Ajker Patrika

মুচলেকা দিয়ে নজরুল-রবীন্দ্রসংগীত গাওয়া বন্ধ করলেন হিরো আলম

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৭ জুলাই ২০২২, ১৬: ৪০
মুচলেকা দিয়ে নজরুল-রবীন্দ্রসংগীত গাওয়া বন্ধ করলেন হিরো আলম

জীবনে আর বিকৃত করে নজরুল ও রবীন্দ্রসংগীত করবে না বলে মুচলেকা দিয়েছেন আলোচিত আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম। আজ বুধবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাছে এই মুচলেকা দেন তিনি।

বুধবার সকালে ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। 

হারুন অর রশীদ বলেন, ‘হিরো আলমের বিরুদ্ধে ডিসি সাইবারে অনেকগুলো অভিযোগ জমা হয়েছিল। সেগুলোর বিষয়ে আমরা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তাঁকে ডাকা হয়েছিল। তিনি মুচলেকা দিয়েছেন, জীবনেও আর নজরুল ও রবীন্দ্রসংগীত বিকৃত করে গাইবেন না, এ ধরনের ভিডিও বানাবেন না।’ 

হারুন অর রশীদ বলেন, ‘আমাদের বাঙালি সংস্কৃতি নজরুল ও রবীন্দ্রসংগীত। আমরা গান শুনি, নজরুল, রবীন্দ্র শুনি, এই সব গানের তিনি সবকিছু পরিবর্তন করেছেন। এসব কেন করেন জানতে চাইলে তিনি জানিয়েছেন, তিনি জীবনেও আর এমন গান করবেন না।’

পুলিশের পোশাক পরে বিভিন্ন ভিডিও বানানোর ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদের কথা জানিয়ে হারুন অর রশীদ বলেন, ‘তিনি বিভিন্ন সংগীতে পুলিশের বিভিন্ন ডিআইজি-এসপির পোশাক পরে কনস্টেবলের অভিনয় করেছেন। এসব পোশাক পরতে পূর্ব অনুমতি নেওয়া প্রয়োজন, কিন্তু তিনি তা নেননি। এমনকি তিনি শিল্পী সমিতির সদস্যও না। তিনি কনস্টেবলের ড্রেস পরে বিভিন্ন পদমর্যাদার নামে অভিনয় করছেন, তিনি কাউকে জানান না, তাঁকে নিয়ে আর কী বলব।’ 

পোশাকের বিষয়েও তিনি মুচলেকা দিয়েছেন জানিয়ে হারুন অর রশীদ বলেন, ‘তিনি এ ধরনের কোনো কাজ বা ভিডিও আর করবেন না।’

বুধবার সকালে হিরো আলমকে ডিবিতে ডাকা হয়।

এর আগে রবীন্দ্রসংগীতসহ বিভিন্ন গান মিউজিক ভিডিও আকারে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করায় আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহরিয়ার এই নোটিশ পাঠান। নোটিশে তাঁর কয়েকটি গানকে গণ-উৎপাত আখ্যা দিয়ে ৩০ দিনের মধ্যে সামাজিক মাধ্যম থেকে অপসারণ করতে বলা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাবি রেজিস্ট্রার ও রাকসু জিএসের উত্তপ্ত বাগ্‌বিতণ্ডা: ‘বিএনপি নেতা’দের সঙ্গে বৈঠকের অভিযোগ

রাবি প্রতিনিধি  
বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে রাবি রেজিস্ট্রার রাকসু জিএসের দিকে তেড়ে আসেন। ছবি: সংগৃহীত
বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে রাবি রেজিস্ট্রার রাকসু জিএসের দিকে তেড়ে আসেন। ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. ইফতেখারুল আলম মাসউদ এবং রাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) সালাউদ্দিন আম্মারের মধ্যে উত্তপ্ত বাগ্‌বিতণ্ডার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রোববার (৯ নভেম্বর) দুপুরে রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। পরে রাতে সেই বাগ্‌বিতণ্ডার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা আলোচনার জন্ম দেয়।

জানা গেছে, গতকাল দুপুরে জরুরি কাজে রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে যান রাকসু জিএস সালাউদ্দিন আম্মার। সেখানে পৌঁছানোর পর তাঁকে জানানো হয়, রেজিস্ট্রার ‘বিএনপি নেতা’দের সঙ্গে বৈঠকে ব্যস্ত আছেন। আম্মার এরপর ভেতরে প্রবেশ করে তাঁর কাজের বিষয়ে জানতে চাইলে রেজিস্ট্রার ও তাঁর মধ্যে বাদানুবাদ শুরু হয়।

জিএস সালাউদ্দিন আম্মার জানান, চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগের একটি ফাইল নিয়ে জটিলতা ছিল, যা উপাচার্যের স্বাক্ষরের পরও রেজিস্ট্রার দপ্তরে আটকে ছিল। এ বিষয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে তিনি প্রথমবার কল করলেও রেজিস্ট্রার ধরেননি। দ্বিতীয়বার সরাসরি দপ্তরে গেলে তাঁর পিএস তাঁকে জানান যে রেজিস্ট্রার ‘মহানগর বিএনপির’ নেতাদের সঙ্গে মিটিং করছেন।

আম্মার বলেন, ‘আমি সেখানে গেলে তখনো বলে বিএনপির প্রোগ্রাম চলছে। এখন ভেতরে যাওয়া যাবে না। তারপর আমি ভেতরে ঢুকে যাই। গিয়ে বললাম এই চিঠিটা কখন ইস্যু হচ্ছে? তখন উনি বলল আজকে। তারপর বাগ্‌বিতণ্ডা শুরু হলো।’

সালাহউদ্দিন আম্মার আরও বলেন, ‘রেজিস্ট্রার প্রায়ই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। উনি মেয়েদের হলের আন্দোলনে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন। আজ (গতকাল) একপর্যায়ে তিনি আমার দিকেও তেড়ে আসেন। যিনি ভিডিও করছিল তাঁর দিকেও তেড়ে এসে ফোনটা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। ভিডিওতেও স্পষ্ট দেখা যায়—তিনি আমাকে বারবার “গেট আউট” বলে চিৎকার করছেন এবং বলছেন, “এটা আমার কক্ষ, তুমি এখানে কেন?” আমি যদি কোনো অপ্রয়োজনীয় কাজে সেখানে যেতাম, তাহলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতাম না। আমাকে জানানো হয়েছিল, তিনি একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করছেন। তাই দায়িত্বের জায়গা থেকে আমি বিষয়টি যাচাই করতে গিয়েছিলাম। আমি কোনো রাজনৈতিক দলের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য রাকসুতে নির্বাচিত হইনি; আমি নির্বাচিত হয়েছি শিক্ষার্থীদের স্বার্থ ও অধিকার রক্ষার জন্য।’

অন্যদিকে অধ্যাপক ড. ইফতিখারুল আলম মাসুদ বলেন, ‘চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি নিয়োগ বিষয়ে গতকাল (শনিবার) একটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেটা কার্যকর করা নিয়ে আমি আজকে (রোববার) সকাল থেকেই কাজ করছিলাম। এর মধ্যে এক সপ্তাহ আগে এনসিপির রাজশাহী মহানগরের নতুন কমিটির নেতারা আমার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করার জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়েছিলেন। ওনারা সাক্ষাৎ করতে এসেছিলেন আজ। ওনাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সময় বাইরে দুজন ডিন অপেক্ষা করছিলেন।’

তিনি বলেন, ‘এর মধ্যে জিএস সালাহউদ্দিন আম্মারও দেখা করার জন্য এসেছিল। তাকেও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু সে অপেক্ষা না করে বেয়াদবি করে হঠাৎ আমার চেম্বারে ঢুকে পড়ে। তার দাবি, আমি নাকি ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের সভাপতি নিয়োগের চিঠি আটকে রেখেছি। অথচ সকাল থেকেই আমরা বিষয়টির সুরাহা করার জন্য কাজ করছিলাম। ওই সময়ও নতুন সভাপতির নিয়োগ অনুমোদন হওয়ার পরের কাজ করছিল অন্যরা।’

রেজিস্ট্রার আরও বলেন, ‘এই অবস্থায় সে হঠাৎ চেম্বারে ঢুকে পড়ে। ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের সভাপতি নিয়োগ হবে। এখানে তাঁর কাজ কী? রাকসুর ভিপি সৌজন্য সাক্ষাৎ করার জন্য এক সপ্তাহ আগে আমাকে মেসেজ দিয়েছে। আমি এখনো বেচারাকে রিপ্লাই দিতে পারিনি। আর এই ছেলে সব জায়গায় গিয়ে মাতব্বরি করে। একটা বেহায়া ছেলে। ভিডিওতেই এর প্রমাণ রয়েছে। আমি তাকে গেট আউট বলে বের করে দিয়েছি। সে কেন একটা অফিস অর্ডার নিয়ে কথা বলতে যাবে? এটা তো আমি বরদাশত করব না। ছাত্র রিলেটেড কোনো বিষয় হলে সে যেতে পারে।’

এ ঘটনায় নিজেদের অবস্থান তুলে ধরে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি রাজশাহী মহানগর শাখার আহ্বায়ক মোবাশ্বের রাজ। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘সালাউদ্দিন আম্মার ও রেজিস্ট্রার স্যারের সঙ্গে উত্তপ্ত বাগ্‌বিতণ্ডার সময় সেখানে বিএনপির কেউ ছিল না। আমার উপস্থিতিতে রাজশাহী মহানগর এনসিপির নেতৃত্ব ছিল। আমরা সেখানে সৌজন্য সাক্ষাতে গিয়েছিলাম। কিন্তু রেজিস্ট্রার স্যারের পিএস সম্ভবত আমাদের বিএনপির নেতা-কর্মী ভেবে তাদের ইনফর্ম করে। এখান থেকেই ভুল-বোঝাবুঝির সূচনা হয়।’

এদিকে, জিএস আম্মার বিএনপিকে জড়িয়ে বক্তব্য দেওয়ার প্রতিক্রিয়ায় রাবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, ‘আম্মার ও শিক্ষক পরস্পরকে ধমকাচ্ছেন, বিএনপির নাম টেনে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন, অথচ সেখানে বিএনপির কেউই ছিল না। এনসিপির সঙ্গে নিয়মিত দেখা যায় আম্মারকে, অথচ আজ তিনি তাদের চিনলেন না। গণতান্ত্রিক সমাজে যে কেউ আলোচনা করতেই পারে, এতে আমাদের আপত্তি নেই। তবে বিএনপির নাম ব্যবহার করে বিভ্রান্তি ছড়ানো অনৈতিক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শ্রমিক দল সভাপতির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে বিক্ষোভ

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি 
মোন্তাজ আহমেদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, জমি ও জলাশয় দখলসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে বিক্ষোভ মিছিল (ইনসেটে মোন্তাজ আহমেদ)। ছবি: আজকের পত্রিকা
মোন্তাজ আহমেদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, জমি ও জলাশয় দখলসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে বিক্ষোভ মিছিল (ইনসেটে মোন্তাজ আহমেদ)। ছবি: আজকের পত্রিকা

পাবনার চাটমোহর উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মোন্তাজ আহমেদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, জমি ও জলাশয় দখলসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের একাংশের নেতা-কর্মীরা। রোববার (৯ নভেম্বর) রাতে উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের রেলবাজার এলাকায় এ বিক্ষোভে ইউনিয়ন বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলসহ বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী অংশ নেন।

সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন, শ্রমিক দলের সভাপতি পরিচয় ব্যবহার করে মোন্তাজ আহমেদ দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি, এলাকায় সালিসের নামে অর্থ আদায়, জমি ও জলাশয় দখল, থানায় দালালি এবং নিজ দলের নেতা-কর্মীদের ওপর নির্যাতনসহ বিভিন্ন অপকর্ম করছেন। এসব কর্মকাণ্ডের কারণে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। বিশেষ করে ৫ আগস্টের পর থেকে তাঁর কারণে মূলগ্রাম ইউনিয়নসহ উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রমে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।

তাঁরা অভিযোগ করেন, মোন্তাজ আহমেদের অপকর্মে ক্ষুব্ধ হয়ে অনেক নেতা-কর্মী দলীয় কর্মসূচি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। দ্রুত দলীয় শৃঙ্খলার স্বার্থে মোন্তাজের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান বক্তারা। সমাবেশ থেকে মূলগ্রাম ইউনিয়নে তাঁকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করা হয়।

এ ব্যাপারে মূলগ্রাম ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মোহাব্বত মল্লিক বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে মোন্তাজ বিএনপির নাম ব্যবহার করে চাঁদা আদায় ও ভুক্তভোগীদের ওপর বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করে আসছে। অমৃতকুণ্ডা হাটে অতিরিক্ত টোল আদায়, রেলবাজার এলাকায় শ্রমিকদের কাছ থেকে অর্থ নেওয়া হয়। শ্রমিকেরা আপত্তি জানালে তাদের ঘরবাড়িতে হামলা করা হয়। এসব অভিযোগ এলাকাবাসীর মুখে মুখে। এসব কারণে অনেকেই দল থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন।’

তবে শ্রমিক দল সভাপতি মোন্তাজ আহমেদ সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘চাঁদাবাজির কোনো ঘটনা ঘটেনি। বরং কিছু ব্যক্তি অনুমতি ছাড়াই বিভিন্ন ট্রাক ও যানবাহন থেকে টাকা নিচ্ছিল। বিষয়টি জানার পর আমি তাদের নিষেধ করেছি। এ কারণে তারাই ক্ষিপ্ত হয়ে আমার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে। আমাদের ইজারা নেওয়া হাটের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কাজ করছি। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের একটি মহল পরিকল্পিতভাবে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গোপালগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
দুর্ঘটনাকবলিত মোটরসাইকেল। ছবি: আজকের পত্রিকা
দুর্ঘটনাকবলিত মোটরসাইকেল। ছবি: আজকের পত্রিকা

গোপালগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার রাত পৌনে ১০টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন-মোটরসাইকেল চালক সদর উপজেলার ডালনিয়া গ্রামের ত্রিনাথ বিশ্বাসের ছেলে বিজয় বিশ্বাস (২২) এবং আরোহী একই গ্রামের সতীশ ভট্টাচার্যের ছেলে সরোজ ভট্টাচার্য (৫০)।

গোপালগঞ্জ বৌলতলী পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আফজাল হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, গোপালগঞ্জ-টেকেরহাট আঞ্চলিক মহাসড়কে রাত পৌনে ১০টার দিকে তারা মোটরসাইকেলে করে গ্রামের বাড়ির দিকে যাবার সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

তিনি আরো জানান, চালক ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে থাকা গ্যাস ভর্তি একটি ট্রাকের পেছনে সজোরে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই বিজয় বিশ্বাস নিহত হয়। আরোহী সরোজ ভট্টাচার্যকে একটি ক্লিনিকে নিয়ে গেলে সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মুগদা-মান্ডা সড়ক: উচ্ছেদের পর ফের দখল

  • ৫০ ফুট চওড়া করা মুগদা-মান্ডা সড়ক দখলের ফলে আবার সরু।
  • রাস্তাটির উভয় পাশ দখল করে অর্ধডজন দোকান বসেছে।
  • সংস্কারকাজে ধীরগতির কারণে সড়ক দখল হয়েছে: এলাকাবাসী।
সৈয়দ ঋয়াদ, ঢাকা 
আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২৫, ০৯: ০০
উচ্ছেদের পর মুগদা-মান্ডা সড়কটি ফের দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে অস্থায়ী স্থাপনা। এতে সড়কটি আগের মতোই সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে। সম্প্রতি মুগদা এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
উচ্ছেদের পর মুগদা-মান্ডা সড়কটি ফের দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে অস্থায়ী স্থাপনা। এতে সড়কটি আগের মতোই সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে। সম্প্রতি মুগদা এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

চওড়া সড়কের মাঝ পর্যন্ত একটি রেস্তোরাঁ। মোতালেব রেস্টুরেন্ট নামের ওই রেস্তোরাঁর পাশেই বাকরখানির দোকানটি যেন সড়কের গলা চেপে ধরেছে। উচ্ছেদ অভিযানের পর ৫০ ফুট চওড়া হওয়া ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মুগদা-মান্ডা সড়কটি দখলের ফলে আবার সরু হয়ে গেছে। এই সড়কের উভয় পাশে অর্ধডজন দোকান বসেছে। এগুলো যান চলাচলেও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।

এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনে কেউ অভিযোগ না দেওয়ায় সড়কটি নতুন করে দখলমুক্ত করার উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না থাকায় সড়কটির সংস্কারকাজ এগিয়ে নিতে নিজেদের অসহায়ত্বের কথা জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) কর্মকর্তারা।

ডিএসসিসির ৬, ৭১ ও ৭২ ওয়ার্ডের ওপর দিয়ে গেছে মুগদা-মান্ডা সড়ক। সরু এই সড়কে প্রতিনিয়ত যানজট হতো। জনভোগান্তি কমাতে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) রাজধানীর বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় এই সড়ককে ৫০ ফুটে প্রশস্ত করা হয়। এরপর সড়কটির উন্নয়ন ও সংস্কারের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ২০২৪ সালে মুগদা বিশ্বরোড থেকে মান্ডা হায়দার আলী উচ্চবিদ্যালয় পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সড়কের দুই পাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে ডিএসসিসি-রাজউক। এরপর সড়কের সংস্কারকাজ করার কথা ছিল। কিন্তু গণ-অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর সংস্কারকাজ থামকে যায়। এই সুযোগে সড়কটির অর্ধেকের বেশি আবার দখল হয়ে গেছে। ৫০ ফুট চওড়া সড়কটি এখন অর্ধেকে ঠেকেছে।

মুগদা এলাকার ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক নুরুল হক বলেন, ‘দেট্টা (দেড়) বছর ধইরা রাস্তাডা জ্বালাইতাছে। যখন মনে চায় কাম (কাজ) করে, যখন মনে চায় কাম বন্ধ রাখে। সবই এরার মনমর্জি। মর্জি হইলে করে, না হইলে করে না। কোনো নিয়মকানুন নাই।’

মুগদা বিশ্বরোড ধরে মান্ডার দিকে এগোলে দেখা যায়, মুগদা বড় মসজিদের কাছে দুই পাশ থেকেই সড়কটি দখল হয়ে গেছে। উত্তরপাশে হাজী এন্টারপ্রাইজ নামের একটি মুদি ও তেলের দোকান সড়কের ওপর ছাউনি দিয়ে বারান্দা তৈরি করেছে। মসজিদ লাগোয়া দোকানগুলো এর আগে উচ্ছেদ করা হলেও পুনরায় নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে ওই জায়গায় সড়কের অর্ধেক অংশ দখল হয়ে গেছে।

সড়কের ওপর ছাউনি দিয়ে

দখল করার বিষয়ে জানতে চাইলে হাজী এন্টারপ্রাইজের মো. নাজমুল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটা তো বাড়ির মালিকের জায়গা, সিটি করপোরেশন থেকে তিনি কোনো টাকা পান নাই। তাই তিনি তাঁর জায়গা নিয়ে নিয়েছেন।’

মুগদা ওয়াপদা গলির বাসিন্দা মোশাররফ হোসেন বলেন, ঢাকার অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা মুগদা ও মান্ডা। কয়েক লাখ লোক এখানে বসবাস করে। গত সরকার এই সড়কের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে সড়কটি ৫০ ফুট করে দেয়। কিন্তু এখন কেউ দেখে না। সড়কটি ঠিক করতে করতেই অর্ধেক রাস্তা আবার দখল হয়ে গেছে।

এ বিষয়ে ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা হাছিবা খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সড়কটি দখলের কোনো অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি। যদি কোথাও সরকারি সড়ক বা সম্পত্তি দখলের অভিযোগ আসে, আমরা তা উদ্ধারের জন্য যা যা করা দরকার, তার সবই করব।’

সড়কটির সংস্কারকাজের ধীরগতির জন্য দেশের অস্থিতিশীল অবস্থাকে দায়ী করেছেন ডিএসসিসির প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আগে যাঁরা কাজ করেছিলেন (সাবেক মেয়র ফজলে নূর তাপস) তাঁদের পক্ষে যা করা সম্ভব, বর্তমান প্রশাসনের পক্ষে সেটি করা একটু কঠিন। বর্তমান প্রশাসনের সেই সক্ষমতা নেই। সরকার পতনের পর আগের ঠিকাদার কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। আমরা নানাভাবে কাজটা করার চেষ্টা করছি।’

সড়কের কোনো অংশ দখল হলে তা উদ্ধার করা হবে জানিয়ে নূর আজিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা আমাদের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক চেষ্টা করব। আমি খোঁজ নিয়ে যা যা করা যায়, তা করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত