Ajker Patrika

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
আপডেট : ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১৬: ৪২
আটক ছাত্রদল নেতা ফয়সাল আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
আটক ছাত্রদল নেতা ফয়সাল আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

নেত্রকোনার দুর্গাপুরে এক কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ফয়সাল আহমেদ ওরফে দুর্জয় (২৪) নামে এক ছাত্রদল নেতাকে আটক করেছে পুলিশ। আটক ফয়সাল আহমেদ ওরফে দুর্জয় দুর্গাপুর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) রাতে দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে সোমবার বিকেলে দুর্গাপুর পৌর শহরের বিরিশিরি এলাকা থেকে তাঁকে আটক করা হয়।

এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ও থানার পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওই ছাত্রী নেত্রকোনা শহরের বাসিন্দা। তিনি রাজধানীর একটি কলেজে সম্মান তৃতীয় বর্ষে পড়াশোনা করেন। ওই ছাত্রীর সঙ্গে নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা উপজেলার বাসিন্দা ও জেলা শহরের একটি কলেজের সম্মান তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্প্রতি উভয়ের পরিবারের সিদ্ধান্তে তাঁদের বিয়ে পাকাপাকি হয়। এ উপলক্ষে তাঁরা সোমবার দুর্গাপুরে ঘুরতে যান।

তবে ওই ছাত্রের সঙ্গে ছাত্রদল নেতা ফয়সাল আহমেদের বন্ধুত্বের সম্পর্ক থাকায় তাঁর কথামতো তাঁরা সেখানে একটি হোটেলে ওঠেন। সোমবার বেলা ৩টার দিকে ওই ছাত্র হোটেল থেকে বের হয়ে খাবার কিনতে যান। এ সময় ওই ছাত্রী হোটেলে অবস্থান করছিলেন। এই সুযোগে ফয়সাল পুলিশকে জানান, তাঁর বন্ধু ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। পুলিশ যেন দ্রুত তাঁকে গ্রেপ্তার করে। খবর পেয়ে পুলিশ ওই ছাত্রকে আটক করে।

এদিকে এই সুযোগে ফয়সাল ওই ছাত্রীর কক্ষে ঢুকে তাঁকে ধর্ষণ করেন। আটক হওয়ার পর ওই ছাত্র পুলিশকে জানান, তাঁর হবু স্ত্রী (ওই ছাত্রী) হোটেলের কক্ষে খাবারের জন্য অপেক্ষা করছেন। পরে পুলিশ ওই ছাত্রকে নিয়ে হোটেলের কক্ষে গেলে দরজা বন্ধ অবস্থায় ছাত্রীর চিৎকার শুনতে পান। এ সময় ছাত্রীকে উদ্ধারসহ ছাত্রদলের নেতা ফয়সাল আহমদকে আটক করা হয়।

দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান জানান, এ ঘটনায় ওই ছাত্রী বাদী হয়ে আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ছাত্রদলের নেতা ফয়সালের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেছেন। মামলায় ফয়সাল আহমদকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

ওসি মাহমুদুল বলেন, গ্রেপ্তার ফয়সাল আহামদকে আগামীকাল বুধবার সকালে আদালতে সোপর্দ করা হবে। এ ছাড়া মেয়েটির শারীরিক পরীক্ষার জন্য নেত্রকোনা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। আর ওই ছাত্রকে পুলিশ হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফরিদপুরে ছিনতাইচেষ্টাকালে ৫ নারীকে পুলিশে দিল জনতা

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে ছিনতাইয়ের চেষ্টাকালে পাঁচজন নারীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে স্থানীয় জনতা। তাঁদের একজনের সঙ্গে একটি শিশুও রয়েছে। আজ রোববার ফরিদপুর-চরভদ্রাসন আঞ্চলিক সড়কের গাজীরটেক ইউনিয়নের শীলডাঙ্গি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ জানায়, আটক নারীরা এলোমেলো তথ্য দিচ্ছেন। স্বামীর নামও বলছেন না, ঠিকানা বলছেন হবিগঞ্জে, কিন্তু ভাষাগত মিল নেই।

জানা যায়, একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় চরভদ্রাসন থেকে রিশাত বেগ (৫৩) নামের এক নারী ফরিদপুর শহরে আসছিলেন। পথিমধ্যে মৌলভীরচর এলাকা থেকে ওই অটোরিকশায় আরও পাঁচজন নারী যাত্রী বেশে ওঠেন। কিছু দূর এগোতেই রিশাত বেগের গলা থেকে স্বর্ণের চেইন নেওয়ার চেষ্টা করেন তাঁরা। এ সময় তাঁর শোরচিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে পাঁচ নারীকে আটক করেন। পরে তাঁদের পুলিশে সোপর্দ করে স্থানীয় জনতা।

জানতে চাইলে ভুক্তভোগী নারী রিশাদ বেগ বলেন, ‘আমি অটোরিকশার পেছনে বসা ছিলাম। তারা দুজন আমার দুপাশে বসে। প্রথমে আমার কানে টান দেয়, মনে করেছিলাম, এমনেই টান লেগেছে। আবার গলায় চেইনে টান লাগে। তখন আমি চিৎকার দিলে গাড়ি থেমে যায়, তখন মানুষ এসে ধরে ফেলে।’

এ বিষয়ে চরভদ্রাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রজিউল্লাহ খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্থানীয় জনতা আটক করে আমাদের খবর দিলে পাঁচ নারীকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। বর্তমানে তাঁরা পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।

‘তবে তাঁদের পরিচয় জানতে চাইলে এলোমেলো তথ্য দিচ্ছেন, স্বামীর নামও বলছেন না, ঠিকানা বলছেন হবিগঞ্জে, কিন্তু ভাষাগত মিল নেই। আমরা পরিচয় জানার চেষ্টা করছি এবং আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চট্টগ্রামে হ্যান্ডকাফসহ পালানো আসামিকে গ্রেপ্তার করল র‍্যাব

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
গ্রেপ্তার আসামি। ছবি: আজকের পত্রিকা
গ্রেপ্তার আসামি। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রাম নগরে এক মাস আগে পুলিশের কাছ থেকে হ্যান্ডকাফসহ পালিয়ে যাওয়া আসামি মো. মাহবুব আলমকে (৪৩) গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। আজ রোববার (২৬ অক্টোবর) ভোরে নগরের চান্দগাঁও থানার ফয়জুল্লা বলির বাড়ি এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব-৭-এর একটি টিম। র‍্যাব-৭-এর সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) এ আর এম মোজাফ্ফর হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গ্রেপ্তার মাহবুব নগরের ডবলমুরিং থানার পাঠানটুলি এলাকার জাফর সওদাগর বাড়ির মো. ফজল করিমের ছেলে।

র‍্যাব কর্মকর্তা মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, সিডিএমএস পর্যালোচনা করে আসামি মাহবুব আলমের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগরীর বিভিন্ন থানায় নাশকতা এবং মাদকের ছয়টি মামলার তথ্য পাওয়া যায়। গ্রেপ্তারের পর পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাঁকে ডবলমুরিং থানা-পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ২২ সেপ্টেম্বর দুপুরে নগরের পাঠানটুলি গায়েবি মসজিদের সামনে থেকে মাহাবুবকে হাতকড়া পরিয়ে পুলিশের গাড়িতে ওঠানো হয়। একপর্যায়ে উপস্থিত কয়েকজনের সঙ্গে পুলিশের তর্কাতর্কি শুরু হয়। এ সুযোগে মাহবুব ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মোবাইলে কথা বলার সময় ট্রেনের ধাক্কা, যুবকের মৃত্যু

নরসিংদী প্রতিনিধি
পলাশে ট্রেনের ধাক্কায় যুবকের মৃত্যু। ছবি: আজকের পত্রিকা
পলাশে ট্রেনের ধাক্কায় যুবকের মৃত্যু। ছবি: আজকের পত্রিকা

নরসিংদীর পলাশে ট্রেনের ধাক্কায় সৈকত চন্দ্র দে (৩০) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার ঘোড়াশাল ফ্লাগ স্টেশনের পাশে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত সৈকত চন্দ্র দে ঘোড়াশাল পাইকসা গ্রামের উত্তম কুমার দের ছেলে। তিনি প্রাণ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে চাকরি করতেন।

ঘোড়াশাল ফ্লাগ স্টেশনের বুকিং কর্মকর্তা ও পুলিশ জানায়, ওই যুবক রেললাইনের ওপর দিয়ে ফোনে কথা বলে হেঁটে যাচ্ছিলেন। এ সময় ঢাকাগামী উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা লেগে রেললাইন থেকে ছিটকে পড়েন তিনি। পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে ঘোড়াশাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মো. ইউসূফ মিয়া জানান, খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করেছে। ময়নাতদন্তের পর লাশটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

­যশোর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৭: ৫২
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

কাজ করে দিতে পাকা কলা ঘুষ নেওয়ার কথা স্বীকার করায় যশোর জেলা পরিষদের উচ্চমান সহকারী আলমগীর হোসেনকে বদলির আদেশ দিয়েছে দুদক।

আজ রোববার (২৬ অক্টোবর) যশোরে গণশুনানি চলাকালে দুদক কমিশনার মিঞা মুহাম্মদ আলী আকবার আজিজী এই আদেশ দেন। অবশ্য অভিযোগকারী রুস্তম আলীর দাবি, তাঁর কাছ থেকে পাকা কলা ছাড়াও ১০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন আলমগীর হোসেন। এরপর আরও ৬ লাখ টাকা দাবি করেছিলেন, যা না দেওয়ায় জেলা পরিষদের জমির ডিসিআর অন্যকে দিয়ে দেন ওই কর্মকর্তা।

‘রুখব দুর্নীতি, গড়ব দেশ; হবে সোনার বাংলাদেশ’ শীর্ষক এ গণশুনানি আজ যশোর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুনানিতে প্রধান অতিথি দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. আবদুল মোমেন বলেন, ‘যতই দিন যাচ্ছে, ততই দুর্নীতি বাড়ছে। দুর্নীতির ধরন চেঞ্জ হচ্ছে। মানুষ পারাপার করেও টাকা আদায় করা যায়, দুর্নীতি করা যায়—এই যশোরে এসে নতুন দুর্নীতির ধরন শুনলাম। স্বৈরাচারের দোসর হোক, মামলার আসামি হোক—তারা যশোরের রাজনীতির এলিটদের মাধ্যমে ভারতে পার হচ্ছে। এটা যদি হয়, তাহলে রাষ্ট্রের প্রত্যাশা বিঘ্নিত হবে।’

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে, সেটা খেয়াল রাখতে হবে। দুদক দুর্নীতি একেবারে নির্মূল করতে পারবে—এটা প্রত্যাশিত নয়, তবে কমানো যাবে। আমরা শুনানির মাধ্যমে জনগণকে কর্মকর্তাদের মুখোমুখি করে দিচ্ছি না। আমি দুই পক্ষের মধ্যে সম্পৃক্ততা তৈরি করছি। এতে দুর্নীতি কমানো সম্ভব হবে।’

দুর্নীতির কারণেই বিগত সরকারের পতন হয়েছে মন্তব্য করেন দুদক চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘সামনে নির্বাচন, সুষ্ঠু ও আনন্দঘন পরিবেশে নির্বাচন হবে, সেটায় সবার নিজ নিজ জায়গা থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। দেশটাকে ভালো রাখতে সৎ প্রার্থীকে বাছাই করতে হবে। আমরা যদি ১৫ বছরের ইতিহাস দেখি, সরকারের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছিল দুর্নীতি। বিগত সরকারের এই অবস্থা হওয়ার পেছনে ছিল দুর্নীতি। ফলে দুর্নীতিগ্রস্তকে বেছে নেবেন না। সেটিই হবে রাষ্ট্রের প্রতি সুবিচার। এই যশোর থেকে ন্যায়ের ও দুর্নীতিমুক্ত যাত্রাটা শুরু হবে।’

জেলা প্রশাসন ও জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সহযোগিতায় দুর্নীতি দমন কমিশন যশোরের আয়োজনে এ গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিতে বিশেষ অতিথি ছিলেন মিঞা মুহাম্মদ আলী আকবার আজিজী। শুনানি মডারেটর করেন জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম। শুনানিতে জেলার সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ৩৭টি দপ্তরের ৭৫টি অভিযোগের ওপর শুনানি গ্রহণ করা হয়। শুনানি শেষে কিছু বিষয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণ ও কিছু বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন দুদক চেয়ারম্যান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত