Ajker Patrika

পুলিশের হাতে দেওয়ার রাতেই থানা-হাজতে স্কুলের অফিস সহকারীর ‘আত্মহত্যা’

চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি   
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কক্সবাজারের চকরিয়া থানা হাজতে দুর্জয় চৌধুরী (২৫) নামে এক যুবক আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করেছে পুলিশ। তারা আজ শুক্রবার ভোররাতে তাঁর লাশ দেখতে পায়। এর আগে স্কুলের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে থানায় গিয়ে অফিস সহকারী দুর্জয়কে পুলিশের হাতে দিয়েছিলেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক।

দুর্জয় চকরিয়া পৌরসভার ভরামুহুরী হিন্দুপাড়ার কমল চৌধুরীর ছেলে। তিনি চকরিয়া সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর।

দুর্জয়ের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জসিম উদ্দীন চৌধুরী। তিনি বলেন, নিয়মানুযায়ী চকরিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রূপায়ণ দেব এসে লাশের সুরতহাল করেছেন। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘চকরিয়া থানা হাজতখানা পরিদর্শন করেছি। থানার হাজতে চারটি আলাদা কক্ষ রয়েছে। একটি কক্ষে তাঁকে রাখা হয়েছিল। সেখানে পরনের শার্ট গলায় পেঁচিয়ে সে আত্মহত্যা করে। এ ঘটনায় থানা-পুলিশের কারও দায়িত্বে অবহেলা আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চকরিয়া সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রাবিয়া খানম থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ করে দুর্জয়কে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। দুর্জয়ের বিরুদ্ধে স্কুলের ২ লাখ ৮৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তোলেন তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তাঁকে থানায় থানা-হাজতে রাখা হয়। আজ শুক্রবার ভোররাত সাড়ে ৪টার দিকে হাজতখানার গ্রিলের সঙ্গে শার্ট প্যাঁচানো অবস্থায় দুর্জয়ের লাশ দেখতে পায় পুলিশ।

থানায় দুর্জয়ের আত্মহত্যার বিষয়ে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রাবিয়া খানম বলেন, ‘এ ঘটনা প্রথম আপনার কাছ থেকে শুনলাম। সে মারা গেছে, আমার কী যায়-আসে। এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।’ তিনি বলেন, ‘স্কুলের নামীয় একাধিক অ্যাকাউন্টের ২১টি চেক দুর্জয় সরিয়ে ফেলেছে। আমার স্বাক্ষর জাল করে ২ লাখ ৮৩ হাজার টাকা সরিয়ে ফেলেছে সে। গতকাল বৃহস্পতিবার ফোন করে তাকে স্কুলে ডেকে আনা হয়। পরে চকরিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রূপায়ণ দেবের কাছে যায়। তিনি আইনের আশ্রয় নিতে বলেন। তারপর চকরিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গেলে ওসি বলেন, এ রকম ঘটনায় এখানে জিডি হয় না। পরে লিখিত অভিযোগ নিয়ে থানায় গিয়ে তাঁকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করি।’

দুর্জয় চৌধুরীর বাবা কমল চৌধুরী বলেন, ‘দেড় বছর আগে তাঁর ছেলে স্কুলটিতে চাকরি পান। তিনি বলেন, রাবিয়া খানম আমাকেও স্কুলে ডেকেছিলেন। চুরির ঘটনা আমাকে জানালে আমরা সমাধানে চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক চাপ প্রয়োগ ও ক্ষমতা দেখিয়ে থানায় গিয়ে আমার ছেলেকে পুলিশে দেয়। এখন আমার সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। আমি প্রশাসনের কাছে এ ঘটনায় যাঁরা জড়িত, তাঁদের শাস্তির দাবি করছি।’

চকরিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রূপায়ণ দেব বলেন, থানায় গিয়ে থানা-হাজতের একটি কক্ষের গ্রিলের সঙ্গে পরনের শার্ট প্যাঁচানো অবস্থায় ওই যুবককে পাওয়া যায়। শার্ট দিয়ে গলায় ফাঁস দেওয়ায় গলায় কালচে দাগ রয়েছে। এ ছাড়া লাশের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, এটা আত্মহত্যা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের নতুন বেতন নির্ধারণে কমিটি

চাকরির নামে মিরপুর-শেওড়াপাড়ায় বাসায় ডেকে নারীর সঙ্গে ভিডিও ধারণের পর টাকা হাতিয়ে নিত ‘হানি ট্র্যাপ’ চক্র

দুস্থদের ৩৪ লাখ টাকা নিয়ে লাপাত্তা মোহনগঞ্জ সমাজসেবা কর্মকর্তা

সাংবাদিক বিভুরঞ্জন সরকারের খোঁজ মিলছে না

৫ দুর্বল ব্যাংক একীভূতকরণে অর্থায়ন নিয়ে শঙ্কা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত