Ajker Patrika

ভবনের সামনে অঝোরে কাঁদছিল শিশুটি, বিকেলে উদ্ধার হলো বাবার মরদেহ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৯ মার্চ ২০২৩, ০২: ৪২
ভবনের সামনে অঝোরে কাঁদছিল শিশুটি, বিকেলে উদ্ধার হলো বাবার মরদেহ

হাজার মানুষের উৎসুক চোখ বিস্ফোরণে বিধ্বস্ত দুটি ভবনের দিকে। কেউ কারও দিকে তাকাচ্ছে না। ক্রাইম সিনের ঘিরে রাখা সীমানার বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা এসব মানুষের পুরো মনোযোগ ভবন দুটির ভেতরে। এত মানুষের ভেতরে আলাদাভাবে নজর কাড়ে ৯ বছরের এক ফুটফুটে শিশু। সবাই যখন হতবিহ্বল দাঁড়িয়ে তখন এই শিশু দুই হাত তুলে মোনাজাত করছে। মুখে কোনো কথা নেই, যত কথা সব তার মায়াভরা চোখ জোড়ায়। মোনাজাতে কী চাইছে সে? তৎক্ষণাৎ জানা না গেলেও বোঝা গেল, তার ছলছল চোখ দেখে। হয়তো এই ভবনের বিস্ফোরণে সে হারিয়েছে আপনজন। ততক্ষণে তাকে ঘিরে সংবাদকর্মী ও সাধারণ মানুষের হুল্লোড় শুরু হয়ে গেছে। এতে নিবিষ্ট মোনাজাতে ছেদ পড়ে। অনেকেই জানতে চায় কে এই শিশু? কান্না চাপা কণ্ঠে নিজের নাম জানায়, সামিত।

বাবা মোমিন উদ্দিন সুমনের কুইন টাওয়ারে স্যানিটারি পণ্যের ব্যবসা। বিস্ফোরণের আগে তার বাবা এই ভবনে ঢোকেন। তারপর থেকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তাই বাবাকে ফিরে পেতে সামিতের নীরব মোনাজাত। এসব বলতেই ফুঁপিয়ে কান্না করছিল, পরে তা হেঁচকি কান্নায় রূপ নেয়। তার কান্না সকলকে ছুঁয়ে যায়। এরপরে সামিতসহ তার পরিবারের অন্যদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় বাড়িতে। এই ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর বিকেল ৫টায় তার বাবা মোমিন উদ্দিন সুমনের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার হয় ভবনের বেসমেন্ট থেকে। সঙ্গে উদ্ধার হয় তাঁর কর্মচারী রবিনের মরদেহও। 

শোকাবহ এই পরিবেশে সামিতসহ তার পরিবারের আর কারও সঙ্গেই কথা বলার মতো অবস্থা ছিল না। তবে তার বাবার বাল্যবন্ধু মঞ্জুর আহমেদ আজকের পত্রিকাকে জানান, নিহত সুমন আনিকা স্যানিটারির স্বত্বাধিকারী। তিন ভাই, বাবা-মা, স্ত্রী আর দুই মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে তাঁর সংসার। ব্যবসা আর পুরো পরিবার দুই হাতে সামলাত সে। তার অকাল মৃত্যুতে পরিবারের প্রত্যেকটি মানুষ শোকে পাথর হয়ে গেছে। 

গত মঙ্গলবার বিকেলে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে রাজধানীর সিদ্দিকবাজারের নর্থ সাউথ রোডের কুইন টাওয়ার ও পাশের ভবনে। সেই বিস্ফোরণে প্রায় ২৪ ঘণ্টা নিখোঁজ ছিলেন সুমন। গতকাল বুধবার সকালে ভবন দুটিতে ফায়ার সার্ভিস দ্বিতীয় দফা উদ্ধার কাজ শুরু করে। তার আগে থেকেই আরও তিনটি পরিবারকে তাদের স্বজনদের সন্ধানে অপেক্ষা করতে দেখা যায় সেখানে। তাদের মধ্যে রবিন হোসেন শান্তর মরদেহ উদ্ধার হয়েছে তার মালিক সুমনের সঙ্গে। 

রবিনের ভাই শাহাদাত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা লাশ পেয়েছি। সেটা বুঝিয়ে নিতে ঢাকা মেডিকেলে যাচ্ছি।’ 

নিখোঁজদের মধ্যে মেহেদি হাসান স্বপন ও আব্দুল মালেকের সন্ধান মেলেনি গতকাল সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। ঢাকা মেডিকেল, মিটফোর্ড, বারডেমসহ রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে খোঁজ করেও তার সন্ধান না পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের সামনে অপেক্ষা করছিল স্বজনরা। স্বপনের বোন জামাই গতকাল সন্ধ্যায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জীবিত আর পাওয়া যাবে না জানি। হাসপাতাল ঘুরে ঘুরে আমরা হতাশ হয়ে ভবনের সামনে অপেক্ষা করছি। নিখোঁজ থাকা দুজনের মরদেহ যখন এখান থেকে পাওয়া গেছে। আশা করছি স্বপনকেও এখান থেকে পাওয়া যাবে।’ 

গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১৯ জনের মৃত্যু সংবাদ নিশ্চিত হওয়া গেছে ফায়ার সার্ভিস ও ঢাকা মেডিকেল সূত্রে। বেশির ভাগই প্রাণ হারিয়েছেন আঘাত ও রক্তক্ষরণের কারণে। কারও মুখ, মাথা, বুক ও হাত-পা থেঁতলানো। কারও আবার বিস্ফোরণে ভেঙে আসা কাচ ঢুকেছে গলা দিয়ে। কুইন টাওয়ারের পাশের ভবনে ইউসুফ স্যানিটারির মালিক নুরুল ইসলাম ভূঁইয়াও (৫৫) বিস্ফোরণে প্রাণ হারান। তার মরদেহ দেখে এসে ছোট ভাই তাজুল ইসলাম ভূঁইয়া (৫৩) স্বজনদের বলেন, ‘ভাইয়েরেতো চেনা যায় না। মুখ পুইড়া ছাই। একটা দাড়িও নাই!’ 

মঙ্গলার বিকেলে বাবার ফোন পেয়ে তার পান-সিগারেটের দোকানে সহায়তা করতে গুলিস্থান যাচ্ছিলেন হৃদয় মিয়া। পথেই বিস্ফোরণের মাঝে পড়েন এবং সেখানেই প্রাণ হারান। মরদেহ পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেলে। সেই মরদেহের বর্ণনা দিয়ে আজকের পত্রিকাকে তার খালু জয়নাল মিয়া বলেন, ‘হৃদয়ের মুখের এক পাশ পুইড়া গেছে। দেখলে ডর লাগে। পুইরা যাওয়া মুখ দেখলে চেনার উপায় নাই।’ 

নিহত অন্যরা হলেন—মো. সুমন (২১), ইসহাক মৃধা (৩৫), মুনসুর হোসেন (৪০), মো. ইসমাইল (৪২), আল আমিন (২৩), রাহাত (১৮), মমিনুল ইসলাম (৩৮), নদী বেগম (৩৬), মাঈন উদ্দিন (৫০), নাজমুল হোসেন (২৫), ওবায়দুল হাসান বাবুল (৫৫), আবু জাফর সিদ্দিক (৩৪), আকৃতি বেগম (৭০), মো. ইদ্রিস মীর (৬০) এবং আব্দুল হাসিম সিয়াম (৩৫)। সবগুলো মরদেহই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। 
 
আহতদের আহাজারি ও চিৎকারে ঢাকা মেডিকেলের পরিবেশ ভারী ছিল ঘটনার দিন রাতে। সেই রাতেই জরুরি বিভাগের বাইরে স্ট্রেচারে গুরুতর আহত জামাল শিকদারকে (৩৫) কাতরাতে দেখা যায়। তার মাথা ও পায়ে থেঁতলে যাওয়া ভয়ানক জখম। জখমে জড়ানো সাদা ব্যান্ডেজ রক্তে লাল। মাথার সিটি স্ক্যান ও পায়ের এক্স-রে করা হয়েছে। তার স্ত্রী মুন্নি বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, একটু পর পর ব্যথায় তিনি (তার স্বামী) চিৎকার করে উঠছে। আর বাকি সময় দাঁতে দাঁত চেপে ব্যথা সহ্য করার চেষ্টা করছেন। এই ঘটনায় ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি আছে ২০ জন দগ্ধ ও আঘাতের রোগী। তাদের মধ্যে ছয়জন দগ্ধ রোগী আছেন বার্ন ইউনিটে। সংকটাপন্ন ১০ জন দগ্ধ রোগী ভর্তি আছেন শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে। সব মিলিয়ে ঢাকা মেডিকেলের সাধারণ বিভাগ, বার্ন ইউনিট ও শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি আছেন ৩০ জন। 

বার্ন ইনস্টিটিউটে ৯৮ ভাগ দগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন মো. মুসা নামে এক ব্যক্তি। এ ছাড়া ৫৫,৮০, ৪০ ও ৫৫ ভাগ দগ্ধ হয়েও অনেকেই ভর্তি আছেন বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন। এসব রোগীদের সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘যারা চিকিৎসাধীন আছে তাদের কেউই শঙ্কামুক্ত না। সবারই শ্বাসনালি পুড়ে গেছে। আমি স্পষ্ট করে বলতে পারি, যেহেতু সবারই শ্বাসনালি পুড়ে গেছে তাই আমরা শঙ্কামুক্ত বলতে পারব না।’ 

এ ছাড়া রাজধানী ও সাভারের অন্যান্য হাসপাতালেও অনেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। অনেকেই আবার হালকা জখম বা আঘাত পেয়ে ঘটনার দিনই ঢাকা মেডিকেল থেকে চিকিৎসা নিয়ে ফিরে গেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নোয়াখালীতে ব্যানার, তোরণ ও বিলবোর্ড অপসারণ করছে প্রশাসন

সুবর্ণচর (নোয়াখালী) প্রতিনিধি 
বিলবোর্ড অপসারণ। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিলবোর্ড অপসারণ। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে নির্বাচনী আচরণবিধি বাস্তবায়নে ব্যানার, ফেস্টুন, তোরণ ও বিলবোর্ড অপসারণ করেছে উপজেলা প্রশাসন।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আকিব ওসমানের নেতৃত্বে এই অভিযান চালানো হয়।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সব ধরনের রাজনৈতিক প্রচারসামগ্রী অপসারণের কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা সরানো হয়নি। ফলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সরাসরি উদ্যোগ নেওয়া হয়।

এর আগে গত শনিবার রাতে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মাইকিং করে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ নিজ ব্যানার, ফেস্টুন, তোরণ ও বিলবোর্ড নিজ দায়িত্বে অপসারণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়। নির্দেশনা অমান্য করায় রোববার দুপুরে প্রশাসন নিজ উদ্যোগে এসব প্রচারসামগ্রী অপসারণ করে।

অভিযান পরিচালনায় সহযোগিতা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ছেনমং রাখাইন ও চরজব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লুৎফর রহমানসহ পুলিশ সদস্যরা। এ ছাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও অভিযানে অংশ নেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আকিব ওসমান বলেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী উপজেলায় সব রাজনৈতিক ব্যানার, ফেস্টুন, তোরণ ও বিলবোর্ড অপসারণ করা হচ্ছে। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্যভাবে আয়োজন করতে উপজেলা প্রশাসন বদ্ধপরিকর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পাবিপ্রবি ও জাপানের ইয়ামানাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক চুক্তি

পাবনা প্রতিনিধি
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাপানের ইয়ামানাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক চুক্তি। ছবি: আজকের পত্রিকা
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাপানের ইয়ামানাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক চুক্তি। ছবি: আজকের পত্রিকা

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পাবিপ্রবি) এবং জাপানের ইয়ামানাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। আজ রোববার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে এই চুক্তি স্বাক্ষর হয়। পাবিপ্রবির পক্ষে উপাচার্য প্রফেসর ড. এস এম আব্দুল আওয়াল এবং ইয়ামানাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ভাইস প্রেডিডেন্ট প্রফেসর ড. মাসানারি হানাওয়া চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

এই সমঝোতা স্মারক চুক্তির ফলে উভয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাগত ও একাডেমিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করবে। পাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা জাপানের মর্যাদাপূর্ণ মেক্সট স্কলারশিপ লাভ করবে। স্কলারশিপ প্রাপ্তরা জাপানে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ, নতুন প্রযুক্তি ও গবেষণার সঙ্গে পরিচিত হবেন এবং একাডেমিক অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপাচার্য প্রফেসর ড. এস এম আব্দুল আওয়াল বলেন, ‘১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর আমাদের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে মেধাশূন্য করা হয়েছিল। আমরা আজকে সমঝোতা স্মারক চুক্তির দিন হিসেবে বেছে নিয়েছি। কারণ, আমরা বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষ গড়তে চাই। আমরা প্রমাণ করতে চাই আমরা হেরে যাইনি।’

প্রফেসর ড. মাসানারি হানাওয়া বলেন, ‘সমঝোতা স্মারক চুক্তির ফলে শিক্ষা, গবেষণা, রিসোর্স এবং মানবসম্পদ তৈরির লক্ষ্যে আমরা উভয়ে মিলে কাজ করব। আমরা কার্যকর সমঝোতা গড়ে তুলব। আমাদের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক তৈরি হবে। ফলে আমাদের মধ্যে জ্ঞানের অংশীদারত্বের পথ সৃষ্টি হবে। এতে আমরা দুই পক্ষই লাভবান হব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বুদ্ধিজীবী দিবসের অনুষ্ঠানে জামায়াত নেতারা, বয়কট মুক্তিযোদ্ধাদের

নেত্রকোনা, প্রতিনিধি
মোহনগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা
মোহনগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা

জামায়াত নেতারা আসায় নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের অনুষ্ঠান থেকে বেরিয়ে গেলেন মুক্তিযোদ্ধারা। আজ রোববার উপজেলার অডিটরিয়ামে এ ঘটনা ঘটে।

এর আগে সকালে দিবসটি উপলক্ষে উপজেলা পরিষদ চত্বরে স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পরে বেলা ১১টার দিকে উপজেলার অডিটরিয়ামে আলোচনা সভার আয়োজন করে প্রশাসন।

আলোচনা সভায় জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের দাওয়াত দেওয়ায় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা সভা বর্জন করে চলে যান। পরে শহরের স্টেশন রোডে মুক্তিযোদ্ধা সংসদে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডাকেন তাঁরা।

এ সময় মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, ‘স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের মঞ্চে স্থান দেওয়ায় আমরা আলোচনা সভা বর্জন করি। যারা আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করল, তাদের সঙ্গে আমরা বসতে পারি না। এখানে আমরা কোনো আপস করতে পারি না।’

তাঁরা আরও বলেন, ‘এর আগে আমরা উপজেলা প্রশাসনকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনা সভায় জামায়াতকে না রাখতে ইউএনওর প্রতি অনুরোধ জানাই। কিন্তু আমাদের অনুরোধ তিনি রাখেননি।’

এ সময় বক্তব্য দেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের আহ্বায়ক আব্দুল খালেক, যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রহমান ও সদস্যসচিব গোলাম মোস্তফা।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমেনা খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক সব রাজনৈতিক নেতাকে দাওয়াত দিয়েছি। বীর মুক্তিযোদ্ধারা সভায় বিলম্বে যাওয়ায় আমাদের পাশেই তাঁদের জন্য আলাদা চেয়ারও রেখেছিলাম। কিন্তু উনারা চেয়ারে না বসে ব্যস্ততা দেখিয়ে হলরুম ত্যাগ করেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: শেরপুর থেকে দুজন আটক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ৪১
মোটরসাইকেলে এসে হাদিকে গুলি করা হয়। ছবি: সিসিটিভির ফুটেজ
মোটরসাইকেলে এসে হাদিকে গুলি করা হয়। ছবি: সিসিটিভির ফুটেজ

রাজধানীর পল্টনে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান শরিফ হাদি গুলিবিদ্ধের ঘটনায় আরও দুজনকে আটক করা হয়েছে। সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে লোক পারাপারের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে শেরপুর থেকে তাঁদের আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

এর আগে হাদির ওপর হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আব্দুল হান্নানকে আটক করে র‍্যাব। তাঁকে পল্টন থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর মিন্টু রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার এন এস নজরুল ইসলাম।

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার জানান, গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুর আনুমানিক ২টা ২৫ মিনিটে রাজধানীর পল্টন এলাকার বক্স কালভার্ট ডিয়ার টাওয়ারের সামনে মোটরসাইকেল আরোহী দুজন দুর্বৃত্ত ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদির ওপর নেক্কারজনক হামলা চালায়। হেলমেট পরিহিত অবস্থায় হামলাকারীরা খুব কাছ থেকে গুলি করে পালিয়ে যায়। এতে হাদি গুরুতর আহত হন এবং বর্তমানে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

শেরপুরের নালিতাবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে লোক পারাপারের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে দুজনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বিস্তারিত পরে জানানো যাবে বলেও জানান তিনি।

পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, হামলার সঙ্গে জড়িতরা শেরপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে গেছে, তাঁদের যারা সীমান্ত পার করে দিয়েছিলেন, আটককৃত এই দুজন তাঁদের মধ্যে অন্যতম।

নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার পরপরই ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে জোর তৎপরতা শুরু করে। ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে ইতিমধ্যে হামলাকারী দুই সন্দেহভাজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে গুলি করেছে ফয়সাল করিম এবং মোটরসাইকেল চালক ছিলেন মোহাম্মদ আলমগীর শেখ।’

ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার এন এস নজরুল ইসলাম। ছবি: আজকের পত্রিকা
ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার এন এস নজরুল ইসলাম। ছবি: আজকের পত্রিকা

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার জানান, প্রাথমিক তদন্তে মোট তিনজনের সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে। ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি ইতিমধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে। মোটরসাইকেলের মালিক মান্নানকে র‍্যাব আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের ইমিগ্রেশন ডাটাবেজ চেক করে এখন পর্যন্ত সন্দেহভাজনদের বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।’ তিনি বলেন, ফয়সাল করিম মাসুদের পাসপোর্ট নম্বর পাওয়া গেছে এবং তাঁর পাসপোর্ট ইতিমধ্যে ব্লক করা হয়েছে। ইমিগ্রেশন রেকর্ড অনুযায়ী, ফয়সালের সর্বশেষ বিদেশযাত্রা ছিল গত জুলাই মাসে। তিনি থাইল্যান্ড থেকে দেশে ফিরে আসেন। এরপর আর কোনো ডিপার্চারের তথ্য নেই।

অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, স্থল সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে পালানোর সম্ভাবনা মাথায় রেখে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে (বিজিবি) সতর্ক করা হয়েছে। সব ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে সন্দেহভাজনদের বিষয়ে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা গুজব থাকলেও আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত বিদেশে পালানোর কোনো অথেনটিক তথ্য নেই।’

ঘটনার পর এখনো কোনো মামলা দায়ের হয়নি। এ বিষয়ে অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ‘আহত ওসমান হাদির পরিবার বর্তমানে চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় মামলা করতে দেরি হচ্ছে। আমরা তাদের সঙ্গে দুইদিন ধরে যোগাযোগ করছি। প্রয়োজনে হাসপাতাল থেকে স্বাক্ষর নিয়ে মামলা করা হবে। তা না হলে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা রেকর্ড করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত