Ajker Patrika

নদীর তীরে বালু তোলা রুখতে গ্রামবাসীর প্রতিরোধ, ড্রেজার সরাল ইজারাদার পক্ষ

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
ড্রেজার দিয়ে নদীর তীরে বালু তোলা রুখতে ট্রলার নিয়ে এগিয়ে যান গ্রামবাসী। ছবি: আজকের পত্রিকা
ড্রেজার দিয়ে নদীর তীরে বালু তোলা রুখতে ট্রলার নিয়ে এগিয়ে যান গ্রামবাসী। ছবি: আজকের পত্রিকা

মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় মেঘনা নদীর তীর ঘেঁষে ড্রেজার দিয়ে বালু তুলতে বাধা দিয়েছেন গ্রামবাসী। তাঁদের প্রতিরোধের মুখে বালু উত্তোলনকারী ইজারাদার পক্ষ ড্রেজার সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের নয়ানগর গ্রামসংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ সকাল থেকে অর্ধশতাধিক ড্রেজারে নদীর তীর ঘেঁষে বালু তোলা হচ্ছিল। প্রথমে স্থানীয় বাসিন্দারা ইজারাদারের লোকজনকে ড্রেজার সরানোর অনুরোধ করলেও বালু তোলার কাজ চলতে থাকে। পরে কয়েকটি ট্রলার নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা এগিয়ে গেলে ইজারাদারের কর্মীরাও তাঁদের দিকে তেড়ে যান। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। শেষ পর্যন্ত গ্রামবাসীর সংখ্যা বেশি হয়ে যাওয়ায় ইজারাদারের লোকজন ড্রেজার সরিয়ে নেন।

নয়ানগর গ্রামের বাসিন্দা আলী হোসেন বলেন, ‘অনেক দিন এই বালুমহাল বন্ধ ছিল। চলতি মাসের শুরু থেকে আবার চালু হয়েছে। কয়েক দিন ধরে তারা থ্রি-অ্যাঙ্গেল শিপইয়ার্ডের কাছে বালু তুললেও আজ নয়ানগর গ্রামের কাছে চলে এসেছে। আমরা একজোট হয়ে প্রতিরোধ করেছি।’

আরও একজন বাসিন্দা সাহেরা বেগম বলেন, ‘আমরা নদীর এই অংশে বালুমহাল চাই না। গ্রাম ভেঙে যাক, এটা আমরা কখনোই হতে দেব না। নারী-পুরুষ একসঙ্গে প্রতিরোধ করায় তারা সরে গেছে।’

এ বিষয়ে ইজারাদার প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা মুন্সিগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মো. আমিনুল ইসলাম জসিম বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে হামলা হয়েছে। কিছু পক্ষ আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।’

গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার আলম আজাদ জানান, ঘটনাটি যেহেতু নদীতে ঘটেছে, তাই নৌ পুলিশকে নজরদারির জন্য ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশরাফুল আলম বলেন, এটি সরকার অনুমোদিত বালুমহাল। তবে নদীর তীর ঘেঁষে উত্তোলন করলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, গজারিয়া উপজেলার ষোলআনী, নয়ানগর রমজানবেগ ও চর কালীপুরা মৌজায় মেঘনা নদীর ১২৮ একর এলাকায় জেলা প্রশাসন বালুমহাল ইজারা দেয়। চলতি বছর ২১ কোটি টাকায় আদন ড্রেজিং নামের প্রতিষ্ঠান ভ্যাট-ট্যাক্সসহ ২৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা জমা দিয়ে ইজারা নেয়। নিয়ম অনুযায়ী নদীর তীর থেকে অন্তত ১ হাজার ৫০০ ফুট দূরত্বে বালু তোলার কথা থাকলেও স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, শুরু থেকেই প্রতিষ্ঠানটি তীর ঘেঁষে উত্তোলন করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত