Ajker Patrika

গোবিপ্রবিতে দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ, প্রক্টর, হল প্রভোস্টসহ আহত ১৫

টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি
ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকের কক্ষের আসবাবপত্র বাইরে ফেলে আগুন ধরিয়ে দেয় প্রতিপক্ষ। ছবি: আজকের পত্রিকা
ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকের কক্ষের আসবাবপত্র বাইরে ফেলে আগুন ধরিয়ে দেয় প্রতিপক্ষ। ছবি: আজকের পত্রিকা

গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (গোবিপ্রবি) ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষা সমাপনী অনুষ্ঠান ‘নবনীতক-৯’-এর সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশগ্রহণ করা নিয়ে দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রক্টর, প্রভোস্টসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, শেখ রাসেল হল ও বিজয় দিবস হল।

গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় দিবস হলে দুই বিভাগের মধ্যে কথা-কাটাকাটি থেকে সংঘর্ষের শুরু হয়। পরে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের নির্ধারিত শিক্ষা সমাপনী অনুষ্ঠানটি বাতিল করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ১টার দিকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ ও ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই-সি) বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ‘র‍্যাগ ডে’র সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডা শুরু হয়। এর একপর্যায়ে দুই বিভাগের শিক্ষার্থীরা লাঠিসোঁটা, স্টাম্প, ব্যাট, হকিস্টিক, দেশীয় অস্ত্র, জিআই পাইপসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।

তখন ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকের নেতৃত্বে শেখ রাসেল হলে হামলা চালিয়ে বিভিন্ন কক্ষের জানালার কাঁচ ভাঙচুর করা হয়। অন্য পক্ষ পাল্টা হামলা চালিয়ে এএসভিএম বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকের কক্ষের আসবাবপত্র বাইরে ফেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ছাড়া রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে।

এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. আরিফুজ্জামান রাজীব, বিজয় দিবস হলের প্রভোস্ট সহযোগী অধ্যাপক রবিউল ইসলাম, ফার্মেসি বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ওবায়দুল ইসলাম ও শাহিনুর রহমান, ইতিহাস বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুর রাজ্জাকসহ অন্তত ১৫ জন আহত হন। মারাত্মক আহতাবস্থায় সাতজনকে গোপালগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ভাঙচুর করা হয়েছে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, শেখ রাসেল হল ও বিজয় দিবস হল। ছবি: আজকের পত্রিকা
ভাঙচুর করা হয়েছে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, শেখ রাসেল হল ও বিজয় দিবস হল। ছবি: আজকের পত্রিকা

মারামারির বিষয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘একাডেমিক ভবনে প্রোগ্রাম চলাকালে আমাদের বিভাগের দুই-তিনজন জুনিয়র সামনে চেয়ার নিয়ে বসতে যায়। তখন আমাদের অন্য জুনিয়ররা বলে ‘‘ভাই, আপনি এমনি সামনে বসলে তো আমরা কিছু দেখতে পারি না।’’ এ নিয়ে কথা-কাটাকাটি হয়। তবে তখনই বিষয়টি মীমাংসা হয়ে যায়।

‘এরপর আমরা সবাই রুমে যাওয়ার সময় হঠাৎ করে ৪০-৫০ জন ছেলে আমাদের ধাওয়া দেয়। আমরা দৌড়ে বিজয় দিবস হলে আশ্রয় নিই। কিন্তু ওরা বাঁশ ও কাঠ হাতে নিয়ে বিজয় দিবস হলে ঢুকে আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমাদের বিভাগের পাঁচ-ছয়জন শিক্ষার্থী আহত হন। হলে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা মার খাওয়ার পর রাগান্বিত হয়ে হল থেকে বের হয় এবং শেখ রাসেল হলের দিকে যায়।’

এ ব্যাপারে প্রক্টর আরিফুজ্জামান রাজীব বলেন, ‘হল প্রশাসনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, যারা এ ধরনের কাজের সঙ্গে জড়িত, তাদের প্রশাসন সর্বোচ্চ শাস্তি যেটা আছে, সেটা নিশ্চিত করবে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন আজকে মিটিং করে তিন কর্মদিবসের মধ্যে, সেখানে যেহেতু সিসিটিভি ফুটেজ আছে, সবকিছু আছে, আই উইটনেস আছে। তাই এ ঘটনায় কারা জড়িত, সেটা খুঁজে বের করা কঠিন কিছু না। তদন্তের মাধ্যমে যাদের নাম উঠে আসবে, সবাইকে কঠিন শাস্তির আওতায় আনতে হবে, এটা ভাইস চ্যান্সেলরের মেসেজ।’

উল্লেখ্য, ‘নবনীতক-৯’ শিরোনামে শিক্ষা সমাপনী অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি আজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ আগুন যেসব প্রশ্ন তুলল, সর্বশেষ যা জানা গেল

বিমানবন্দরের মতো কৌশলগত স্থাপনায় আগুন নিরাপত্তা ঘাটতির স্পষ্ট প্রমাণ: জামায়াত আমির

জামায়াত-এনসিপির পথে হঠাৎ যেন ভিন্ন বাঁক

রোববার শিক্ষা ভবন অভিমুখে থালা-বাটি নিয়ে শিক্ষকদের ‘ভুখা মিছিল’

হোয়াইট হাউস থেকে খালি হাতে ফিরলেন জেলেনস্কি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শাহজালালের কার্গো ভিলেজে এখনো ধোঁয়া উড়ছে

উত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি 
আপডেট : ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ১১: ৫০
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ থেকে এখনো বের হচ্ছে কালো ধোঁয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ থেকে এখনো বের হচ্ছে কালো ধোঁয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আমদানি কার্গো ভিলেজে গতকাল শনিবার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে বিপুল ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। দীর্ঘ ৮ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও এখনো সেখান থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেট-সংলগ্ন আমদানি কার্গো ভিলেজে আজ রোববার সকালে এই দৃশ্য দেখা যায়।

গেটের সামনে ভিড় করছেন কার্গো ভিলেজের কর্মচারীরা। উদ্বেগ প্রকাশ করে তাঁরা বলছেন, এখনো ধোঁয়া বের হচ্ছে। মনে হচ্ছে, আগুন পুরোপুরি নেভেনি। পুরো আমদানি কার্গো ভিলেজ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

আমদানি কার্গো ভিলেজের গেট দিয়ে ভেতরে কাউকে ঢুকতে দিচ্ছে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ঘটনাস্থলে কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্মকর্তা আবদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আগুন পুরো নিভে গেছে। আমাদের শুধু র‍্যাম্পিং ডাউনের (অগ্নিনির্বাপণ তৎপরতা গুটিয়ে আনা) কাজ চলছে।’

আবদুর রহমান আরও বলেন, কার্গো ভিলেজে কোথাও কোনোভাবে আগুন ধরতে পারে এমন কিছু আছে কি না, সে জন্য ভেতরে সবকিছু খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে।

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে গতকাল শনিবার বেলা সোয়া ২টার দিকে আগুন লাগে। আগুনে কার্গো ভিলেজের আমদানি কমপ্লেক্সের পুরোটা পুড়ে গেছে। এই ঘটনায় বেলা সাড়ে ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দেশের প্রধান এই বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের সব উড়োজাহাজ ওঠানামা বন্ধ থাকে। যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়ে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি স্টেশনের ৩৭টি ইউনিট কাজ করে। রাত সোয়া ৯টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ থেকে এখনো বের হচ্ছে কালো ধোঁয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ থেকে এখনো বের হচ্ছে কালো ধোঁয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা

আগুন নেভাতে গিয়ে আহত হয়েছেন ২২ জন। ক্ষয়ক্ষতির বিষয় এখনো নিরূপণ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। আমদানিকারকেরা বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন। বিমানবন্দরের ভেতরে নজিরবিহীন এই অগ্নিকাণ্ডকে অনেকে রহস্যজনক বলছেন। অনেকে বলছেন, বিমানবন্দরে সার্বক্ষণিক ফায়ার ইউনিট থাকার পরও আগুন এভাবে ছড়িয়ে পড়ায় প্রশ্ন উঠেছে।

অন্তর্বর্তী সরকার বলেছে, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নাশকতা বা অগ্নিসংযোগের কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে সরকার তাৎক্ষণিক ও দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে। ঘটনা তদন্তে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সাত সদস্যের ও কাস্টমস পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ আগুন যেসব প্রশ্ন তুলল, সর্বশেষ যা জানা গেল

বিমানবন্দরের মতো কৌশলগত স্থাপনায় আগুন নিরাপত্তা ঘাটতির স্পষ্ট প্রমাণ: জামায়াত আমির

জামায়াত-এনসিপির পথে হঠাৎ যেন ভিন্ন বাঁক

রোববার শিক্ষা ভবন অভিমুখে থালা-বাটি নিয়ে শিক্ষকদের ‘ভুখা মিছিল’

হোয়াইট হাউস থেকে খালি হাতে ফিরলেন জেলেনস্কি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কুষ্টিয়ায় নিজ বাড়ির বারান্দায় ভ্যানচালক খুন, পূর্বশত্রুতার অভিযোগ

কু‌ষ্টিয়া প্রতি‌নি‌ধি
খুনের খবর পেয়ে প্রতিবেশীরা নিহত ব্যক্তির বাড়িতে ভিড় জমায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
খুনের খবর পেয়ে প্রতিবেশীরা নিহত ব্যক্তির বাড়িতে ভিড় জমায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়া সদর উপ‌জেলায় নিজের বসতঘরের বারান্দায় মোশারফ হোসেন মুসা (৫৫) নামের এক ভ্যানচালককে কুপিয়ে হত‌্যা ক‌রে‌ছে দুর্বৃত্তরা। রোববার (১৯ অক্টোবর) সকালে উপ‌জেলার হরিনারায়ণপুর ইউনিয়নের শান্তিডাঙ্গা গ্রাম থেকে পুলিশ নিহত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনা‌রেল হাসপাতা‌লের মর্গে পাঠিয়েছে।

নিহত মোশারফ হোসেন মুসা একই এলাকার মৃত আকবর মন্ডলের ছেলে। তিনি পেশায় ভ‌্যানচালক ছিলেন এবং প্রতিদিনের মতো শনিবার রাতে বসতঘ‌রের বারান্দায় ঘুমাচ্ছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার দিবাগত রা‌তের কোনো এক সময় দুর্বৃত্তরা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। ভোররা‌তে প‌রিবা‌রের লোকজন বাইরে বে‌র হ‌য়ে মুসার রক্তাক্ত লাশ দেখ‌তে পায়। নিহত ব‌্যক্তির বু‌কে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের একাধিক চিহ্ন পাওয়া গেছে।

ঘটনার কারণ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ভিন্নমত রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা ভ‌্যান চুরি করতে এসে মুসা‌কে হত্যা করা হ‌য়ে থাক‌তে পা‌রে বলে ধারণা করলেও প‌রিবা‌রের দা‌বি, পূর্বশত্রুতার জেরে পরিকল্পিতভাবে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।

নিহত ব্যক্তির মে‌য়ে শিখা দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ‘ভ্যান চুরির জন্য আমার বাবাকে কখনো এমন নির্মমভাবে হত্যা করতে পারে না। পূর্বশত্রুতার জের ধরে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।’ তিনি এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জ‌ড়িত‌দের স‌র্বোচ্চ শা‌স্তির দা‌বি জানান।

জান‌তে চাইলে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ও‌সি) মেহেদি হাসান বলেন, ‌নিহত ব‌্যক্তির বু‌কে হাঁসুয়া-জাতীয় ধারা‌লো কিছু দি‌য়ে আঘাত করা হ‌য়ে‌ছে। শুধু ভ‌্যান চু‌রির জন‌্য এমন নির্মম হত্যাকাণ্ড না-ও হতে পারে। কারণ, তাহলে অপরাধীরা ভ‌্যান নি‌য়ে যেত।

ওসি আরও বলেন, বিষয়‌টি নি‌য়ে পু‌লিশ কাজ কর‌ছে। দ্রুত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা হ‌বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ আগুন যেসব প্রশ্ন তুলল, সর্বশেষ যা জানা গেল

বিমানবন্দরের মতো কৌশলগত স্থাপনায় আগুন নিরাপত্তা ঘাটতির স্পষ্ট প্রমাণ: জামায়াত আমির

জামায়াত-এনসিপির পথে হঠাৎ যেন ভিন্ন বাঁক

রোববার শিক্ষা ভবন অভিমুখে থালা-বাটি নিয়ে শিক্ষকদের ‘ভুখা মিছিল’

হোয়াইট হাউস থেকে খালি হাতে ফিরলেন জেলেনস্কি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ফরিদপুরের কাদিরদি বাজারে ভয়াবহ আগুন, পুড়ে ছাই ২০ দোকান

ফরিদপুর প্রতিনিধি
বোয়ালমারী উপজেলার কাদিরদি বাজারে গতকাল রাত ১০টার দিকে বাচ্চু মোল্লার মার্কেটে আগুন লাগে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বোয়ালমারী উপজেলার কাদিরদি বাজারে গতকাল রাত ১০টার দিকে বাচ্চু মোল্লার মার্কেটে আগুন লাগে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার কাদিরদি বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (১৮ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১০টার দিকে বাচ্চু মোল্লার মার্কেটে এই আগুন লাগে। এতে মুদি, কাপড়, ওষুধ, জুতা, বীজসহ কমপক্ষে ২০টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগুনে অন্তত কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন এবং মধুখালী ও বোয়ালমারী ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

এলাকাবাসী ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, রাত ১০টার দিকে বাজারের বাচ্চু মোল্লার মার্কেটে নাসিরের কাপড়ের দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত। দ্রুত সময়ে আগুন পার্শ্ববর্তী মুদি, ওষুধ, চা, বীজ, জুতার দোকানসহ অন্যান্য দোকানে ছড়িয়ে পড়ে।

স্থানীয় বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য মনির হোসেন বলেন, ‘বাজারের ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে চলে যাওয়ায় বাজারে পাহারাদার ছাড়া বেশি লোক ছিল না। আগুনের শোরগোল শুনে বাড়ি থেকে দৌড়ে গিয়ে দেখি কয়েকটা দোকানে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। পাশে আমারও কয়েকটি দোকান রয়েছে। তবে আমার দোকান আল্লাহ রক্ষা করেছেন।’

নিশিকান্ত দাশ নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, বাজারে বাচ্চু মোল্লার মার্কেটের নাসিরের কাপড়ের দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত। আগুনে কমপক্ষে ২০টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে অন্তত কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

বোয়ালমারী ফায়ার সার্ভিসের লিডার খালেক শেখ বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই মধুখালী ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছিলেন। আমরা আসার পরে একযোগে দুই ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তায় এক ঘণ্টা চেষ্টার ফলে আগুন নেভাতে সক্ষম হই।’

মধুখালী ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ রাশেদুল আলম বলেন, আগুনে ১৩টি দোকান পুড়ে গেছে। এক ঘণ্টার আগেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়; তবে অভিযান সম্পন্ন করতে প্রায় দেড় ঘণ্টা লেগেছে। ধারণা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটের মাধ্যমে আগুনের সূত্রপাত। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও পরে হয়তো জানা যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ আগুন যেসব প্রশ্ন তুলল, সর্বশেষ যা জানা গেল

বিমানবন্দরের মতো কৌশলগত স্থাপনায় আগুন নিরাপত্তা ঘাটতির স্পষ্ট প্রমাণ: জামায়াত আমির

জামায়াত-এনসিপির পথে হঠাৎ যেন ভিন্ন বাঁক

রোববার শিক্ষা ভবন অভিমুখে থালা-বাটি নিয়ে শিক্ষকদের ‘ভুখা মিছিল’

হোয়াইট হাউস থেকে খালি হাতে ফিরলেন জেলেনস্কি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গাংনীতে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চার মাস ধরে জলাবদ্ধতা, পাঠদান ব্যাহত

মেহেরপুর প্রতিনিধি
বামন্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ পানিতে তলিয়ে রয়েছে চার মাস ধরে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বামন্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ পানিতে তলিয়ে রয়েছে চার মাস ধরে। ছবি: আজকের পত্রিকা

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বামন্দী ইউনিয়নের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত বামন্দী নিশিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং বামন্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ টানা চার মাস জলমগ্ন অবস্থায় রয়েছে। দীর্ঘদিনের এই জলাবদ্ধতা নিরসনে কর্তৃপক্ষ কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় দুই প্রতিষ্ঠানের হাজারো শিক্ষার্থীর পাঠদান মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি খেলাধুলা বন্ধ থাকায় উঠতি বয়সের ছেলেরা মাদকাসক্তে জড়িয়ে পড়ার দুশ্চিন্তা করছেন অভিভাবকেরা।

দীর্ঘ চার মাস জলাবদ্ধতা থাকায় এই দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই মাঠে পানি জমে যায় এবং নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় তা দীর্ঘস্থায়ী রূপ নেয়। জলাবদ্ধতার কারণে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠানে আসা-যাওয়া অত্যন্ত কষ্টকর হয়ে উঠেছে। অভিভাবক এবং প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ এই পানি থেকে রোগ ছড়ানোর আশঙ্কায় চরম দুশ্চিন্তা করছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিভাবক সোহেল রানা বাবু বলেন, বামন্দীর প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন ধরে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কোনো উদ্যোগ নেয়নি। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে অতিদ্রুত পানি নিষ্কাশন করা উচিত।

সোহেল রানা আরও বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে এই দুটি প্রতিষ্ঠানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হলেও কর্তৃপক্ষ কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি। আমি আমার ছোট সন্তানকে এই প্রতিষ্ঠানে পাঠাতে ভয় পাই কোনো দুর্ঘটনা ঘটবে বলে। তা ছাড়া এই পানি এত নোংরা যে এখান থেকে বড় ধরনের কোনো রোগ ছড়াতে পারে।’

জলাবদ্ধতার কারণে শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক লেখাপড়ার পাশাপাশি শারীরিক ও মানসিক বিকাশও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাজিম হোসেনের ভাষ্য, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই জলাবদ্ধতার মধ্য দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসছি। এতে আমাদের জামাকাপড় নোংরা হয়ে যায়। লেখাপড়ার ক্ষতি হচ্ছে। খেলাধুলা করতে পারছি না। দ্রুত পানি নিষ্কাশন করে লেখাপড়ার পরিবেশ ও খেলার মাঠের উপযোগী করে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’

পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী সিয়াম আহমেদ বলে, ‘স্কুলে এসে এই নোংরা পানিতে পড়ে গিয়ে অনেকের বই ও পোশাক ভিজে যায়। দীর্ঘদিন ধরে খেলাধুলা করতে না পারায় আমাদের খুব খারাপ লাগছে। কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ, তারা যেন স্কুলমাঠের পানি বের করে দেওয়ার ব্যবস্থা করে।’

দীর্ঘদিনের এই জলাবদ্ধতা নিরসনে কর্তৃপক্ষ কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় দুই প্রতিষ্ঠানের হাজারো শিক্ষার্থীর পাঠদান মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
দীর্ঘদিনের এই জলাবদ্ধতা নিরসনে কর্তৃপক্ষ কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় দুই প্রতিষ্ঠানের হাজারো শিক্ষার্থীর পাঠদান মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

বামন্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, আমরা চার মাস ধরে এই জলাবদ্ধতার মধ্যে রয়েছি। জলাবদ্ধতার কারণে আমাদের একটি ক্লাসরুম বন্ধ রয়েছে। এখানে বাচ্চাদের নিরাপত্তা চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তবে এর কোনো সমাধান পাইনি। আদৌ এর সমাধান পাব কি না, জানি না। তবে আমাদের কষ্টের শেষ নেই।’

বামন্দী নিশিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ সাজ্জাদুল আলম বলেন, ‘বামন্দী নিশিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ আঙিনায় জলাবদ্ধতার কারণে আমাদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আসা-যাওয়া অত্যন্ত কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। তাই গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা প্রশাসকের কাছে আকুল আবেদন, অতিদ্রুত পানি নিষ্কাশন করে লেখাপড়ার পরিবেশ করে দিন। আর জেলা পরিষদের যে ২ লাখ টাকার কাজ হওয়ার কথা, তা এখনো হয়নি। তাই এটা দেখার জন্য কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

বামন্দী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল আওয়াল বলেন, ‘বামন্দী নিশিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও বামন্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যে মাঠ রয়েছে, তা এখন কেউ স্কুলের মাঠ বলবে না। ওটাকে এখন ডোবা বা পুকুর বলবে। ছোট শিশুরা স্কুলে আসে। তারা যদি কোনো দুর্ঘটনায় পড়ে তাহলে এর দায়িত্ব কে নেবে। আমরা আমাদের সন্তানদের নিয়ে অনেক চিন্তিত। তাই উপজেলা প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনকে অনুরোধ করব এই পানি নিষ্কাশন করে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার। তা ছাড়া যুবসমাজের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খেলাধুল। তারা খেলাধুলা করতে পারছে না। এ কারণে মাদকাসক্ত হওয়ার ভয়ও বেশি থাকে। ছেলেদের ভবিষ্যৎ যাতে নষ্ট না হয়, সেই কথা বিবেচনা করে অতিদ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। তাই প্রশাসনের নিকট জোরালো দাবি জানাচ্ছি দ্রুত ড্রেনেজের ব্যবস্থা করে এই পানি নিষ্কাশন করার।’

গাংনী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) এস এম জয়নুল ইসলাম বলেন, বামন্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ যেসব বিদ্যালয়ে জলাবদ্ধতার কারণে শিক্ষার্থীর পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে, তা দ্রুত নিরসনের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

গাংনী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (অতিরিক্ত) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘জলাবদ্ধতার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। আর জলাবদ্ধতা নিরসনের ব্যাপারে তারা যেভাবে নির্দেশনা দেবেন, সেভাবে কাজ করব।

গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বামন্দী নিশিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের নিজস্ব গভর্নিং বডি রয়েছে। তা ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিজস্ব কিছু আয় রয়েছে। আমরা তাদের নির্দেশনা দিয়েছি জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে। তা ছাড়া কোনো সহযোগিতা লাগলে সে বিষয়ে বিভিন্ন পরামর্শসহ সহযোগিতা করা হবে। আর বামন্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে, আমরা সংশ্লিষ্ট ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে কথা বলে কীভাবে জলাবদ্ধতা দূর করা যায়, সে বিষয়টিও দেখব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ আগুন যেসব প্রশ্ন তুলল, সর্বশেষ যা জানা গেল

বিমানবন্দরের মতো কৌশলগত স্থাপনায় আগুন নিরাপত্তা ঘাটতির স্পষ্ট প্রমাণ: জামায়াত আমির

জামায়াত-এনসিপির পথে হঠাৎ যেন ভিন্ন বাঁক

রোববার শিক্ষা ভবন অভিমুখে থালা-বাটি নিয়ে শিক্ষকদের ‘ভুখা মিছিল’

হোয়াইট হাউস থেকে খালি হাতে ফিরলেন জেলেনস্কি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত