Ajker Patrika

মেরিন চাকরির ফাঁদে ফেলে প্রতারণাই তাঁর হাতিয়ার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
মেরিন চাকরির ফাঁদে ফেলে প্রতারণাই তাঁর হাতিয়ার

অস্ট্রেলিয়ায় পোর্টে চাকরি দেওয়ার নামে অর্থ আত্মসাৎকারী এক প্রতারককে রাজধানী থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গতকাল মঙ্গলবার রাতে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ৪৩৫ বাড়ির দ্বিতীয়তলা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ বুধবার মালিবাগ সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি (ঢাকা মেট্রো) ইমাম হোসেন।

গ্রেপ্তারকৃতের নাম মির্জা মুকুল। 

ইমাম হোসেন বলেন, মির্জা মুকুল দীর্ঘদিন ধরে বেকারদের অস্ট্রেলিয়ার পোর্টে চাকরি দেওয়ার নাম করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। আবদুল কাদের নামের এক ভুক্তভোগীর মামলার বিষয়টি তদন্ত করতে গিয়ে মুকুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

তিনি বলেন, আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্ত সাপেক্ষে জানা যায়, মুকুল ও পলাতক অন্য আসামিরা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র। তারা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ মেরিন একাডেমিতে ট্রেনিং করিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় পোর্টে চাকরির ভুয়া নিয়োগপত্র তৈরি করে প্রত্যন্ত গ্রামের সহজ সরল লোকজনদের প্রতারিত করে টাকা আত্মসাৎ করে। 

সিআইডি জানায়, আবদুল কাদের ও মির্জা মুকুল একই এলাকায় থাকায় তাঁদের প্রায়ই দেখা হতো। এ সময় মুকুল নিজেকে ল্যান্ড ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে পরিচয় দিত। বাদীকে জানায় যে, তাঁর সঙ্গে সরকারের উচ্চপর্যায়ে জানাশোনা আছে। তাঁর কাছে সরকারিভাবে অস্ট্রেলিয়ায় লোক পাঠানোর নির্ভরযোগ্য মাধ্যম আছে ও এই বিষয়ে বাদীর পরিচিত বন্ধু এবং স্বজনদের সরকারি খরচে পাঠানোর প্রস্তাব করে। যাদেরকে পাঠানো হবে তাঁরা অস্ট্রেলিয়ার শিপিং পোর্টে কাজ করবে। 

প্রতারক আরও ভুক্তভোগীদের জানায়, অস্ট্রেলিয়া পৌঁছাতে একজনের মোট ৮ লাখ টাকা খরচ হবে। যাদেরকে পাঠানো হবে তাঁদের প্রথমে চট্টগ্রাম মেরিনে এক মাসের ট্রেনিং করতে হবে। এভাবে সে ভিকটিমসহ কয়েকজনের মাধ্যমে ৩৬ জনকে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানোর জন্য প্রলুব্ধ করেন। তাঁদের কাছ থেকে মোট ৫৭ লাখ ৬০ হাজার টাকা নেন। তবে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানোর কোনো অগ্রগতি জানাতে পারেননি। পরে তাঁর প্রতারণার বিষয়টি জানতে পারেন ভুক্তভোগীরা। 

সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন জানান, মুকুল আগে ওমান থাকতেন। তিনি ৯ বছর ওমানের সালাহ সি পোর্টে শ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সেখান থেকে মেরিনভিত্তিক প্রতারণার পরিকল্পনা করেন। ভুয়া কাগজপত্র তৈরিতেও দক্ষ তিনি। 

গ্রেপ্তারের সময় মুকুলের কাছ থেকে বাংলাদেশ মেরিন একাডেমিতে ট্রেনিং করিয়ে অস্ট্রেলিয়া পোর্টে চাকরিতে নিয়োগের জন্য ২৬টি পাসপোর্ট,৩টি অটোসিল, বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি ট্রেনিং পাসের কার্ড ৩৫টি, বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি ট্রেনিংয়ের ভুয়া যোগদানপত্রের কপি ৭টি, বাংলাদেশ সরকার ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর লেখা ও ছবি সংবলিত পাসপোর্টের আবেদন ফরম ২৫টি, মেরিন একাডেমি চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থির চিত্র ১৫টি, প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত