Ajker Patrika

সংশোধন হচ্ছে সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ

  • চারটি ধারায় ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ অন্তর্ভুক্তের কাজ করছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
  • আজ কর্মচারী নেতাদের সঙ্গে পর্যালোচনা কমিটির দ্বিতীয় বৈঠক।
শহীদুল ইসলাম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

কর্মচারীরা বাতিলের দাবি জানালেও সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ সংশোধন করতে যাচ্ছে সরকার। এই অধ্যাদেশ সংশোধন করে যেসব ধারায় অপপ্রয়োগের সুযোগ রয়েছে, সেখানে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ অন্তর্ভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

অধ্যাদেশ সংশোধন করে সেখানে কোন কোন বিষয় যুক্ত করা হবে, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে তা চূড়ান্ত করবে সরকার। এরপর উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন নিয়ে অধ্যাদেশটি সংশোধন করা হবে বলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্র জানিয়েছে।

চার ধরনের শৃঙ্খলাভঙ্গের অপরাধের জন্য বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শুধু কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে সরকারি কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করার বিধান রেখে গত ২৫ মে সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। এই অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করছেন কর্মচারীরা। তাঁদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে অধ্যাদেশটি পর্যালোচনায় আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে প্রধান করে ৪ জুন একটি কমিটি করে সরকার। পর্যালোচনা কমিটির সদস্যরা ১৬ জুন সভা করেছেন।

পর্যালোচনা কমিটির বৈঠকে উপস্থিত একজন কর্মকর্তা জানান, পর্যালোচনা কমিটির প্রথম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই অধ্যাদেশের যেসব ধারায় অপপ্রয়োগের সুযোগ রয়েছে, সেগুলো চিহ্নিত করে সেখানে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ অন্তর্ভুক্তের সিদ্ধান্ত হয়েছে। কোন কোন ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ যোগ করা যেতে পারে, সে বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছে কমিটি। অধ্যাদেশ বাতিল না করে কীভাবে সংশোধন করলে কর্মচারীদের আপত্তি থাকবে না, তা মাথায় রাখতে বলা হয়েছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘কোন বিষয়গুলো অনানুগত্যের মধ্যে পড়বে, তা নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। এর ফলে কেউ চাইলেই অনানুগত্যের অভিযোগ তুলে কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে না। অনানুগত্যের মধ্যে কোন কোন বিষয় রাখা হবে, সে বিষয়ে আমরা কাজ করছি।’

যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলে কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। সূত্র জানায়, এ বিষয়ে অধ্যাদেশে নতুন করে একটি ব্যাখ্যা যোগ করা হবে। ওই ব্যাখ্যা অনুযায়ী কেউ যদি দাপ্তরিক কাজের বাইরে ব্যক্তিগত জরুরি কাজের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে না বলে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকেন, সে জন্য চাইলেই তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না।

অধ্যাদেশ অনুযায়ী কাউকে কাজে বিরত থাকতে উসকানি দিলে বা কাজ করতে বাধা দিলে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। এই ধারায় নতুন একটি ব্যাখ্যা যুক্ত করে বলা হবে, যে কর্মচারী কাজে বিরত থাকতে বা কাজে যোগ দিতে বাধাপ্রাপ্ত হয়েছেন, শুধু তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে এই ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। তৃতীয় পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে এই ধারায় কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। নারী কর্মচারীরা যাতে অন্য সহকর্মীদের হয়রানির শিকার না হন, সে বিষয়েও নতুন করে একটি ধারা যোগ করার চিন্তা করা হচ্ছে। পাশাপাশি অভিযুক্ত কর্মচারী যাতে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পান, আইন সংশোধন করে তা নিশ্চিতের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

চার ধরনের শৃঙ্খলাভঙ্গের অপরাধের জন্য সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দিয়ে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি এখন অভিযোগ গঠন করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে অভিযোগ গঠনকারী এবং অভিযোগ নিষ্পত্তির এখতিয়ার একজনের হাতে না রেখে সেখানে একাধিক ব্যক্তিকে সম্পৃক্ত করার কথা ভাবছে সরকার।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, পর্যালোচনা কমিটির সভায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি বলেছেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নিয়ে সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ করেনি। সরকারের নির্দেশনায় তারা এই অধ্যাদেশ করেছে। ফলে এখন সরকার যেভাবে সিদ্ধান্ত দেবে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সেভাবেই কাজ করবে। সরকার অধ্যাদেশটি বাতিল করলেও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তাতে আপত্তি নেই।

সূত্র জানায়, পর্যালোচনা কমিটির সদস্য ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং এই কমিটিতে সহায়তাদানকারী কর্মকর্তাদের মধ্যে ভূমিসচিব এখন বিদেশে আছেন। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে তাঁর দেশে ফেরার কথা রয়েছে। এরপর পর্যালোচনা কমিটি সভা করে তাঁর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করবে। এ ক্ষেত্রে আন্দোলনরত কর্মচারী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক এবং পরে তাঁদের অবস্থানকে আমলে নেওয়া হবে।

সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান মো. নূরুল ইসলাম ও বাদিউল কবীর এবং কো-মহাসচিব মো. নজরুল ইসলামের সঙ্গে গত সোমবার বৈঠক করেছে পর্যালোচনা কমিটি। তাঁদের সঙ্গে আজ বুধবার আবার বৈঠকে বসবে এই কমিটি।

সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান বাদিউল কবীর গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের যেসব পয়েন্ট নিয়ে আমরা আপত্তি জানিয়েছি, সেগুলো তুলে দিলে এই আইন এমনিতেই বাতিল হয়ে যাবে, এর কার্যকারিতা আর থাকে না। আমরা চাই যেকোনোভাবেই হোক ওই পয়েন্টগুলো যেন না থাকে এবং এর পক্ষেই আমরা অনড় অবস্থানে থাকব।’

সরকার চাকরি অধ্যাদেশ সংশোধন করলে মেনে নেবেন কি না, এ প্রশ্নে বাদিউল বলেন, ‘আমাদের আরও দেখার বিষয় আছে, না জেনে কোনো মন্তব্য করব না। যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের স্বার্থ শতভাগ সংরক্ষিত না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা সংশোধনের পক্ষে মতপ্রকাশ বা এটি অনুমোদনের কোনো প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করব না।’

পর্যালোচনা কমিটির সঙ্গে গত সোমবারের বৈঠকে সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের সাতটি অপপ্রয়োগের শঙ্কার কথা জানিয়ে সে বিষয়ে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ উপস্থাপন করেছেন কর্মচারী নেতারা। অভিযুক্তের অপরাধ তদন্তের ব্যবস্থা রাখারও দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজধানীতে যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের বিক্ষোভ, তীব্র যানজট

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ১৪: ০৬
রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে বিক্ষোভ করছে জামায়াতসহ ৮ দলের নেতা-কর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা।
রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে বিক্ষোভ করছে জামায়াতসহ ৮ দলের নেতা-কর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা।

নির্বাচনের আগে গণভোট এবং জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারিসহ পাঁচ দাবিতে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে বিক্ষোভ করছেন যুগপৎ আন্দোলনের শরিক জামায়াতসহ আট দলের নেতা-কর্মীরা। আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পল্টন, কাকরাইল, শাপলা চত্বর, মৎস্য ভবন এলাকায় চলা এই অবস্থান কর্মসূচির কারণে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

সকাল ১০টা থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে পল্টন মোড়ে এসে জড়ো হতে থাকেন নেতা-কর্মীরা। পরে সেখান থেকে মিছিল নিয়ে মৎস্য ভবন মোড়ে এলে তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ। পরে মৎস্য ভবন মোড়ে অবস্থান নেন তাঁরা। এতে আশপাশ এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে ৯ সদস্যবিশিষ্ট একটি প্রতিনিধিদল উপদেষ্টার বাসভবনে গেলে নেতা-কর্মীরা মৎস্য ভবন মোড়ে অবস্থান করতে থাকেন।

এর আগে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বর এবং কাকরাইল মোড়ে জড়ো হন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা। সেখান থেকে পরে মিছিল নিয়ে পল্টনে আসেন তাঁরা।

এই কর্মসূচির ফলে রাজধানীজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। হাইকোর্ট, পল্টন, প্রেসক্লাব ও কাকরাইল এলাকায় যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। তবে অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি সেবার যানবাহন যাওয়ার পথ করে দিচ্ছেন নেতা-কর্মীরা।

রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে বিক্ষোভ করছে জামায়াতসহ ৮ দলের নেতা-কর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা।
রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে বিক্ষোভ করছে জামায়াতসহ ৮ দলের নেতা-কর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা।

এক পথচারী বলেন, ‘রাস্তা বন্ধ করে আন্দোলন করা কাম্য না। মানুষকে কষ্ট দিয়ে কী লাভ? যৌক্তিক দাবি থাকলে সেটা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা যেত।’

আট দলের নেতা-কর্মীদের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে আরও রয়েছে—অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদে রাজনৈতিক হয়রানি ও গ্রেপ্তার বন্ধ, নির্বাচনে সব দলের সমান সুযোগ এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা ও রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রমে বাধাহীনতা নিশ্চিত করা।

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চকরিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত: চৌদ্দগ্রামে ৫ নারীর দাফন সম্পন্ন

চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি 
আজ সকাল ১০টায় চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার চান্দিশকরা কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে তিনজনের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকাল ১০টায় চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার চান্দিশকরা কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে তিনজনের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

কক্সবাজারের চকরিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত পাঁচ নারীর দাফন সম্পন্ন হয়েছে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে। আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সকাল ১০টায় চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার চান্দিশকরা কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে তিনজনের ও ফালগুনকরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে দুজনের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। তাঁদের জানাজায় শত শত মানুষ অংশ নেয়। পরে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন চান্দিশকরা গ্রামের বাসিন্দা উদয় পাটোয়ারীর স্ত্রী ফারজানা মজুমদার লিজা (২৮), মা রুমি বেগম (৬৫), বোন সাদিয়া হক পাটোয়ারী (২৪), শাশুড়ি রিজওয়ানা মজুমদার শিল্পী (৫৫) ও শ্যালিকা ফারহানা মজুমদার টিজা (২৫)। এই ঘটনায় চান্দিশকরা ও ফালগুনকরা গ্রাম শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়ে।

এর আগে গত মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) দিবাগত রাতে ঢাকার উত্তরার বাসা থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশে ভাড়া করা মাইক্রোবাসে রওনা দেন উদয় পাটোয়ারী, স্ত্রী ফারজানা মজুমদার লিজা, ছেলে সামাদ পাটোয়ারী, শ্যালিকা ফারহানা মজুমদার টিজা ও শ্যালক শাহেদ মজুমদার লিশান (২২)। রাত আড়াইটার দিকে চৌদ্দগ্রাম থেকে মা রুমি বেগম, বোন সাদিয়া হক পাটোয়ারী এবং শাশুড়ি রিজওয়ানা মজুমদার শিল্পীকে গাড়িতে তোলেন।

গতকাল বুধবার সকাল ৯টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালীর ঢালা এলাকায় পৌঁছালে বেপরোয়া গতিতে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে মাইক্রোবাসের সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে পাঁচজন মারা যান। আহত হন উদয় পাটোয়ারী, তাঁর ছেলে ও শ্যালক। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাঁদের উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। তাঁদের মধ্যে শ্যালক শাহেদ মজুমদার লিশানের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘বিস্কুটে কী ছিল?’—একই সঙ্গে শ্বাসকষ্টে ৫ ছাত্রী হাসপাতালে

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
হাসপাতালে অসুস্থ ছাত্রীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
হাসপাতালে অসুস্থ ছাত্রীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার কুমারপুর উচ্চবিদ্যালয়ে একই সময়ে পাঁচ ছাত্রী হঠাৎ শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালে তাদের ভর্তি করা হলে চিকিৎসকেরা বলেন, একই ধরনের বিস্কুট খাওয়ার পরপরই শ্বাসকষ্ট দেখা দিয়েছে। এই ঘটনার পর বিদ্যালয়জুড়ে রহস্যের জন্ম দিয়েছে; অভিভাবক মহলে ছড়িয়েছে আতঙ্ক।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, সকাল ১০টায় প্রাত্যহিক অ্যাসেম্বলি শেষ করে ছাত্রীদের ক্লাসে ফেরত যাওয়ার কিছুক্ষণ পরই এক ছাত্রী শ্বাস নিতে কষ্ট অনুভব করে। তার পরপরই একই শ্রেণির আরও চারজন একই উপসর্গে অসুস্থ হয়ে পড়ে।

কুমারপুর উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘প্রথমে একজন অসুস্থ হওয়ায় আমরা ভেবেছিলাম অ্যালার্জির সমস্যা। কিন্তু পরপর পাঁচজনের একই উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাই। পরে সবাইকে জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।’

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জাকিয়া আক্তার বলেন, পাঁচ ছাত্রী শ্বাসকষ্ট নিয়ে এসেছে। জিজ্ঞেস করে জানা যায়, অ্যাসেম্বলি শেষে তারা সবাই একই ধরনের বিস্কুট খেয়েছিল। তারপর থেকে উপসর্গ দেখা দেয়। তিনি আরও বলেন, ‘ফুসফুস পরীক্ষা করে কোনো সংক্রমণ পাওয়া যায়নি। কারও জ্বর, সর্দি বা কাশি ছিল না। হঠাৎ শ্বাসকষ্ট দেখা দেওয়া অস্বাভাবিক। বিস্কুট মেয়াদোত্তীর্ণ ছিল কি না বা তাতে কোনো রাসায়নিক ছিল কি না—সেটি নিশ্চিত হতে পরীক্ষা জরুরি।’

হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মঞ্জুরুল ইসলাম জানান, ছাত্রীদের অক্সিজেন দিয়ে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। প্রাথমিক সতর্কতা হিসেবে মুখে যেকোনো খাবার আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণ শেষে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

শিক্ষার্থীদের একজনের অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, ‘সকালে একদম ভালো ছিল। স্কুলে গিয়ে কী এমন খেল যে শ্বাসই নিতে পারছে না; এখনো বুঝতে পারছি না।’

এই ঘটনার পর কুমারপুর উচ্চবিদ্যালয়ে অন্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে। অনেক অভিভাবক দুপুরে সন্তানদের স্কুল থেকে বাড়িতে নিয়ে যান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিরাজগঞ্জে ট্রাকসহ দুই মাদক কারবারি আটক, ২৩৭ গ্রাম হেরোইন জব্দ

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি  
আটক করা দুই মাদক কারবারি। ছবি: সংগৃহীত
আটক করা দুই মাদক কারবারি। ছবি: সংগৃহীত

সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় ট্রাকসহ দুই মাদক কারবারিকে আটক করেছে র‌্যাব-১২। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ২৩৭ গ্রাম হেরোইন, একটি ট্রাক, দুটি মোবাইল ফোন ও নগদ ৪ হাজার ৭০০ টাকা জব্দ করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সকালে র‌্যাব-১২-এর কোম্পানি কমান্ডার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীপংকর ঘোষ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল (৫ নভেম্বর) দিবাগত গভীর রাতে সলঙ্গা এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে র‌্যাবের একটি দল। অভিযানে রাজশাহীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার কাঁঠালবাড়ীয়া এলাকার মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে রবিউল ইসলাম (৫৫) এবং রাজশাহীর গোদাগাড়ী থানার মাদারীপুর পূর্বপাড়া গ্রামের বাবুল শাহ (৬০) নামের দুজনকে আটক করা হয়।

জব্দ করা ট্রাক। ছবি: সংগৃহীত
জব্দ করা ট্রাক। ছবি: সংগৃহীত

র‌্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা হেরোইন কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। এই ঘটনায় তাঁদের বিরুদ্ধে সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত