সিয়াম সাহারিয়া, নওগাঁ
আলুর ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে সরকার কৃষকদের জন্য নওগাঁয় তৈরি করেছে আলু সংরক্ষণের অহিমায়িত মডেল ঘর। তবে মাঠপর্যায়ে বাস্তবতা ভিন্ন—এই সরকারি প্রকল্পটি এখন কৃষকের জন্য কোনো কাজেই আসছে না। এসব ঘরে রাখা আলু সময়ের আগেই পচে নষ্ট হয়ে গেছে, ফলে অর্থনৈতিকভাবে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকেরা।
জানা গেছে, বদলগাছী, মহাদেবপুর, পত্নীতলা, নিয়ামতপুরসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ‘আলুর বহুমুখী ব্যবহার, সংরক্ষণ ও বিপণন উন্নয়ন প্রকল্প’ থেকে ৩৬টি ঘর দেওয়া হয়। প্রতিটি ঘর তৈরি করতে ব্যয় হয়েছে ২ লাখ ৯০ হাজার টাকা। এতে মোট ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা। ঘরগুলো বাঁশ, কাঠ, টিন, আরসিসি পিলার ও ককশিট দিয়ে তৈরি। একেকটি ঘরে ১০-১৫ জন কৃষক ২৫-৩০ টন আলু চার মাস পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে পারবেন—এমনটিই বলা হয়েছিল।
সরেজমিন দেখা গেছে, নির্জন জায়গায় অপরিকল্পিতভাবে তৈরি ঘরগুলো ব্যবহার করা যাচ্ছে না। বেশির ভাগই পড়ে রয়েছে অচল অবস্থায়। ঘরে নেই তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা। ফলে ভেতরে প্রচণ্ড গরমে আলুতে দ্রুত পচন ধরে। কোথাও আবার নিরাপত্তার অভাব, চুরি হওয়ার ভয়ে অনেক চাষি আলু রাখেননি এসব ঘরে।
চাষিরা বলছেন, এ প্রকল্পে সরকার শুধু ঘর বানিয়েই দায় শেষ করেছে, কার্যকারিতা নিয়ে ছিল না কোনো তদারকি বা পরিকল্পনা।
বদলগাছীর কৃষক সানোয়ার হোসেন গত মৌসুমে এই ঘরের মাধ্যমে আলু সংরক্ষণ করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম ঘরে রেখে পরে ভালো দামে আলু বিক্রি করব। কিন্তু ঘরে রাখা ৩০০ মণের মধ্যে ১০০ মণই পচে গেছে।’ ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা।
শুধু সানোয়ার নন, গ্রামের আরও কয়েকজন কৃষক এমন ক্ষতির মুখে পড়েছেন। অনেকেই বলছেন, ঘরের ভেতরে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা ঠিক নেই, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের কোনো সুযোগও নেই। ফলে কিছুদিন পরই আলুতে পচন ধরে।
কৃষক ওয়াহেদ আলী বলেন, ‘১৩০ মণ আলু রেখেছিলাম, অনেকটাই নষ্ট হয়ে গেছে। কাটিনাল জাতের আলু একটাও বাঁচে নেই। এখন লোকসান দিতে দিতে মাথায় হাত পড়েছে।’ বৈকুণ্ঠপুরের চাষি রিফাত হোসেন বলেন, ঘর নির্মাণের পর থেকে একইভাবে বারবার আলু পচে নষ্ট হয়ে গেছে। যেভাবে আলু রাখতে বলা হয়েছিল, সেভাবেই রেখেছিলাম; কিন্তু কাজ হয়নি। হুগলবাড়ী গ্রামের কৃষক মামুন হোসেন বলেন, ‘ঘরের লোকেশন এমন জায়গায়, যেখানে রাতে পাহারা দেওয়া যায় না। আলু চুরি হওয়ার ভয়েই অনেক কৃষক ঘর ব্যবহার করেননি।’
জানতে চাইলে তিলকপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য জাহিদুল ইসলামের নামে ডাকাহার গ্রামে একটি ঘর বরাদ্দ রয়েছে। তিনি বলেন, ‘প্রথম বছর কিছুটা লাভ হলেও এবার আমাদের দলের ৩০০ মণ আলুর একাংশ নষ্ট হয়ে যায়। দামও নেই, তাই বিক্রিও হচ্ছে না।’
মাঠপর্যায়ের কৃষকেরা মনে করেন, প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে স্থানীয় বাস্তবতা, আবহাওয়া ও কৃষকের আর্থসামাজিক অবস্থা বিবেচনা না করায় এই ঘর এখন বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কৃষকেরা জানান, উৎপাদন খরচ বাড়লেও ন্যায্য দাম না পাওয়ায় এবং সংরক্ষণের সমস্যায় তাঁরা লোকসানের মুখে পড়ছেন বারবার।
নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি বছর জেলায় ২৫ হাজার ৯৪০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৫ লাখ টন। অথচ জেলার সাতটি হিমাগারে ধারণক্ষমতা মাত্র ৪৬ হাজার ৫৩০ টন। ফলে বিপুল পরিমাণ আলু হিমাগারে রাখা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে নওগাঁ জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা সোহাগ সরকার বলেন, ঘরগুলোতে আলু রেখে অনেক কৃষক লাভবান হয়েছেন। এবারে দু-এক জায়গায় কিছু আলু নষ্ট হয়েছে, তবে এর পেছনে আবহাওয়ার প্রভাবও রয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এমন ঘরে সর্বোচ্চ চার মাস পর্যন্ত আলু ভালো থাকে। তবে পচনের শুরুতেই আলু সরিয়ে ফেললে ক্ষতি এড়ানো যেত। তিনি আরও বলেন, প্রাকৃতিকভাবে আলু সংরক্ষণের পুরোনো পদ্ধতির ভিত্তিতেই প্রকল্পের মাধ্যমে মডেল ঘরগুলো তৈরি করা হয়। ডিজাইনেও বৈদ্যুতিক বাতাস বা আলোর ব্যবস্থা ছিল না। এ জন্য চাষিদের বলা হয়েছিল, নিয়মিত দেখভাল করতে হবে। কিন্তু কেউ কেউ সেই নির্দেশনা মানেননি বলেই পচনের ঘটনা ঘটেছে।
আলুর ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে সরকার কৃষকদের জন্য নওগাঁয় তৈরি করেছে আলু সংরক্ষণের অহিমায়িত মডেল ঘর। তবে মাঠপর্যায়ে বাস্তবতা ভিন্ন—এই সরকারি প্রকল্পটি এখন কৃষকের জন্য কোনো কাজেই আসছে না। এসব ঘরে রাখা আলু সময়ের আগেই পচে নষ্ট হয়ে গেছে, ফলে অর্থনৈতিকভাবে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকেরা।
জানা গেছে, বদলগাছী, মহাদেবপুর, পত্নীতলা, নিয়ামতপুরসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ‘আলুর বহুমুখী ব্যবহার, সংরক্ষণ ও বিপণন উন্নয়ন প্রকল্প’ থেকে ৩৬টি ঘর দেওয়া হয়। প্রতিটি ঘর তৈরি করতে ব্যয় হয়েছে ২ লাখ ৯০ হাজার টাকা। এতে মোট ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা। ঘরগুলো বাঁশ, কাঠ, টিন, আরসিসি পিলার ও ককশিট দিয়ে তৈরি। একেকটি ঘরে ১০-১৫ জন কৃষক ২৫-৩০ টন আলু চার মাস পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে পারবেন—এমনটিই বলা হয়েছিল।
সরেজমিন দেখা গেছে, নির্জন জায়গায় অপরিকল্পিতভাবে তৈরি ঘরগুলো ব্যবহার করা যাচ্ছে না। বেশির ভাগই পড়ে রয়েছে অচল অবস্থায়। ঘরে নেই তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা। ফলে ভেতরে প্রচণ্ড গরমে আলুতে দ্রুত পচন ধরে। কোথাও আবার নিরাপত্তার অভাব, চুরি হওয়ার ভয়ে অনেক চাষি আলু রাখেননি এসব ঘরে।
চাষিরা বলছেন, এ প্রকল্পে সরকার শুধু ঘর বানিয়েই দায় শেষ করেছে, কার্যকারিতা নিয়ে ছিল না কোনো তদারকি বা পরিকল্পনা।
বদলগাছীর কৃষক সানোয়ার হোসেন গত মৌসুমে এই ঘরের মাধ্যমে আলু সংরক্ষণ করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম ঘরে রেখে পরে ভালো দামে আলু বিক্রি করব। কিন্তু ঘরে রাখা ৩০০ মণের মধ্যে ১০০ মণই পচে গেছে।’ ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা।
শুধু সানোয়ার নন, গ্রামের আরও কয়েকজন কৃষক এমন ক্ষতির মুখে পড়েছেন। অনেকেই বলছেন, ঘরের ভেতরে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা ঠিক নেই, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের কোনো সুযোগও নেই। ফলে কিছুদিন পরই আলুতে পচন ধরে।
কৃষক ওয়াহেদ আলী বলেন, ‘১৩০ মণ আলু রেখেছিলাম, অনেকটাই নষ্ট হয়ে গেছে। কাটিনাল জাতের আলু একটাও বাঁচে নেই। এখন লোকসান দিতে দিতে মাথায় হাত পড়েছে।’ বৈকুণ্ঠপুরের চাষি রিফাত হোসেন বলেন, ঘর নির্মাণের পর থেকে একইভাবে বারবার আলু পচে নষ্ট হয়ে গেছে। যেভাবে আলু রাখতে বলা হয়েছিল, সেভাবেই রেখেছিলাম; কিন্তু কাজ হয়নি। হুগলবাড়ী গ্রামের কৃষক মামুন হোসেন বলেন, ‘ঘরের লোকেশন এমন জায়গায়, যেখানে রাতে পাহারা দেওয়া যায় না। আলু চুরি হওয়ার ভয়েই অনেক কৃষক ঘর ব্যবহার করেননি।’
জানতে চাইলে তিলকপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য জাহিদুল ইসলামের নামে ডাকাহার গ্রামে একটি ঘর বরাদ্দ রয়েছে। তিনি বলেন, ‘প্রথম বছর কিছুটা লাভ হলেও এবার আমাদের দলের ৩০০ মণ আলুর একাংশ নষ্ট হয়ে যায়। দামও নেই, তাই বিক্রিও হচ্ছে না।’
মাঠপর্যায়ের কৃষকেরা মনে করেন, প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে স্থানীয় বাস্তবতা, আবহাওয়া ও কৃষকের আর্থসামাজিক অবস্থা বিবেচনা না করায় এই ঘর এখন বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কৃষকেরা জানান, উৎপাদন খরচ বাড়লেও ন্যায্য দাম না পাওয়ায় এবং সংরক্ষণের সমস্যায় তাঁরা লোকসানের মুখে পড়ছেন বারবার।
নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি বছর জেলায় ২৫ হাজার ৯৪০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৫ লাখ টন। অথচ জেলার সাতটি হিমাগারে ধারণক্ষমতা মাত্র ৪৬ হাজার ৫৩০ টন। ফলে বিপুল পরিমাণ আলু হিমাগারে রাখা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে নওগাঁ জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা সোহাগ সরকার বলেন, ঘরগুলোতে আলু রেখে অনেক কৃষক লাভবান হয়েছেন। এবারে দু-এক জায়গায় কিছু আলু নষ্ট হয়েছে, তবে এর পেছনে আবহাওয়ার প্রভাবও রয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এমন ঘরে সর্বোচ্চ চার মাস পর্যন্ত আলু ভালো থাকে। তবে পচনের শুরুতেই আলু সরিয়ে ফেললে ক্ষতি এড়ানো যেত। তিনি আরও বলেন, প্রাকৃতিকভাবে আলু সংরক্ষণের পুরোনো পদ্ধতির ভিত্তিতেই প্রকল্পের মাধ্যমে মডেল ঘরগুলো তৈরি করা হয়। ডিজাইনেও বৈদ্যুতিক বাতাস বা আলোর ব্যবস্থা ছিল না। এ জন্য চাষিদের বলা হয়েছিল, নিয়মিত দেখভাল করতে হবে। কিন্তু কেউ কেউ সেই নির্দেশনা মানেননি বলেই পচনের ঘটনা ঘটেছে।
রাঙামাটির সাজেকে চান্দের গাড়ি দুর্ঘটনায় ছাত্রী নিহতের ঘটনায় আগামীকাল বৃহস্পতিবার খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. নাজমুল সাদাত এ তথ্য জানিয়েছেন।
৩৯ মিনিট আগেচাঁদপুর পৌর কবরস্থানে দাফনের জন্য জীবিত নবজাতক রেখে যাওয়া এবং পরে মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তার হন শহরের তালতলায় দি ইউনাইটেড হাসপাতালের ওয়ার্ড বয় ফারুক হোসেন গাজী (৪৫)। এই ঘটনায় হাসপাতালটির কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। তবে ভর্তি থাকা রোগীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অন্য স্থানে সেবার ব্যবস্থা করার
১ ঘণ্টা আগেকক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় অপহরণের শিকার নারীকে উদ্ধার করতে গিয়ে অস্ত্র-গুলিসহ রমজান আলী (৩৫) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় অপহরণের শিকার নারীকে উদ্ধার করা হয়।
১ ঘণ্টা আগেনারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে চাঁদাবাজি ও প্রবাসীদের মারধরের অভিযোগে তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) ১২ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার দুপুরে উপজেলার কাঞ্চন পৌরসভার হাবিবনগর এলাকা ও রূপগঞ্জ ইউনিয়নের ফজুর বাড়ির মোড় থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
১ ঘণ্টা আগে