Ajker Patrika

ঝিনাইদহে রোপা আমনে মাজরা পোকার আক্রমণ, দিশেহারা কৃষক

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৮: ০২
ধানের জমিতে মাজরা পোকার আক্রমণ। ছবি: আজকের পত্রিকা
ধানের জমিতে মাজরা পোকার আক্রমণ। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঝিনাইদহে রোপা আমন মৌসুমের শুরুতে ধানের জমিতে দেখা দিয়েছে মাজরা পোকার আক্রমণ। সদ্য রোপণ করা চারাগুলো নষ্ট হওয়ায় দিশেহারা কৃষকেরা। নানা কীটনাশক ব্যবহার করেও নিয়ন্ত্রণে আসছে না এই পোকা। এতে উৎপাদন খরচ যেমন বেড়ে যাচ্ছে, তেমনি ফলন নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। কৃষকদের আশঙ্কা, এভাবে চলতে থাকলে তাঁরা মারাত্মক লোকসানের মুখে পড়বেন।

জানা গেছে, জেলার সদর, শৈলকুপা, কালীগঞ্জ, হরিণাকুণ্ডু, মহেশপুর ও কোটচাঁদপুর উপজেলায় একই পরিস্থিতি। ধানগাছের গোড়ায় আক্রমণ করছে মাজরা পোকা। এতে অনেক গাছ শুকিয়ে সাদা হয়ে যাচ্ছে। ফলে ব্যাহত হচ্ছে ধানের স্বাভাবিক বৃদ্ধি।

কৃষকেরা বলছেন, বারবার কীটনাশক স্প্রে করেও কোনো কার্যকর ফল পাওয়া যাচ্ছে না।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে ঝিনাইদহ জেলার ছয় উপজেলায় ১ লাখ ৪ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে। নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার ১৩৯ টন। তবে মৌসুমের শুরুতে পোকার এমন আক্রমণ কৃষি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রাকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে।

ধানের জমিতে মাজরা পোকার আক্রমণ। ছবি: আজকের পত্রিকা
ধানের জমিতে মাজরা পোকার আক্রমণ। ছবি: আজকের পত্রিকা

সদর উপজেলার কৃষক আব্দুল হাকিম বলেন, ‘তিন একর জমিতে রোপা আমন চাষ করেছি। মাজরা পোকার কারণে অনেক গাছ নষ্ট হয়ে গেছে। সব চেষ্টা করেও নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছি না।’

শৈলকুপা উপজেলার নাকোইল গ্রামের কৃষক আব্দুল জলিল বলেন, ‘ধান রোপণের পর থেকে নিয়মিত যত্ন নিচ্ছি। কিন্তু এখন মাজরা পোকার আক্রমণে অনেক গাছ মরে যাচ্ছে। আমরা যতবার কীটনাশক ব্যবহার করছি, তত খরচ বাড়ছে। কিন্তু ফল পাচ্ছি না। যদি এভাবে চলতে থাকে, তাহলে সব শেষ হয়ে যাবে।’

একই এলাকার কৃষক সাইদুর রহমান বলেন, ‘ধানের গোড়ায় পোকা ঢুকে গাছকে সাদা করে দিচ্ছে। এতে পুরো জমি নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। অনেক টাকা খরচ করেছি কীটনাশকে, কিন্তু কাজ হয়নি। ফলন কম হলে ঋণ শোধ করা আমাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়বে।’

কালীগঞ্জ উপজেলার কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের কৃষির প্রধান ভরসা আমন ধান। কিন্তু মৌসুমের শুরুতে যদি পোকা আক্রমণ করে, তাহলে কীভাবে বাঁচব। সরকারি দিকনির্দেশনা ও সহযোগিতা ছাড়া সামনে অন্ধকার ছাড়া কিছু নেই।’

এ ব্যাপারে সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নূর এ নবী বলেন, ‘এখনো আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। কৃষকেরা যদি আমাদের নির্দেশনা মেনে চলেন, তাহলে পোকার আক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা ইতিমধ্যে মাঠপর্যায়ে কাজ করছেন। আমরা কৃষকদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত