Ajker Patrika

হাকিমপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

চিকিৎসক-যন্ত্রপাতির সংকটবন্ধ রয়েছে অস্ত্রোপচারও

  • ২০ চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও আছেন মাত্র ৫ জন।
  • সেবাবঞ্চিত হচ্ছে উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ।
  • সব সংকট কাটিয়ে উন্নতমানের চিকিৎসাসেবা চালুর দাবি স্থানীয়দের।
  • চিকিৎসকের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছি: স্বাস্থ্য কর্মকর্তা
সোহেল রানা, হিলি (দিনাজপুর)
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দেশের দ্বিতীয় স্থলবন্দর হিসেবে পরিচিত হিলি। এই বন্দর এলাকায় অবস্থিত হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। স্থলবন্দর ও উপজেলার লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসাসেবার একমাত্র ভরসা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। তবে নানা কারণে বরাবরই মুখ থুবড়ে পড়ে আছে এটি। উন্নতমানের অপারেশন থিয়েটার থাকলেও চিকিৎসকের সংকটে আজও চালু হয়নি এর কার্যক্রম। এতে সেবাবঞ্চিত হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা চিকিৎসকের সংকট কাটিয়ে উন্নতমানের চিকিৎসাসেবা চালুর দাবি জানিয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন বহির্বিভাগে ৪০০ থেকে ৫০০ এবং অন্তবিভাগে ১০০ থেকে ১৫০ জন রোগী চিকিৎসাসেবা নিয়ে থাকে। আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন থাকলেও একজন রেডিওলজিস্টের অভাবে হয় না পরীক্ষা-নিরীক্ষা। এ ছাড়া উন্নতমানের অপারেশন থিয়েটার থাকলেও গাইনি সার্জারি ও সার্জারি কনসালট্যান্টের অভাবে হয় না অপারেশন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে ২০ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলে আছেন মাত্র ৫ জন। এতে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে স্থানীয়রা।

চিকিৎসা নিতে আসা আনেছা বেগম বলেন, ‘আমরা তো গরিব মানুষ। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসি; কিন্তু এখানে জ্বর, সর্দি, মাথাব্যথা ছাড়া তেমন বড় ধরনের চিকিৎসা করাতে পারি না। এখানে যদি বড় বড় ডাক্তার বসত, ভালো হতো।’

সাজ্জাদ নামের রোগীর এক স্বজন বলেন, ‘এখানে আলট্রাসনোগ্রাম হয় না, ভালো পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা নেই, যার কারণে বাইরে থেকে আমাদের বেশি টাকা খরচ করে এসব করতে হয়। সরকারের কাছে অনুরোধ, এখানে এসব পরীক্ষা চালু করা হোক।’

আরিফা বেগম নামের এক রোগী বলেন, ‘এখানে এক্স-রে করলে ১০০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যেই হচ্ছে; কিন্তু বাইরে সেটা করলে ৩ গুণ বেশি টাকা লাগে। আবার আলট্রাসনোগ্রাম হয় না, সেটা বাইরে করতে খরচ লাগে ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। হাসপাতালে এটা করা গেলে খরচ লাগত মাত্র ৩০০ টাকার মতো। অপারেশন থিয়েটার আছে নাকি শুনি, কিন্তু এক দিনও অপারেশন করা দেখলাম না। সিজারগুলো যদি এখানে করা যেত, আমাদের মতো গরিব মানুষেরা অনেক উপকৃত হতো।’

হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারক নাজমুল হোসেন বলেন, ‘হিলি স্থলবন্দর ও সীমান্তের কারণে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সরকারের কাছে সেটি অবহেলা। চাইলেও একজন ভারতীয় ট্রাকচালক কিংবা বাহিরে থেকে আসা ব্যবসায়ীদের তাৎক্ষণিক ভালো মানের চিকিৎসা দিতে পারি না। চাইলেও অপারেশন করা যায় না। সব দিক দিয়ে ভোগান্তি। অথচ এখান থেকে সরকার ৭০০ থেকে ১ হাজার কোটি রাজস্ব আহরণ করে। কিন্তু এখানে নজর নেই।’

হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০ চিকিৎসক থাকার কথা থাকলে রয়েছেন ৫ জন। এই অল্পসংখ্যক চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। উন্নতমানের অপারেশন থিয়েটার আছে কিন্তু যন্ত্রপাতি এবং গাইনি ও সার্জারি কনসালট্যান্ট না থাকায় অপারেশনপ্রক্রিয়া শুরু করতে পারছি না। রেডিওলজিস্ট না থাকায় বহির্বিভাগে আলট্রাসনোগ্রাম চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে বিশেষ ব্যবস্থায় সপ্তাহে এক দিন করে হলেও আমরা এটা খুব শিগগিরই চালু করব।’

আশরাফুল জানান, চিকিৎসকের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছেন। চিকিৎসক পেলে সব ধরনের সেবা চালু করবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাসিনার পতনের আগের দিন ড. ইউনূসের সঙ্গে সরকার গঠন নিয়ে আলোচনা হয়: নাহিদ

শেষ ওভারে নবির ছক্কাবৃষ্টি, বাংলাদেশের সমীকরণ কী দাঁড়াল

কুমিল্লায় ৪ মাজারে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, পুলিশ-সেনাবাহিনী মোতায়েন

দিয়াবাড়ির কাশবনে নারীর অর্ধগলিত লাশ, মৃত্যু ১০-১২ দিন আগে: পুলিশ

সেনা আশ্রয় ছেড়ে ভাড়া বাড়িতে নেপালের সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত