Ajker Patrika

রাজধানীর মগবাজারে ভোরে অস্ত্রের মুখে ছিনতাই, যা জানালেন ভুক্তভোগী

মোদাব্বির হাশমী
আপডেট : ২৬ মে ২০২৫, ২১: ২৪
মগবাজারে ছিনতাইয়ের ভাইরাল ভিডিও। ছবি: স্ক্রিনশট
মগবাজারে ছিনতাইয়ের ভাইরাল ভিডিও। ছবি: স্ক্রিনশট

রাজধানীর মগবাজারে অস্ত্র ঠেকিয়ে এক তরুণের ব্যাগ ছিনতাইয়ের দৃশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটি একাধিক সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক, টুইটারসহ ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবেও ছড়িয়েছে। ভিডিওটি দেখে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বলে মনে হয়। ফুটেজের টাইম স্ট্যাম্প অনুযায়ী, ঘটনা ১৮ মে বিকেল ৫টা ২২ নাগাদ ঘটেছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, একটি সাদা টি-শার্ট পরিহিত তরুণ রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। হঠাৎ মোটরসাইকেলে করে আসা তিন যুবক তাঁর পথ আটকান। তিনজনের দুজনের মাথায় হেলমেট ও একজন মাস্ক পরা। দুজনের হাতে চাপাতি। অস্ত্র ঠেকিয়ে তরুণটির ব্যাগ ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয়। চাপাতি দিয়ে তাঁকে কয়েকবার আঘাতও করা হয়। এরপর তিন যুবক ব্যাগ ও মোবাইল ফোন নিয়ে মোটরসাইকেলে করে চলে যেতে উদ্যত হন। ভুক্তভোগী তরুণটি তাঁদের আটকানোর চেষ্টা করেন। এ সময় আবারও তাঁরা মোটরসাইকেল থেকে নেমে পায়ে, হাতে ও ঊরুতে এলোপাতাড়ি কোপ দিয়ে চলে যান।

সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা এসব পোস্টের কমেন্টে ঘটনাটি মগবাজারের গ্রিনওয়ে গলিতে ঘটেছে বলে উল্লেখ করেছেন। আবার অনেকে এটি সাজানো ঘটনা বলেও মন্তব্য করেছেন। ভিডিওটির সত্যতা ও ঘটনার বিস্তারিত জানার চেষ্টা করেছে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগ।

একাধিক ফেসবুক ব্যবহারকারী তাঁদের পোস্টের ক্যাপশনে উল্লেখ করেছেন, ঘটনাটি মগবাজারের গ্রিনওয়ে গলিতে ঘটেছে। গুগল ম্যাপসে ‘মগবাজারের গ্রিনওয়ে গলি’ লিখে সার্চ করলে রাজধানীর মগবাজারের গ্রিনওয়ে রোড নামের একটি রাস্তার মানচিত্র প্রদর্শিত হয়।

এই রাস্তার জিও লোকেশনে যুক্ত ছবির সূত্রে অনুসন্ধানে ঘটনাস্থলটি চিহ্নিত করা হয়। ঘটনাস্থল মগবাজারের গ্রিনওয়ে রোডেই এবং গ্রিনওয়ে জামে মসজিদের পাশেই অবস্থিত।

ঘটনাস্থলের একটু সামনে ‘মেসার্স গোল্ডেন রেফ্রিজারেশন ওয়ার্কস’ নামের একটি ইলেকট্রনিক দোকান রয়েছে। দোকানের নামফলকে থাকা ফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হলে অপর প্রান্ত থেকে শওকত হোসেন নামের একজন কথা বলেন। এই দোকানটি তাঁর বলে জানান।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ছিনতাইয়ের ভিডিওটির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে শওকত হোসেন বলেন, ‘ঘটনাটি সত্য। এই সম্পর্কে আমি শুনেছি। কয়েক দিন আগের ঘটনা। আসলে ঘটনাটি খুব সকালে ঘটেছে। যার কারণে আমি দোকানে ছিলাম না। ঘটনা যার সঙ্গে ঘটেছে, সে আমাদের কাছের মানুষ। তাদের থেকে আমি যতটুকু শুনেছি, ঘটনার আগের দিন রাতে ছেলেটি তার বোনের স্বামী সাজ্জাদ উজ্জ্বলের বাসায় ছিল। ঘটনার দিন খুব সকালে সে যাওয়ার সময় মোটরসাইকেলে করে তিনজন এসে তাঁকে আহত করে ব্যাগ নিয়ে নেয়।’

শওকত হোসেনের কাছে ভুক্তভোগীর ফোন নম্বর চাইলে তিনি ভগ্নিপতি সাজ্জাদ উজ্জ্বলের ফোন নম্বর দেন।

সাজ্জাদ উজ্জ্বলের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, ঘটনাটি সত্য। ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওর নাম আব্দুল্লাহ। আমার স্ত্রীর মামাতো ভাই। সে পল্টনে চাকরি করে এবং আমতলায় থাকে। সে আমাদের গ্রিনওয়ে রোড দিয়েই অফিসে যেত। সে আমাদের এখানে তার বেতনের কিছু টাকা কলেজের ফি দেওয়ার জন্য জমিয়ে রেখেছিল। সেই টাকা নিয়ে গত সোমবার ভোরে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেয়। আমার বাসা পার হয়ে নুরজাহান ভিলার সামনে আসামাত্র মোটরসাইকেলে করে তিনজন এসে তাকে আহত করে তার ব্যাগসহ টাকা ও ফোন নিয়ে যায়।’

থানায় অভিযোগ দিয়েছেন কি না, জানতে চাইলে সাজ্জাদ বলেন, ‘গতকাল রোববার রাতে আমি হাতিরঝিল থানায় অভিযোগ করে এসেছি। আজ সকালে পুলিশ তদন্তের জন্য এসেছিল।’

সাজ্জাদ উজ্জ্বলের কাছ থেকে ভুক্তভোগী আব্দুল্লাহর ফোন নম্বর সংগ্রহ করে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগ। নম্বরে যোগাযোগ করা হলে অপর প্রান্ত থেকে আব্দুল্লাহ পরিচয়ে একজন কথা বলেন। ভিডিওতে ছিনতাইয়ের শিকার ব্যক্তি তিনিই বলে জানান আব্দুল্লাহ।

ঘটনার বর্ণনায় তিনি বলেন, ‘আমি ইন্টারমিডিয়েটে পড়াশোনা করেছি। এর পাশাপাশি পল্টনে একটি চাকরি করি। আমার পড়াশোনার ফি বাবদ কিছু টাকা আমি আমার বোনের বাসায় জমা রেখেছিলাম। গত সোমবার (১৯ মে) ভোরে আমার বোনের বাসা থেকে টাকাগুলো নিয়ে আমি আমার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার দেবিদ্বারে রওনা দিই। তখন গ্রিনওয়ে রোডের নুরজাহান ভিলার সামনে আসার সঙ্গে সঙ্গে বাইকে করে তিনজন এসে তাদের দুজন আমাকে ধরে ফেলে। আমি খুব আতঙ্কিত ছিলাম। আমি কাউকে চিনতে পারিনি। এই প্রথম আমি ছিনতাইকারীর কবলে পড়েছি।’

ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে আব্দুল্লাহ বলেন, ‘মোটরসাইকেলে আসা তিনজন ব্যক্তির দুজন আমাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে আমার সঙ্গে থাকা ব্যাগ ও একটি মোবাইল ফোন নিয়ে নেয়। ব্যাগে ১৪ হাজার টাকা, আমার কিছু কাপড়চোপড় ও কোম্পানির কার্ড ছিল। অস্ত্র দিয়ে আমার হাতে, পেটে ও পায়ের রানে, হাঁটুতে জখম করেছে।’

থানায় অভিযোগ দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঘটনার দিনই আমি পুলিশকে অভিযোগ জানাতে থানায় গিয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমার অভিযোগ না নিয়ে বলেছিল হাসপাতাল থেকে রিপোর্ট নিয়ে আসতে। পরে স্থানীয় হাসপাতালে গেলে বলেছিল ঢাকা মেডিকেলে (ঢামেক) যেতে। তখন আমি শারীরিক দুর্বলতা অনুভব করায় আর ঢাকা মেডিকেলে যাইনি। আর পরে পুলিশে অভিযোগও জানাইনি। পরে গতকাল ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর পুলিশ নিজেই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং মামলা করে।’

মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাজু বলেন, ‘আমরা ঘটনাটি নিয়ে কাজ করছি। এরই মধ্যে কিছু ক্লু পেয়েছি। পুরো তদন্ত শেষ হলে তা জানানো হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে গুলিতে নিহত মামুন শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের প্রধান সহযোগী

গাজীপুরে রাস্তা আটকে চলাচল করা পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম বরখাস্ত

আসিফ ক্ষমা না চাইলে অ্যাকশনে যাওয়ার হুমকি ফুটবলারদের

উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

দিনদুপুরে রাজধানীতে হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তারুণ্যের উচ্ছ্বাসে ১০৯ বছরের কারমাইকেল কলেজ

রংপুর প্রতিনিধি
নানা আয়োজনে ঐতিহ্যবাহী কারমাইকেল কলেজের প্রতিষ্ঠার ১০৯ বছর উদ্‌যাপন। ছবি: আজকের পত্রিকা
নানা আয়োজনে ঐতিহ্যবাহী কারমাইকেল কলেজের প্রতিষ্ঠার ১০৯ বছর উদ্‌যাপন। ছবি: আজকের পত্রিকা

শতবর্ষ পেরিয়েও প্রাণচঞ্চল উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী কারমাইকেল কলেজ। আজ সোমবার নানা আয়োজনে উদ্‌যাপিত হচ্ছে প্রতিষ্ঠার ১০৯ বছর। বেলুন-পায়রায় সেজেছে ক্যাম্পাস, মিলেছেন প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। আলো-রং-সংগীতে মুখর বিদ্যাপীঠ যেন ফিরে পেয়েছে তার সোনালি দিনের গৌরব আর তারুণ্যের উচ্ছ্বাস।

সকাল ১০টায় কলেজের জি এল হোস্টেল মাঠে পতাকা উত্তোলন ও উদ্বোধন করেন কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মুহম্মদ রেজাউল হক। পরে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, কেক কাটা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মেতে ওঠেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। সভাপতিত্ব করেন অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. মোস্তাফিজুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আমজাদ হোসেন, সরকারি বেগম রোকেয়া কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. ইসমাইল হোসেন সরকার, সরকারি সিটি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. বোরহান উদ্দিন, কারমাইকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মো. হাবিবুর রহমান ও কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক প্রফেসর দিলীপ কুমার রায়।

১০৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্‌যাপন কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. মো. সাইফুর রহমান জানান, ব্রিটিশ শাসন, পাকিস্তানি শোষণ ও বাংলাদেশ সৃষ্টির আন্দোলন-সংগ্রামসহ নানা প্রেক্ষাপটের সাক্ষী কারমাইকেল কলেজ একটি ইতিহাস। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শত বছরের যে গৌরব ও অর্জন, তা অবিস্মরণীয়। উত্তরের প্রাচীনতম বিদ্যাপীঠ কারমাইকেল কলেজের ১০৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্‌যাপনে নবীন-প্রবীণ শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে পুরো ক্যাম্পাস।

ড. মো. সাইফুর রহমান আরও জানান, দুদিনের এই আয়োজনের সমাপনী দিনে (১১ নভেম্বর) বাংলাদেশ পুলিশের রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি মো. আমিনুল ইসলাম, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মজিদ আলীসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।

নানা আয়োজনে ঐতিহ্যবাহী কারমাইকেল কলেজের প্রতিষ্ঠার ১০৯ বছর উদ্‌যাপন। ছবি: আজকের পত্রিকা
নানা আয়োজনে ঐতিহ্যবাহী কারমাইকেল কলেজের প্রতিষ্ঠার ১০৯ বছর উদ্‌যাপন। ছবি: আজকের পত্রিকা

কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ১৯১৬ সালের ১০ নভেম্বর অবিভক্ত বাংলার গভর্নর লর্ড কারমাইকেল কলেজটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পরের বছর থেকেই পাঠদান শুরু হয়। উত্তরবঙ্গের প্রাচীনতম এই কলেজ বর্তমানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত, যেখানে উচ্চমাধ্যমিক থেকে স্নাতকোত্তর পর্যায় পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন।

ইন্দোস্যারানিক শৈলীতে নির্মিত ৬১০ ফুট দীর্ঘ সাদা মূল ভবন, শতবর্ষী বৃক্ষ ‘কাইজেলিয়া’, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ভাস্কর্য ‘প্রজন্ম’, প্রাচীন গ্রন্থাগার ও নানা সাংস্কৃতিক সংগঠনে প্রাণবন্ত ক্যাম্পাস যেন ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রতিচ্ছবি। এখানে রয়েছে সাতটি আবাসিক হল, আধুনিক অডিটরিয়াম, লাইব্রেরি, মঞ্চ ও নানা সহপাঠক্রমিক সংগঠন।

কারমাইকেল কলেজে পড়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, লেখক আনিসুল হক, জাহানারা ইমাম, সাংবাদিক মোনাজাতউদ্দিন, প্রথম প্রধান বিচারপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েমসহ বহু কৃতী ব্যক্তি। স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে স্বৈরাচারবিরোধী সংগ্রাম—সবখানেই কারমাইকেল কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা রেখেছেন অমর ভূমিকা।

তবে ৩৫ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে কারমাইকেল কলেজ ছাত্র সংসদ (কাকসু)। ১৯৯০ সালের পর আর নির্বাচন হয়নি। শিক্ষার্থীরা বলছেন, দীর্ঘবিরতির কারণে গণতান্ত্রিক নেতৃত্বের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে গুলিতে নিহত মামুন শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের প্রধান সহযোগী

গাজীপুরে রাস্তা আটকে চলাচল করা পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম বরখাস্ত

আসিফ ক্ষমা না চাইলে অ্যাকশনে যাওয়ার হুমকি ফুটবলারদের

উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

দিনদুপুরে রাজধানীতে হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাবিতে নারী শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানির অভিযোগে শিক্ষকের বরখাস্তের দাবি

রাবি প্রতিনিধি  
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নারী শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানি, বডি শেমিং, অনৈতিক প্রস্তাব ও মামলার হুমকির অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তানজিল ভূঁইয়ার স্থায়ী বরখাস্তের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তবে এসব অভিযোগকে ‘বানোয়াট ও ষড়যন্ত্রমূলক’ বলে দাবি করেছেন ওই শিক্ষক।

আজ সোমবার (১০ নভেম্বর) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনে তানজিল ভূঁইয়ার চেম্বারে তালা ঝুলিয়ে দিনব্যাপী বিক্ষোভ ও আন্দোলন করেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে ওই শিক্ষক নারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে অশালীন মন্তব্য করে আসছেন। পাশাপাশি অনৈতিক প্রস্তাব, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কটু মন্তব্য করার অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।

তৃতীয় বর্ষের এক নারী শিক্ষার্থী বলেন, ‘উনি নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে কটু মন্তব্য করেন। যেমন, ‘‘তোমার কোমর তো ভালো দোলে’, ‘‘রাতের রানি’’, ‘‘রাতের গার্ড’’। আমাদের প্রথম ব্যাচ থেকে এখন সপ্তম ব্যাচ পর্যন্ত অনেকে উনার এমন আচরণের শিকার হয়েছেন। আগের এক ঘটনায় উনি শিক্ষার্থীদের মারতে এসেছিলেন, সেই ভিডিওও আছে।’

ওই শিক্ষার্থী আরও বলেন, ‘উনার কুপ্রস্তাবে রাজি না হলে উনি ওই শিক্ষার্থীদের নম্বর ছড়িয়ে দেন। এমনকি তাঁর তাকানোর ভঙ্গিতেও ভয় লাগে। আমরা ক্লাসে যেতেও এখন ভয় পাচ্ছি। তাই আমরা উনার স্থায়ী বরখাস্ত চাই।’

আরও এক শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, ‘তানজিল ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি অশোভন আচরণের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মারতে আসা ও মামলার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তিনি এক সময় নিজের বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে বিয়ে করেন; এরপর তাঁর স্ত্রীও সহপাঠীদের নানা হুমকি দেন। এসব কারণে আমরা বিভাগের পক্ষ থেকে তাঁর স্থায়ী বরখাস্ত দাবি করছি।’

অভিযোগ অস্বীকার করে শিক্ষক তানজিল ভূঁইয়া জানান, তাঁরা যে অভিযোগ করেছেন, এর একটিও সত্য নয়। এগুলো সম্পূর্ণ বানোয়াট ও ষড়যন্ত্রমূলক।

তানজিল ভূঁইয়া বলেন, ‘ঘটনার শুরু আমাদের প্রথম ব্যাচের এক নারী শিক্ষার্থীকে কেন্দ্র করে। এক ট্যুরে ওই শিক্ষার্থী মেয়েদের রুমে কয়েকজন ছেলে নিয়ে মাদক সেবন করছিল। আমি গিয়ে বাধা দিই। সেই ঘটনাতেই সে আমার নামে এসব ছড়াচ্ছে। তার পাশাপাশি সিনিয়র কয়েকজন শিক্ষার্থী বিভাগের অন্যদের উসকে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে এসব করছে।’

শিক্ষার্থীদের মারমুখী হওয়ার অভিযোগ সম্পর্কে তানজিল বলেন, ‘আমি বলেছিলাম, যদি আমার স্ত্রীর কিছু হয়, তাহলে মামলা করব—এর বাইরে কিছু না। তারা ইচ্ছাকৃতভাবে আমাকে ফাঁসাচ্ছে। যদি প্রমাণ থাকে, তাহলে সেটা সামনে আনুক।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে গুলিতে নিহত মামুন শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের প্রধান সহযোগী

গাজীপুরে রাস্তা আটকে চলাচল করা পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম বরখাস্ত

আসিফ ক্ষমা না চাইলে অ্যাকশনে যাওয়ার হুমকি ফুটবলারদের

উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

দিনদুপুরে রাজধানীতে হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কাপ্তাই জাতীয় উদ্যানে ১৫ কেজি ওজনের অজগর সাপ অবমুক্ত

কাপ্তাই (রাঙামাটি) প্রতিনিধি
কাপ্তাই জাতীয় উদ্যানের গভীর অরণ্যে একটি অজগর সাপ অবমুক্ত করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
কাপ্তাই জাতীয় উদ্যানের গভীর অরণ্যে একটি অজগর সাপ অবমুক্ত করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাঙামাটির কাপ্তাই জাতীয় উদ্যানের গভীর অরণ্যে একটি অজগর সাপ অবমুক্ত করা হয়েছে। সাপটির দৈঘ্য ১০ ফুট ও ওজন ১৫ কেজি বলে জানান বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ কর্মকর্তা ওমর ফারুক স্বাধীন।

রাঙামাটির কাপ্তাই জাতীয় উদ্যানের গভীর অরণ্যে একটি অজগর সাপ অবমুক্ত করা হয়েছে। সাপটির দৈঘ্য ১০ ফুট ও ওজন ১৫ কেজি বলে জানান বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ কর্মকর্তা ওমর ফারুক স্বাধীন।

আজ সোমবার (১০ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তার নির্দেশনায় অজগর সাপটি কাপ্তাই ন্যাশনাল পার্কে অবমুক্ত করা হয়। এ সময় কাপ্তাই রেঞ্জ কর্মকর্তা ওমর ফারুক স্বাধীন, বড়ইছড়ি পরীক্ষণ ফাঁড়ি কর্মকর্তা এস এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, রাম পাহাড় বিট কর্মকর্তা মিঠু তালুকদার, শুকনাছড়ি বিট কর্মকর্তা আব্দুল্লা আল নাঈম, সুনয়ন দেওয়ান, কাপ্তাই প্রেসক্লাব সভাপতি কবির হোসেন, স্থানীয় কবিরুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম ও বন বিভাগের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।  

বন বিভাগের রাঙামাটি সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম জানান, রাঙামাটি সদর কালিন্দপুর সড়কের ইন্দু বিকাশ তালুকদারের বাসার আঙিনায় আজ সকালে অজগর সাপটি জালে আটকা পড়ে। পরে বন বিভাগকে খবর দেওয়া হলে স্থানীয় জনতার সহায়তায় অজগর সাপটি উদ্ধার করে কাপ্তাই বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে গুলিতে নিহত মামুন শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের প্রধান সহযোগী

গাজীপুরে রাস্তা আটকে চলাচল করা পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম বরখাস্ত

আসিফ ক্ষমা না চাইলে অ্যাকশনে যাওয়ার হুমকি ফুটবলারদের

উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

দিনদুপুরে রাজধানীতে হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিএনপির কর্মী হাকিম হত্যা: আসামি ধরতে গিয়ে মিলল থানা লুটের অস্ত্র

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামে আসামি ধরতে গিয়ে মিলল থানা লুটের অস্ত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা
চট্টগ্রামে আসামি ধরতে গিয়ে মিলল থানা লুটের অস্ত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রামে হত্যা মামলার আসামি গ্রেপ্তার অভিযানে গিয়ে পুলিশের খোয়া যাওয়া চায়নিজ রাইফেল ও একটি শটগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে রাউজানের নোয়াপাড়া চৌধুরীহাট এলাকার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে অস্ত্র দুটি উদ্ধার করে পুলিশ।

এ সময় রাইফেলের ৪৯টি গুলি (৭.৬২) ও ১৭টি শটগানের গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়।

একই জায়গা থেকে রাউজানে বিএনপির কর্মী আব্দুল হাকিম হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ৪টি বিদেশি পিস্তল, ১টি রিভলবার, ১৯টি পিস্তলের গুলি (৭.৬৫), ৭টি ম্যাগাজিনসহ মাদক ও নগদ প্রায় ১ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, আব্দুল হাকিম হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তারের পর তাঁদের তথ্যে ওই বাড়িতে অভিযান চালিয়ে এসব আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ করা হয়।

এ বিষয়ে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম সানতু বলেন, ‘চায়নিজ রাইফেলটি পুলিশের খোয়া যাওয়া অস্ত্র বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। শটগানটি কাস্টমাইজড করা থাকায় একটু সন্দেহ হচ্ছে।

তবে শটগানটিও পুলিশের অস্ত্র হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে আমরা ধারণা করছি। এই অস্ত্রটির বিষয়ে আমরা আরও ভালোভাবে যাচাই করে দেখছি।’

পুলিশ সুপার বলেন, ‘চায়নিজ রাইফেল ও শটগান রাউজানে ব্যবসায়ী আব্দুল হাকিম হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার হয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। অভিযানে আমরা রাইফেলটি লোডেড অবস্থায় উদ্ধার করেছি।’

উল্লেখ্য, গত বছর ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে সারা দেশের বিভিন্ন থানায় হামলা চালায় জনতা এবং কিছু অসাধু লোক থানায় অগ্নিসংযোগসহ অস্ত্র-গোলাবারুদ লুট করে নিয়ে যায়। ওই সময় চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের ২৩২টি অস্ত্র খোয়া যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে গুলিতে নিহত মামুন শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের প্রধান সহযোগী

গাজীপুরে রাস্তা আটকে চলাচল করা পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম বরখাস্ত

আসিফ ক্ষমা না চাইলে অ্যাকশনে যাওয়ার হুমকি ফুটবলারদের

উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

দিনদুপুরে রাজধানীতে হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত