Ajker Patrika

ফার্মেসিতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিকিটে ব্যবস্থাপত্র লিখছিলেন বিক্রয় প্রতিনিধি

মেহেদী হাসান (দিনাজপুর) ফুলবাড়ী
ফার্মেসিতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিকিটে ব্যবস্থাপত্র লিখছিলেন বিক্রয় প্রতিনিধি

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বাইরে এক ফার্মেসির দোকানে বসে জরুরি বিভাগের ৩ টাকার টিকিটে (ব্যবস্থাপত্র) চিকিৎসকের পরিবর্তে ওষুধের নাম লিখছিলেন এক ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি। এ সময় স্থানীয় এক যুবক ওই প্রতিনিধিকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেন। তখন ওই প্রতিনিধি উত্তেজিত হয়ে পড়লে দুজনের মধ্য বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয়। পরে বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।

গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বাইরে মা ফার্মেসিতে এ ঘটনা ঘটে। এরপর থেকেই এলাকার মানুষের মধ্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা সেবা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। এ ঘটনায় থানা সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

জানা গেছে, উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোনো রোগী এলে প্রথমেই তিনি জরুরি বিভাগে গিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসকের কাছে পরামর্শ নেবেন। এ সময় ওই রোগী চিকিৎসার জন্য ৩ টাকার মূল্যমানের একটি টিকিট নেবেন, তাতে (ব্যবস্থাপত্র) ওষুধের নাম ও সেবনের নিয়ম লিখে দেবেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক। 

কিন্তু সোমবার ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সামনে মা ফার্মেসিতে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। এই দোকানে বসে এসকেএফ ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি আবু সাইদ জরুরি বিভাগের ৩ টাকা মূল্যমানের ওই টিকিটে লিখছিলেন ওষুধের নাম। এ সময় স্থানীয় যুবক শাহিনুল বাশার ফিজার বিষয়টি দেখতে পেয়ে ওই ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিকে জিজ্ঞাসা করেন, আপনি কী ডাক্তার? আর এখানে বসে কেন সরকারি হাসপাতালের ব্যবস্থাপত্রে ওষুধ লিখছেন?

এ সময় ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তখন ওই যুবক হাসপাতালের টিকিটগুলো নিয়ে নেন এবং বিষয়টি নিয়ে তাদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। পরে ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। পরদিন আজ মঙ্গলবার দুপুরে শাহিনুল একটি লিখিত অভিযোগের মাধ্যমে ওই ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধির কাছ থেকে পাওয়া জরুরি বিভাগের তিন টাকার ছয়টি টিকিট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিয়েছেন এবং অভিযোগটি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানিয়েছেন। 

এরপর স্থানীয় একজন সাংবাদিক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করলেও তাঁরা ওই ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধির বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এদিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপত্র বাইরে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধির কাছে বিষয়ে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা চেয়েছে স্থানীয়রা। 

এ বিষয়ে স্থানীয় যুবক শাহিনুল বাশার বলেন, ‘আমি ওষুধের দোকানে গিয়ে দেখতে পাই, একজন ব্যক্তি ওখানে বসে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৩ টাকার টিকিটে ওষুধ লিখছেন। তখন তাকে জিজ্ঞাসা করি, তিনি কী ডাক্তার? এ সময় তিনি নিজেকে এসকেএফ ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি হিসেবে পরিচয় দেন। এ সময় তার কাছে থাকা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিকিটগুলোর বিষয়ে প্রশ্ন করি, ‘‘সরকারি হাসপাতালের এতগুলো টিকিট কী করে আপনার কাছে এল? চিকিৎসক না হয়েও কী করে তাতে ওষুধ লিখছেন?’ ’ কথা বলার একপর্যায়ে বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়েন।’ 

এ বিষয়ে জানতে এসকেএফ ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি আবু সাঈদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ব্যস্ত জানিয়ে বলেন, ‘আমি মিটিংয়ে আছি পরে কথা বলব।’ 

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মশিউর রহমানের সঙ্গে কথা বলতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি। এ সময় তাঁর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। পরে জানা যায় তিনি বাইরে আছেন। 

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো. শাকিলুর রহমান জানান, এ ব্যাপারে সোমবার সন্ধ্যায় ফুলবাড়ী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। 

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিকিট কীভাবে বাইরে গেল, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জরুরি বিভাগে অনেক লোকজন আসা যাওয়া করে; তা ছাড়া ওই টিকিট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে। টিকিট কেউ ছাপিয়েও নিতে পারে, তবে স্থানীয়রা যাকে অভিযুক্ত করছেন তার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দেখা হবে।’ 

ফুলবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল ইসলাম সাধারণ ডায়েরির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ বিষয়ে থানায় একটি জিডি হয়েছে। ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে। 

দিনাজপুর সিভিল সার্জন ডা. মো. বোরহানুল সিদ্দিক বলেন, ‘এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় যেই জড়িত থাক, আমার স্টাফ হলেও তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বগুড়ায় যুবক খুন, স্ত্রী ও তাঁর মামাতো ভাই গ্রেপ্তার

বগুড়া প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

বগুড়ায় জহুরুল ইসলাম (৩৮) নামের এক যুবককে খুনের অভিযোগে তাঁর স্ত্রীসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বগুড়া সদরের হাজরাদীঘি গ্রামের বাসিন্দা জহুরুল ইসলামের রক্তাক্ত লাশ গতকাল মঙ্গলবার সকালে ওই গ্রামের একটি ধানখেত থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।

আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) ভোরে নিহত যুবকের স্ত্রী শামিমা বেগম (২৮) ও বিপুল হোসেন (৩৫) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বিপুল শামিমার মামাতো ভাই।

বগুড়া সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ জানায়, গতকাল সকালে হাজরাদীঘি গ্রামের একটি ধানখেতে জহুরুল ইসলামের রক্তাক্ত মরদেহ দেখে স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দেন। নিহত যুবকের মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাতের একাধিক চিহ্ন ছিল। লাশ উদ্ধারের পর নিহত যুবকের স্ত্রী পুলিশকে জানান, গত সোমবার রাত ১১টার দিকে মোবাইল ফোনে কে বা কারা জহুরুলকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর রাতে জহুরুল আর ফিরে আসেননি। কিন্তু পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তিগত তদন্ত করে নিহত যুবকের স্ত্রী শামিমা ও তাঁর মামাতো ভাই পার্শ্ববর্তী অন্তাহার গ্রামের হামিদুর রহমানের ছেলে বিপুল হোসেনকে সন্দেহ করে। পরে আজ ভোরে নিহত জহুরুলের বাড়ি থেকে তাঁর স্ত্রী শামিমা ও বিপুলকে আটক করে।

থানায় দুজনকে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করলে বের হয় চাঞ্চল্যকর তথ্য। নিহত যুবকের স্ত্রী শামিমা পুলিশকে জানান, তাঁরা স্বামী-স্ত্রী একে অপরের মামাতো-ফুফাতো ভাই-বোন। আর জহুরুল ও বিপুল একে অপরের খালাতো ভাই। জহুরুল ইসলামের বাড়ি কাহালু উপজেলায় হলেও বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের পর ছোটবেলা থেকেই তিনি মামার বাড়ি হাজরাদীঘি গ্রামে বসবাস করতেন। তিনি পেশায় বেকারি পণ্যসামগ্রী পরিবহনের ভ্যানচালক আর বিপুল পেশায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক। জহুরুলের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয় ১৫ বছর আগে। তাঁদের সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। জহুরুলের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার আগে থেকেই বিপুলের সঙ্গে শামিমার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিয়ের পরেও তাঁরা প্রেমের সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছিলেন। বিপুল মাঝেমধ্যে শামিমার বাড়িতে আসতেন। শামিমার বাবা বিপুল ও জহুরুলের মামা হওয়ার কারণে গ্রামের লোকজন বিষয়টি সন্দেহের চোখে দেখতেন না। কিন্তু বিপুলের যাতায়াত পছন্দ করতেন না জহুরুল। এ নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে জহুরুলের দাম্পত্যকলহ লেগেই থাকত। শামিমার সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য বিপুল তাঁকে একটি ছোট মোবাইল ফোন কিনে দেন। সেই ফোনটি শামিমা লুকিয়ে রাখতেন। এভাবে দীর্ঘদিন সম্পর্ক চলার একপর্যায় স্বামীকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য বিপুলের সঙ্গে পরামর্শ করেন শামিমা। দুজনের পরিকল্পনা অনুযায়ী গত সোমবার রাতে শামিমা দুধের সঙ্গে কৌশলে তাঁর স্বামীকে ১৫টি ঘুমের বড়ি সেবন করান। কিছুক্ষণ পর অচেতন হয়ে পড়লে রাত ১১টার দিকে বিপুল শামিমার বাড়ি আসেন। এরপর বিপুল কাঁধে করে জহুরুলকে বাড়ি থেকে বের করে গ্রামের একটি মাঠে পরিত্যক্ত বাড়ির কাছে নিয়ে যান। এ সময় সঙ্গে শামিমাও সেখানে যান। এরপর জহুরুলের মাথা পরিত্যক্ত বাড়ির দেয়ালের সঙ্গে কয়েকবার আঘাত করেন। একপর্যায়ে একটি পুরোনো স্যানিটারি প্যানের পরিত্যক্ত ভাঙা অংশ দিয়ে জহুরুলের মাথায় একাধিক আঘাত করে পাশের ধানখেতে ফেলে রেখে দুজন চলে যান।

পুলিশ পরিদর্শক মাহফুজার রহমান জানান, নিহত জহুরুলের মা-বাবার সঙ্গে তাঁর কোনো যোগাযোগ না থাকায় এ ঘটনায় গ্রেপ্তার শামিমার বাবা শাহিনুর রহমান বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। সেই মামলায় দুজনকে আদালতে হাজির করা হয়েছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করার জন্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নেছারাবাদে স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ, থানায় মামলা

নেছারাবাদ (পিরোজপুর) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি।
প্রতীকী ছবি।

পিরোজপুরের নেছারাবাদে চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রীকে (৯) দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে নেছারাবাদ থানায় মামলা দায়ের করেন।

এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন নয়ন (২০), অপূর্ব (২০) ও দুর্জয় হালদার (২০)।

বুধবার (৫ নভেম্বর) ভুক্তভোগীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পিরোজপুর সিভিল সার্জন অফিসে পাঠানো হয়েছে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যার দিকে ভুক্তভোগী ছাত্রী প্রতিবেশী দুর্জয় হালদারের ঘরে মোবাইল চার্জার আনতে গেলে মুখে গামছা বেঁধে নয়ন, অপূর্ব ও দুর্জয় জোরপূর্বক তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এ ছাড়া আসামিরা বিভিন্ন সময়ে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।

নেছারাবাদ থানার ওসি মো. বনি আমিন বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। ভুক্তভোগীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য সিভিল সার্জন অফিসে পাঠানো হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

টেকনাফে কোকো ক্রীড়া সংসদের আহ্বায়কের লাশ উদ্ধারের পর সম্পাদক পলাতক

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি 
নিহত মো. ইউনুস। ছবি: সংগৃহীত
নিহত মো. ইউনুস। ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় আরাফাত রহমান কোকো ক্রীড়া সংসদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ ইউনুস সিকদারের (৫০) লাশ উদ্ধারের পর থেকে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. আলম সবুর মিয়া পলাতক রয়েছেন।

উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গিখালী এলাকার একটি সেতুর নিচ থেকে বুধবার সকাল ৮টার দিকে ইউনুস সিকদারের লাশ উদ্ধার করা হয়। ইউনুস উপজেলার সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ছিলেন।

পরিবারের অভিযোগ, ইউনুস গতকাল মঙ্গলবার রাতে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. আলম সবুর মিয়ার বাড়িতে আমন্ত্রণে গিয়েছিলেন। সেখানে যাওয়ার পর পরিকল্পিতভাবে তাঁকে হত্যা করা হয়। ঘটনার পর থেকে সবুর মিয়া পলাতক।

টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জায়েদ মো. নাজমুন নূর জানান, সেতুর নিচ থেকে ভাসমান অবস্থায় একজন পুরুষের মরদেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা ওপরে তুলে শনাক্ত করেন। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গ পাঠিয়েছে।

ওসি জানান, ধারণা করা হচ্ছে, লেনদেনসংক্রান্ত পাওনা টাকা আদায়ের জন্য এই হত্যাকাণ্ড। এ বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে। জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

টেকনাফ পৌর বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আব্দুস সালাম বলেন, ইউনুসকে কমিটির কথা বলে সবুর মিয়া আমন্ত্রণ জানান। মঙ্গলবার রাতে যাওয়ার পর পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে মরদেহ সেতুর নিচে ফেলে দেওয়া হয়। ঘটনার পর সবুর মিয়া পলাতক।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রঙ্গিখালী এলাকার একাধিক বাসিন্দা জানান, ইউনুস প্রায়ই সবুর মিয়ার বাড়িতে আসা-যাওয়া করতেন। সবুর মিয়া, আবছার উদ্দিন, আনোয়ার হোসাইন ওরফে লেটাইয়্যা, মিজানুর রহমান ওরফে বাড়ু মিজানসহ কয়েকজন মিলে এলাকার দোকানে আড্ডাও দিতেন। কয়েক দিন ধরে ইয়াবাসংক্রান্ত পাওয়া টাকার বিরোধের জেরেই তাঁদের মধ্যে প্রকাশ্যে কথা-কাটাকাটির ঘটনা শোনা গেছে। সর্বশেষ মঙ্গলবার রাতে সবুর মিয়ার বাড়িতে ইউনুসকে আটকে ব্যাপক নির্যাতন চালানো হয়। এতে মারা যাওয়ার পর লাশ সেতুর নিচে রেখে বাড়িতে তালা দিয়ে সবুরসহ অভিযুক্তরা পালিয়ে যান।

নিহতের স্ত্রী কোহিনুর আক্তার বলেন, ‘আমার স্বামীকে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে গিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। কোনো প্রকার টাকার লেনদেন নেই। আমি স্বামী হত্যার বিচার চাই।’

ওসি জানান, পাওয়া টাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে কী লেনদেনের টাকা, জানা যায়নি। যাঁদের নাম বলা হচ্ছে, তাঁদের ধরতে চেষ্টা চলছে। নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলেও জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজধানীতে আওয়ামী লীগের ৭ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীতে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনের সাত নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর থেকে আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) সকাল পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

আজ এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানায় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান জান্নাতুল ফেরদৌস ঝুমা ওরফে ঝুমা তালুকদার।

গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন সাভার উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির আহমেদ (৫২), ভাষানটেক থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আলী মোল্লা (৫৪), আওয়ামী লীগ কর্মী জুবায়ের হোসেন ওরফে মামুন (৪৮), কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার দিলালপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আশরাফ সিদ্দিকী (৫১), আওয়ামী লীগ কর্মী মো. রমজান (৪৭) এবং রূপগঞ্জ থানার কায়েতপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোশারফ ভূঁইয়া (৪৯)।

ডিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গতকাল দুপুরে গুলিস্তান থেকে আশরাফ সিদ্দিকী ও মো. রমজান, বিকেলে হেমায়েতপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে নাসির আহমেদ, রাতে বারিধারা থেকে হাসান আলী মোল্লা, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে মোশারফ ভূঁইয়া, শ্যামলী আবাসিক এলাকা থেকে জুবায়ের হোসেন ওরফে মামুনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এদিকে আজ বুধবার সকালে ধানমন্ডি এলাকা থেকে জান্নাতুল ফেরদৌস ঝুমা ওরফে ঝুমা তালুকদারকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত