Ajker Patrika

‘তাণ্ডব’ সিনেমার শো চলার সময় ছায়াবাণী হলে দর্শকদের ভাঙচুর, টাকা লুট

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ জুন ২০২৫, ২৩: ২২
কারিগরি ত্রুটি দেখা দিলে ময়মনসিংহের ছায়াবাণী সিনেমা হলে ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছে দর্শকেরা। ছবি: সংগৃহীত
কারিগরি ত্রুটি দেখা দিলে ময়মনসিংহের ছায়াবাণী সিনেমা হলে ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছে দর্শকেরা। ছবি: সংগৃহীত

শাকিব খানের আলোচিত তাণ্ডব সিনেমার শো চলার সময় ময়মনসিংহ সদরের ছায়াবাণী হলে ভাঙচুর ও টাকা লুটের ঘটনা ঘটেছে। আজ শনিবার বিকেলের এ ঘটনা ঘটে। কারিগরি ত্রুটিতে শো বিঘ্নিত হলে উত্তেজিত দর্শকরা এ কাণ্ড ঘটায়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের পর আবার শো চালু হয়।

শিক্ষা সংস্কৃতির নগরী ময়মনসিংহে অজন্তা, ছায়াবাণী, অলকা, পূরবী ও সেনা অডিটোরিয়াম এই পাঁচটি সিনেমা হল ছিল। আশির দশকে এসব হলগুলো ছিল দর্শক প্রিয়। এক হল থেকে অন্য হলে মানুষ ছুটে চলতেন পছন্দের সিনেমা দেখতে। কিন্তু দিন দিন মানহীন সিনেমা, দর্শক খরা ও ২০০২ সালে সিনেমা হলে বোমা হলে তা বন্ধের প্রতিযোগিতা শুরু হয়।

এরপর পর্যায়ক্রমে বন্ধ হয়ে যায় অজন্তা, অলকা ও সেনা অডিটোরিয়াম। এরপর শহরে চালু ছিল পূরবী ও ছায়াবাণী সিনেমা হল। বেশ কিছুদিন ধরে দর্শক খরা নিয়েই খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছিল এই হল দুটি। কিন্তু ব্যবসায়িক মন্দাভাবের কারণে পূরবী সিনেমা হল ভেঙে নির্মাণ করা হচ্ছে বহুতল ভবন। ৫-৬ মাস ধরে পূরবী সিনেমা হল ভাঙার কার্যক্রম চলছে।

টিকে থাকা ছায়াবাণী হলেও বছরের দুই ঈদ ছাড়া তেমন দর্শক হয়নি বললেই চলে। শাকিব খানের সুপার হিট তাণ্ডব ছবি দেখতে ঈদের দিন সকাল থেকেই দর্শকদের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। আসনসংখ্যার তুলনায় দর্শক বেশি হওয়ায় শো চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে।

সাড়ে ৭শ আসনসংখ্যার দু’তলা হলটিতে শনিবার বিকেল সাড়ে তিনটার শোয়ের শেষ সময়ে কারিগরি ত্রুটির কারণে সিনেমা বন্ধ হয়ে দর্শকেরা উত্তেজিত হয়ে হলের ভেতরে বাইরে ভাঙচুর করে। এতে বেশ কয়েকটি আসন, চেয়ার, পোস্টার, টিকিট কাউন্টারের দরজা জানালা ভাঙা হয়। পরে সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৭টা পর্যন্ত শো বন্ধ থাকে।

দর্শক আল-আমীন হোসেন বলেন, ‘বিভাগের মধ্যে এই হলটি মোটামুটি ভালো। তাই আমি শেরপুর থেকে এসেছি ছবি দেখতে। সবকিছু ঠিকঠাক ছাড়া ঈদের মধ্যে কেমনে কর্তৃপক্ষ সিনেমা চালানোর সিদ্ধান্ত নিল। টিকিট কাটতে গিয়ে পড়তে হয়েছে সমস্যায়, হলের ভেতরে পানি। ছবি চলার সময়ে শেষ না হতেই বন্ধ হয়ে যাওয়া, এটা কোন ভাবেই মানা যায় না। তাই দর্শকেরা ভাঙচুর করেছে।’

হাসান জাকির নামে আরেক দর্শক বলেন, হলের সামনে অপেক্ষমাণ শত শত দর্শক। শো শেষ না হলেও কর্তৃপক্ষ অনবরত টিকিট ছাড়ছেন। এটা কোন নিয়মের মধ্যে পড়ে না। ছবি চলাকালীন সময়ে কখনো সাউন্ড নেই, আবার কখনো ডিসপ্লে বন্ধ হয়ে যাওয়া খুবই বিরক্তিকর। সুপার হিট ছবি তাণ্ডব। এই জন্য দর্শকেরা উত্তেজিত।

হলের ক্যাশিয়ার আল-আমীন শেখ বলেন, ‘সমস্যা বলে কয়ে আসে না। কিন্তু দর্শকেরা এমন করবে তা আমাদের কল্পনারও বাইরে। সমস্যা হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে সমাধানও হয়েছে। কিন্তু দুতলা থেকে দর্শকেরা যেমনে একের পর এক আসন নিচে ছুড়ে মারছে এতে দুর্ঘটনাও ঘটতে পারত। তারা চেয়ার, ক্যাশ কাউন্টার ভাঙচুর করে টাকাও লুট করেছে। এমন হলে হল চালানো যাবে না।’

তিন নম্বর ফাঁড়ি পুলিশের এএসআই মো.রাসেল বলেন, ‘ভাঙচুরের খবর পেয়ে দ্রুত এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। অতিরিক্ত আবেগের কারণে এমন হয়েছে। কোন কিছুর সমস্যা হতেই পারে, তবে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া ঠিক না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত