মুফতি আ জ ম ওবায়দুল্লাহ
মানবতা, ন্যায়বিচার ও বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার নিয়ে ১৯৪৫ সালে গঠিত হয় জাতিসংঘ। বিশ্বব্যাপী সংঘাত নিরসন ও নিপীড়িত জনগোষ্ঠীর অধিকারের পক্ষে থাকাই ছিল এর মূল লক্ষ্য। অথচ সবচেয়ে দীর্ঘ ও নিষ্ঠুর দখলদারত্বের শিকার ফিলিস্তিনিদের ব্যাপারে জাতিসংঘের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। সাত দশকের বেশি সময় ধরে ইসরায়েলি দখল, অবরোধ ও হত্যাযজ্ঞ ফিলিস্তিনি জনগণের জীবনকে বিপন্ন করে তুলেছে, অথচ জাতিসংঘ কেবল কাগুজে প্রতিক্রিয়া জানানো এবং নিন্দা প্রস্তাবের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে।
ফিলিস্তিন দীর্ঘকাল ধরে ফিলিস্তিনিদের বাসভূমি হলেও ঊনবিংশ শতকে ইউরোপে ইহুদি জাতীয়তাবাদের উত্থান এবং ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থে এখানে ইহুদি বসতি স্থাপন শুরু হয়। ১৯১৭ সালে ব্রিটেন ‘বেলফোর ঘোষণা’র মাধ্যমে ইহুদিদের জন্য ফিলিস্তিনে ‘জাতীয় আবাসভূমি’ প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেয়।
১৯৪৭ সালে জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে দুটি রাষ্ট্রে বিভক্ত করার প্রস্তাব গ্রহণ করে—একটি ইহুদি, অন্যটি আরবদের জন্য। ফিলিস্তিনিরা এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। কারণ, তাদের ৯০ শতাংশের বেশি জমিতে ৫৫ শতাংশের বেশি এলাকা ইহুদিদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছিল। এরপরই ইসরায়েল রাষ্ট্রের গোড়াপত্তন শুরু হয়।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সনদ ও চুক্তিগুলো শিশুহত্যা, হাসপাতাল ধ্বংস, অবরোধের মাধ্যমে খাদ্য ও চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করাকে যুদ্ধাপরাধ বলে গণ্য করে। অথচ গাজা ও পশ্চিম তীরে এসব প্রতিনিয়তই ঘটছে। ফিলিস্তিনিদের দুঃখ-দুর্দশা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো চিহ্নিত করে তুললেও জাতিসংঘ এর বাস্তব পদক্ষেপে অক্ষম।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন বারবার বলেছে, ইসরায়েল যুদ্ধাপরাধে লিপ্ত। এমনকি কিছু রিপোর্টে ‘অ্যাপার্থাইড’ ব্যবস্থার সঙ্গেও তুলনা করা হয়েছে। কিন্তু এসব রিপোর্ট কার্যকর পদক্ষেপে রূপ নেয়নি। এটি আবারও প্রমাণ করে, জাতিসংঘের বিবৃতি ও রিপোর্ট একপ্রকার ‘কাগুজে ন্যায়বিচার’ ছাড়া আর কিছুই নয়।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে পাঁচটি স্থায়ী সদস্য হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, রাশিয়া ও চীন। যাদের প্রত্যেকেরই ভেটো দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। ফলে একজন সদস্যের আপত্তিতেই কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব বাতিল হয়ে যেতে পারে। ফিলিস্তিন প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলের পক্ষ নিয়ে ভেটো প্রয়োগ করে আসছে। ফলে ইসরায়েল সব আন্তর্জাতিক নিন্দা ও আইন অগ্রাহ্য করে বারবার আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোক্ষমতা ইসরায়েলকে কার্যত ‘অনুমোদিত দখলদার’-এ পরিণত করেছে। বহুবার নিরাপত্তা পরিষদে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে গৃহীত প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর কারণে বাতিল হয়েছে। এতে জাতিসংঘ শুধু নিষ্ক্রিয় নয়, বরং পক্ষপাতদুষ্ট বলেই প্রমাণিত হচ্ছে।
এই ভেটোব্যবস্থা পুরো আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচারকে অকার্যকর ও অবিশ্বাসযোগ্য করে তুলেছে। একতরফা সহানুভূতির কারণে ইসরায়েল দিনের পর দিন মানবাধিকার লঙ্ঘন করেও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়ার কোনো ভয় পায় না।
জেনেভা কনভেনশন, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সনদ, শিশু অধিকার সনদসহ অসংখ্য আইন অনুযায়ী বেসামরিক মানুষ হত্যা, অবরোধ, শিক্ষা-চিকিৎসা থেকে বঞ্চিতকরণ স্পষ্টতই যুদ্ধাপরাধ। অথচ গাজা ও পশ্চিম তীরে এসব প্রতিদিন ঘটছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ রিপোর্ট প্রকাশ করলেও সেগুলোর ভিত্তিতে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এই অব্যবস্থার কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে জাতিসংঘের প্রতি আস্থা হারিয়ে গেছে।
জাতিসংঘ ব্যর্থ হলেও আরব বিশ্বের ভূমিকা কি যথাযথ? আরব বিশ্ব যথাযথ ভূমিকা পালন করলে ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র এভাবে কি ফিলিস্তিনে যুদ্ধ চালাতে পারত? একপক্ষীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব হতো। কিন্তু বাস্তবতা হলো, অনেক আরব রাষ্ট্র তাদের নিজেদের স্বার্থে নীরব থেকেছে। ব্যতিক্রম শুধু ইরানসহ কয়েকটি দেশ। আরব দেশগুলোর এই নিষ্ক্রিয়তা ও বিভক্তি ফিলিস্তিনিদের দুর্ভোগকে আরও দীর্ঘায়িত করেছে। জাতিসংঘের ব্যর্থতার পাশাপাশি আরব বিশ্বের নিষ্ক্রিয়তা ফিলিস্তিন সংকটকে আরও ঘনীভূত করেছে।
ফিলিস্তিন ইস্যুতে জাতিসংঘের এহেন ব্যর্থতা আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা নষ্ট করছে। বিশ্বশান্তি, মানবাধিকার, আইনের শাসন—সবই এখন প্রশ্নবিদ্ধ। যদি জাতিসংঘ তার বিশ্বাসযোগ্যতা পুনরুদ্ধার করতে চায়, তাহলে ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিতে হবে, ভেটোক্ষমতার সংস্কার করতে হবে এবং মানবাধিকারের পক্ষে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
জাতিসংঘকে কার্যকর করতে হলে ভেটোব্যবস্থা পুনর্বিবেচনা করতে হবে। পাঁচটি দেশের ইচ্ছার ওপর পুরো মানবতার ন্যায়বিচার নির্ভর করতে পারে না। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যে জনমত গড়ে তোলা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধি, গণ-আন্দোলন এবং বয়কট আন্দোলন—এগুলোও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। অপরদিকে স্বাধীন মিডিয়া, মানবাধিকার সংস্থা ও একাডেমিক প্রতিষ্ঠানগুলো ফিলিস্তিন ইস্যুতে সত্য প্রকাশের সাহস দেখালে বিশ্ববিবেক জাগ্রত হতে পারে।
জাতিসংঘ নামক সংস্থাটি যদি সত্যিই ‘মানবতার প্রতিনিধি’ হয়, তাহলে তার ন্যায়বিচার হতে হবে বাস্তব। ফিলিস্তিনিদের প্রতি জাতিসংঘের নীতি কেবল প্রস্তাব, প্রতিবেদন ও উদ্বেগ-প্রকাশে সীমাবদ্ধ থাকলে তা একধরনের ‘নৈতিক প্রতারণা’ ছাড়া কিছুই নয়। সাত দশক ধরে নির্যাতিত এক জাতি প্রতিদিন বাঁচার অধিকার হারাচ্ছে, আর জাতিসংঘ সেই দৃশ্য দর্শকের মতো উপভোগ করছে।
লেখক: মুহাদ্দিস, ছারছীনা দারুসসুন্নাত জামেয়া নেছারিয়া দীনিয়া, পিরোজপুর
মানবতা, ন্যায়বিচার ও বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার নিয়ে ১৯৪৫ সালে গঠিত হয় জাতিসংঘ। বিশ্বব্যাপী সংঘাত নিরসন ও নিপীড়িত জনগোষ্ঠীর অধিকারের পক্ষে থাকাই ছিল এর মূল লক্ষ্য। অথচ সবচেয়ে দীর্ঘ ও নিষ্ঠুর দখলদারত্বের শিকার ফিলিস্তিনিদের ব্যাপারে জাতিসংঘের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। সাত দশকের বেশি সময় ধরে ইসরায়েলি দখল, অবরোধ ও হত্যাযজ্ঞ ফিলিস্তিনি জনগণের জীবনকে বিপন্ন করে তুলেছে, অথচ জাতিসংঘ কেবল কাগুজে প্রতিক্রিয়া জানানো এবং নিন্দা প্রস্তাবের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে।
ফিলিস্তিন দীর্ঘকাল ধরে ফিলিস্তিনিদের বাসভূমি হলেও ঊনবিংশ শতকে ইউরোপে ইহুদি জাতীয়তাবাদের উত্থান এবং ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থে এখানে ইহুদি বসতি স্থাপন শুরু হয়। ১৯১৭ সালে ব্রিটেন ‘বেলফোর ঘোষণা’র মাধ্যমে ইহুদিদের জন্য ফিলিস্তিনে ‘জাতীয় আবাসভূমি’ প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেয়।
১৯৪৭ সালে জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে দুটি রাষ্ট্রে বিভক্ত করার প্রস্তাব গ্রহণ করে—একটি ইহুদি, অন্যটি আরবদের জন্য। ফিলিস্তিনিরা এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। কারণ, তাদের ৯০ শতাংশের বেশি জমিতে ৫৫ শতাংশের বেশি এলাকা ইহুদিদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছিল। এরপরই ইসরায়েল রাষ্ট্রের গোড়াপত্তন শুরু হয়।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সনদ ও চুক্তিগুলো শিশুহত্যা, হাসপাতাল ধ্বংস, অবরোধের মাধ্যমে খাদ্য ও চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করাকে যুদ্ধাপরাধ বলে গণ্য করে। অথচ গাজা ও পশ্চিম তীরে এসব প্রতিনিয়তই ঘটছে। ফিলিস্তিনিদের দুঃখ-দুর্দশা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো চিহ্নিত করে তুললেও জাতিসংঘ এর বাস্তব পদক্ষেপে অক্ষম।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন বারবার বলেছে, ইসরায়েল যুদ্ধাপরাধে লিপ্ত। এমনকি কিছু রিপোর্টে ‘অ্যাপার্থাইড’ ব্যবস্থার সঙ্গেও তুলনা করা হয়েছে। কিন্তু এসব রিপোর্ট কার্যকর পদক্ষেপে রূপ নেয়নি। এটি আবারও প্রমাণ করে, জাতিসংঘের বিবৃতি ও রিপোর্ট একপ্রকার ‘কাগুজে ন্যায়বিচার’ ছাড়া আর কিছুই নয়।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে পাঁচটি স্থায়ী সদস্য হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, রাশিয়া ও চীন। যাদের প্রত্যেকেরই ভেটো দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। ফলে একজন সদস্যের আপত্তিতেই কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব বাতিল হয়ে যেতে পারে। ফিলিস্তিন প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলের পক্ষ নিয়ে ভেটো প্রয়োগ করে আসছে। ফলে ইসরায়েল সব আন্তর্জাতিক নিন্দা ও আইন অগ্রাহ্য করে বারবার আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোক্ষমতা ইসরায়েলকে কার্যত ‘অনুমোদিত দখলদার’-এ পরিণত করেছে। বহুবার নিরাপত্তা পরিষদে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে গৃহীত প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর কারণে বাতিল হয়েছে। এতে জাতিসংঘ শুধু নিষ্ক্রিয় নয়, বরং পক্ষপাতদুষ্ট বলেই প্রমাণিত হচ্ছে।
এই ভেটোব্যবস্থা পুরো আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচারকে অকার্যকর ও অবিশ্বাসযোগ্য করে তুলেছে। একতরফা সহানুভূতির কারণে ইসরায়েল দিনের পর দিন মানবাধিকার লঙ্ঘন করেও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়ার কোনো ভয় পায় না।
জেনেভা কনভেনশন, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সনদ, শিশু অধিকার সনদসহ অসংখ্য আইন অনুযায়ী বেসামরিক মানুষ হত্যা, অবরোধ, শিক্ষা-চিকিৎসা থেকে বঞ্চিতকরণ স্পষ্টতই যুদ্ধাপরাধ। অথচ গাজা ও পশ্চিম তীরে এসব প্রতিদিন ঘটছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ রিপোর্ট প্রকাশ করলেও সেগুলোর ভিত্তিতে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এই অব্যবস্থার কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে জাতিসংঘের প্রতি আস্থা হারিয়ে গেছে।
জাতিসংঘ ব্যর্থ হলেও আরব বিশ্বের ভূমিকা কি যথাযথ? আরব বিশ্ব যথাযথ ভূমিকা পালন করলে ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র এভাবে কি ফিলিস্তিনে যুদ্ধ চালাতে পারত? একপক্ষীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব হতো। কিন্তু বাস্তবতা হলো, অনেক আরব রাষ্ট্র তাদের নিজেদের স্বার্থে নীরব থেকেছে। ব্যতিক্রম শুধু ইরানসহ কয়েকটি দেশ। আরব দেশগুলোর এই নিষ্ক্রিয়তা ও বিভক্তি ফিলিস্তিনিদের দুর্ভোগকে আরও দীর্ঘায়িত করেছে। জাতিসংঘের ব্যর্থতার পাশাপাশি আরব বিশ্বের নিষ্ক্রিয়তা ফিলিস্তিন সংকটকে আরও ঘনীভূত করেছে।
ফিলিস্তিন ইস্যুতে জাতিসংঘের এহেন ব্যর্থতা আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা নষ্ট করছে। বিশ্বশান্তি, মানবাধিকার, আইনের শাসন—সবই এখন প্রশ্নবিদ্ধ। যদি জাতিসংঘ তার বিশ্বাসযোগ্যতা পুনরুদ্ধার করতে চায়, তাহলে ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিতে হবে, ভেটোক্ষমতার সংস্কার করতে হবে এবং মানবাধিকারের পক্ষে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
জাতিসংঘকে কার্যকর করতে হলে ভেটোব্যবস্থা পুনর্বিবেচনা করতে হবে। পাঁচটি দেশের ইচ্ছার ওপর পুরো মানবতার ন্যায়বিচার নির্ভর করতে পারে না। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যে জনমত গড়ে তোলা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধি, গণ-আন্দোলন এবং বয়কট আন্দোলন—এগুলোও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। অপরদিকে স্বাধীন মিডিয়া, মানবাধিকার সংস্থা ও একাডেমিক প্রতিষ্ঠানগুলো ফিলিস্তিন ইস্যুতে সত্য প্রকাশের সাহস দেখালে বিশ্ববিবেক জাগ্রত হতে পারে।
জাতিসংঘ নামক সংস্থাটি যদি সত্যিই ‘মানবতার প্রতিনিধি’ হয়, তাহলে তার ন্যায়বিচার হতে হবে বাস্তব। ফিলিস্তিনিদের প্রতি জাতিসংঘের নীতি কেবল প্রস্তাব, প্রতিবেদন ও উদ্বেগ-প্রকাশে সীমাবদ্ধ থাকলে তা একধরনের ‘নৈতিক প্রতারণা’ ছাড়া কিছুই নয়। সাত দশক ধরে নির্যাতিত এক জাতি প্রতিদিন বাঁচার অধিকার হারাচ্ছে, আর জাতিসংঘ সেই দৃশ্য দর্শকের মতো উপভোগ করছে।
লেখক: মুহাদ্দিস, ছারছীনা দারুসসুন্নাত জামেয়া নেছারিয়া দীনিয়া, পিরোজপুর
সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) পুরোনো দুর্নীতির একটি ঘটনা বেরিয়ে এসেছে। আজকের পত্রিকায় ১৯ আগস্ট প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালে সোনামসজিদ স্থলবন্দরে প্রায় ৪৫০ টন জুয়েলারি (গয়না) আমদানি করা হয়েছিল। কিন্তু অসাধু আমদানিকারকেরা ‘কৃত্রিম মানব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ’ আমদানির ভুয়া ঘোষণা...
৩ ঘণ্টা আগেএই উপমহাদেশে সমবেত জনতার কণ্ঠে প্রতিবাদের যে ভাষা আমরা দেখি, অন্ত্যমিলসহ বা ছাড়া, তা আদতে, ইংরেজিতে যাকে বলে ‘কাপলেট’, বাংলায় ‘দ্বিপদী’ সেটাই। স্বরবৃত্ত ছন্দে অন্ত্যমিলে স্লোগান রচনা করলে, সমবেত কণ্ঠে তার আবেদন বেশ জোরালো হয়। আর সে ক্ষেত্রে শব্দচয়ন যদি মিছরির ছুরির মতো হয়, তবে তো কথাই নেই।
৩ ঘণ্টা আগেপ্রাচীন মানুষ নিঃসঙ্গ অবস্থা থেকে যখন দলবদ্ধ হতে চেয়েছিল তাদের মাথায় কোন প্রয়োজনটা সবচেয়ে বেশি জরুরি ছিল? নিরাপত্তা, নিয়ম, স্বস্তি নাকি একসঙ্গে সবকিছু? হয়তো এভাবেই ধীরে ধীরে একসময় পরিবার তৈরি করে ফেলেছিল মানুষ! এর সঙ্গে তৈরি হয়েছিল সমাজও।
৩ ঘণ্টা আগেদ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪৮ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধই ছিল পৃথিবীতে প্রথম বড় ধরনের সামরিক সংঘাত। ১৯৪৭ সালের ৩০ নভেম্বরের জাতিসংঘ প্রস্তাবের নাম করে বস্তুত ব্রিটিশ ও মার্কিন মদদে ১৯৪৮ সালের ১৪ মে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে স্বাধীন ইসরায়েল রাষ্ট্র ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতেই ওই যুদ্ধের শুরু এবং একধরনের...
১ দিন আগে