Ajker Patrika

মুক্তির হাতে জিম্মি বিএডিসি

  • উপপরিচালক মুক্তির বিরুদ্ধে বিএডিসির চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ।
  • রেস্টহাউসে বসবাস করে ভাড়ার টাকা ও শ্রমিকদের বিল তুলে আত্মসাৎ।
  • ভুয়া দরদাতা বানিয়ে নিজেই বোরো বীজ পরিবহন করে টাকা হাতিয়ে নেন।
সাজন আহম্মেদ পাপন, কিশোরগঞ্জ 
আপডেট : ১৮ মার্চ ২০২৫, ০৭: ২৬
এ কে এম মনিরুজ্জামান মুক্তি
এ কে এম মনিরুজ্জামান মুক্তি

কিশোরগঞ্জ বিএডিসির (বীউ) উপপরিচালক এ কে এম মনিরুজ্জামান মুক্তির বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ উঠেছে। তাঁর বিরুদ্ধে ঠিকাদার সেজে বীজ পরিবহন, রেস্টহাউসে বসবাস করে ভাড়ার টাকা আত্মসাৎ ও শ্রমিকদের নামে বিল তুলে আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব বিষয়ে জসিম উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি ১৫ মার্চ উপপরিচালক মনিরুজ্জামান মুক্তির বিরুদ্ধে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) চেয়ারম্যান মো. রুহুল আমিন খানের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। নিরাপত্তার স্বার্থে জসিম উদ্দিন তাঁর পূর্ণ পরিচয় গোপন রেখেছেন।

কিশোরগঞ্জ বিএডিসি (বীউ) কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপপরিচালক মুক্তি ২০২৪-২৫ বিতরণ বর্ষে ১৯ লাখ ১৪ হাজার ৮৭০ টাকার ভুয়া বীজ পরিবহন কোটেশন প্রস্তুত করে মেসার্স খান এন্টারপ্রাইজকে সর্বনিম্ন দরদাতা দেখান। বাস্তবে কেজিপ্রতি বেশি দর দেখিয়ে ভুয়া দরদাতা বানিয়ে নিজেই বোরো বীজ পরিবহন করে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেন। কারণ খান এন্টারপ্রাইজের কাউকে কোনো দিন বিএডিসি অফিসে কেউ আসতে দেখেননি বলেও সূত্র জানায়।

ঠিকাদার জাহাঙ্গীর আলম সুরুজ সম্প্রতি উপপরিচালক মুক্তির সঙ্গে ভুয়া পরিবহনের বিষয়ে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ালে বিষয়টি প্রকাশ পায়।

অভিযোগে আরও বলা হয়, ২০২৪ সালের জুন মাস থেকে শ্রমিকদের নামে ব্যাংকে বেতন বিল দেওয়ার নির্দেশ হয়। জুন থেকে চলতি মাস পর্যন্ত ১৫ জন শ্রমিকের নামে ভুয়া বিল মাস্টাররোল তৈরি করেন মুক্তি। গত ৯ মাসে প্রতি শ্রমিকের ১৫ হাজার করে ১৫ জন শ্রমিকের ব্যাংক হিসাব থেকে প্রায় ২১ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি। ওই ১৫ জন শ্রমিক হলেন আজিজুল হক, মো. সোহাগ, আব্দুল্লাহ নোমান, শাহীন, জাকারিয়া আলমগীর রবিন, মোখলেছুর রহমান, আজহারুল ইসলাম, মাজাহারুল হক হান্নান, আব্দুল হক, নূরে আলম সিদ্দিকী, মুখলেছুর রহমান, ওমর ফয়সাল, হারুনুর রশিদ, কাইয়ুম ও মো. কাশেম। বাস্তবে এই ১৫ জন কোনো দিন বিএডিসি গুদামে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেননি বলে সূত্র জানায়। উপপরিচালক তাঁদের সঙ্গে চুক্তি করে টাকা আত্মসাৎ করেন।

এদিকে উপপরিচালক বীজ বিপণনের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকাকালে এ কে এম মনিরুজ্জামান মুক্তির বিরুদ্ধে চলতি বোরো বীজ বরাদ্দে ঘুষ-বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠে। ডিলারদের দাবি ছিল, মোটা অঙ্কের ঘুষ ছাড়া কোনো ডিলারকে বীজ বরাদ্দ দিতেন না মুক্তি। চাহিদামতো ঘুষ পাওয়ার পর বিশেষ টোকেনের মাধ্যমে তিনি বীজের বরাদ্দ দিতেন। যেসব ডিলার বেশি ঘুষ দিতেন, তাঁরা বীজের বরাদ্দও পেতেন বেশি। এতে বীজ বরাদ্দে বৈষম্যের শিকার হচ্ছিলেন ডিলাররা। সে সময় ঘুষ দিয়েও বেশ কয়েকজন ডিলার বীজ না পাওয়ায় উপপরিচালক মুক্তির ঘুষ-বাণিজ্যের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। এ ঘটনায় গত ২০ নভেম্বর বিএডিসির মহাব্যবস্থাপকের (বীজ) কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেছিলেন ভুক্তভোগী ডিলার অলিউল ইসলাম।

পরে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে উপপরিচালক মুক্তির ঘুষ-দুর্নীতির খবর প্রকাশিত হলে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। বিএডিসির প্রধান কার্যালয় থেকে অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক (বীজ) মো. আব্দুস সামাদের নেতৃত্বে দুই সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। অন্যদিকে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান ১২ ডিসেম্বর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদকে প্রধান করে এক সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। এই দুই কমিটি তদন্ত করলেও রহস্যজনক কারণে গতকাল সোমবার পর্যন্ত প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখেনি।

বিএডিসির ঢাকার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে এবং হাওরের মাছ পাঠিয়ে ম্যানেজ করেছেন—বলে বেড়াচ্ছেন মুক্তি। ফলে বর্তমানে তাঁকে আর কেউ কিছু করতে পারবে না।

জানা গেছে, মুক্তি জামালপুর জেলায় কর্মরত থাকাকালে দুদকের মামলার আসামি হন এবং বিএডিসি কর্তৃপক্ষ তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করে বিভাগীয় মামলা করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কার্যালয়টির কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা জানান, যোগদান করার পর থেকেই মুক্তি রেস্টহাউসে বসবাস করেন। এখন পর্যন্ত তিনি বাইরে কোনো বাসা ভাড়া নেননি। স্ত্রী ও সন্তানেরা এখানে মাঝেমধ্যে এলে তিনি তাদের নিয়ে রেস্টহাউসেই থাকেন। কোনো টাকাপয়সা ছাড়াই নিজ ক্ষমতাবলে রেস্টহাউসে বসবাস করছেন। রেস্টহাউসে থেকে তিনি মাদক সেবন করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। মাতাল অবস্থায় অফিসের কর্মী ও কৃষকদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। কেউ কিছু বললেই তাঁকে হয়রানি করেন এবং বদলি করে দেওয়ার হুমকি দেন মুক্তি।

সরকারি নিয়মে ৩৫ শতাংশ বাড়িভাড়া নিয়মিতই নিচ্ছেন মনিরুজ্জামান মুক্তি। তাঁর মূল বেতন ৬৯ হাজার ৮৫০ টাকা। সে হিসাবে প্রতি মাসে বাড়িভাড়া বাবদ প্রায় ২৫ হাজার টাকা পান। সরকার তাঁকে প্রায় ২৫ হাজার টাকা বাসাভাড়া প্রদান করলেও তিনি বাসাভাড়া না নিয়ে রেস্টহাউসে থাকেন। এ হিসাবে ভাড়া বাবদ গত ৩ বছরে মোট ৯ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি। এ ছাড়া এখানে বিদ্যুৎ, এসি, ফ্যান, লাইট ব্যবহার করেন। চলতি মাস পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিল বাবদ সংস্থার ক্ষতি হয় ৬ লাখ ৫১ হাজার টাকা।

কার্যালয়টির কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা আরও জানান, মুক্তি ৫ আগস্টের আগে অফিসে বলে বেড়াতেন তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতি করতেন। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের ক্যাডার ছিলেন। তাঁর একটা আঙুল গুলিতে নষ্ট হয়ে গেছে, বলতেন আর ভয় দেখাতেন। ৫ আগস্টের পর প্রায় ১০ দিন আত্মগোপনে ছিলেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তিনি আবার বেরিয়ে আসেন।

অভিযোগের বিষয়ে কিশোরগঞ্জ বিএডিসির (বীউ) উপপরিচালক এ কে এম মনিরুজ্জামান মুক্তির সঙ্গে মোবাইল ফোনে কল করলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘রেস্টহাউসে আমি ভাড়া দিয়ে থাকি। ভাড়া দিয়ে থাকার নিয়ম আছে।’ ভুয়া বীজ পরিবহন কোটেশন করার বিষয়ে তিনি বলেন, এগুলো মিথ্যা। কর্মকর্তা কখনো এভাবে করতে পারে না। বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

শ্রমিকদের নামে টাকা তুলে আত্মসাতের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আপনি শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে দেখতে পারেন। আমি কোনো শ্রমিকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছি কি না বা কোনো শ্রমিকের টাকা উঠাই কি না?’ কার্যালয়ে মাদক সেবনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘হায়, সর্বনাশ! আমি এখানে আছি তিন বছর হয়ে গেছে। আর এসব কথা এখন উঠছে।’

এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য বিএডিসির চেয়ারম্যান মো. রুহুল আমিন খানকে কয়েকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে যুবককে সাজা, ভেকু মেশিন জব্দ

ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি  
অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালায় উপজেলা প্রশাসন। ছবি: আজকের পত্রিকা
অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালায় উপজেলা প্রশাসন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে মো. হৃদয় আহমেদ (২৬) নামের এক যুবককে অর্থদণ্ড ও কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় বালু তোলার কাজে ব্যবহৃত একটি এক্সকাভেটর (ভেকু মেশিন) জব্দ করা হয়।

গতকাল মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত উপজেলার কানিহারী ইউনিয়নের জিলকী বটতলা এলাকায় উপজেলা প্রশাসন এই অভিযান চালায়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন ত্রিশাল উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুর রহমান।

সাজাপ্রাপ্ত হৃদয় জিলকী বটতলা এলাকার মো. হেলাল উদ্দিনের ছেলে। ভ্রাম্যমাণ আদালত তাঁকে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ অনুযায়ী ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড এবং সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন।

এসি ল্যান্ড মাহবুবুর রহমান বলেন, জনস্বার্থে এই ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে, যাতে পরিবেশ ও নদী রক্ষা করা যায় এবং অবৈধ বালু উত্তোলন সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গোপনে সহপাঠীদের অপ্রীতিকর ছবি তুলে সিনিয়র ভাইকে পাঠাতেন বাকৃবি ছাত্রী

বাকৃবি প্রতিনিধি 
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) এক ছাত্রীর বিরুদ্ধে গোপনে নারী সহপাঠীদের ছবি তুলে এক সিনিয়র ছাত্রের কাছে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে।

গতকাল মঙ্গলবার ওই ছাত্রীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে ডিনের সঙ্গে বৈঠক করেন অভিযোগকারীরা।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত ছাত্রী বাকৃবি থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। তিনি তাঁর নারী সহপাঠীদের ঘুমন্ত বা ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি গোপনে মোবাইল ফোনে তুলতেন। তাঁর কাছ থেকে যিনি ছবিগুলো গ্রহণ করতেন, তিনি ওই ছাত্রী যে বিভাগে পড়েন, সেই বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র এবং বর্তমানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেকচারার হিসেবে কর্মরত।

ওই ছাত্রী অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছেন ডিন অধ্যাপক ড. মো. আবদুল মজিদ। তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা অভিযোগ নিয়ে আমার কাছে আসে। আমরা অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর মোবাইল ফোন পরীক্ষা করে ছবি আদান-প্রদানের প্রমাণ পাই। জিজ্ঞাসাবাদের সময় তিনি স্বীকার করেন যে তিনি মেয়েদের বিভিন্ন ছবি তুলতেন এবং তা এক সিনিয়র ভাইয়ের কাছে পাঠাতেন।’ তিনি আরও বলেন, বর্তমানে মোবাইলটি সিলগালা অবস্থায় ডিন অফিসে সংরক্ষিত রয়েছে। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ ও নিরোধ কমিটির কাছে হস্তান্তর করা হবে।

অভিযুক্ত সিনিয়র শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি মেয়েটির সঙ্গে দীর্ঘদিন কথা বলেছি। সে যেসব ছবি পাঠিয়েছে, আমি তা সংরক্ষণ করিনি। আমার কোনো খারাপ উদ্দেশ্য ছিল না; তবে আমি আমার কাজের জন্য অনুতপ্ত। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যা সিদ্ধান্ত নেবে, আমি তা মেনে নেব।’

অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর সহপাঠীদের ভাষ্য, ইন্টার্নশিপ চলাকালে ওই ছাত্রীর সন্দেহজনক আচরণ লক্ষ করে তাঁরা তাঁকে নজরদারিতে রাখেন। পরে নিশ্চিত হন যে ওই ছাত্রী মেয়েদের ঘুমন্ত বা অপ্রস্তুত অবস্থার ছবি তুলতেন। বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ার পর তাঁরা বিভাগীয় শিক্ষকদের অবহিত করেন এবং কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজশাহীতে কিশোরীর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজশাহীতে মাসুদা পারভিন ওরফে ইভা (১৭) নামের এক কিশোরীর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নগরের মতিহার থানার মৌলভী বুধপাড়া এলাকার একটি আমবাগান থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। তার স্বামী মো. দুর্জয়ের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

মৃত ইভা নগরের মেহেরচণ্ডী এলাকার ইকবাল হোসেনের মেয়ে। তার স্বামী দুর্জয়ের বাড়ি রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার কানপাড়া গ্রামে। রাজশাহী নগরের দায়রাপাক এলাকায় এই দম্পতি ভাড়া থাকতেন। ইভা তিন দিন ধরে নিখোঁজ ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে।

মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মালেক জানান, দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা আমবাগানে লাশটি দেখতে পান। ইভার মাথায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ওসি বলেন, ইভার স্বামী দুর্জয়ের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি পলাতক। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তাঁর সম্পৃক্ততা থাকতে পারে। বিষয়টির তদন্ত চলছে। এ নিয়ে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শিশুদের ঝগড়াকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষ, অর্ধশতাধিক আহত

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি   
উপজেলার মধ্যবাজার এলাকায় সংঘর্ষে জড়ায় দুই গ্রামের বাসিন্দারা। ছবি: আজকের পত্রিকা
উপজেলার মধ্যবাজার এলাকায় সংঘর্ষে জড়ায় দুই গ্রামের বাসিন্দারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলায় দুই শিশুর ঝগড়াকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত উপজেলার মধ্যবাজার এলাকায় এই সংঘর্ষ চলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বড়ইউড়ি ও বাহুবল গ্রামের দুই শিশুর মধ্যে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে ঝগড়াকে ঘিরে বিকেল থেকে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সন্ধ্যার পর উভয় গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মধ্যবাজার এলাকায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হন। গুরুতর আহত কয়েকজনকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল, বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্য ব্যক্তিদের স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

খবর পেয়ে রাত ১০টার দিকে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ দল ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

বাহুবল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরে রাত ১০টার দিকে সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে সালিস বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত