Ajker Patrika

ক্ষমা চেয়ে ছাত্রদলকে ক্যাম্পাসে আসতে বললেন ছাত্রলীগ সভাপতি

ঢাবি প্রতিনিধি
আপডেট : ২৯ মে ২০২২, ১৪: ৪৯
ক্ষমা চেয়ে ছাত্রদলকে ক্যাম্পাসে আসতে বললেন ছাত্রলীগ সভাপতি

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে ছাত্রদল যে ধৃষ্টতা দেখিয়েছে, তাতে তাদের ক্ষমা চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে হবে। অন্যথায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিহত করবে এবং ছাত্রলীগ সব সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে থাকবে।

আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের ওপর ছাত্রদলের হামলার প্রতিবাদে এক মানববন্ধনে এ মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়।

ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন। 

আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে যারা ধৃষ্টতা দেখিয়েছি, তাদের ক্ষমা চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে হবে। অন্যথায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিহত করবে এবং ছাত্রলীগ সব সময় তাদের পাশে থাকবে।’

জয় বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটূক্তি করলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বসে থাকবে না। কারণ তিনি শুধু দলীয় পরিচয়ে সীমাবদ্ধ নন। সকল স্তরের মানুষের কাছে জনপ্রিয়। অবৈধ ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতে খুনি জিয়াউর রহমান ছাত্রদল গঠন করে টাকা ও অস্ত্র হাতে তুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু শেখ হাসিনা বই-খাতা তুলে দিয়েছেন। কারণ বই-খাতা হলো সেই হাতিয়ার, যার মাধ্যমে অস্ত্রকে নিবারণ করা যায়।’

সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে জয় বলেন, ‘আপনারা (সাংবাদিক) ভুলে যাইয়েন না, বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতি নষ্ট করেছে বিএনপি। দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বিএনপি। শিবিরকে নিয়ে রগ কাটার রাজনীতি করেছে বিএনপি। আজকে আরামে আছেন, তাই অনেক কিছু ভুলে গেছেন। খুনি জিয়াউর রহমানের হাত ধরে খালেদা জিয়াও ছাত্রদলের হাতে টাকা আর অস্ত্র তুলে দিয়েছেন।’

সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা আমাদের খারাপ দিকগুলো জাতির সামনে তুলে ধরবেন, কিন্তু অসত্য তথ্য, মিথ্যা তথ্য দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করবেন না। জেনে-শুনে নিউজ করুন।’ 

ছাত্রলীগের সভাপতি বলেন, ‘সুস্থ হওয়ার পরেও ছাত্রদলের অনেক নেতা-কর্মীরা হাসপাতালে আছেন। কারণ সেখানে তারেক রহমান অহি পাঠায়, টাকা পাঠায়। আর সেই টাকা নিয়ে এসি রুমে তাঁরা সেখানে থাকেন। সেখানে দেখলাম শিবির সভাপতি গিয়েও অবস্থান করছে, দেখা করতে গেছে। তাহলে আমরা বুঝি তাদের উদ্দেশ্য কী! তারা ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করতে চায়।’ সেশনজটবিহীন ক্যাম্পাসে পরিণত হওয়ায় তাদের মাথা খারাপ বলে উল্লেখ করেন জয়।

মানববন্ধনে লেখক ভট্টাচার্য বলেন, ‘বিগত কিছুদিন ধরে অছাত্র ও আদুভাইদের সংগঠন ছাত্রদলের নতুন কমিটি হওয়ার পর তারা ক্যাম্পাসকে ‌অস্থিতিশীল করার পায়তারা শুরু করেছে। ছাত্রদলের সভাপতি কিছুদিন আগে ঔদ্ধত্যমূলক বক্তব্য ও উসকানিমূলক স্লোগান দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ইমোশনে আঘাত করেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাঁর সাধিত উন্নয়ন ও বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের কারণেই প্রথম বর্ষ থেকে সব শিক্ষার্থীর হৃদয়ে অবস্থান করেন। শিক্ষার্থীদের মনে কষ্ট দিয়ে বিভিন্ন ধরনের কথাবার্তা মাধ্যমে তারা ক্যাম্পাসে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে চায়।’

লেখক বলেন, ‘ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতারা প্রেসক্লাবের সামনে তাদের বক্তব্যের মাধ্যমে ধৃষ্টতার সীমা লঙ্ঘন করে বলেছে, ’৭৫-এর হাতিয়ার দরকার হলে আবার তাদের হাতে গর্জে উঠবে। তাদের এই বক্তব্যে প্রমাণিত হয় যে ’৭৫-এই খুনি জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড হয়েছিল। এত বছর পর এসে ছাত্রদলের কুলাঙ্গাররা ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতার এই বাণীকে সত্য বলে বিচার করছে। এরই মাধ্যমে তারা বাংলাদেশে হত্যা ও খুনের রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করার পাঁয়তারা করছে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ শক্ত হাতে তাদের (ছাত্রদল) দমন করবে। বাংলাদেশের সব ছাত্রসমাজ তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলে এই ‌অছাত্র ও চাচ্চু বাহিনীকে সারা বাংলাদেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বিতাড়িত করবে।’

মানববন্ধনে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বিভিন্ন হল, ঢাকা কলেজ, ইডেন কলেজ, বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, হোম ইকোনমিকস কলেজসহ রাজধানীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ছাত্রলীগের সহস্রাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত