Ajker Patrika

কিশোরগঞ্জে ডালের বড়ি পরিবারে আনছে সচ্ছলতা

কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জে ডালের বড়ি পরিবারে আনছে সচ্ছলতা

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় শত বছরের পুরোনো কৌশল ব্যবহার করে জনপ্রিয় খাবার ডালের বড়ি তৈরির ধুম পড়েছে। এতে ব্যস্ত সময় পার করছেন নারীরা। এসব বড়ি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে পাঠানো হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। এ সব কর্মময়ী নারীরা স্বামীর সংসার সাজিয়ে তুলতে যোগান দিচ্ছে বাড়তি আয়। এতে তাদের পরিবারে বেড়েছে সচ্ছলতা। 

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে দেখা যায়, এ উপজেলার অন্য গ্রামগুলোতে ডালের বড়ি তৈরি করা হলেও সনাতন পল্লি হিসেবে খ্যাত চাদঁখানা ইউপির বগুলা গাড়ি সাতনাল গ্রামটি ডালের বড়া গ্রাম হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। গ্রামটির ১৫-২০টি পরিবার বছর জুড়ে ডালের বড়িতে স্বপ্ন বোনেন। এ জন্য নারীরা প্রতিদিন ভোরের প্রকৃতি ফোটার আগেই ভিজিয়ে রাখা মাষকলাইয়ের খোসা ছাড়িয়ে শিলপাটায় পিষার কর্মযজ্ঞে মেতে ওঠেন।

গ্রামটির বাসিন্দা মনিবালা জানান, ডালের বড়ির উপকরণ খুব একটা বেশি নয়। প্রথমে মাষকলাইয়ের মিহি উপকরণ, চালের আটা, কালোজিরা মিশিয়ে ভালোভাবে পিষে নিতে হয়। এরপর পরিষ্কার কাপড় বিছিয়ে সব উপকরণ মুষ্টিতে চেপে চেপে বিশেষ কায়দায় তার ওপর রাখতে হয়। নির্দিষ্ট আকারের বড়িগুলো তখন দেখতেও চমৎকার লাগে। সর্বশেষ রোদে শুকিয়ে তৈরি হয় ডালের বড়ি। 

একই গ্রামের শিল্পী রাণী ও রুপালী মহন্ত বলেন, সারা বছর এ বড়ি তৈরি হলেও শীতকালই বড়ি তৈরির মৌসুম। বাংলা বছর আশ্বিন থেকে ফাল্গুন পর্যন্ত এই ছয় মাস বড়ি বিক্রি হয় ব্যাপকভাবে। প্রতিদিন ৮-১০ কেজি বড়ি তৈরি করা যায়। প্রতি কেজি ডালের বড়ি তৈরিতে খরচ পড়ে ১২০ টাকা এবং ২০০-২৫০ টাকা দামে বিক্রি হয়। এতে শীতকালে ঘরে মোটামুটি একটা আয় আসে। 

তাঁরা বলেন, ‘বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে আমরা নিম্নআয়ের কিছু মানুষ ঐতিহ্যপূর্ণ পৈতৃক পেশা ধরে রেখে কোনো রকমে এ শিল্প আজও টিকিয়ে রেখেছি। ইচ্ছে থাকলেও এই শিল্পকে প্রসারিত করতে পারছি না। আমরা সরকারি সহযোগিতা বা কম সুদে যদি ঋণ পায়, তাহলে বেশি অর্থ খাঁটিয়ে এ শিল্পকে অনেক বড় করতে পারতাম।’ 

চাঁদখানা ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজার রহমান হাফি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আদি পেশার ওই পরিবারগুলো এতে সম্পৃক্ত থেকে বাড়তি আয় করে পরিবারে সচ্ছলতা আনছেন।’ 

ডালের বড়ির স্বাদ সম্পর্কে চেয়ারম্যান বলেন, আগের রাতে মাছ, বেগুন, লাউ, ফুলকপি, আলু দিয়ে ঝোল তরকারি রান্না করে পরের দিন সকালে গরম ভাতের সঙ্গে খেলে তৃপ্তির সঙ্গে ঢেকুর ওঠে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত