সাবিত আল হাসান, নারায়ণগঞ্জ
করোনাকালে খাদ্যসংকটে পড়ে সরকারি সহায়তা নম্বর ৩৩৩-এ কল দিয়েছিলেন ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। এই একটি ফোনকল যে জীবনে এমন ঝড় বয়ে আনবে তা ঘুণাক্ষরেও ভাবেননি তিনি। ত্রাণ চেয়ে উল্টো জরিমানা গুনতে হয়েছিল তাঁকে। ঘটনার এক বছর পরও সেই দুঃসহ স্মৃতি তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে নারায়ণগঞ্জের সেই ফরিদ উদ্দিনের পরিবারকে। সমাজে ছোট হয়েছেন, সেই সঙ্গে অবিশ্বাস থেকে দূরত্ব বেড়েছে আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে।
আজ শনিবার সরেজমিনে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের নাগবাড়ি এলাকায় গিয়ে কথা হয় ফরিদ উদ্দিনের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। বাড়ির প্রবেশপথে সরু গলি পেরিয়ে অসমাপ্ত চারতলা ভবনের ছাদে টিনশেডের দুটি কক্ষ। এখানেই বসবাস করে ফরিদ উদ্দিনের পরিবার। এই বাড়ির অন্যান্য ফ্লোরে ফরিদ উদ্দিনের ভাই-বোনদের অংশ রয়েছে।
স্বামী, স্ত্রী ও দুই ছেলে-মেয়ে নিয়ে ছোট একটি পরিবার। ছেলে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। ফরিদ উদ্দিন একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। বড় মেয়ে সরকারি মহিলা কলেজে স্নাতক শ্রেণিতে পড়ছেন। ছেলের নামে তিন মাস অন্তর ২ হাজার ২০০ টাকা সরকারি ভাতা আসে। বাড়ির ছাদে কিছু কবুতর পালন করে সংসারে বাড়তি আয়ের চেষ্টা তাঁদের। মোটকথা ফরিদের পরিবার সমাজে সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
ফরিদ উদ্দিনকে ওই সময় বাড়িতে পাওয়া যায়নি। তিনি রয়েছেন পুরোনো কর্মস্থলে—হোসিয়ারি কারখানায় কাটিংয়ের কাজ করেন এখনো। স্ট্রোক করার পর থেকে ভারী কাজ করতে পারেন না। প্রতি মাসে তাঁর রোজগার ১২ হাজার টাকা। উত্তরাধিকারসূত্রে চারতলা বাড়ির চতুর্থ তলায় মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়েছে বলে বাড়িভাড়ার খরচ থেকে বেঁচে গেছেন।
আলাপকালে ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদের স্ত্রী উম্মে কুলসুম (৫০) হাসিমুখে বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ ভালো রাখছে। খেয়েপরে বেঁচে আছি। উনি (ফরিদ উদ্দিন) হোসিয়ারিতে কাজ করে। যা বেতন পায় তাতে চালায় আল্লাহ। মেয়েটা অনার্স থার্ড ইয়ারে পড়তাছে। ওর একটা চাকরি হইলে ভালো হইত। মানুষের কাছে হাত পাইতা কিছু নিব না। যা আল্লাহ খাওয়ায় পরায় ওতেই সন্তুষ্ট।’
সরকারি ত্রাণ চাওয়ায় উল্টো জরিমানা দেওয়ার পর কোনো সহায়তা এসেছিল জানতে চাইলে উম্মে কুলসুম বলেন, ‘ঢাকা থেকে এক ছাত্রনেতা (গোলাম রাব্বানী) আইসা সহায়তা করল। আর খন্দকার কাউন্সিলরের লোকজনও কিছু চাল-ডাল দিসিলো। সব মিলায়া তিন মাসের খাবার হইসিল আমাদের। এরপর আর কেউ আমাগো সহায়তা করে নাই। কিন্তু এই ঘটনার পর আমার আত্মীয়স্বজনেরা মনে করছে আমাগো লাখ লাখ টাকা দিয়া গেছে মাইনষে। এসব নিয়া সম্পর্ক খারাপ হইসে। অথচ আমরা জরিমানার টাকা ছাড়া আর তেমন কিছুই পাই নাই। তার ওপর সমাজের লোকলজ্জা তো আছেই।’
এমন ঘটনায় কোনো আক্ষেপ বা ক্ষোভ আছে কি না, জানতে চাইতেই চোখ ভিজে আসে উম্মে কুলসুমের। কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার কারও প্রতি ক্ষোভ নাই। কপালে ছিল তাই হইসে। তয় আগে যদি জানতাম ফোন দিলে এত কিছু হইব, তাইলে সরকারের কাছে হাত পাততাম না। একটা ফোনে কত কিছু ঘইটা গেল।’
উল্লেখ্য, গত বছরের ২০ মে ৩৩৩ নম্বরে কল করে খাদ্যসহায়তা চান ফরিদ উদ্দিন। খাদ্যসহায়তা নিয়ে তাঁর বাড়িতে যান তৎকালীন ইউএনও আরিফা জহুরা। কিন্তু চারতলা বাড়ি দেখে ফরিদ উদ্দিনকে অবস্থাপন্ন ভেবে উল্টো জরিমানা করেন। ফোন করে হয়রানি করার দায়ে শাস্তি হিসেবে দুই দিনের মধ্যে ১০০ গরিব লোককে খাদ্য সহায়তার নির্দেশ দেন। ইউএনওর এমন নির্দেশে ফরিদ সেই রাতেই দুবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। ২২ মে স্ত্রীর স্বর্ণের গয়না বন্ধক রেখে এবং ধারদেনা করে ৬৫ হাজার টাকার ত্রাণসহায়তা তুলে দেন ইউএনওর হাতে।
এ ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফরিদ উদ্দিনকে ত্রাণের অর্থ ফেরত দেওয়া হয়। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদনে নির্দোষ উল্লেখ করা হয় ইউএনও আরিফা জহুরাকে। তবে ভুক্তভোগী ফরিদ উদ্দিনের পরিবারকে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন আর্থিকভাবে সহায়তা করে।
করোনাকালে খাদ্যসংকটে পড়ে সরকারি সহায়তা নম্বর ৩৩৩-এ কল দিয়েছিলেন ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। এই একটি ফোনকল যে জীবনে এমন ঝড় বয়ে আনবে তা ঘুণাক্ষরেও ভাবেননি তিনি। ত্রাণ চেয়ে উল্টো জরিমানা গুনতে হয়েছিল তাঁকে। ঘটনার এক বছর পরও সেই দুঃসহ স্মৃতি তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে নারায়ণগঞ্জের সেই ফরিদ উদ্দিনের পরিবারকে। সমাজে ছোট হয়েছেন, সেই সঙ্গে অবিশ্বাস থেকে দূরত্ব বেড়েছে আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে।
আজ শনিবার সরেজমিনে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের নাগবাড়ি এলাকায় গিয়ে কথা হয় ফরিদ উদ্দিনের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। বাড়ির প্রবেশপথে সরু গলি পেরিয়ে অসমাপ্ত চারতলা ভবনের ছাদে টিনশেডের দুটি কক্ষ। এখানেই বসবাস করে ফরিদ উদ্দিনের পরিবার। এই বাড়ির অন্যান্য ফ্লোরে ফরিদ উদ্দিনের ভাই-বোনদের অংশ রয়েছে।
স্বামী, স্ত্রী ও দুই ছেলে-মেয়ে নিয়ে ছোট একটি পরিবার। ছেলে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। ফরিদ উদ্দিন একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। বড় মেয়ে সরকারি মহিলা কলেজে স্নাতক শ্রেণিতে পড়ছেন। ছেলের নামে তিন মাস অন্তর ২ হাজার ২০০ টাকা সরকারি ভাতা আসে। বাড়ির ছাদে কিছু কবুতর পালন করে সংসারে বাড়তি আয়ের চেষ্টা তাঁদের। মোটকথা ফরিদের পরিবার সমাজে সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
ফরিদ উদ্দিনকে ওই সময় বাড়িতে পাওয়া যায়নি। তিনি রয়েছেন পুরোনো কর্মস্থলে—হোসিয়ারি কারখানায় কাটিংয়ের কাজ করেন এখনো। স্ট্রোক করার পর থেকে ভারী কাজ করতে পারেন না। প্রতি মাসে তাঁর রোজগার ১২ হাজার টাকা। উত্তরাধিকারসূত্রে চারতলা বাড়ির চতুর্থ তলায় মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়েছে বলে বাড়িভাড়ার খরচ থেকে বেঁচে গেছেন।
আলাপকালে ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদের স্ত্রী উম্মে কুলসুম (৫০) হাসিমুখে বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ ভালো রাখছে। খেয়েপরে বেঁচে আছি। উনি (ফরিদ উদ্দিন) হোসিয়ারিতে কাজ করে। যা বেতন পায় তাতে চালায় আল্লাহ। মেয়েটা অনার্স থার্ড ইয়ারে পড়তাছে। ওর একটা চাকরি হইলে ভালো হইত। মানুষের কাছে হাত পাইতা কিছু নিব না। যা আল্লাহ খাওয়ায় পরায় ওতেই সন্তুষ্ট।’
সরকারি ত্রাণ চাওয়ায় উল্টো জরিমানা দেওয়ার পর কোনো সহায়তা এসেছিল জানতে চাইলে উম্মে কুলসুম বলেন, ‘ঢাকা থেকে এক ছাত্রনেতা (গোলাম রাব্বানী) আইসা সহায়তা করল। আর খন্দকার কাউন্সিলরের লোকজনও কিছু চাল-ডাল দিসিলো। সব মিলায়া তিন মাসের খাবার হইসিল আমাদের। এরপর আর কেউ আমাগো সহায়তা করে নাই। কিন্তু এই ঘটনার পর আমার আত্মীয়স্বজনেরা মনে করছে আমাগো লাখ লাখ টাকা দিয়া গেছে মাইনষে। এসব নিয়া সম্পর্ক খারাপ হইসে। অথচ আমরা জরিমানার টাকা ছাড়া আর তেমন কিছুই পাই নাই। তার ওপর সমাজের লোকলজ্জা তো আছেই।’
এমন ঘটনায় কোনো আক্ষেপ বা ক্ষোভ আছে কি না, জানতে চাইতেই চোখ ভিজে আসে উম্মে কুলসুমের। কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার কারও প্রতি ক্ষোভ নাই। কপালে ছিল তাই হইসে। তয় আগে যদি জানতাম ফোন দিলে এত কিছু হইব, তাইলে সরকারের কাছে হাত পাততাম না। একটা ফোনে কত কিছু ঘইটা গেল।’
উল্লেখ্য, গত বছরের ২০ মে ৩৩৩ নম্বরে কল করে খাদ্যসহায়তা চান ফরিদ উদ্দিন। খাদ্যসহায়তা নিয়ে তাঁর বাড়িতে যান তৎকালীন ইউএনও আরিফা জহুরা। কিন্তু চারতলা বাড়ি দেখে ফরিদ উদ্দিনকে অবস্থাপন্ন ভেবে উল্টো জরিমানা করেন। ফোন করে হয়রানি করার দায়ে শাস্তি হিসেবে দুই দিনের মধ্যে ১০০ গরিব লোককে খাদ্য সহায়তার নির্দেশ দেন। ইউএনওর এমন নির্দেশে ফরিদ সেই রাতেই দুবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। ২২ মে স্ত্রীর স্বর্ণের গয়না বন্ধক রেখে এবং ধারদেনা করে ৬৫ হাজার টাকার ত্রাণসহায়তা তুলে দেন ইউএনওর হাতে।
এ ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফরিদ উদ্দিনকে ত্রাণের অর্থ ফেরত দেওয়া হয়। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদনে নির্দোষ উল্লেখ করা হয় ইউএনও আরিফা জহুরাকে। তবে ভুক্তভোগী ফরিদ উদ্দিনের পরিবারকে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন আর্থিকভাবে সহায়তা করে।
রাজশাহীতে জুলাই অভ্যুত্থানের এক বছরের বেশি সময় পর একটি মামলা হয়েছে। মামলায় ১৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ৫০০ থেকে ৭০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। সময়ের ব্যবধান ছাড়াও এজাহারভুক্ত আসামিদের পরিচয় এ মামলা নিয়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। আসামিদের অনেকেই ‘পয়সাওয়ালা ব্যক্তি’ হিসেবে পরিচিত হওয়ায় অভিযোগ...
৫ ঘণ্টা আগেমৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের মণিপুরী ললিতকলা একাডেমি। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর এই প্রতিষ্ঠান ঘিরে নানা অনিয়ম আর দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। একাডেমিতে মৈতৈ, বিষ্ণুপ্রিয়া এবং পাঙন—এই তিন সম্প্রদায়ের সমান সুযোগ-সুবিধা থাকার কথা থাকলেও শুধু বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরীদের প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। এতে বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ রয়েছে...
৫ ঘণ্টা আগেরংপুরের তারাগঞ্জে ভূমি অফিসের সহায়ক রশিদুজ্জামান বিপ্লবের ঘুষ নেওয়ার ভিডিও দিয়ে জিম্মি করে চাঁদাবাজির অভিযোগকে ঘিরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাল্টাপাল্টি বিবৃতিতে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে ছাত্রদল ও জামায়াত। ইতিমধ্যে অভিযুক্ত কর্মচারীকে অন্যত্র বদলি...
৫ ঘণ্টা আগেপিরোজপুরে দুর্বৃত্তদের হামলায় জুজখোলা সম্মিলিত বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিপুল মিত্র (৫০) গুরুতর আহত হয়েছেন। মুখোশধারী হামলাকারীরা তাঁর দুই পা ও ডান হাত ভেঙে দেয় বলে জানা গেছে। তাঁর সঙ্গে থাকা সহকারী শিক্ষক অসীম কুমারও (৪৬) আহত হয়েছেন।
৫ ঘণ্টা আগে