Ajker Patrika

এক মাস ধরে বিকল আলট্রাসনোগ্রাফি মেশিন, রোগীদের ভোগান্তি

মিজানুর রহমান রিয়াদ, নোয়াখালী
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আলট্রাসনোগ্রাফি মেশিন বিকল। ছবি: আজকের পত্রিকা
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আলট্রাসনোগ্রাফি মেশিন বিকল। ছবি: আজকের পত্রিকা

২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের একমাত্র আলট্রাসনোগ্রাফি মেশিনটি গত আগস্টের শুরু থেকে বিকল হয়ে আছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা। সরকারি ব্যবস্থায় আলট্রা না হওয়ায় সাধারণ রোগীরা বাধ্য হচ্ছে বেশি খরচে প্রাইভেট হাসপাতালে পরীক্ষা করাতে। এতে গরিব ও অসহায় রোগী এবং তাদের স্বজনেরা সমস্যায় পড়েছে।

তাদের দাবি, দ্রুত মেশিনটি মেরামত অথবা নতুন মেশিন স্থাপন করে রোগীদের ভোগান্তি দূর করা হোক। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে এবং দ্রুত সমাধানের চেষ্টা চলছে।

জানা গেছে, নোয়াখালীর ৯টি উপজেলার মানুষের চিকিৎসার প্রধান ভরসা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল। প্রতিদিন এখানকার পাশাপাশি লক্ষ্মীপুর, ফেনী ও কুমিল্লার কয়েকটি উপজেলার মানুষও চিকিৎসা নিতে আসে। ২৫০ শয্যার হলেও এখানে গড়ে প্রতিদিন ভর্তি থাকে ৭০০ থেকে ৮০০ রোগী। আউটডোরে চিকিৎসা নেয় প্রতিদিন হাজারের বেশি মানুষ। ফলে রোগীদের ওষুধের পাশাপাশি বিভিন্ন পরীক্ষার প্রয়োজন হয়। সরকারি হাসপাতালে পরীক্ষার ফি কম হওয়ায় সাধারণ মানুষের সাধ্যের মধ্যেই থাকে। বিশেষ করে গরিব ও মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষের কাছে এ হাসপাতালই একমাত্র ভরসাস্থল।

কিন্তু গত মাসের শুরু থেকে আলট্রাসনোগ্রাফি মেশিন বিকল হয়ে পড়ায় প্রতিদিন প্রায় অর্ধশত রোগী সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সরকারি হাসপাতালে যেখানে মাত্র ২০০ টাকায় আলট্রাসনোগ্রাফি করা যেত, সেখানে রোগীদের বাধ্য হয়ে প্রাইভেট হাসপাতালে ২ হাজার বা তারও বেশি টাকা দিয়ে করতে হচ্ছে। এতে আর্থিকভাবে চাপে পড়ছে রোগীরা। আবার অনেকে এত খরচ করার সামর্থ্য না থাকায় পরীক্ষা করাতে পারছে না, ফলে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তারা।

আলট্রা কক্ষে বারবার এসে ফিরে যাওয়া হাসিনা আক্তারের স্বজন বলেন, মেয়ের প্রসববেদনা ওঠার পর তাকে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেছি। চিকিৎসক আলট্রা করার নির্দেশ দিলেও মেশিন নষ্ট থাকায় বারবার ফিরে আসতে হচ্ছে। পরে জানলাম, মেশিন নষ্ট হয়ে আছে। শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে বাইরে গিয়ে অনেক টাকা খরচ করে করতে হবে।

পেটে ব্যথা নিয়ে আসা নূর নবী নামের এক রোগী জানান, সরকারি হাসপাতালে মানুষ আসে কম খরচে চিকিৎসা নিতে। কিন্তু আলট্রা মেশিন নষ্ট থাকায় আমাদের মতো গরিব মানুষের পক্ষে প্রাইভেট হাসপাতালে গিয়ে ২ হাজার টাকার বেশি খরচ করে আলট্রা করানো সম্ভব নয়। অথচ সরকারি হাসপাতালে করলে মাত্র ২০০ টাকা লাগত।

জানতে চাইলে হাসপাতালের আলট্রাসনোগ্রাফি ল্যাবের ইনচার্জ শিরিন আক্তার বলেন, সর্বশেষ চলতি মাসের ৪ তারিখে কয়েকজনের আলট্রা করা হয়। এরপর আগস্টের ৫ ও ৬ তারিখ বন্ধ থাকার পর মেশিন চালু করলে দেখা যায় সেটি নষ্ট হয়ে গেছে। প্রতিদিন বহু রোগী এসে ফিরে যাচ্ছে। সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। দ্রুত মেরামতের জন্য বলা হয়েছে।

মেশিন বিকল থাকার বিষয়টি স্বীকার করে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হাসপাতালে একটি মাত্র আলট্রা মেশিন রয়েছে, সেটিও পুরোনো। আধুনিক একটি মেশিনের জন্য বারবার চাহিদা পাঠানো হলেও এখনো পাওয়া যায়নি। আশা করছি শিগগিরই একটি অত্যাধুনিক মেশিন সরবরাহ করা হবে এবং আলট্রা কার্যক্রম আবার চালু করতে পারব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গাজীপুরে রাস্তা বন্ধ করে চলাচল করা সেই পুলিশ কমিশনারকে প্রত্যাহার

নারীর সঙ্গে ঝগড়ার পর রূপসা সেতু থেকে নিচে লাফ দেন সাংবাদিক বুলু: কোস্ট গার্ড

ডাকসু প্রার্থীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের হুমকি, সমালোচনার ঝড়

জামায়াত আমিরের বাসায় জ্যেষ্ঠ নেতাদের বৈঠক, পিআর নিয়ে অনড় অবস্থান

মির্জাপুরে বিএনপি নেতার পোস্টার ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৭

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত