প্রতি বছর আরবি রবিউস সানি মাসের ১১ তারিখে পারিবারিকভাবে নিজ বাড়িতে ওরস মাহফিল করে আসছেন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল তাঁর রয়েছে প্রায় ত্রিশ হাজার মুরিদ। পিরের নির্দেশে তিনি এমন কাজ করছেন। 

কবরের পাশে বসে আছেন বৃদ্ধ হানিফনিজের কবর নিজেই তৈরি করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার অসিয়ত করা জায়গায় হয়ত আমার ছেলেরা পরবর্তীতে কবর নাও দিতে পারে। তাই আমার ক্রয়কৃত নিজস্ব জায়গায় আমি আমার কবর তৈরি করছি। আমি এখানে থাকব। মৃত্যুর পরে এ কবরকে কেন্দ্র করে আমার ভক্তরা মাজার তৈরি করে তা জিয়ারত করবে।’ 

এখানে ঘরের পাশে কবর স্থাপন ও পাকাকরণ বিষয়ে পরিবারের কোনো সদস্যের দ্বিমত প্রসঙ্গে বলেন, ‘যেহেতু আমি পিরের নির্দেশনা পেয়ে নিজের কবর নিজে তৈরি করছি তাতে কারও কোনো আপত্তি নাই।’ 

ডাক্তার হানিফের ছেলে শাহাবুদ্দিন বলেন, ‘আমার বাবা দীর্ঘদিন মাইজভান্ডার তরিকায় হাজার হাজার আশেকান সৃষ্টি করেছেন। আমাদের এ বাড়িতে প্রতিবছর তিনি আশেকানদের নিয়ে ওরস মাহফিল করে আসছেন। যার খরচ সম্পূর্ণ আমাদের পারিবারিক সদস্যরা বহন করেন। যেহেতু তিনি রোগশয্যায় যেকোনো সময় মৃত্যুবরণ করতে পারেন। ওনার মনের ইচ্ছাতেই উনি নিজের কবরটা যেন দেখে যেতে পারেন। সেই লক্ষ্যেই আমরা ছেলেরা বাবার সামনে কবরটা তৈরি করছি।’ 

ছোট ছেলে মো. শাহারাজ উদ্দিন ঘরের পাশে বাবার জন্য কবর তৈরি প্রসঙ্গে বলেন, ‘বাবার মৃত্যুর পর ওনার ইচ্ছায় তাঁকে এখানে দাফন দেওয়া হবে। তবে বাবার কবরকে মাজার বানিয়ে কোনো প্রকার ব্যবসা করার ইচ্ছা আমাদের কারও নেই।’ 

স্থানীয় প্রতিবেশী জাফর উদ্দিন বলেন, ‘মৃত্যুর আগে কারও জন্য কখনো কবর বানাতে দেখিনি কিংবা শুনিনি। কিন্তু এখানে দেখলাম। নিজের জন্য নিজেই কবর তৈরি করেছেন জমিদার ডাক্তার। এতে এলাকায় কেউ ভালো বললেও অনেকেই আবার খারাপ মন্তব্য করছেন। তবে অদৃশ্য কোনো এক ভয়ে প্রকাশ্যে কেউ কিছু বলতে পারছেন না।’ 

কবরের পাশে দাঁড়িয়ে আছেন বৃদ্ধ হানিফ। ছবি: আজকের পত্রিকাস্থানীয় ইউপি মেম্বার লিটন চৌধুরী বলেন, ‘ইসলামি শরিয়তে কী বলে তা আমার জানা নেই। তবে তাঁর (বৃদ্ধ) জীবনের শেষ ইচ্ছে মোতাবেক কবরটি করা হয়েছে।’ 

হাজী এমরাত আলী জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘মৃত্যুর আগে কবরের জন্য স্থান নির্ধারণ করা এবং মাটি ভরাট করা যেতে পারে। কিন্তু মৃত্যুর আগে বা পরে কবর বাধাই করা ইসলাম সমর্থন করে না। এ ছাড়া যদি কোনো অসৎ বা মাজার করার উদ্যেশ্য থাকে তাহলে এলাকাবাসীর উচিত এটি প্রতিহত করা।’ 

 এ বিষয়ে বুড়িরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘মৃত্যুর আগেই জীবিত মানুষের জন্য কবর খুড়া হয়েছে এমন খবর পেয়ে ওই ব্যক্তির ছেলেদেরকে জিজ্ঞাসা করলাম যে এটা কেন করেছ। ছেলেদের উত্তর ছিল আমার বাবার একান্ত ইচ্ছা যেন উনি উনার কবরটা দেখে যেতে পারে। আমি তাদেরকে বলেছি, ইসলামের বিধিবিধানের বাইরে এসব কাজ করা যাবে না। আসলে এগুলোর কোনো বিধান নেই। এসব গর্হিত কাজ এখনই বন্ধ করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

১০ বছরে বাবাকে হারাল, ১৭ বছরে নিজেই না ফেরার দেশে

বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি      
বাঘা শাহদৌলা সরকারি কলেজমাঠে ইয়ামিনের জানাজা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাঘা শাহদৌলা সরকারি কলেজমাঠে ইয়ামিনের জানাজা। ছবি: আজকের পত্রিকা

অবশেষে না ফেরার দেশে পাড়ি জমাল রাজশাহীর বাঘায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত কলেজশিক্ষার্থী মোস্তাকিন আহমেদ ইয়ামিন (১৭)। আজ বৃহস্পতিবার বাঘা শাহদৌলা সরকারি কলেজমাঠে জানাজা শেষে কেন্দ্রীয় গোরস্তানে তাকে দাফন করা হয়েছে।

নিহত ইয়ামিনের দাদা আব্দুর রহমান এছার ইমামতিতে জানাজায় বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন, বন্ধু-বান্ধবসহ নানা শ্রেণি-পেশার হাজারো মানুষ অংশ নেয়। এ সময় জানাজায় দাঁড়িয়ে স্বজনদের সঙ্গে অনেককে কাঁদতে দেখা যায়।

এর আগে গতকাল বুধবার রাতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোস্তাকিন আহমেদ ইয়ামিনের মৃত্যু হয়।

বাঘা ইসলামি একাডেমি উচ্চবিদ্যালয়, কারিগরি ও কৃষি কলেজের শিক্ষার্থী ইয়ামিন পৌরসভার (জিরো পয়েন্ট) মিলিকবাঘা গ্রামের মৃত ইউসুফ বিন মুসার ছেলে এবং বিএনপি নেতা ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মামুনের ভাতিজা।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ অক্টোবর বাঘা-আড়ানী সড়ক হয়ে মোটরসাইকেলযোগে বাড়িতে ফিরছিলেন ইয়ামিন। উপজেলার আমোদপুর জামে মসজিদের উত্তর বাঁকের সামনে পণ্যবোঝাই একটি ট্রাক (খুলনা মেট্রো-ড, ১১-০৩৮৮) পাশ কাটিয়ে বের হওয়ার সময় ধাক্কা লেগে ছিটকে পড়ে মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয় ইয়ামিন।

আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়, পরে নগরীর বেসরকারি হাসপাতাল সিডিএমএ (আইসিইউসি) ভর্তি করা হয়। তিন দিন পর রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়।

জানতে চাইলে মুসার বড় ভাই আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, সাত বছর আগে ইউসুফ বিন মুসা এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে ৩৫ বছর বয়সে হৃদ্‌রোগে মারা যান। তখন ইয়ামিনের বয়স হয়েছিল ১০ বছর।

দুর্ঘটনার বিষয়ে বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ ফ ম আছাদুজ্জামান জানান, ঘটনার পর ট্রাক রেখে চালক-হেলপার পালিয়ে যান। পরে ট্রাকটি থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। আইনিপ্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

টুঙ্গিপাড়ায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় সাংবাদিক গ্রেপ্তার

টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি 
মেহেদী হাসান। ছবি: সংগৃহীত
মেহেদী হাসান। ছবি: সংগৃহীত

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় মেহেদী হাসান নামের এক সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে উপজেলার গিমাডাঙ্গা পৌর এলাকার বাসা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে মেহেদীকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন টুঙ্গিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর।

স্থানীয় সাংবাদিকেরা জানান, মেহেদী হাসান দৈনিক কালবেলা টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রতিনিধি ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল নবধারার সম্পাদক ও প্রকাশক। এ ছাড়া তিনি এর আগে বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছেন।

ওসি জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর বলেন, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় উপজেলার ডুমুরিয়া ইউনিয়নের পাকুড়তিয়া বাজারে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ মশাল মিছিল বের করা হয়। এ সময় নেতা-কর্মীরা লাঠিসোঁটা, লোহার রড দিয়ে দোকানপাট ভাঙচুর ও রাস্তার পাশে থাকা পরিত্যক্ত টায়ারে আগুন ধরিয়ে দেন। ওই ঘটনায় মেহেদী হাসানের সংশ্লিষ্টতা থাকায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ বিকেলে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

থানা সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার দিন টায়ারে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর এলাকায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় টুঙ্গিপাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আকরাম হোসেন বাদী হয়ে ৫১ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা ১৫০-২০০ জনকে আসামি করে মামলা করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিএনপির কর্মী হাকিম হত্যার পরিকল্পনাকারীসহ গ্রেপ্তার ৪, নেপথ্যে বালুমহাল নিয়ন্ত্রণ

রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি 
আবদুল হাকিম। ছবি: সংগৃহীত
আবদুল হাকিম। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার মদুনাঘাট সেতু এলাকায় রাউজানের ব্যবসায়ী ও বিএনপির কর্মী আবদুল হাকিম হত্যা (৬৫) মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় হত্যার কাজে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র ও মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।

বালুমহালের নিয়ন্ত্রণ ও স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে এক বিজ্ঞপ্তিতে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাটহাজারী সার্কেল) এসব তথ্য জানান।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মদুনাঘাটে গত ৭ অক্টোবর আবদুল হাকিম হত্যা মামলার সূত্র উদ্‌ঘাটন করেছে পুলিশ। যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন সময় চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ও সহযোগীদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন আব্দুল্লাহ খোকন ওরফে ল্যাংড়া খোকন, মো. মারুফ, সাকলাইন হোসেন ও জিয়াউর রহমান। সাকলাইন হোসেনকে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তিনি হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না বলে পুলিশ জানিয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ৩১ অক্টোবর রাউজান থেকে আব্দুল্লাহ খোকন ওরফে ল্যাংড়া খোকনকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হাকিম হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেন এবং আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে ২ নভেম্বর রাউজানের চৌধুরীহাট থেকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত মো. মারুফকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রের অবস্থান সম্পর্কে তথ্য দেন, যা সাকলাইন হোসেনের হেফাজতে ছিল। ৪ নভেম্বর রাউজানের নোয়াপাড়ায় সাকলাইন হোসেনের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একনলা বন্দুক, একটি এলজি ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। এর আগে হত্যার এ ঘটনায় এর মধ্যে জিয়াউর রহমানসহ চার আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে। এ ছাড়া আরও ১০-১২ জন আসামির পরিচয় শনাক্ত হয়েছে।

পুলিশ জানায়, গত ৭ অক্টোবর বিকেলে ব্যবসায়ী হাকিম নিজের গাড়িতে করে চট্টগ্রাম শহরে ফিরছিলেন। মদুনাঘাট সেতুর পশ্চিম পাশে পৌঁছালে মোটরসাইকেলে আসা অস্ত্রধারীরা তাঁর গাড়ির সামনে এসে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান। ঘটনার পরপরই চট্টগ্রাম জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও হাটহাজারী থানা যৌথভাবে তদন্ত শুরু করে। হাকিম পাঁচখাইন এলাকার বাসিন্দা এবং রাউজানের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির নেতা গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী ছিলেন।

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিল্পাঞ্চল ও ডিবি) মো. রাসেল বলেন, রাউজান এলাকার বালুমহাল নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। এই হত্যাকাণ্ডসহ জেলার অন্যান্য অপরাধে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি নোয়াপাড়া, চৌধুরীহাট ও আশপাশের এলাকায় চেকপোস্ট, টহল ও রাত্রিকালীন তল্লাশি জোরদার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

লক্ষ্মীপুরে অবৈধ ইটভাটা বন্ধে অভিযান শুরু, অবরুদ্ধ কর্মকর্তারা

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

লক্ষ্মীপুরে শতাধিক অবৈধ ইটভাটায় অভিযান শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে রামগতি উপজেলার চর আফজাল এলাকা থেকে শুরু হয় এই অভিযান। দুপুর পর্যন্ত আমানত ইটভাটা, জেসমিন সারোয়ার, আবদুল ওয়াহাবসহ তিনটি ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।

পাঁচটি ভেকু মেশিনের সাহায্যে ভাটার চুল্লি, চিমনি ও কাঁচা ইট বিনষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এরপর অন্য ইটভাটায় অভিযানে যাওয়ার সময় চৌধুরী বাজার এলাকায় রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ও টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকেরা।

এ সময় প্রশাসনের কর্মকর্তারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। ঘণ্টাখানেক অবরুদ্ধ থাকেন তাঁরা।

অভিযানে অংশ নেন রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ আমজাদ হোসেন, পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম কার্যালয়ের পরিচালক জমির উদ্দিন, ঢাকা কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আশিকুর রহমান, লক্ষ্মীপুর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক হারুন অর রশিদ পাঠান, রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেনসহ পুলিশ ও র‍্যাবের সদস্যরা।

রামগতি থানার ওসি মো. কবির হোসেন বলেন, পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সরকারি কাজে বাধা দেওয়ায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

লক্ষ্মীপুরের পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক হারুন অর রশিদ পাঠান বলেন, রামগতি ও কমলনগরে ৫১টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে ৪৯টি ভাটা অবৈধ। জেলা-উপজেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় এসব ভাটার বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। টানা সাত দিন অভিযান চলবে। অবৈধ ভাটা ভেঙে দেওয়ার পরেও যাতে চালু করতে না পারে, সে জন্য অভিযান অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি জেলায় শতাধিক ইটভাটার কোনো কাগজপত্র নেই। এগুলো পুরোপুরি অবৈধ।

পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগের উপপরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, শুধু লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে ৫১টি ইটভাটার মধ্যে ৪৯টি ইটভাটার কোনো কাগজপত্র নেই। এগুলো পুরোপুরি অবৈধ। তাই এসব অবৈধ ইটভাটা কোনোভাবে চলতে দেওয়া হবে না। এগুলো সব বন্ধ করে দেওয়া হবে। কোনো শক্তির কাছে মাথা নত করা হবে না।

ইউএনও মো. আমজাদ হোসেন বলেন, সকাল থেকে অভিযান চালিয়ে অবৈধ তিনটি ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। দুপুরের পর অন্য ইটভাটায় অভিযানে যাওয়ার সময় শ্রমিকেরা রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ও টায়ার জ্বালিয়ে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করেন। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত