Ajker Patrika

কুয়েটের হল খুলছে আজ, সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত

খুলনা প্রতিনিধি
আপডেট : ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১৭: ৪৭
কুয়েটের ছাত্ররা ১৫ এপ্রিল হলের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন।  ছবি: আজকের পত্রিকা
কুয়েটের ছাত্ররা ১৫ এপ্রিল হলের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) আবাসিক হলগুলো আজ বুধবার বিকেলে খুলে দেওয়া হচ্ছে। দুপুরে সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

উপাচার্যের নির্দেশক্রমে রেজিস্ট্রার মো. আনিছুর রহমান ভূঞা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, ১৪ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ১০১তম (জরুরি) সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৪ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব একাডেমিক কার্যক্রম চালু এবং ২ মে আবাসিক হলগুলো খোলার কথা ছিল। তবে আজ অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ১০২তম (জরুরি) সভার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে হলগুলো বিকেলে খোলা হবে।

ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে সংঘর্ষ হয়। এতে অনেকে আহত হন। এ ঘটনায় ২৫ ফেব্রুয়ারি সিন্ডিকেট সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম ও হল বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ১৩ এপ্রিল বন্ধ থাকা কুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। এমন অবস্থার মধ্যে ১৪ এপ্রিল রাতে জরুরি সিন্ডিকেট সভা করে সহিংসতার ঘটনায় ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া বন্ধ থাকা শিক্ষা কার্যক্রম ৪ মে এবং আবাসিক হলগুলো ২ মে খোলার ঘোষণা দেওয়া হয়।

এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে রাতে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। ছাত্ররা পরদিন ১৫ এপ্রিল দুপুরে একের পর এক হলের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। গতকাল মঙ্গলবার রাতে ছাত্রীরাও হলের তালা ভেঙে প্রবেশ করেন। বর্তমানে সব হলেই শিক্ষার্থীরা অবস্থান করছেন।

এখন শিক্ষার্থীরা উপাচার্য অপসারণের এক দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন। তাঁদের অভিযোগ, ছাত্রদলের নেতা-কর্মী ও বহিরাগতরা ১৮ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালালেও উপাচার্য নিরাপত্তা দিতে পারেননি। উল্টো ২২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসের বাইরের একজন আদালতে মামলা করেছেন। এ ছাড়া ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এর মধ্যে হামলাকারী নন, বরং আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যাই বেশি।

আরও পড়ুন—

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাঁওতাল দিবস পালন, তিন সাঁওতাল হত্যার বিচার দাবি

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতাল হত্যা দিবস পালন ও তিন সাঁওতাল হত্যার ন্যায়বিচারসহ সাত দফা দাবিতে সমাবেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতাল হত্যা দিবস পালন ও তিন সাঁওতাল হত্যার ন্যায়বিচারসহ সাত দফা দাবিতে সমাবেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতালপল্লিতে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের প্রতিবাদে এবং তিন সাঁওতাল হত্যার ন্যায়বিচারসহ সাত দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে সাঁওতাল হত্যা দিবস পালিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১টার দিকে উপজেলার বাগদা সাহেবগঞ্জ এলাকায় নিহতদের স্মরণে অস্থায়ী বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, মোমবাতি প্রজ্বালন ও এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে বাগদা ফার্ম থেকে একটি শোক মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি কাঁটামোড় হয়ে সাহেবগঞ্জ মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। এরপর সাহেবগঞ্জ এলাকায় সাঁওতালরা সমাবেশ করেন।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি গণেশ মুর্মু। এতে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ কফি রতন, আদিবাসী ইউনিয়নের সভাপতি রেবেকা সরেন ও সাধারণ সম্পাদক শ্রীকান্ত মাহাতো, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী প্রভাত টুডু, ভূমিহীন আন্দোলনের জাতীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক শেখ নাসির উদ্দিন, আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদের সদর উপজেলার আহ্বায়ক গোলাম রাব্বী মুসা এবং সাঁওতাল নেতৃবৃন্দ বিমল বেসরা, জামিন হেমব্রন, ময়রা হেমব্রন, রুমিলা কিসকু ও ইলিকা টুডু প্রমুখ।

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতাল হত্যা দিবস পালন ও তিন সাঁওতাল হত্যার ন্যায়বিচারসহ সাত দফা দাবিতে সমাবেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতাল হত্যা দিবস পালন ও তিন সাঁওতাল হত্যার ন্যায়বিচারসহ সাত দফা দাবিতে সমাবেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

বক্তারা বলেন, ঘটনার ৯ বছর পার হলেও মামলার কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। পিবিআই তদন্ত করে ২০২০ সালের ২৩ জুলাই ৯০ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিলেও মূল আসামিসহ ১১ জনকে বাদ দেওয়া হয়। এতে ভিকটিম পক্ষ নারাজি দিলে ওই বছরের ২৩ ডিসেম্বর মামলাটির তদন্তভার সিআইডির কাছে হস্তান্তর করা হয়।

তবে সিআইডির দীর্ঘসূত্রতা ও কার্যকর তদন্ত না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন ভুক্তভোগীরা। নিহতদের স্বজনেরা আশা প্রকাশ করেন, সিআইডি নিরপেক্ষ তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের শনাক্ত ও শাস্তির ব্যবস্থা করবে।

জানা যায়, ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর বিনা নোটিশে রংপুর সুগার মিলস কর্তৃপক্ষ পুলিশ, প্রশাসন ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় গোবিন্দগঞ্জের জয়পুর ও মাদারপুর গ্রামে সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর বসতবাড়ি উচ্ছেদ অভিযান চালায়। ওই সময় হামলা, বসতবাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। গুলিতে ও নির্যাতনে নিহত হন তিন সাঁওতাল শ্যামল হেমরম, মঙ্গল মার্ডি ও রমেশ টুডু। আহত হন আরও অনেকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রোহিঙ্গা নারীকে নাগরিক সনদ প্রদান, চেয়ারম্যানকে সাময়িক বরখাস্ত

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি  
ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান মো. লিয়াকত আলী। ছবি: সংগৃহীত
ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান মো. লিয়াকত আলী। ছবি: সংগৃহীত

সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলায় রোহিঙ্গা নারী রোকেয়া বেগমকে নাগরিক ও চারিত্রিক সনদ দেওয়ার ঘটনায় ভদ্রঘাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) প্যানেল চেয়ারম্যান মো. লিয়াকত আলী খান মোহামকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মো. নুরে আলম স্বাক্ষরিত সাময়িক বরখাস্তের আদেশের চিঠিটি গত ২০ অক্টোবর ইস্যু হলেও প্যানেল চেয়ারম্যান এটি ৩ নভেম্বর হাতে পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন ভদ্রঘাট ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ওমর ফারুক। এরপর বিষয়টি আজ বৃহস্পতিবার জানাজানি হয়।

জানা গেছে, রোহিঙ্গা রোকেয়া বেগম বাংলাদেশি নাগরিক না হয়েও ভদ্রঘাট ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নাগরিক সনদপত্র সংগ্রহ করেন। সেই সনদ ব্যবহার করে তিনি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) করার জন্য কামারখন্দ উপজেলা নির্বাচন অফিসে গেলে ধরা পড়েন।

এর আগে গত ২৫ আগস্টে রোকেয়া বেগম ও তাঁর স্বামী মো. আনিছ ভুয়া কাগজপত্র নিয়ে এনআইডি করতে গেলে নির্বাচন কর্মকর্তার সন্দেহ হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা কক্সবাজারের উখিয়া টেংখালী ক্যাম্প-১২, জি-৪ ব্লকের রোহিঙ্গা শরণার্থী বলে স্বীকার করেন। আর ওই দিন বিকেলেই কামারখন্দ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাসুদ রানা বাদী হয়ে কামারখন্দ থানায় মামলা করেন। এরপর পুলিশ রোকেয়া ও তাঁর স্বামী আনিছকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠায়।

রোকেয়ার নাগরিক সনদে দেখা গেছে, ৪০২ নম্বর ক্রমিকের ওই সনদটি ইস্যু করা হয়েছে গত ৮ আগস্ট। তাতে রোকেয়ার নাম, পিতার নাম সাব্বির আহমেদ, মাতার নাম রাশিদা বেগম ও ঠিকানা বানিয়াগাতী গ্রাম উল্লেখ আছে। তাতে স্বাক্ষর করেছেন ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান মো. লিয়াকত আলী।

জানতে চাইলে প্যানেল চেয়ারম্যান মো. লিয়াকত আলী বলেন, ‘আমাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তবে আমার স্বাক্ষর জাল করে ওই সনদ তৈরি করা হয়েছে। আমি এতে জড়িত নই। এ বিষয়ে আমি লিখিত জবাব আজ সন্ধ্যার আগেই অফিসে জমা দেব।’

এ বিষয়ে কামারখন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিপাশা হোসাইন বলেন, তাঁকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে এবং ১০ কর্মদিবসের মধ্যে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে। তাঁর জবাব পাওয়ার পর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘তোর সময় শেষ, যা খাওয়ার খেয়ে নে’—হুমকির ৩ দিন পরেই বাবলাকে হত্যা

 নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামের দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদের সেকেন্ড ইন কমান্ড রায়হান। ছবি: সংগৃহীত
চট্টগ্রামের দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদের সেকেন্ড ইন কমান্ড রায়হান। ছবি: সংগৃহীত

‘তোর সময় শেষ, যা খাওয়ার খেয়ে নে’—গুলি করে হত্যার তিন দিন আগে মোবাইল ফোনে এমন হুমকি দেওয়া হয়েছিল ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ার হোসেন ওরফে বাবলাকে (৪৩)। প্রতিপক্ষ চট্টগ্রামের দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদের সেকেন্ড ইন কমান্ড রায়হান এই হুমকি দিয়েছিলেন বলে বাবলার বাবার অভিযোগ।

হত্যাকাণ্ডের পর গতকাল বুধবার রাতে বাবলার বাবা আবদুল কাদের চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ বোস্তামীর চালিতাতলী এলাকার খন্দকারপাড়ার বাড়িতে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

বিএনপির গণসংযোগের সময় গুলিতে নিহত সরোয়ার হোসেন বাবলার লাশ আজ বৃহস্পতিবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিএনপির গণসংযোগের সময় গুলিতে নিহত সরোয়ার হোসেন বাবলার লাশ আজ বৃহস্পতিবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

এর আগে গতকাল সন্ধ্যার পর নগরীর চালিতাতলী হাজির পোল এলাকায় চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী ও চান্দগাঁও) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহর গণসংযোগের সময় পেছন থেকে গুলিতে বাবলার মৃত্যু হয়।

আবদুল কাদের জানান, তাঁর ছেলেকে গুলি করে হত্যার আগে দুবার ‘খতম’ করার হুমকি দিয়েছিল প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসী গ্রুপ। সাত দিন ও তিন দিন আগে এসব হুমকি এসেছিল। বাবলা এ বিষয়ে সতর্ক থাকলেও একেবারে নিজ এলাকায় ঢুকে এভাবে গুলি করার বিষয়টি তিনি তেমন আমলে নেননি। কারণ, হুমকি এসেছিল মোবাইল ফোনে।

বাবলার ছোট ভাই মো. আজিজ বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগে আমার ভাইকে প্রাণে মারার হুমকি দিয়েছিল হত্যাকারীরা। ওরা বলেছিল আমার ভাইয়ের সময় আর এক সপ্তাহ আছে। ওরা একাধিকবার এক সপ্তাহ সময় আছে জানিয়ে হুমকি দিত। হুমকির ঠিক এক সপ্তাহের মাথায় তারা আমার ভাইকে হত্যা করল।’

আজিজ কাতারপ্রবাসী ছিলেন। দুই বছর আগে দেশে আসেন। এলাকায় নতুন ভবন করার সময় ইট ও বালু সরবরাহের কাজ করেন। এ কারণে সাজ্জাদদের রোষানলে পড়েন তাঁরা। এ ক্ষেত্রে প্রতিপক্ষ শক্তি হিসেবে সাজ্জাদদের সামনে ছিলেন সরোয়ার হোসেন বাবলা।

এদিকে সরোয়ারের বাবা আবদুল কাদের সাংবাদিকদের জানান, তাঁর ছেলেকে প্রায়ই হুমকি দিতেন বিদেশে পলাতক সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলী, তাঁর সহযোগী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদ, মো. রায়হান ও জিশানরা। গতকাল তাঁর বাড়ি থেকে ২০০ থেকে ৩০০ গজ দূরে রাস্তার পাশে দোকানে গণসংযোগ চালান বিএনপি নেতা এরশাদ উল্লাহ। একেবারে বাড়ির পাশে এসে কেউ তাঁকে হত্যা করবে, সে ব্যাপারে সতর্ক ছিলেন না বাবলা। পরিবারের সদস্যরাও তা কল্পনা করেননি।

আবদুল কাদের বলেন, ‘বাড়ির পাশে বায়তুন নুর জামে মসজিদে মাগরিবের নামাজে প্রথম কাতারে এরশাদ উল্লাহ, বাবলা দ্বিতীয় কাতারে ও আমি তৃতীয় কাতারে ছিলাম। নামাজ শেষে বের হওয়ার পরই সাত থেকে আট রাউন্ড গুলি। পরে দেখলাম, আমার ছেলে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে আছে। অটোরিকশায় করে হাসপাতালের পথে রওনা দিলাম ছেলেকে কোলে নিয়ে। তাড়াতাড়ি যাওয়ার জন্য মাঝপথে রিকশা ছেড়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় উঠে হাসপাতালে যাওয়ার আগেই আমার ছেলে আর নেই।’ পাঞ্জাবি ও লুঙ্গিতে লেগে থাকা ছোপ ছোপ রক্ত নিয়েই কথা বলছিলেন তিনি।

এদিকে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করার সময় মোবাইলে লাইভে ব্যস্ত যুবককে নিয়েও সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। পিস্তল হাতে হামলাকারী যুবক লাইভে থাকা যুবককে ঠেলে সামনে হাত বাড়িয়ে বাবলাকে গুলি করেন।

এ বিষয়ে বাবলার ভাই আজিজকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘ভারতে অবস্থানরত সাজ্জাদ (বড় সাজ্জাদ) আমার ভাইকে গুলি করার দৃশ্য দেখতে চেয়েছিল। এটা হয়তো দেখাচ্ছিল ওই যুবক।’

ওই যুবকের পরিচয় সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএনপি নেতা ইদ্রিস আলী বলেন, ‘ওই যুবক অতি উৎসাহী হয়ে লাইভ করতে পারেন। তবে তাকে আমরা চিনতে পারছি না।’

জানা গেছে, সরোয়ার হোসেন বাবলার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য আজ সকালে ফ্রিজ থেকে বের করে মর্গে নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে ঘটনার পর ওই এলাকায় দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। এলাকার পরিস্থিতি থমথমে। হত্যার সঙ্গে কারা জড়িত, সে বিষয়ে কেউ মুখ খুলতে রাজি নন। সবার মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। যে দোকানের ভেতরে বাবলাকে গুলি করা হয়েছে, সেটিও বন্ধ রয়েছে।

জানা গেছে, গতকাল মাগরিবের নামাজের পর বায়েজিদ বোস্তামী থানার চালিতাতলীর খন্দকারপাড়া এলাকায় নির্বাচনী জনসংযোগ করছিলেন চট্টগ্রাম-৮ আসনের বিএনপির প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ। ‘চালিতাতলীর মাটি, এরশাদ ভাইয়ের ঘাঁটি’—এ ধরনের স্লোগানও চলছিল। একপর্যায়ে লিফলেট বিতরণের জন্য পাশের একটি দোকানে ঢোকেন এরশাদ উল্লাহ। তাঁর সঙ্গে ২০-২৫ জন নেতা-কর্মী ছিলেন। হত্যাকারীরা ওই নেতা-কর্মীদের বহরে ঢুকে মিশে যায়। হঠাৎ গুলির শব্দ। ছত্রভঙ্গ হয়ে যান নেতা-কর্মীরা। খুব কাছ থেকে ঘাড়ের নিচে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করা হয় বাবলাকে। গুলিবিদ্ধ হন এরশাদ উল্লাহসহ চারজন। এরশাদ উল্লাহসহ অন্যরা নগরের বেসরকারি হাসপাতাল এভারকেয়ারে চিকিৎসাধীন। তাঁরা আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন ওই হাসপাতালের জিএম রাম প্রসাদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জমি নিয়ে সংঘর্ষ, একই পরিবারের সাজাপ্রাপ্ত ৯ আসামি গ্রেপ্তার

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা
গ্রেপ্তার সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা। ছবি: সংগৃহীত
গ্রেপ্তার সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা। ছবি: সংগৃহীত

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষের ঘটনায় করা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত একই পরিবারের ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার রাতে নিজ বাড়ি থেকে পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তার করে। তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার হেমনগর গ্রামের মো. আব্দুল করিম (৬০), মো. শাহ আলম (৪০), নুরুজ্জামান (৪৫), নুরুল আমিন (৪১), রুহুল আমিন (৪২), বাটুল হোসেন (৩৮), হাবিবুল্লাহ (৩৫), আরিফুল ইসলাম (৩২) ও স্বপন আলী (৩৬)। তাঁরা সবাই একই পরিবারের সদস্য বলে জানা গেছে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার হেমনগর গ্রামে ১৮ শতাংশ জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে ২০১৮ সালে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা সদরের আশিক উল্লার সঙ্গে হেমনগর গ্রামের উল্লেখিত আসামিদের সংঘর্ষ হয়। এতে মামলার বাদী আশিক উল্লা গুরুতর জখম হন। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সিরাজগঞ্জ ফৌজদারি আদালতে মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে বিজ্ঞ আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়।

এ বিষয়ে পেশকার আশিকুর রহমান বলেন, আসামিরা পলাতক থাকায় তাঁদের বিরুদ্ধে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। তাড়াশ থানার ওসি জিয়াউর রহমান বলেন, সাজাপ্রাপ্ত পরোয়ানাভুক্ত আসামিদের গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয়। আইনি কার্যক্রম শেষে তাঁদের বৃহস্পতিবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত