Ajker Patrika

মহাসড়কে ভাগাড়, ভোগান্তি

  • ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে কয়েক শ ফুটজুড়ে আবর্জনার স্তূপ
  • দুর্গন্ধের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে মানুষ; এলাকার পরিবেশ হচ্ছে দূষিত
  • পৌরসভা কর্তৃপক্ষ বলছে, বরাদ্দের অভাবে ডাম্পিং স্টেশন হচ্ছে না
অরূপ রায়, সাভার 
সাভারের আমিনবাজারে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে আবর্জনার স্তূপ। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাভারের আমিনবাজারে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে আবর্জনার স্তূপ। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা থেকে পাটুরিয়া ফেরিঘাটে যাওয়ার পথে গাবতলী পার হলেই চোখে পড়ে প্লাস্টিক, পচা খাবার আর নানা রকম বর্জ্যের স্তূপ। সাভারের আমিনবাজার পাওয়ার গ্রিড সাবস্টেশনের সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের একপাশের কয়েক শ ফুটজুড়ে ছড়িয়ে থাকা ওই আবর্জনার স্তূপ থেকে ছড়ানো দুর্গন্ধ এলাকার পরিবেশ দূষিত করছে। এতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে ওই এলাকার মানুষ।

শুধু আমিনবাজারেই নয়, আমিনবাজার থেকে ধামরাইয়ের কেলিয়া পর্যন্ত প্রায় ৩০ কিলোমিটার এলাকার বিভিন্ন স্থানে মহাসড়কের দুই পাশে নিয়মিত আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ঘুরে দেখা গেছে, আমিনবাজার পাওয়ার গ্রিড সাবস্টেশনের সামনে প্রায় ২০০ মিটারজুড়ে মহাসড়কের ধারে স্তূপাকারে আবর্জনা জমে আছে। পাওয়ার গ্রিড সাবস্টেশন থেকে বলিয়ারপুর বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকায় অন্তত ১০টি স্থানে মহাসড়কের উভয় পাশে আবর্জনার স্তূপ চোখে পড়ে। আবর্জনা ফেলা হচ্ছে সাভার বাসস্ট্যান্ডের অদূরে মডেল মসজিদের পাশে, মাশরুম উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের সামনে মহাসড়কের ওপরে এবং বাংলাদেশ বেতারের মহাশক্তি প্রেরণকেন্দ্রের কাছে মহাসড়কের পাশে। এ ছাড়া ধামরাইয়ের কেলিয়ায় মহাসড়কের পাশে প্রায় ২০০ মিটারজুড়ে আবর্জনা ফেলা হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিন ভোর থেকে রাত পর্যন্ত সাভার ও ধামরাই পৌরসভা এবং আমিনবাজার ইউনিয়নের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা রিকশাভ্যানে করে এনে আবর্জনা ফেলে যায়। এ ছাড়া মাঝেমধ্যে রাজধানী থেকেও ট্রাকে করে আবর্জনা এনে পাওয়ার গ্রিড সাবস্টেশনের সামনে ফেলা হয়। প্রায় এক বছর ধরে এই আবর্জনা ফেলা হলেও সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর এবং উপজেলা প্রশাসন থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

আমিনবাজার পাওয়ার গ্রিড সাবস্টেশনের সামনে মো. শাজাহানের ভাতের হোটেল। হোটেলটির উল্টো পাশের টিমটেক্স গ্রুপের পোশাক কারখানা ও গ্রিডের শ্রমিকসহ অনেক যানবাহন শ্রমিকেরা দুপুরের খাবার খেতেন ওই হোটেলে। হোটেলমালিক বলছেন, সাত মাস ধরে হোটেলের পাশে মহাসড়কের ধারে আবর্জনা ফেলার পর থেকে ক্রেতা কমে গেছে।

হোটেলমালিক শাজাহান বলেন, ‘সাত মাস আগে প্রতিদিন গড়ে ১০-১২ হাজার টাকা বিক্রি হতো। আবর্জনা ফেলার পর থেকে গড়ে প্রতিদিন ২-৩ হাজার টাকার বেশি বিক্রি হয় না। দুর্গন্ধের কারণে লোকজন আসে না।’

আমিনবাজার ইউনিয়নের ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পরিচ্ছন্নতাকর্মী মো. সম্রাট বলেন, ‘আমাগো ইউনিয়নে ময়লা ফেলার কোনো জায়গা নাই। তাই এইহানে (পাওয়ার গ্রিড সাবস্টেশনের সামনে) সড়কের পাশে ময়লা ফালাই।’

মাশরুম উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের পাশের বিপণিবিতান সিটি সেন্টারের ব্যবসায়ী নাজমুল হোসেন বলেন, সড়কে জমে থাকা আবর্জনা থেকে ছড়ানো দুর্গন্ধের কারণে ফুটপাত দিয়ে হাঁটা যায় না। পৌরসভাকে বারবার বলার পরেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

ধামরাইয়ের কেলিয়ায় মহাসড়কের পাশে আবর্জনা ফেলার বিষয়ে জানতে চাইলে ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও ধামরাই পৌরসভার প্রশাসক মামনুন আহমেদ অনীক বলেন, ধামরাই পৌরসভার নিজস্ব কোনো ডাম্পিংস্টেশন নেই। জনমানবহীন এলাকায় ডাম্পিংস্টেশন করার চেষ্টা আছে। কিন্তু বরাদ্দের অভাবে তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই অনেকটা নিরুপায় হয়েই কেলিয়ায় সড়কের পাশে আবর্জনা ফেলতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ঢাকা সড়ক সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. সাইফুদ্দিন বলেন, ‘গাবতলী পার হলেই ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশেই পাহাড়সম আবর্জনার স্তূপ। এ ছাড়া অন্যান্য স্থানেও আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। এই আবর্জনা নিয়ে আমরা খুবই বিব্রত।’ তিনি বলেন, ‘উপজেলা প্রশাসনকে বারবার চিঠি দেওয়ার পরেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। ভবিষ্যতে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে কোনো বৈঠকে বিষয়টি তুলব। যাতে এর একটা সুরাহা হয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় মর‍াল এফেক্ট পড়েছে, তবে সেনাবাহিনী ন্যায়ের পক্ষে অটল: সেনাসদর

ট্রাইব্যুনালের গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত ১৫ সেনা কর্মকর্তা হেফাজতে: সেনাসদর

‘গোপনে’ দুই অধ্যাদেশের অনুমোদনে টিআইবির নিন্দা, মতামত নিয়ে সংশোধনের দাবি

বিগত সরকারের সমর্থকদের পক্ষে নিতে উঠেপড়ে লেগেছে প্রায় সব দল: ডিআইজি হাবীব

জলকামান, টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে কাকরাইলে জাতীয় পার্টির সমাবেশ পণ্ড করে দিল পুলিশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত