Ajker Patrika

গ্রামীণ টেলিকমের অর্থ আত্মসাৎ: মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে ড. ইউনূসসহ ১৪ জনের বিচার শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১২ জুন ২০২৪, ১৪: ৩৭
গ্রামীণ টেলিকমের অর্থ আত্মসাৎ: মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে ড. ইউনূসসহ ১৪ জনের বিচার শুরু

গ্রামীণ টেলিকমের ২৫ কোটি টাকার বেশি আত্মসাতের অভিযোগে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের মামলায় নোবেলবিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। আজ বুধবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক সৈয়দ আরাফাত হোসেন সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ১৫ জুলাই দিন ধার্য করেছেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বিশেষ পিপি মোশারফ হোসেন কাজল অভিযোগ গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তারা জানান, অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হল। 

তবে ড. ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেছেন, অভিযোগ গঠনের এই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করা হবে। 

গ্রামীণ টেলিকমের লভ্যাংশের ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে করা এই মামলায় গত ১ ফেব্রুয়ারি ড. ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

অপর আসামিরা হলেন— গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজমুল ইসলাম, পরিচালক ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক মো. শাহজাহান, পরিচালক পারভীন মাহমুদ, নাজনীন সুলতানা, নূরজাহান বেগম, পরিচালক এস. এম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী, আইনজীবী মো. ইউসুফ আলী ও জাফরুল হাসান শরীফ, গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান, ইউনিয়নের প্রতিনিধি মো. মাইনুল ইসলাম ও দপ্তর সম্পাদক মো. কামরুল হাসান। 

ড. ইউনূসসহ অন্যান্য আসামিরা আদালতে হাজির হন। আদালত অভিযোগ গঠন করায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আসামিদের অভিযোগ পড়ে শোনান। এরপর আসামিরা দোষী না নির্দোষ এ কথা জিজ্ঞাসা করেন। প্রত্যেক আসামি নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন।

গত ২ জুন অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানি শেষে আদেশের জন্য দিন ধার্য করা হয়। এর আগে গত ২ এপ্রিল ঢাকার সিনিয়র বিশেষ জজ ও মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আস-সামছ জগলুল হোসেন ১৪ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়ে বিশেষ জজ-৪ এ মামলাটি বিচারের জন্য স্থানান্তরের নির্দেশ দেন। 

ড. ইউনুসসহ অন্যান্য আসামিরা আদালতে হাজির হন। ছবি: আজকের পত্রিকা  এই মামলায় গত ৩০ জানুয়ারি দুদক আদালতে ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করে।

গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী কল্যাণ তহবিলের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে এই মামলা হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে তহবিল থেকে ২৫ কোটি ২২ লাখ ছয় হাজার ৭৮০ টাকা লোপাটের অভিযোগ আনা হয়। মামলায় এজাহারভুক্ত ১৩ আসামির সঙ্গে তদন্তে পাওয়া নতুন আরও একজনের নাম যুক্ত করা হয়।

গত বছরের ৩০ মে দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন। 

গত ৩ মার্চ ড. ইউনুসসহ ৮ জন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পান। পরবর্তীতে অন্যান্য আসামিরাও আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পান। 

ড. ইউনূসসহ আসামিদের বিরুদ্ধে মামলায় যে অভিযোগ
গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজমুল ইসলামসহ গ্রামীণ টেলিকমের বোর্ড সদস্যদের উপস্থিতিতে ২০২২ সালের ৯ মে গ্রামীণ টেলিকমের ১০৮ তম বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঢাকা ব্যাংকের গুলশান শাখা একটি অ্যাকাউন্ট খোলা হয়।

এর আগে ২৭ এপ্রিল কর্মচারীদের পাওনা লভ্যাংশ বিতরণের জন্য গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক ইউনিয়ন ও গ্রামীণ টেলিকমের সঙ্গে সেটেলমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্ট চুক্তি সই হয়।

দুদক বলছে, গ্রামীণ টেলিকমের বোর্ড সভায় ব্যাংক হিসাব খোলার সিদ্ধান্তের একদিন আগেই ব্যাংক হিসাব খোলা হয় এবং সেটেলমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্ট এপ্রিলে হলেও, অ্যাগ্রিমেন্টে ৮ মে খোলা ব্যাংক হিসাব দেখানো হয়, যা বাস্তবে অসম্ভব। 
ওই বোর্ডসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গ্রামীণ টেলিকমের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক মিরপুর শাখা থেকে গ্রামীণ টেলিকমের ঢাকা ব্যাংকের গুলশান শাখায় ১০ মে ৪৩৭ কোটি ১ লাখ ১২ হাজার ৬২১ টাকা স্থানান্তর করা হয়। 
পরে ২২ জুন গ্রামীণ টেলিকমের ১০৯ তম বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, অতিরিক্ত ১ কোটি ৬৩ লাখ ৯১ হাজার ৩৮৯ টাকা দেওয়ার অনুমোদন হয়। 

ঢাকা ব্যাংক গুলশান শাখার অ্যাকাউন্ট থেকে গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের ডাচ-বাংলা ব্যাংক লোকাল শাখার অ্যাকাউন্টে ১৭ মে ১০ কোটি টাকা, ২৫ মে ১৪ কোটি ৫৮ লাখ ১৫ হাজার ৩৯১ টাকা এবং ৩০ মে ১ কোটি ৬৩ লাখ ৯১ হাজার ৩৮৯ টাকাসহ মোট ২৬ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা স্থানান্তর করা হয়। 

কিন্তু কর্মচারীদের লভ্যাংশ বিতরণের আগেই তাদের প্রাপ্য অর্থ তাদের না জানিয়েই সিবিএ নেতা কামরুজ্জামানের ডাচ-বাংলা ব্যাংকের মিরপুর শাখার অ্যাকাউন্টে ২৫ মে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং ২ জুন ৫০ লাখ টাকা স্থানান্তর করা হয়। 
গ্রামীণ টেলিকমের সিবিএ নেতা মাইনুল ইসলামের ডাচ-বাংলা ব্যাংক মিরপুর শাখার অ্যাকাউন্টে ২৬ মে ২ কোটি টাকা এবং ২ জুন ১ কোটি টাকা স্থানান্তর করা হয়। 

গ্রামীণ টেলিকমের সিবিএ নেতা ফিরোজ মাহমুদ হাসানের ডাচ-বাংলা ব্যাংক মিরপুর শাখার অ্যাকাউন্টে ২৬ মে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং ২ জুন ৫০ লাখ টাকা স্থানান্তর করা হয়। 

আইনজীবী মো. ইউসুফ আলীর কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলনের ধানমন্ডি শাখার অ্যাকাউন্টে ৪ কোটি টাকা এবং সিটি ব্যাংক গুলশান শাখার অ্যাকাউন্টে ৫ কোটি টাকা স্থানান্তর করা হয়। 

আইনজীবী মো. ইউসুফ আলী ও জাফরুল হাসান শরীফের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের গুলশান নর্থ শাখায় যৌথ অ্যাকাউন্টে ২৯ মে ৬ কোটি টাকা স্থানান্তর করা হয়, যা তাদের প্রাপ্য ছিল না বলে অভিযোগে জানায় দুদক। 

অভিযোগে আরও বলা হয়, মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ট্রেড ইউনিয়নের নেতা কামরুল ইসলামের ডাচ-বাংলা ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে ২৯ মে চেকের মাধ্যমে ৫০ লাখ টাকা ঘুষ হিসেবে নেন। আত্মসাতের উদ্দেশ্যে স্থানান্তরিত বাকি ৭২ হাজার টাকা ডাচ-বাংলা ব্যাংকে ফ্রিজ করা আছে। 

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, অ্যাডভোকেট ফি হিসেবে প্রকৃতপক্ষে হস্তান্তরিত হয়েছে মাত্র ১ কোটি টাকা। বাকি ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বোর্ড সদস্যদের সহায়তায় গ্রামীণ টেলিকমের সিবিএ নেতা এবং আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্টরা অসৎ উদ্দেশ্যে জাল-জালিয়াতির আশ্রয়ে গ্রামীণ টেলিকম থেকে অর্থ স্থানান্তর করে আত্মসাৎ করেছেন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আরও ক্ষমতাধর হচ্ছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির, দুর্বল হচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট

উত্তরায় শিক্ষকের ডাস্টারের আঘাতে ছাত্র রক্তাক্ত, বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ

মুহূর্তেই উধাও ৬ হাজার কোটি টাকা—৫ ইসলামী ধারার ব্যাংকের শেয়ার ‘শূন্য’ ঘোষণা

মুগদা-মান্ডা সড়ক: উচ্ছেদের পর ফের দখল

চট্টগ্রামে যুবদল কর্মী নিহত: মেয়রের ক্ষোভ ঝাড়া সেই ওসিকে বদলি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভোরে রাজধানীর বাড্ডা ও শাহজাদপুরে দুটি বাসে আগুন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আজ ভোরে মেরুল বাড্ডায় আরমা মাজেদা মালিক টাওয়ারের সামনে আকাশ পরিবহনের বাসটি আগুনে সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। ছবি: ট্রাফিক পুলিশের সৌজন্যে
আজ ভোরে মেরুল বাড্ডায় আরমা মাজেদা মালিক টাওয়ারের সামনে আকাশ পরিবহনের বাসটি আগুনে সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। ছবি: ট্রাফিক পুলিশের সৌজন্যে

রাজধানীর মেরুল বাড্ডা ও শাহজাদপুর এলাকায় আজ সোমবার ভোরে আকাশ ও ভিক্টর পরিবহনের দুটি বাসে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। কে বা কারা বাস দুটিতে আগুন দিয়েছে, সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত তথ্য দিতে পারেনি পুলিশ। এসব ঘটনায় কেউ আহত হয়নি বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।

ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাশেদ বিন খালিদ বলেন, ভোরে বাসে আগুনের খবর জানাতে দু’টি ফোন কল আসে। প্রথমটি ভোর ৫টা ৪০ মিনিটে, দ্বিতীয়টি সকাল ৬টা ১০ মিনিটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দু’টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

তিনি আরও বলেন, ‘বাসে কীভাবে আগুন লেগেছে, তা আমরা এখনো জানি না। আমাদের কাছে এ বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। কেউ হতাহত হয়েছে বলেও তথ্য পাওয়া যায়নি। ঘটনাটি কী কারণে ঘটেছে তা তদন্ত করে পুলিশ জানাবে।’

ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ (ডিএমপি) সূত্র জানায়, মেরুল বাড্ডায় আরমা মাজেদা মালিক টাওয়ারের সামনে আকাশ পরিবহনের একটি বাসে আগুন লাগে। আগুনে বাসটি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। বাসের মালিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছেন। থানা-পুলিশের সদস্যরাও ঘটনাস্থলে রয়েছেন। তবে ওই এলাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

অন্যদিকে ট্রাফিক বাড্ডা জোনের শাহজাদপুর এলাকায় ভিক্টর পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। ডিবি ও থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করছে। বাসটি সড়কের মাঝামাঝি থাকায় দুই পাশ দিয়ে যান চলাচল সীমিতভাবে চলাচল করছিল। এর ফলে প্রগতি সরণি সড়কের আউটগোয়িং রুটে জট সৃষ্টি হয় বলে জানিয়েছে ট্রাফিক বিভাগ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আরও ক্ষমতাধর হচ্ছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির, দুর্বল হচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট

উত্তরায় শিক্ষকের ডাস্টারের আঘাতে ছাত্র রক্তাক্ত, বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ

মুহূর্তেই উধাও ৬ হাজার কোটি টাকা—৫ ইসলামী ধারার ব্যাংকের শেয়ার ‘শূন্য’ ঘোষণা

মুগদা-মান্ডা সড়ক: উচ্ছেদের পর ফের দখল

চট্টগ্রামে যুবদল কর্মী নিহত: মেয়রের ক্ষোভ ঝাড়া সেই ওসিকে বদলি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মুন্সিগঞ্জে বিএনপির দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বে যুবককে গুলি করে হত্যা, আরেকজন সংকটাপন্ন

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২৫, ১০: ৫৩
নিহতের স্বজনেরা আহাজারি করছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
নিহতের স্বজনেরা আহাজারি করছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

মুন্সিগঞ্জে বিএনপির দুই গ্রুপের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে প্রতিপক্ষের গুলিতে আরিফ মির (৩৫) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় তাঁর চাচাতো ভাই ইমরান গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

আজ সোমবার ভোর ৬টার দিকে সদর উপজেলার মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের চরডুমুরিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

আরিফ মির স্থানীয় বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আওলাদ হোসেনের অনুসারী বলে জানা গেছে। আহত ইমরানকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আতিক মল্লিক ও মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ওহিদ মোল্লার অনুসারী শাহ কামাল, জাহাঙ্গীর ও খাইরুদ্দিন গ্রুপের সঙ্গে আরিফ মিরের গ্রুপের বিরোধ চলছিল।

আজ সকালে আরিফ ও ইমরান ঘুম থেকে উঠে বাড়ির সামনে বের হলে শাহ কামালের নেতৃত্বে প্রতিপক্ষের লোকজন অতর্কিতে গুলি চালায়। এতে আরিফ ও ইমরান গুলিবিদ্ধ হন। স্থানীয়রা তাঁদের উদ্ধার করে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আরিফকে মৃত ঘোষণা করেন।

মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রুহুল আমিন বলেন, দুইজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আনা হয়। এর মধ্যে হাসপাতালে আনার আগেই আরিফে মারা গেছেন। অন্যজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ওসি সাইফুল আলম বলেন, বর্তমানে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আরও ক্ষমতাধর হচ্ছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির, দুর্বল হচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট

উত্তরায় শিক্ষকের ডাস্টারের আঘাতে ছাত্র রক্তাক্ত, বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ

মুহূর্তেই উধাও ৬ হাজার কোটি টাকা—৫ ইসলামী ধারার ব্যাংকের শেয়ার ‘শূন্য’ ঘোষণা

মুগদা-মান্ডা সড়ক: উচ্ছেদের পর ফের দখল

চট্টগ্রামে যুবদল কর্মী নিহত: মেয়রের ক্ষোভ ঝাড়া সেই ওসিকে বদলি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মনিরামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুদকের অভিযান: বরাদ্দের অর্ধেকেরও কম মাছ-রুটি পায় রোগী

মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি
গতকাল মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অভিযানে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ছবি: আজকের পত্রিকা
গতকাল মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অভিযানে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ছবি: আজকের পত্রিকা

হাসপাতালে ভর্তি রোগীর জন্য দৈনিক মাছ বরাদ্দ ১১৮ গ্রাম। রোগীদের দেওয়া হয় ৬০, ৬২, ৬৫ বা ৮০ গ্রাম মাছ। আর সকালের নাশতায় পাউরুটি বরাদ্দ ১৫২ গ্রাম। সেখানে রোগী পায় মাত্র ৫৬ গ্রাম ওজনের মানহীন বেকারিতে তৈরি দুটি পাউরুটি। যা বরাদ্দের অর্ধেকেরও কম। এসব অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে যশোরের মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযানে। সংস্থাটির যশোর জেলা দপ্তরের উপসহকারী পরিচালক চিরঞ্জীব নিয়োগীর নেতৃত্বে গতকাল রোববার দিনভর চলা অভিযানে ৫০ শয্যার এই সরকারি হাসপাতালের নানা অনিয়মের চিত্র ধরা পড়ে। এ সময় নয়ন হোসেন নামে ক্লিনিকের এক দালালকে ধরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে সোপর্দ করেছে দুদক।

দুদক জানিয়েছে, তাদের সদর দপ্তরে জমা পড়া অভিযোগের ভিত্তিতে তারা তিন সদস্যর একটি দল মনিরামপুর হাসপাতালে শুরুতে ছদ্মবেশে অভিযান চালায়। অভিযোগের বিষয়গুলোর প্রমাণ পেয়ে পরে তারা প্রকাশ্যে অভিযানে নামে।

দুদকের উপসহকারী পরিচালক চিরঞ্জীব নিয়োগী বলেন, ‘সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া কিলোমিটার প্রতি ১০-১৫ টাকা। আমরা অভিযোগ পেয়েছি মনিরামপুর হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সচালক এখলাস হোসেন রোগীদের জিম্মি করে তিন গুণ ভাড়া আদায় করে। মনিরামপুর থেকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগী নেওয়ার জন্য আমরা ছদ্মবেশে অ্যাম্বুলেন্সচালকের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলি। চালক আমাদের কাছে দুই হাজার টাকা ভাড়া দাবি করে। দূরত্ব হিসাব করলে মনিরামপুর থেকে খুলনা পর্যন্ত সরকারি ভাড়া আসে ৬০০-৭০০ টাকা। সেখানে চালক তিন গুণ ভাড়া আদায় করে।

চিরঞ্জীব নিয়োগী বলেন, ‘ভর্তি রোগীর খাবারের মান যাচাই করতে গিয়ে আমরা দেখেছি, সকালের নাশতায় রোগীকে ১৫২ গ্রাম ওজনের পাউরুটি দেওয়ার নিয়ম থাকলেও সরবরাহ করা রুটির ওজন মিলেছে মাত্র ৫৬ গ্রাম। রোগীর খাবারে ১১৮ গ্রাম ওজনের মাছের টুকরা দেওয়ার কথা থাকলেও সরবরাহ করা মাছের প্রতি টুকরার ওজন মিলেছে ৬০ থেকে ৮০ গ্রাম। এ ছাড়া মানহীন তেল ও লবণ ব্যবহার করা হচ্ছে রোগীর জন্য রান্না করা তরকারিতে। রোগীদের যে ডাল খাওয়ানো হয় তার মানও খুবই নিম্নমানের।’

দুদকের উপসহকারী পরিচালক চিরঞ্জীব নিয়োগী বলেন, ভর্তি বিভাগে অভিযানে দেখা গেছে হাসপাতালে সরকারি ওষুধ ও স্যালাইন মজুত থাকলেও রোগীদের সেই ওষুধ বা স্যালাইন বাইরে থেকে কেনানো হচ্ছে। রোগীর বাথরুম বা টয়লেটের অবস্থাও নাজুক দেখা গেছে।

দুদকের এই উপপরিচালক বলেন, ‘অভিযানে দেখা গেছে, হাসপাতালের ল্যাব সহকারী আনিছুজ্জামান বিভিন্ন ক্লিনিকের দালালের মাধ্যমে রোগীদের পরীক্ষা করানোর জন্য বাইরের ক্লিনিকে পাঠিয়ে থাকে। আমরা নয়ন হোসেন নামে এক দালালকে ধরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে সোপর্দ করেছি। এ ছাড়া জরুরি বিভাগে অভিযানের সময় দেখা গেছে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া ওয়ার্ডবয়রা কোনো প্রকার প্রশিক্ষণ ছাড়াই রোগীর সেলাই বা ব্যান্ডেজের কাজ করছে।’

চিরঞ্জীব নিয়োগী বলেন, ‘অভিযানের সময় হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক অনুপ বসু আমাদের সঙ্গে ছিলেন। আমরা অনিয়মের বিষয়গুলো হাসপাতালপ্রধানকে জানিয়েছি। অনিয়ম পাওয়া বিষয়গুলো আমাদের সদর দপ্তরকে লিখিতভাবে জানাব। এ ছাড়া সিভিল সার্জনকে বিষয়গুলো জানানো হবে।’

দুদকের অভিযোগের বিষয়ে মনিরামপুর হাসপাতালে খাবার পরিবেশনকারী ঠিকাদার ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘২০১২ সালের মূল্যতালিকায় আজও আমাদের খাদ্য সরবরাহ করতে হচ্ছে। নতুন করে আর টেন্ডার না হওয়ায় লোকসান করে খাদ্য সরবরাহ করতে হচ্ছে।’

মনিরামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) অনুপ বসু বলেন, ‘মাঝেমধ্যে আমরা ঠিকাদারকে ডেকে রোগীর খাবারের মান সম্পর্কে সতর্ক করি। দুই-চার দিন ঠিক থাকার পর আবার যাইতাই হয়ে যাচ্ছে। উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ থাকায় ঠিকাদার পরিবর্তন করা সম্ভব হচ্ছে না।’

মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ফাইয়াজ আহমেদ ফয়সাল বলেন, দুদকের পাওয়া অনিয়মগুলো গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আরও ক্ষমতাধর হচ্ছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির, দুর্বল হচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট

উত্তরায় শিক্ষকের ডাস্টারের আঘাতে ছাত্র রক্তাক্ত, বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ

মুহূর্তেই উধাও ৬ হাজার কোটি টাকা—৫ ইসলামী ধারার ব্যাংকের শেয়ার ‘শূন্য’ ঘোষণা

মুগদা-মান্ডা সড়ক: উচ্ছেদের পর ফের দখল

চট্টগ্রামে যুবদল কর্মী নিহত: মেয়রের ক্ষোভ ঝাড়া সেই ওসিকে বদলি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যারা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে তাদের ভরাডুবি হবে: মাহবুবের রহমান শামীম

নোয়াখালী প্রতিনিধি
গতকাল সন্ধ্যায় হাতিয়ার চেয়ারম্যানঘাটে পথসভায় বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম। ছবি: আজকের পত্রিকা
গতকাল সন্ধ্যায় হাতিয়ার চেয়ারম্যানঘাটে পথসভায় বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্ব) মাহবুবের রহমান শামীম বলেছেন, আজকে বাংলাদেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, গণতন্ত্রকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। জনগণের ভোটাধিকার যারা বাধাগ্রস্ত করবে, জনগণ তাদের রুখে দেবে।

তিনি আরও বলেন, ‘গণতন্ত্রকে নিয়ে ষড়যন্ত্র, নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র মানে তারেক রহমানকে নিয়ে ষড়যন্ত্র। যারা নির্বাচনকে বানচাল বা বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে নির্বাচনে তাদের ভরাডুবি হবে, আর নির্বাচনে ভরাডুবি হবে জেনেই তারা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে। এসব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’

োয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর রোববার সন্ধ্যায় নিজ নির্বাচনী এলাকায় হাতিয়ার চেয়ারম্যানঘাটে এক পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শামীম বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচন নিয়ে কোনো সংশয় নেই। আর ওই নির্বাচনে ভোট দেওয়ার জন্য সারা দেশের মানুষ উদ্‌গ্রীব হয়ে আছে। যতই ষড়যন্ত্র হোক আমরা, আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকলে নির্বাচন বানচাল করা যাবে না। সারা দেশের জনগণ ভোটে নেমে পড়েছে, ভোটের ট্রেনে জনগণ উঠে গেছে। নির্বাচন ঘিরে প্রতিটি অঞ্চলে মিছিল-মিটিং হচ্ছে।’

হরিণী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আখতারুজ্জামান দোলনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন হাতিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আলাউদ্দিন, সাবেক সভাপতি এ কে এম ফজলুল হক খোকন, সাবেক সহসভাপতি মাসউদুর রহমান বাবর, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিরুল হায়দার সাজ্জাদ, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লুৎফুল্লাহিল মজিদ নিশানসহ অনেকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আরও ক্ষমতাধর হচ্ছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির, দুর্বল হচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট

উত্তরায় শিক্ষকের ডাস্টারের আঘাতে ছাত্র রক্তাক্ত, বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ

মুহূর্তেই উধাও ৬ হাজার কোটি টাকা—৫ ইসলামী ধারার ব্যাংকের শেয়ার ‘শূন্য’ ঘোষণা

মুগদা-মান্ডা সড়ক: উচ্ছেদের পর ফের দখল

চট্টগ্রামে যুবদল কর্মী নিহত: মেয়রের ক্ষোভ ঝাড়া সেই ওসিকে বদলি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত