Ajker Patrika

৭০ শতাংশ লিভার ক্যানসারের কারণ হেপাটাইটিস বি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
৭০ শতাংশ লিভার ক্যানসারের কারণ হেপাটাইটিস বি

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বাড়ছে লিভার সিরোসিস এবং লিভার ক্যানসারের মতো মরণব্যাধি। আর এর পেছনে প্রধান কারণ হেপাটাইটিস বি ভাইরাস। চিকিৎসকেরা বলছেন, ‘দেশে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ লিভার সিরোসিস এবং লিভার ক্যানসারের প্রধান কারণ এই ভাইরাসটি।’

আজ মঙ্গলবার হেপাটাইটিস বি নির্মূলে রোটারি ইন্টারন্যাশনাল ডিস্ট্রিক্ট ৩২৮১-এর কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের সময় ঢাকা ক্লাবে এসব তথ্য জানান চিকিৎসকেরা।

চিকিৎসকেরা বলেন, ‘প্রতি বছর দেশের বিভিন্ন হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডগুলোয় যে পরিমাণ রোগী ভর্তি হোন, তাদের ১০ থেকে ১২ শতাংশ লিভার রোগে আক্রান্ত। এর মধ্যে বেশির ভাগই আবার হেপাটাইটিস বি ভাইরাস জনিত। এমনকি এদের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশের মৃত্যুর কারণ এই লিভারজনিত রোগ।’

চিকিৎসকেরা আরও জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, করোনার আগে দেশে প্রতি বছর ২২ হাজারেরও বেশি মানুষ লিভার রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যেত। আর গত দু-বছরে পৃথিবীর অন্যান্য আর দশটি দেশের মতো বাংলাদেশেও যেহেতু সব হাসপাতাল কোভিড হাসপাতালে রূপান্তরিত হয়েছিল, নন-কোভিড রোগীদের সেবা ব্যাহত হয়েছিল। ফলে বর্তমানে এই সংখ্যা আরও বেশি।

এ সময় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলোজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল। তিনি বলেন, ‘লিভার রোগে আক্রান্ত হয়ে দেশে প্রতি বছর বিপুলসংখ্যক মানুষ শুধু মৃত্যুবরণই করছেন, তাই নয়। লিভার রোগের কারণে প্রতি বছর ব্যয় হচ্ছে বিপুল পরিমাণ অর্থও। তবে বাংলাদেশ যেহেতু ২০৩০ সালের মধ্যে হেপাটাইটিস বি ভাইরাস নির্মূলের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অঙ্গীকারবদ্ধ। আর এ জন্য চ্যালেঞ্জটাও পাহাড়সমান। শুধু যে কোভিড আমাদের লক্ষ্য অর্জনের পথে অনেকটা পিছিয়ে দিয়েছে তা নয়, আমাদের এখনো ঘাটতি রয়েছে লিভার বিশেষজ্ঞ আর বিশেষায়িত লিভার চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানেরও। তার চেয়েও বড় চ্যালেঞ্জ মানুষকে সচেতন করা।’

এই চিকিৎসক বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী প্রতি ১২ জনে একজন হেপাটাইটিস বি বা সি ভাইরাসে আক্রান্ত হলেও এই আক্রান্ত মানুষগুলোর ১০ শতাংশেরও জানা নেই যে তারা এমন কঠিন রোগে ভুগছেন। এর বড় কারণ এসব রোগীদের লিভার অনেকখানি ক্ষতিগ্রস্ত না হওয়া পর্যন্ত তাদের রোগের তেমন কোনো লক্ষণ থাকে না বললেই চলে। কাজেই হেপাটাইটিস বি নির্মূলের এসডিজি গোলটি অর্জন করতে হলে সবার আগে জোর দিতে হবে জনসচেতনতা তৈরিতে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রোটারি ক্লাবের ঢাকা ডিস্ট্রিক্ট গভর্নর ইঞ্জিনিয়ার এম এ ওয়াহাব বলেন, ‘রোটারি ক্লাব বাংলাদেশ থেকে পোলিও মুক্তকরণে ভূমিকা রেখেছে। এরই ধারাবাহিকতায় হেপাটাইটিস বি নির্মূলেও কাজ করছি। এখন থেকে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষকে সচেতন করে তোলা এবং হেপাটাইটিস বি ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের শনাক্ত করার জন্য রোটারির উদ্যোগে জেলাব্যাপী সচেতনতা ও স্ক্রিনিং কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।’

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ রাব্বি বলেন, ‘সমাজ পরিবর্তনে রোটারি ক্লাব কাজ করে যাচ্ছে। পোলিও নির্মূলে তাদের ভূমিকা প্রশংসার দাবি রাখে। হেপাটাইটিস বি নির্মূলেও আশা করি ভালো ভূমিকা রাখবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে না নেওয়ার প্রস্তাব র‍্যাব ডিজির

পরিপাকতন্ত্রের ওষুধের পেছনেই মানুষের ব্যয় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত