Ajker Patrika

মানিকগঞ্জে ৫ থানার ওসিকে বদলি

ঘিওর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৩ আগস্ট ২০২৪, ১৬: ৩৭
মানিকগঞ্জে ৫ থানার ওসিকে বদলি

মানিকগঞ্জের পাঁচ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) একযোগে বদলি করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত আইজি (ফিন্যান্স) আবু হাসান মুহম্মদ তারিক স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী বদলি করা পাঁচজন ওসিকে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন), অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), ট্যুরিস্ট পুলিশ ও রেলওয়ে পুলিশে দেওয়া হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, শিবালয় থানার ওসি মো. আ. রউফ সরকারকে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে, দৌলতপুর থানার ওসি সুমন কুমার আদিত্যকে সিআইডিতে, হরিরামপুর থানার ওসি শাহ নুর এ আলমকে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে, সিঙ্গাইর থানার ওসি মো. জিয়ারুল ইসলামকে ট্যুরিস্ট পুলিশে ও সাটুরিয়া থানার ওসি মো. মাহবুব আলমকে রেলওয়ে পুলিশে বদলি করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পর্যটন শুরু কাল: সেন্ট মার্টিনে জাহাজ চালাবেন না মালিকেরা

  • কক্সবাজারের নুনিয়ারছড়া জেটিঘাট থেকে যাওয়া-আসায় সময় লাগে প্রায় ১৪ ঘণ্টা।
  • রাতযাপন করতে না পারলে দীর্ঘ সময় পাড়ি দিয়ে যাওয়ার আগ্রহ থাকবে না পর্যটকদের
  • ২টি নির্দেশনা আরোপ করেছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়
মাইনউদ্দিন শাহেদ, কক্সবাজার
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

পর্যটকদের জন্য আগামীকাল শনিবার (১ নভেম্বর) থেকে উন্মুক্ত হচ্ছে দেশের একমাত্র প্রবালসমৃদ্ধ দ্বীপ কক্সবাজারের সেন্ট মার্টিন। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের ঘুরে বেড়ানোর জন্য পছন্দের এ দ্বীপ ৯ মাস পর উন্মুক্ত হলেও পুরো নভেম্বর মাস দিনে গিয়ে দিনে ফিরতে হবে পর্যটকদের। তবে ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে দৈনিক দুই হাজার করে পর্যটক রাতে থাকার সুযোগ পাবেন।

এদিকে নভেম্বরে সেন্ট মার্টিনে রাতে অবস্থানের সুযোগ না থাকায় পর্যটক খরার আশঙ্কায় কাল থেকে জাহাজ চালানো শুরু না করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে জাহাজমালিকদের সংগঠন সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ।

বঙ্গোপসাগরের বুকে আট বর্গকিলোমিটার আয়তনের সেন্ট মার্টিনে গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে পর্যটকদের যাতায়াত বন্ধ রয়েছে। সরকার দ্বীপের পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষায় গত বছর থেকে পর্যটক সীমিত করার সিদ্ধান্ত নেয়। এ সিদ্ধান্তের আলোকে নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত তিন মাস দ্বীপে পর্যটকেরা ভ্রমণের সুযোগ পাচ্ছেন।

জাহাজমালিক ও পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, মিয়ানমারের রাখাইনে সংঘাতের কারণে ২০২৩ সাল থেকে টেকনাফের দমদমিয়া ঘাট থেকে জাহাজ চলাচল বন্ধ রয়েছে। এরপর মেরিন ড্রাইভ সড়কের ইনানীর নৌবাহিনীর জেটিঘাট দিয়ে জাহাজ চলাচল করেছিল।

গত বছর থেকে কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিউটিএর জেটিঘাট থেকে সাগরপথে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করে আসছিল।

চলতি বছরও এই ঘাট দিয়ে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই রুটে যাওয়া-আসায় প্রায় ১৪ ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে রাতযাপন করতে না পারলে পর্যটকদের দীর্ঘ সময় পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিন ভ্রমণে আগ্রহ থাকবে না। এ কারণে জাহাজমালিকেরা নভেম্বর মাসে জাহাজ চালাতে রাজি নয়।

জাহাজমালিকদের সংগঠন সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক হোসাইনুল ইসলাম বাহাদুর বলেন, ১ নভেম্বর থেকে কক্সবাজার-সেন্ট মার্টিন রুটে জাহাজ চলাচলের অনুমতি রয়েছে। কিন্তু পর্যাপ্ত পর্যটক বা যাত্রী না থাকায় জাহাজ চালানো সম্ভব হচ্ছে না। গত বছরের মতো ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে জাহাজ চালানোর প্রস্তুতি চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, গত বছর দুই মাসে ১ লাখের বেশি পর্যটক সেন্ট মার্টিন ভ্রমণ করেছেন।

সেন্ট মার্টিন হোটেল-রিসোর্ট মালিক সমিতির সভাপতি শিবলুল আযম কোরেশী বলেন, দ্বীপের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসনীয়। কিন্তু দ্বীপে পর্যটন খাতের বিনিয়োগ ও স্থানীয়দের জীবন-জীবিকা ঝুঁকিতে ফেলে পরিবেশ রক্ষা ও ভালো পর্যটন আশা করা যায় না।

দীর্ঘদিন পর্যটকশূন্য সেন্ট মার্টিনে কর্মহীন হয়ে পড়া নিম্নবিত্ত ৫০০ পরিবারকে সরকার ১১ হাজার ৪০০ টাকা করে অর্থ সহায়তা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন। তিনি বলেন, দ্বীপের পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষায় সরকার এর মধ্যে আরও বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে।

দ্বীপের মানুষের সংকট দূর করতে সরকারের নানা উদ্যোগ দৃশ্যমান বলে জানিয়েছেন পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন। তিনি বলেন, সেন্ট মার্টিনে বনায়ন এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, পানীয় জলের সংকট নিরসন, বেওয়ারিশ কুকুরের প্রজনন ঠেকাতে বন্ধ্যাকরণ প্রকল্প, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, বর্জ্য থেকে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ উৎপাদন, নতুন জেটি নির্মাণসহ শতকোটি টাকার কয়েকটি প্রকল্পের কাজ চলছে।

মানতে হবে ১২ নির্দেশনা

নভেম্বর থেকে জানুয়ারি (তিন মাস) সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ১২টি নির্দেশনা আরোপ করেছে। এর মধ্যে বিআইডব্লিউটিএ এবং মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া সেন্ট মার্টিন দ্বীপে কোনো নৌযান চলাচল করা যাবে না। পর্যটকদের বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট সংগ্রহ করতে হবে। সেখানে প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস এবং কিউআর কোড সংযুক্ত থাকবে।

পর্যটকদের ভ্রমণের সময় রাতে সৈকতে আলো জ্বালানো, শব্দ সৃষ্টি বা বারবিকিউ পার্টি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়া কেয়াবনে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ বা ক্রয়-বিক্রয়, সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, প্রবাল, রাজকাঁকড়া, শামুক-ঝিনুক ও অন্যান্য জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি করা যাবে না। একই সঙ্গে সৈকতে মোটরসাইকেল, সি-বাইকসহ যেকোনো মোটরচালিত যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে।

নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে, পর্যটকেরা ভ্রমণকালে নিষিদ্ধ পলিথিন এবং একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক বহন করতে পারবে না। ৫০০ ও ১০০০ মিলিলিটারের প্লাস্টিক বোতল ইত্যাদি বহনে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মান্নান বলেন, সেন্ট মার্টিনের পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২ নির্দেশনা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে কাজ করবে জেলা প্রশাসন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সিরাজগঞ্জে এইচআইভি: ৩ বছরে আক্রান্ত বেড়ে তিন গুণ

  • এ বছর জেলায় ২৫৫ জনের এইচআইভি শনাক্ত, ৭৩ শতাংশই ইনজেকশন ব্যবহারকারী মাদকসেবী
  • ২০২০ সালে মাত্র ৪, ২০২১ সালে ৮ ও ২০২২ সালে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৮১ জনে
আব্দুল্লাহ আল মারুফ, সিরাজগঞ্জ
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

সিরাজগঞ্জে নীরবে বাড়ছে এইচআইভি আক্রান্তের সংখ্যা। ইনজেকশন দিয়ে মাদক গ্রহণ এখন ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার প্রধান মাধ্যম হয়ে উঠেছে। চলতি বছর জেলায় ২৫৫ জনের শরীরে এইচআইভি শনাক্ত হয়েছে, যার মধ্যে ৭৩ শতাংশই ইনজেকশন ব্যবহারকারী মাদকসেবী বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

গতকাল বিকেলে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আকিকুন নাহার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘একই সিরিঞ্জ দিয়ে মাদক সেবনের কারণেই রক্তের মাধ্যমে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ছে। শনাক্ত ব্যক্তিদের অধিকাংশই মাদকসেবী। আমরা আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিয়মিত চিকিৎসা ও কাউন্সেলিং সেবা দিচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, ইনজেকশন ব্যবহার করে মাদক সেবন বন্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও কঠোর হতে হবে।

জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে সিরাজগঞ্জে এইচআইভি পরীক্ষা শুরু হয়। প্রথম বছর শনাক্ত হয় মাত্র ৪, ২০২১ সালে শনাক্ত হয় ৮, আর ২০২২ সালে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৮১ জনে। এরপর কিছুটা স্থিতিশীল থাকলেও চলতি বছর আক্রান্তের সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়ে ২৫৫-এ পৌঁছেছে।

শনাক্তদের মধ্যে ১৮৭ জন ইনজেকশন ব্যবহারকারী মাদকসেবী, ৩৫ জন সাধারণ ব্যক্তি, ২৯ জন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও ৪ জন যৌনকর্মী। এর মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে ২৬ জন। বাকিরা নিয়মিত চিকিৎসা ও ওষুধ সেবা নিচ্ছে।

জানতে চাইলে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের এইচআইভি টেস্টিং অ্যান্ড কাউন্সেলিং সেন্টারের কাউন্সেলর মাসুদ রানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পজিটিভ শনাক্ত হওয়া ব্যক্তিদের নিয়মিত সেন্টারে এসে কাউন্সেলিং ও রি-টেস্ট করতে বলা হয়, যাতে তাঁরা মানসিকভাবে দৃঢ় থাকতে পারেন। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে সদর উপজেলাতেই সংখ্যা বেশি। নিম্ন আয়ের মানুষ, বিশেষ করে ২০-৩৫ বছর বয়সী তরুণেরা বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন। একই সিরিঞ্জে মাদক সেবন ও সমকামিতার প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় তরুণদের মধ্যে সংক্রমণও বাড়ছে।’

মাসুদ রানা আরও বলেন, ‘এইচআইভি আক্রান্ত হলে শরীরে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, ওষুধ সেবন করলে কাজ হয় না, ওজন দ্রুত কমে যায়। তাই প্রাথমিক পর্যায়ে পরীক্ষা ও চিকিৎসা শুরু করা জরুরি।’ তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতে অনেক সময় সন্তান প্রসব বা অস্ত্রোপচারের সময় জীবাণুমুক্ত যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয় না। এতে সংক্রমণের ঝুঁকি থেকেই যায়। আমাদের সবাইকেই সচেতন হতে হবে।’

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অবৈধ ইনজেকশনজাত মাদক বিক্রির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চলছে। তরুণদের মধ্যে মাদক ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় সচেতনতামূলক কার্যক্রমও চালানো হচ্ছে। অনেক তরুণ প্রথমে বন্ধুদের সঙ্গে শখ করে নেশা শুরু করে, পরে আসক্তি থেকে আর বের হতে পারে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অন্ধকারে চীন মৈত্রী সেতু, চলাচলে ঝুঁকি

  • ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে সেতুটি উদ্বোধন করা হয়
  • সৌরবাতি নষ্ট হয়ে যায় এক বছরের মাথায়; পরে বৈদ্যুতিক বাতিও নষ্ট হয়
মাদারীপুর প্রতিনিধি
অন্ধকারে চীন মৈত্রী সেতু, চলাচলে ঝুঁকি

মাদারীপুর-শরীয়তপুর আঞ্চলিক সড়কের আড়িয়াল খাঁ নদের ওপর নির্মিত সপ্তম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর সড়কবাতি দীর্ঘদিন ধরে অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে এ পথ দিয়ে চলাচলকারী পথচারী ও যানবাহন চালকদের। এদিকে অভিযোগ রয়েছে, সব বাতি অকেজো থাকায় সন্ধ্যা হলেই অন্ধকারের মধ্যে সেতুর ওপর, এমনকি নিচেও মাদকসেবীদের আড্ডা বসে। ফলে পথচারীরা অনেক সময় ছিনতাইয়ের কবলে পড়েন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ও চীন সরকারের যৌথ উদ্যোগে মাদারীপুর সদর উপজেলার মহিষেরচর এলাকার আড়িয়াল খাঁ নদের ওপর নির্মাণ করা হয় সপ্তম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু। ৬৯৪ মিটার সেতুর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ২৯৪ কোটি টাকা। সেতুটি নির্মাণ শেষে ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে উদ্বোধন করা হয়। চলাচলের সুবিধার জন্য সেতুটির ওপরে শতাধিক খুঁটি বসিয়ে সৌরবাতি লাগানো হয়। এক বছরের মাথায় বাতিগুলো সব নষ্ট হয়ে যায়। এরপর সৌরবাতি বাদ দিয়ে বিদ্যুৎ-সংযোগের মাধ্যমে বাতিগুলো জ্বালানোর ব্যবস্থা করা হয়। এর কয়েক মাস যেতেই আবার বাতিগুলো নষ্ট হয়ে যায়। এরপর বছরের পর বছর সেতুর বাতিগুলো অকেজো হয়েই পড়ে রয়েছে। এদিকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মেয়াদ শেষ হওয়ার কারণে এক বছর ধরে সড়ক বিভাগই সেতুটির টোল আদায় করছে। এই সড়ক দিয়ে ঢাকা, বরিশাল, খুলনাসহ বিভিন্ন এলাকায় যাওয়ার জন্য কয়েক হাজার চলাচলকারী যানবাহন থেকে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব আদায় করার পরও সেতুটির বাতি নেই।

খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, সন্ধ্যা হলেই অন্ধকার থাকায় এ গুরুত্বপূর্ণ সেতুর ওপর প্রায় দুর্ঘটনাসহ চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। তা ছাড়া সেতুর ওপরে ও নিচে নেশার আড্ডাও বসে।

অটোরিকশাচালক দেলোয়ার হোসেন বলেন, বাতি না থাকার কারণে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের ভয়ে এখন আর আগের মতো কেউ এখানে আসে না।

মাইক্রোবাসচালক ফেরদৌস ব্যাপারী বলেন, ‘সেতুতে সড়কবাতি না থাকায় অনেক সময় ছোটখাটো দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়। তাই এই সেতুতে সড়কবাতি জরুরি’

পথচারী জালালউদ্দিন বলেন, ‘আমার বাড়ি সেতুর কাছেই। সন্ধ্যার পর এখান দিয়ে হাঁটতে ভয় লাগে। কারণ এখানে প্রায়ই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাদারীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হাসান বলেন, ‘ঠিকাদার নিয়োগ না থাকায় বাতিগুলো অকেজো হয়ে আছে। তাড়াতাড়ি ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হবে। তখন বাতিগুলো ঠিক করা হবে। আশা করছি দ্রুতই এর সমাধান হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সঞ্চয়পত্রের সার্ভারে জালিয়াতির অভিযোগে চারজনের বিরুদ্ধে মামলা, একজন গ্রেপ্তার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বাংলাদেশ ব্যাংক। ফাইল ছবি
বাংলাদেশ ব্যাংক। ফাইল ছবি

বাংলাদেশ ব্যাংকের সঞ্চয়পত্র সার্ভারে জালিয়াতি করে কোটি টাকার সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে চারজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষে অতিরিক্ত পরিচালক আবুল খায়ের মো. খালিদ বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর মতিঝিল থানায় এ মামলা করেন।

মামলার আসামিরা হলেন—মোহাম্মদ মারুফ এলাহী রনি, মহিউদ্দিন আহমেদ, মো. আরিফুর রহমান মিম ও আল আমিন। এর মধ্যে আরিফুর রহমানকে মতিঝিল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মতিঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন জানান, গ্রেপ্তার আরিফুর রহমান পেশায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। বাকি তিনজনের খোঁজে অভিযান চলছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আসামিদের মধ্যে মোহাম্মদ মারুফ এলাহী রনি একটি রাজনৈতিক দলের সাবেক নেতা। আরিফুর রহমান মিম এনআরবিসি ব্যাংকের দিনাজপুর উপশাখার গ্রাহক। বাকি দুজন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার ফরমে পরিচয় শনাক্তকারী।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, জালিয়াতকারী চক্র জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের এনএসসি সার্ভারে অননুমোদিতভাবে প্রবেশের পর গ্রাহকের তথ্য পরিবর্তন এবং সঞ্চয়পত্রের অর্থ অন্য ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করে। তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ইউজার আইডি ব্যবহার করে একাধিক সঞ্চয়পত্র নগদায়ন দেখিয়ে অর্থ আত্মসাতের চেষ্টা চালায়।

গত ২৩ থেকে ২৭ অক্টোবরের মধ্যে তিনটি সঞ্চয়পত্রের তথ্য পরিবর্তন করে ডাচ-বাংলা ব্যাংক ও এনআরবিসি ব্যাংকের হিসাবে মোট ৭৫ লাখ টাকা স্থানান্তরের চেষ্টা করা হয়। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দ্রুত পদক্ষেপে ৫০ লাখ টাকা উদ্ধার করে সরকারি খাতে ফেরত দেওয়া সম্ভব হয়েছে।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, মহা-হিসাব নিরীক্ষণ কার্যালয়ের কর্মকর্তা এস এম রেজভীর নামে কেনা ২৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ভুয়া প্রক্রিয়ায় নগদায়ন করে তা আরিফুর রহমান মিমের হিসাবে জমা হয়। পরে ঢাকার দুটি শাখা থেকে অর্থ উত্তোলন করা হয়। যদিও তার লেনদেন সীমা ছিল ২ লাখ টাকা, কিন্তু জালিয়াতির মাধ্যমে সেটি ১০ লাখ টাকায় বাড়ানো হয়।

একইভাবে রাজনৈতিক দলের সাবেক নেতা মারুফ এলাহী রনির নামে থাকা ডাচ-বাংলা ব্যাংকের হিসাবে দুটি সঞ্চয়পত্রের বিপরীতে ৫০ লাখ টাকা জমা হয়। উভয় সঞ্চয়পত্রই ছিল পাঁচ বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্র। তবে সময়মতো জালিয়াতি ধরা পড়ায় টাকা উত্তোলনের আগেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক তা স্থগিত করে।

ঘটনার পর বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয়, বিএফআইইউ ও এনআরবিসি ব্যাংক পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। সংশ্লিষ্ট ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ডধারী তিন কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং তাঁদের ব্যবহৃত কম্পিউটার জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসে সব ধরনের সঞ্চয়পত্র বিক্রি ও নগদায়ন বন্ধ রয়েছে। এদিকে বিএফআইইউ সন্দেহভাজন সব ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে, যাতে আর কোনো অর্থ লেনদেন করা না যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত